তারাবির নামাজের নিয়ত - তারাবির নামাজের দোয়া ও মোনাজাত

রমজান মাসের তারাবির নামাজ হলো সুন্নতে মুয়াক্কাদা সুতরাং উপযুক্ত কারণ ছাড়া এই নামাজ না পড়লে কঠিন গুনাগারের হতে হবে। অন্যান্য নামাজের মতন তারাবির নামাজেরও একটি নিয়ত রয়েছে। যথাযথভাবে তারাবির নামাজ পড়ার পূর্বে অবশ্যই এর নিয়ত জেনে নিতে হবে। 
তারাবির নামাজ মোট ২০ রাকাত আর এই ২০ রাকাত নামাজ একটানা না পড়ে , কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে পড়া উত্তর। তবে নামাজের মধ্যে বিরতি দেয়ার অর্থ এই নয় যে এই সময়টি শুয়ে বসে কাটানো। নামাজের মধ্যে বিরতি দেওয়ার অর্থ হল , চার রাকাত নামাজ পড়ার পরে বসে কিছুক্ষণ দোয়া , মোনাজাত , তসবি তাহলীল পাঠ করা। তারাবির নামাজের বিরতির সময়ের জন্য নির্দিষ্ট দোয়া ও মোনাজাত রয়েছে। আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে তারাবির নামাজের দোয়া এবং মোনাজাত দুটি আপনারা জানতে পারবেন।

সূচিপত্রঃ তারাবির নামাজের নিয়ত - তারাবির নামাজের দোয়া ও মোনাজাত

তারাবীর নামাজ 

রমযান মাসের এশার নামাজের পর এবং বিতরের পূর্বের দু'দু'রাকা'ত করে দশ সালামে বিশ রাকআ'ত নামায পড়তে হয়, একেই তারাবীর নামাজ বলে। পুরুষ -স্ত্রীলোক রোযাদার এমনকি বে-রোযাদারের প্রতিও এটি পড়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। রমযান মাসের চাঁদ দেখে তারাবীহ শুরু করতে হয় এবং শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখলে পড়া বন্ধ করতে হয়। জামায়াতের সাথে তারাবীর নামায আদায় করা সুন্নাতে কিফায়া। মহল্লার কতকলোকে জামায়াতের সাথে আদায় করলে সকলের পক্ষ হতে আদায় হয়ে যাবে কিন্তু সাওয়াব হতে বঞ্চিত হবে। ঘরেও তারাবীর নামায পড়া যায়। তবে মসজিদে পড়ার ফযীলত হতে বঞ্চিত থাকবে। মেয়ে লোকে তারাবী ঘরে পড়বে। তারাবী দু'রাকাআ'ত পড়ে কিছু সময় বসবে। এই সময় দরূদ শরীফ বা অন্য কোন দোয়া পড়তে পারে। চার রাকআ'তর পর চার রাকআ'ত পরিমাণ সময় অপেক্ষা করা উত্তম। এই সময় একাকী নফল নামায, তাসবীহ তাহলীল বা তারাবীর দোয়া পড়বে। প্রতি চার রাকআ'ত পর মুনাজাত করা যায়,অথবা ২০ রাকআ'ত শেষ করে মুনাজাত করা যায়। জামায়াতের সাথে তারাবীহ পড়লে ক্বিরাত উচ্চ শব্দে পড়তে হয়। একাকী পড়লে উচ্চ শব্দে বা নিঃশব্দে উভয় অবস্থায় পড়া যায়। তারাবীর নামায জামায়াতে পড়লে বিতরের নামাযও জামায়াতে পড়বে এবং উচ্চ শব্দে পড়বে। তারাবী বিতরের পরেও পড়া যায়। তবে পূর্বে পড়াই উত্তম।

তারাবির নামাজের নিয়ত

نَوَيْتُ اَنْ اُصَلِّىَ للهِ تَعَالَى رَكْعَتَى صَلَوةِ التَّرَاوِيْحِ سُنَّةُ رَسُوْلِ اللهِ تَعَالَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اللهُ اَكْبَرْ

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন্ উছ্বল্লিয়া লিল্লা-হি তাআ'-লা- রাক্ আ'তাই ছ্বলা -তিত্ তারাবীহি সুন্নাতু রাসূলিল্লা-হি তাআ'-লা-মুতাওয়াজ্জিহান্ ইলা-জিহাতিল্ কা'বাতিশ্ শারী-ফাতী আল্লা-হু আক্'বার্। বাংলা নিয়ত : আমি কিবলকমুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে তারাবীর দু'রাকআ'ত সুন্নাত নামাজ আদায় করার জন্য নিয়ত করছি ; আল্লাহু আকবার।

