এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় - এলোভেরা দিয়ে নাইট ক্রিম

আপনার যদি এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানা থাকে তাহলে , ফর্সা হওয়ার জন্য আপনাকে আর বেশি কিছু করতে হবে না। নিয়মিত কিছুদিন শুধু পোস্টে দেখানো নিয়ম অনুসরণ করে Aloe Vera জেল ব্যবহার করলেই খুব সহজে আপনি পেয়ে যেতে পারেন উজ্জ্বল ফর্সা ত্বক। আর তাই আজকে আপনাদের জানাবো এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে, এই বিষয়টির সাথে আরো জানাবো এলোভেরা দিয়ে নাইট ক্রিম বানানোর নিয়ম।

আপনার , আমার সকলের হাতের কাছে থাকা ভেষজ গুণসম্পন্ন এই অ্যালোভেরা জেল কে কাজে লাগিয়ে কিভাবে খুব সহজে ফর্সা হওয়া যায় , তা যদি আপনার জানা না থাকে তাহলে অবশ্যই আজকের এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ে নিন এবং ভালোভাবে জেনে নিন এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় এবং এলোভেরা দিয়ে নাইট ক্রিম বানানোর নিয়ম সম্পর্কে।

সূচিপত্রঃ এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় - এলোভেরা দিয়ে নাইট ক্রিম

এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

উজ্জল ফর্সা ত্বক আমাদের সকলেরই কাম্য , আর এই ফর্সা ত্বক পেতে আমরা কত কিছুই না করে থাকি। কিন্তু আমাদের আশেপাশে বা হাতের কাছে থাকা এলোভেরা দিয়েও যে উজ্জল ফর্সা ত্বক পাওয়া যায় সেটি আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা। তাই আজকে আপনাদের জানাবো এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে। আপনার যদি এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় জানা থাকেলে , অযথা পয়সা খরচ করে বাজারের কেমিক্যাল যুক্ত প্রোডাক্টগুলো ইউজ করতে হবে না। তার বদলে আপনি ঘরে বসিয়ে নিরাপদে এলোভেরা দিয়ে গায়ের রং ফর্সা করে নিতে পারবেন। সব ফর্সা করতে বিভিন্নভাবে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করা যায়, আপনারা যদি এই ব্যবহারের নিয়ম গুলো না জেনে থাকেন তাহলে অবশ্যই জেনে নিন ।তাহলে চলুন আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়। ত্বক ফর্সা করতে যেভাবে এলোভেরা জেল ব্যবহার করবেন তার নিয়মগুলো নিচে দেয়া হলো ,

এলোভেরার সাথে চন্দন পাউডার মিশিয়েঃ ত্বক ফর্সা করতে একটি পাত্রে পরিমাণ মতন চন্দন পাউডার ও এলোভেরা জেল নিন ,এর সাথে যদি কাঁচা দুধ যুক্ত করতে পারেন তাহলে আরো ভালো উপকারিতা পাওয়া যাবে। এবার এই তিনটি উপাদান খুব ভালোভাবে মিক্স করুন। চন্দন পাউডার , এলোভেরা ও কাঁচা তরল দুধের এই  প্যাকটি ভালোভাবে ত্বকে লাগান এবং ৩০-৪০ মিনিট অপেক্ষা করুন এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন । সপ্তাহে ৩-৪ দিন ব্যবহারে ফলে আপনার ত্বক অনেক বেশি উজ্জ্বল এবং ফর্সা দেখাবে।

এলোভেরা জেল ও লেবুর রসঃ রূপচর্চায় লেবুর রস এবং এলোভেরা জেল দুটো উপাদান ভীষণ উপকারী এবং ত্বকের শুষ্কতা দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে এলোভেরা জেল ও লেবুর রস অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই ত্বক ফর্সা করতে এবং ত্বক উজ্জ্বল করতে অ্যালোভেরা জেল এর সাথে লেবুর রস ভালোভাবে মিশিয়ে ১৫-২০ মিনিট তবে লাগিয়ে রাখুন নিয়মিত কিছুদিন ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বক উজ্জ্বল এবং ফর্সা হবে।

