গোসল ফরজ হওয়ার কারণ - ফরজ গোসল না করার শাস্তি
গোসল ফরজ হওয়ার কারণ
প্রথমে আমাদের যেনে নেওয়া উচিত গোসল ফরজ হওয়ার কারণ গুলো সম্পর্কে। আমরা যদি গোসল ফরজ হওয়ার কারণগুলো না জানি তাহলে আমরা বুঝবো কি করে যে কোন সময় আমাদেরকে ফরজ গোসল করতে হবে? এই কারণে সর্বপ্রথমেই আমাদের জেনে নিতে হবে গোসল খরচ হওয়ার কারণগুলো। আপনি যদি সঠিকভাবে না জেনে থাকেন গোসল ফরজ হওয়ার কারণগুলো সম্পর্কে তাহলে এখানেই জেনে নিন। গোসল ফরজ হওয়ার কারণ গুলো নিচে দেয়া হলো,
- ঘুমন্ত অবস্থায় অথবা জাগ্রত অবস্থায় যেকোনো কারণে বীর্যপাত হলে
- বীর্যপাত হোক বা না হোক পুরুষের লিঙ্গ যদি নারীর যোনিদ্বার বা গুহ্যদ্বারে প্রবেশ করে তাহলে
- সহবাস করলে
- স্বপ্নদোষ হলে
- মেয়েদের হায়েজ বা নেফাস বন্ধ হওয়ার পর
- অন্য ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর
- মৃত ব্যক্তিকে গোসল করানো জীবিত ব্যক্তিদের উপর ফরজ
ফরজ গোসল না করার শাস্তি
এ পর্যায়ে আমরা আলোচনা করব ফরজ গোসল না করার শাস্তি বা ফরজ গোসলে অবহেলা করার পরিনাম সম্পর্কে। দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কারণেই আমাদের শরীর অপবিত্র হতে পারে কিন্তু কথা হল শরীর অপবিত্র হওয়ার পরে যত দ্রুত সম্ভব খরচ গোসলের মাধ্যমে অপবিত্রতা কাটিয়ে পবিত্র হতে হবে, আমরা যদি ফরজ গোসল করায় অবহেলা করি তাহলে এর জন্য ভবিষ্যতে আমাদেরকে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে এবং এর জন্য কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে। ফরজ গোসল না করার শাস্তি সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার জন্য নিচে এ বিষয়ে আলোচনা করা হলো।
ফরজ গোসলের মাধ্যমে আমরা পবিত্রতা লাভ করতে পারি, আর পবিত্রতা হল ঈমানের অঙ্গ। অপবিত্র হওয়ার পরে আপনি যদি ফরজ গোসল না করেন তাহলে কোনভাবেই পবিত্র হতে পারবেন না আর আপনি পবিত্র না থাকলে নামাজ, রোজা,হজ, তাওয়াফ, মসজিদে যাওয়া ,কোরআন স্পর্শ করা ইত্যাদি ইবাদতগুলো হবে না। আর আপনি যদি নামাজ ও রোজা পালন না করেন তাহলে অবশ্যই এর জন্য কবরের ভেতরে কঠিন আযাব ভোগ করতেই হবে এবং জাহান্নামের আগুনে পুড়তে হবে। কুরআনে আল্লাহ পাক বলেছেন-এটা তোমরা নেশা অবস্থায় নামাজের নিকটবর্তী হয়ো না, যতক্ষণ না কি বলছো তা বুঝতে পারো। অপবিত্র অবস্থাতেও নামাজ থেকে দূরে থাকো, যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা গোসল করো।
ফরজ গোসল না করলে যেহেতু আমাদের নামাজ হবে না সে ক্ষেত্রে আমরা ফরজ গোসল ছাড়া বেনামাজি থেকে যাব যার ফলে ভবিষ্যতে আমাদেরকে কবরে যে তিন ধরনের আজাবের মুখোমুখি হতে হবে সেগুলো হল,
- কবর এতটাই সংকীর্ণ হয়ে যাবে যে এক পাঁজরের হাড় অন্য পাথরে ঢুকে যাবে
- কবরে আগুন প্রজ্বলিত করা হবে
- কবরের ভেতরে আল্লাহপাক এমন সাপ নিযুক্ত করে দিবেন যার চোখগুলো হবে আগুনের মতন এবং নখগুলো হবে লোহার। এই সাপ গুলো দংশন করতে থাকবে এবং একবার দংশন করলে ৭০ হাত মাটির নিচে চলে ।
সুতরাং এই থেকে ধারণা করা যায় ফরজ গোসল না করার শাস্তি কতটা ভয়ংকর হতে পারে সে সম্পর্কে। বিভিন্ন ধর্মীয় বই-পুস্তক থেকে জানতে পারা যায় যে যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষ অপবিত্র অবস্থায় মাটির উপরে চলাচল করতে থাকে ততক্ষণ মাটি সেই অপবিত্র মানুষটির কারণে অত্যন্ত চাপ বা ভারবোধ করে এবং সেই অপবিত্র ব্যাক্তিকে পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত অভিশাপ দিতে থাকে। এ কারণে অপবিত্র হওয়ার পরে যত দ্রুত সম্ভব গোসল করে পবিত্র হয়ে নেয়া উচিত।
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) এর একটি বর্ণনা থেকে জানতে পারা যায় যে তিনি বলেন-একদিন আমার এক প্রতিবেশীর জানাযায় সঠিক হয়েছিলাম, সেই প্রতিবেশীর জানাজা শেষ করে যখন তার লাশটি কবরে নামানো হবে সেই সময় দেখতে বিড়ালের মতন একটি অদ্ভুত জন্তু এসে কবরের ভেতর লাফালাফি শুরু করে এবং কোনভাবেই লাশটিকে কবরে নামানো যায় না বাধ্য হয়ে সেখান থেকে লোকজন আরেক জায়গায় কবর খনন করে লাশটি কবরে নামাতে উদ্যত হয়।
মৃতদেহটি কবরে নামানো হবে ঠিক সেই সময় আবার সেই বিড়ালের মতন জন্তুটি এসে এই কবরের ভেতরেও লাফালাফি শুরু করে এবং লাশটি কবরে নামাতে বাধা দেয় এই ঘটনায় লোকজন অত্যন্ত অবাক হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে তৃতীয়বার অন্যত্র গিয়ে কবর খনন করে সেখানে করা হয়। একইভাবে সেই জন্তুটি আবার গিয়ে আগের তুলনায় আরো বেশি লাফালাফি শুরু করে কিন্তু কোন উপায় না দেখে কোন ভাবে এই কবরেই লাশটিকে দাফন করে সবাই বাড়ি ফিরে যায়, কিন্তু কৌতুহলবশত আমি সেই প্রতিবেশীর স্ত্রী কে গিয়ে প্রশ্ন করলে প্রতিবেশীর স্ত্রী জানায় , সহবাসের পর তিনি ফরজ গোসলে অবহেলা করত যার ফলে ফজরের নামাজ প্রায় সময় কাজা হয়ে যেত।
নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url