তারাবির নামাজের দোয়া

سُبْحانَ ذِي الْمُلْكِ وَالْمَلَكُوتِ سُبْحانَ ذِي الْعِزَّةِ وَالْعَظْمَةِ وَالْهَيْبَةِ وَالْقُدْرَةِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْجَبَرُوْتِ سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْحَيِّ الَّذِيْ لَا يَنَامُ وَلَا يَمُوْتُ اَبَدًا اَبَدَ سُبُّوْحٌ قُدُّوْسٌ رَبُّنا وَرَبُّ المْلائِكَةِ وَالرُّوْحِ
সুব্'হা-না যিল্ মুল্'কি ওয়াল্ মালাকূ-তি। সুবহা-না যিল্ ঈ'ঝঝাতি ওয়াল্ আ'জমাতি ওয়াল্ হায়বাতি ওয়াল্ কুদরাতি ওয়াল্ কিবরিইয়া-ই ওয়াল্ জাবারু-ত্। সুবহা -নাল্ মালিকিল্ হায়্যিল্ লাযী -লা-ইয়ানা -মু ওয়ালা-ইয়ামূ -তু আবাদান্ আবাদা। সুববূ -হুন্ কুদদূসুন্ রব্বুল মালা-ইকাতি ওয়ার্ রূহ।

তারাবির নামাজের মোনাজাত

اَللَهُمَّ اِنَّا نَسْئَالُكَ الْجَنَّةَ وَ نَعُوْذُبِكَ مِنَ النَّارِ يَا خَالِقَ الْجَنَّةَ وَالنَّارِ- بِرَحْمَتِكَ يَاعَزِيْزُ يَا غَفَّارُ يَا كَرِيْمُ يَا سَتَّارُ يَا رَحِيْمُ يَاجَبَّارُ يَاخَالِقُ يَابَارُّ - اَللَّهُمَّ اَجِرْنَا مِنَ النَّارِ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ- بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّحِمِيْنَ
আল্লা-হুম্মা ইন্না -নাসআলুকাল্ জান্নাতা ওয়া নাউ'-যুবিকা মিনাননা-রি। ইয়া-খা-লিকুল্ জান্নাতি ওয়ান্না-রি। বিরহমাতিকা ইয়া-আঝীঝু, ইয়া গাফফা-রু ইয়া -কারীমু, ইয়া-সাত্তা-রু, ইয়া- রহী-মু, ইয়া-জাববা-রু, ইয়া খা-লিকু ইয়া-বাররু। আল্লা -হুম্মা আজিরনা -মিনাননা-রি ইয়া -মুজীরু, ইয়া -মুজীরু,ইয়া -মুজীরু বিরহমাতিকা ইয়া - আরহানার রা-হিমী-ন্। 
অর্থ : হে আল্লাহ তাআ'লা! আমরা তোমার কাছে বেহেশতের আবেদন করছি এবং দোযখের আগুন হতে রক্ষা পাওয়ার প্রার্থনা করছি। হে বেহেশত দোযখ সৃজনকারী। তোমারই অনুগ্রহে হে মহা প্রতাপশালী, মার্জনাকারী, হে দানশীল, হে আবরণকারী, হে দয়াময়, হে শক্তিশালী, হে সৃষ্টিকর্তা, হে অনুগ্রহকারী, হে আল্লাহ, আমাদেরকে দোযখের আগুন হতে বাচাও — হে রক্ষাকারী, হে ররক্ষাকারী, হে রক্ষাকারী, তোমার অনুগ্রহ দ্বারা, হে দয়ালু ও সর্বশ্রেষ্ঠ দাতা।
এই মোনাজাতটি তারাবির নামাজের প্রতি চার রাকাতের পর করা যায় আবার , ২০ রাকাত নামাজ শেষ করার পরেও করা যায়।
মন্তব্য আপনি যদি একজন মুসলমান হয়ে থাকেন তাহলে , কোন অবস্থাতেই তারাবির নামাজ বাদ দেয়া যাবে না। আমাদের উপরে অর্পিত প্রতিদিনের এই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যথাযথভাবে পড়ার পাশাপাশি রমজান মাসে তারাবির নামাজও সমান গুরুত্ব সহকারে পড়তে হবে কেননা তারাবির নামাজ হলো সুন্নতে মুয়াক্কাদা। আল্লাহপাক আমাদের সকলকে যথাযথভাবে নামাজ , সিয়াম পালনের মধ্যে দিয়ে নেক হায়াতের তৌফিক দান করুন (আমিন)

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url