মাসিক না হলে কি বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে - দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায়

মাসিকের সাথে প্রেগনেন্সির বিষয়টি সম্পর্কযুক্ত। বিবাহিত মেয়েদের মাসিক মিস হওয়া বা মাসিক না হওয়া হলো প্রেগন্যান্সির সবচেয়ে বড় একটি লক্ষণ। তবে শুধু প্রেগনেন্সির কারণেই নয় মাসিক না হওয়ার পিছনে আরো কারণ থাকতে পারে আর আজকে আপনাদেরকে মাসিক না হলে কি বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এই বিষয়টি উপরে বিস্তারিত ভাবে জানাবো।

মাসিক অত্যন্ত সেনসিটিভ একটি বিষয় যার উপরে ডিপেন্ড করে ভবিষ্যতে মা হওয়ার সম্ভাবনা। অর্থাৎ বুঝতেই পারছেন মাসিক যদি নিয়মিত না হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা হতে পারে অথবা কোন জটিল রোগের দেখা দিতে পারে , আর যেহেতু মাসিকের সাথে বাচ্চা হওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত নিবিড় ভারতের জড়িত তাই অবশ্যই বিস্তারিত ভাবে জানা উচিত মাসিক না হলে কি বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ? চলুন তাহলে আর দেরি না করে সেনসেটিভ এই বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

সূচিপত্রঃ মাসিক না হলে কি বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে - দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায়

দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায়

অনিয়মিত মাসিক হলে অনেক সময় আমাদেরকে মানসিক চাপের মুখে পড়তে হয়। মাসিক না হওয়ার ফলে টেনশন হতে থাকে কি কারনে মাসিক হলো না সে বিষয়ে। মাসিক অনিয়মিত বা মাসিক বন্ধ হলে টেনশন না করে দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায় গুলো অনুসরণ করে আপনি মাসিক রেগুলার করে নিতে পারেন । আপনার যদি দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায় গুলো সম্পর্কে জানা না থাকে তাহলে সেটি এখনই জেনে নিন। দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায় গুলো হলো,

কাঁচা পেঁপেঃ মাসিক বন্ধ হয়ে গেলে নিয়মিত কাঁচা পেঁপে খাওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ কাঁচা পেঁপে  রেগুলার মাসিক হওয়ার ক্ষেত্রে ভীষণ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে অথবা যেকোনো উপায়ে কাঁচা পেঁপের রস বের করে দিনে অন্ততপক্ষে দুইবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।

আরো পড়ুনঃ মেয়েদের অনিয়মিত মাসিকের কুফল

অ্যালোভেরাঃ দ্রুত মাসিক হওয়ার আরেকটি দুর্দান্ত উপায় হল অ্যালোভেরার রস খাওয়া। মধুর সাথে এলোভেরার রস বা জেল যেটাই বলেন না কেন সেটি বের করে সকালবেলা খাওয়ার চেষ্টা করুন। এটি আপনার দ্রুত মাসিক হওয়ার জন্য কাজ করবে।

ভিটামিন সিঃ দ্রুত মাসিক হওয়ার জন্য ভিটামিন সি জাতীয় খাবার গুলো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সি জাতীয় খাবার গুলো সংযুক্ত করলে এটি আপনার মাসিক দ্রুত ভরানোর ক্ষেত্রে ভীষণ ভালো কাজ করবে।

যৌন মিলনঃ আপনি যদি বিবাহিত হয়ে থাকেন তাহলে দ্রুত মাসিক হওয়াতে চান তাহলে ঘন ঘন যৌন মিলন করুন। যৌন মিলনের সময় শরীরের বিভিন্ন ধরনের হরমোন নিঃসরণের মাত্রা বেড়ে যায়। আর এই অতিরিক্ত হরমোন নিঃসরণের ফলে বন্ধ মাসিক ক্লিয়ার হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই দ্রুত মাসিক হওয়ার জন্য ঘন ঘন যৌন মিলন করুন।

মসলার ব্যবহারঃ মসলার মধ্যে যে বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা রয়েছে এটি আমরা কম বেশি সবাই জানি। তবে কিছু কিছু মসলার মধ্যে দ্রুত মাসিক হওয়ার উপাদান রয়েছে এই মসলাগুলো হল ধনে, আদা, মেথি ইত্যাদি এই মেথি গুলো মাসিক দ্রুত হওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করে বলে প্রেগন্যান্ট মহিলাদের জন্য ডাক্তাররা এই মসলাগুলো এড়িয়ে চলার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকে।

মাসিক না হলে কি বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে

মেয়েদের মাসিক হলো বাচ্চা উৎপাদনের প্রাথমিক প্রক্রিয়া। যাদের শুরু থেকেই মাসিকের সমস্যা থাকে যেমন তাদের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বাচ্চা নিতে বেশ অসুবিধা পোহাতে হয়। অনিয়মিত মাসিকের ব্যাপারে শুরু থেকে সচেতন না হলে শেষ পর্যন্ত একটি মেয়ে বন্ধা  হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। এখন অনেকেই এই প্রশ্নটি করেন যে মাসিক না হলে কি বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে? আজকে এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে মাসিক না হলে কি বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এই প্রশ্নের উত্তরটি দেয়ার চেষ্টা করব। 