অ্যালোভেরা জেল ও মধুঃ রূপচর্চার কাজে এলোভেরা জেল যেমন যুগ যুগ ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে , মধুও রূপচর্চায় ব্যবহৃত প্রতি পরিচিত এবং কার্যকর একটি উপাদান।মধু এবং এলোভেরা জেল যদি ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়মিত ত্বকে মেসাজ করা যায় তাহলে এটি গায়ের রং ফর্সা করতে অনেক ভালো ফল দেবে।

অ্যালোভেরা জেল ও নিম পাতার রসঃ রূপচর্চায় নিমপাতা ব্যবহারের তুলনা নেই। নিম পাতার ভেতরে রয়েছে এন্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান এবং অ্যালোভেরাই রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এমপি অক্সিডেন্ট। এই দুই উপাদান মিলিয়ে যদি আমাদের ত্বকের ব্যবহার করা হয় তাহলে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর হওয়ার পাশাপাশি , ত্বক ফর্সা করতে এই উপাদান দুটি সাহায্য করবে।

এলোভেরা,বেসন, চালের গুড়া ও দুধঃ ত্বক ফর্সা করতে এলোভেরা,বেসন, চালের গুড়া ও দুধ  একসাথে  ভালোভাবে মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করুন।এই ফেসপ্যাকটি মুখসহ ত্বকে লাগিয়ে আলত ভাবে ১ মিনিট মাসাজ করুন এবং ১৫-২০ মিনিট পরে পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।এতে আপনার মুখের বা ত্বকের মৃত কোষ দূর হওয়ার পাশাপাশি ত্বক ফর্সা হবে। সপ্তাহে অন্ততপক্ষে ৩-৪দিন করার চেষ্টা করুন।

এলোভেরা জেল ও মুলতানি মাটিঃ অ্যালোভেরা জেলের মাধ্যমে ত্বক ফর্সা করার আরেকটি কার্যকরী উপায় হলো এলোভেরা জেল এর সাথে মুলতানি মাটি মিশিয়ে ব্যবহার করা। এলোভেরা জেল এর সাথে মুলতানি মাটি এবং লেবুর রস , মধু ও গোলাপজল মিশিয়ে স্মুদ একটি ফেসপ্যাক তৈরি করুন এইবার এই ব্যক্তি আপনার মুখ এবং ঘাড়ে ভালোভাবে লাগিয়ে রাখুন। ফেসপ্যাকটি শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে মুখ এবং ঘাড় পরিষ্কার করে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারের ফলে এই ফেসপ্যাকটি আপনার স্কিন ফর্সা করতে অনেক সাহায্য করবে।

অ্যালোভেরা জেল ও আলুর পেস্টঃ একটি মাঝারি সাইজের আলু পেস্ট করে এর ভেতরে এলোভেরা জেল এড করুন  এবং পারলে এর ভেতরে টমেটোর রস অথবা অলিভ অয়েল যুক্ত করুন। এইবার এই উপাদান গুলো ভালোভাবে মিশিয়ে ৩০ থেকে ৪০ মিনিটের জন্য সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন আপনার স্কিনে apply করুন। দেখবেন আপনার ত্বকের দাগ ছোপ দূর হয়ে ত্বক উজ্জ্বল ও ফর্সা হয়েছে।

অ্যালোভেরা ও টক দইঃ অ্যালোভেরার সাথে টক দই মিশিয়ে আপনি আপনার ত্বককে উজ্জ্বল এবং ফর্সা করে নিতে পারেন। টক দইয়ের ভেতরে থাকা উপাদান গুলো এবং এলোভেরার ভেতরে থাকা ভেষজ উপাদানগুলো ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে এবং নতুন কোষ জন্মাতে সাহায্য করে ও ত্বকের ওপরে থাকা বিভিন্ন ধরনের দাগ দূর করে চিন গ্লোয়িং এবং ফর্সা হতে সাহায্য করে। তাই উজ্জ্বল ফর্সা ত্বক পাওয়ার জন্য ব্যবহার করুন টক দই ও অ্যালোভেরা জেলের প্যাক।

আরো পড়ুন ঃ ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

এছাড়াও, Aloe Vera জেলের সাথে ভিটামিন ই ক্যাপসুল , শসার রস , নারিকেল তেল , আমন্ড অয়েল মিশিয়ে নিয়মিত ত্বকের ওপরে কিছুক্ষণ মাসাজ করলে, ত্বকে ব্লাড সার্কুলেশন বাড়াতে সাহায্য করে এবং ত্বক ফর্সা করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আশা করছি,  Aloe Vera দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় গুলো ভালোভাবে জেনে নিয়েছেন।

এলোভেরা দিয়ে নাইট ক্রিম

দাগ হীন , উজ্জ্বল , সুন্দর স্কিন পেতে এবং ত্বক থেকে বয়সের ছাপ দূর করতে অর্থাৎ রূপচর্চার জন্য আমরা অনেকেই নাইট ক্রিম ইউজ করে থাকি। আরে এই নাইট ক্রিম গুলো বাছাই করতে বিভিন্ন সময় আমাদের অনেক ঝামেলায় পড়তে হয় আবার কখনো বোঝা যায় না যেই যেই নাইট ক্রিম টা আমরা ভালো বা উন্নত ব্র্যান্ডের বলে ব্যবহার করছি সেটি আসল নাকি নকল। বাজার থেকে কেনা এই ধরনের নাইট ক্রিম গুলো অনেক সময় আমাদের ত্বকে র‍্যাশ , ব্রণ ইত্যাদি ধরনের সমস্যা তৈরি করে। আর এই সকল সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য আজকে আপনাদেরকে জানাবো নিরাপদে কিভাবে এলোভেরা দিয়ে নাইট ক্রিম বানিয়ে ইউজ করতে পারেন। আপনি যদি কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা ত্বকের কোন ক্ষতি ছাড়া নাইট ক্রিম ইউজ করতে চান তাহলে অবশ্যই অ্যালোভেরা দিয়ে নাইট ক্রিম বানানোর উপায় সম্পর্কে  জেনে নিন।

অ্যালোভেরা জেল দিয়ে নাইট ক্রিম বানানোর জন্য এর সাথে যুক্ত করুন আমন্ড অয়েল , লেভেন্ডার অয়েল এবং গোলাপ জল। এই চারটি উপাদান ভালোভাবে মিক্স করে ক্রিম তৈরি করুন। এই উপাদান গুলো একসাথে কিছুক্ষণ ভালোভাবে নাড়াচাড়া করলে দেখবেন ক্রিম বা জেলি রাখার ধারণ করেছে। এই ক্রিমটি আপনি প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে নাইট ক্রিম হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। ব্যবহারের জন্য অবশ্যই লাগানোর পূর্বে আপনার ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার করে নেবেন। ক্রিমটি একসাথে বেশি করে বানিয়ে এয়ারটাইট কাঁচের বয়ামে এক সপ্তাহ পর্যন্ত রেফ্রিজারেটরে রেখে সংরক্ষণ করতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ ত্বকের যত্নে সজনে পাতার উপকারিতা

তাছাড়া আপনি এলোভেরা গিয়ে নাইট ক্রিম বানানোর জন্য , শুধুমাত্র এলোভেরা জেল এর সাথে একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভালোভাবে মিশিয়ে , প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে নিতে পারেন। এই এলোভেরা জেল এবং ভিটামিন ই ক্যাপসুলও খুব ভালো নাইট ক্রিমের কাজ করবে। এলোভেরা জেল ও ভিটামিন ই ক্যাপসুলের তৈরি এই নাইট ক্রিমটি আপনার ত্বক মশ্চারাইজ  করার পাশাপাশি মুখের বিভিন্ন ধরনের কালো দাগ ও বয়সের ছাপ দূর করতে সাহায্য করবে। আশা করছি Aloe Vera জেল দিয়ে নাইট ক্রিম বানানোর নিয়ম বুঝতে পেরেছেন।

মন্তব্য, এতক্ষণ এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে নিশ্চয়ই ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন ,যে খুব সহজে কিভাবে অ্যালোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়া যাই এবং কিভাবে এলোভেরা দিয়ে নাইট ক্রিম বানিয়ে সেটি ইউজ করা যায়। আশা করছি এখন থেকে আর শুধু শুধু টাকা-পয়সা খরচ করে বাজারের কেমিক্যাল যুক্ত প্রোডাক্ট গুলো ব্যবহার করে আপনাকে আর ত্বক ফর্সা করতে হবে না এবং  আসল নাকি নকল এ ব্যাপারে নাইট ক্রিম এর জন্য চিন্তিত হতে হবে না কারণ খুব সহজে আপনি এলোভেরা দিয়ে নাইট ক্রিম বানিয়ে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই ব্যবহার করতে পারবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url