যদিও বিবাহিত মেয়েদের ক্ষেত্রে মাসিক বন্ধ হওয়া পেটে বাচ্চা আসার একটি প্রধান কারণ হতে পারে কিন্তু শুধু যে এই কারণেই মাসিক বন্ধ হবে বিষয়টি এমন নয়, বেশ কিছু শারীরিক সমস্যার কারণেও মাসিক বন্ধ হতে পারে , আর এ সমস্যাটি হতে পারে বিবাহিত বা অবিবাহিত যেকোন  নারীদেরই। মাসিক না হওয়ার কারণ হতে পারে - শরীরের পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব , দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপ , পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম , থাইরয়েড , মাত্রা অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম , স্বাভাবিকের তুলনায় শরীরের ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস পাওয়া , জরায়ু সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা , হরমোনার সমস্যা। অর্থাৎ মাসিক না হওয়া বা মাসিক বন্ধ হওয়া ,এটি দুই রকম ভাবে হতে পারে। যথা,

  • শারীরিক জটিলতার কারণে মাসিক না হওয়া
  • পুরুষের সাথে SEX  বা সহবাসের পর মাসিক না হওয়া

শারীরিক জটিলতার কারণে মাসিক না হওয়াঃ শারীরিক জটিলতার কারণে যদি মাসিক না হয় তাহলে কখনো এটি শুভ লক্ষণ বা শুভ বার্তা বয়ে নিয়ে আসে না। আপনাদেরকে আগেই জানিয়েছি যে মাসিক হলো মেয়েদের বাচ্চা জন্মদানের বাচ্চা ধারণের প্রথম ধাপ। শারীরিক সম্পর্কের আগে বা পরে যদি আপনার শারীরিক সমস্যার কারণে মাসিক বন্ধ থাকে তাহলে অবশ্যই এটি নিয়ে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত কারণ মাসিক নিয়মিত না হলে মেয়েদের বাচ্চা নিতে অথবা বাচ্চা কনসেপ করতে অনেক অসুবিধায় পড়তে হয়। মাসিক না হওয়ার ফলে শুধু বাচ্চার কনসেপর করার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র অসুবিধা জটিলতায় হয় না মাসিক বন্ধ থাকলে বা অনিয়মিত মাসিক হলে বাচ্চা উৎপাদন ক্ষমতার সম্পূর্ণ রূপে বাধাগ্রস্ত হয় এবং মেয়েরা বন্ধ্যা হয়ে যায় ।

পুরুষের সাথে SEX  বা সহবাসের পর মাসিক না হওয়াঃ আপনার মাসিকের যদি কোন সমস্যা না থাকে অথবা আপনার মাসিক যদি রেগুলার থাকে এবং পুরুষের সাথে সেক্স বা সহবাস করার পরে সেই মাসে বন্ধ হয় তাহলে হ্যাঁ এটি প্রেগন্যান্ট হওয়া বা বাচ্চা হওয়ার লক্ষণ। কারণ ফ্যালোপিয়ান টিউবের মধ্যে মেয়েদের শুক্রাণু এবং ছেলেদের ডিম্বাণু মিলিত হয়ে বাচ্চা উৎপাদনের প্রক্রিয়াটি শুরু হয়। নারী এবং পুরুষের মিলনের ফলে শুক্রাণু এবং ডিম্বাণু মিলিত হয়ে বাচ্চা হওয়ার প্রক্রিয়াটি শুরু হলে মেয়েদের মাসিক হয় না এবং এই মাসিক কত দিন হয় না যতদিন না গর্ভের সন্তান ভূমিষ্ঠ হচ্ছে । সুতরাং বুঝতেই পারছেন পুরুষের সাথে সহবাস করে মেয়েদের যদি মাসিক বন্ধ হয় তাহলে এটি গর্ভধারণ অথবা বাচ্চা হওয়ার লক্ষণ হিসেবে ধরে নেওয়া যেতে পারে। তবে ভালোভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার আগ পর্যন্ত কোন ব্যাপারেই পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া উচিত নয়।

আরো পড়ুনঃ হস্তমৈথনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচার উপায়

সুতরাং , শারীরিক জটিলতার কারণে যদি মাসিক বন্ধ হয় বা নিয়মিত মাসিক না হয় তাহলে এর ব্যাপারে সময় নষ্ট না করে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত কারণ এর কারণে ভবিষ্যতে হতে পারে বাচ্চা কনসেপ্ট না করার সমস্যা এবং বাচ্চা উৎপাদন ক্ষমতা কমে যাওয়া কোন কোন ক্ষেত্রে বন্ধুত্বের মতো সমস্যাও ধরতে পারে আর যদি শারীরিক কোন সমস্যা না থাকে এবং সহবাসের পরে মাসিক বন্ধ হয় সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ে মাসিক না হলে কি বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বেশি তবে এ ব্যাপারটি পুরোপুরি শিওর হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা গুলো করিয়ে নিতে হবে।

মন্তব্য , কোন অবস্থাতেই অনিয়মিত মাসিকের ব্যাপারটি হালকাভাবে নেয়া উচিত নয় কেননা এর ওপরে ভিত্তি করে ভবিষ্যতে জটিলতা মুক্তভাবে মা হওয়ার বিষয়টি , তাই অবশ্যই আপনার যদি অনিয়মিত মাসিক সমস্যা থেকে থাকে তাহলে অচিরেই এই সমস্যা দূর করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। আর দ্রুত মাসিক হওয়ার ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করার পরেও যদি এই সমস্যা দূর না হয় তাহলে সরাসরি ডাক্তারি পরামর্শ নিন এবং চিকিৎসা শুরু করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url