লম্বা হওয়ার ১৩টি খাবার - লম্বা হওয়ার ৫টি ব্যায়াম

যাদের দৈহিক উচ্চতা কম থাকে তাদেরকে অনেক সময় হাসির পাত্র হতে হয়।এই বিব্রত কর পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্য আজকে আমরা এই পোস্টটি আলোচনা করব লম্বা হওয়ার উপায় সম্পর্কে। এই পোস্টটি থেকে আপনি জেনে নিতে পারবেন লম্বা হওয়ার উপায়, লম্বা হওয়ার খাবার এবং লম্বা হওয়ার ব্যায়াম সম্পর্কে। তবে এ বিষয়গুলো জানতে হলে অবশ্যই পোস্টটি আপনাকে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।


বেটে শরীর নিয়ে যারা সমস্যায় রয়েছেন তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি লেখা হয়েছে। আপনি যদি আপনার শরীরের উচ্চতা বাড়াতে চান তাহলে পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে জেনে নিন লম্বা হওয়ার উপায়, লম্বা হওয়ার খাবার এবং লম্বা হওয়ার ব্যায়ামগুলো সম্পর্কে। এবং লম্বা হওয়ার এই পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করে আপনার উচ্চতাকে একটি আকর্ষণীয় পর্যায়ে নিয়ে আসুন।

পোস্ট সূচীপত্রঃ লম্বা হওয়ার উপায় - লম্বা হওয়ার খাবার - লম্বা হওয়ার ব্যায়াম

লম্বা হওয়ার উপায়

বংশগতভাবে অনেকের উচ্চতা কম হয়, আর উচ্চতা কম হওয়ার কারণে অনেক সময় অনেকের কটু কথার সম্মুখীন হতে হয়। লম্বা হওয়া বা খাটো হওয়া ওপর অনেকটা বংশগতির প্রভাব থাকলেও, কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলার ফলে আমরা আমাদের হাইট বা উচ্চতা অনেকাংশের নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। আজকে আমরা আলোচনা করব লম্বা হওয়ার উপায় সম্পর্কে। লম্বা হওয়ার উপায় গুলো সম্পর্কে  আপনাদেরকে জানানোর জন্য, নিচে লম্বা হওয়ার উপায় গুলো আলোচনা করা হলো।

  • পুষ্টিকর খাবার খাওয়া
  • নিয়মিত শরীর চর্চা করা
  • পর্যাপ্ত ঘুমের ব্যবস্থা করা
  • মেরুদন্ড সোজা করে হাঁটাচলা করা
  • অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করা
  • মানসিক চাপমুক্ত থাকা
  • শরীরে রোদ লাগানো

পুষ্টিকর খাবার খাওয়াঃ লম্বা হওয়ার প্রথম শর্ত হলো পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা। আপনি যদি পুষ্টিকর খাবার না খান তাহলে শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণের অভাব দেখা দিবে এবং যার ফলে, শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটবে না। এ কারণে শারীরিক বৃদ্ধির জন্য আপনাকে অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার বিশেষ করে প্রোটিন , ক্যালসিয়াম এবং কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার গুলো বেশি খেতে হবে।

অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করাঃ শারীরিক বা দৈহিক উচ্চতা বাড়ানোর জন্য আপনাকে অস্বাস্থ্যকর খাবারগুলো পরিহার করতে হবে। কারণ অস্বাস্থ্যকর খাবারগুলো বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করার পাশাপাশি আপনার শরীরের বাড়তি কমিয়ে দেয় , এ কারণে শারীরিক বৃদ্ধি বা লম্বা হওয়ার জন্য অবশ্যই অস্বাস্থ্যকর খাবার সম্পূর্ণরূপে পরিহার করতে হবে।

নিয়মিত শরীর চর্চা করাঃ শরীরের বৃদ্ধি ঘটানোর জন্য আপনাকে অবশ্যই নিয়মিত শরীফ চর্চা বা শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে। সপ্তাহে অন্ততপক্ষে ৩-৪ দিন ৩০-৪৫ মিনিট শরীর চর্চা করতে হবে এছাড়াও, শরীর সুস্থ রাখতে এবং শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটানোর জন্য প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ৩০ মিনিট হাটাহাটি করতে পারেন।

পর্যাপ্ত ঘুমের ব্যবস্থা করাঃ লম্বা হওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই পর্যাপ্ত ঘুমের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিদিন রাতে অন্ততপক্ষে.৬-৭ ঘন্টা সাউন্ড স্লিপ হওয়া অত্যন্ত জরুরী। রাতে পর্যাপ্ত ঘুম আপনার শরীর লম্বা করতে সাহায্য করবে।

মেরুদন্ড সোজা করে হাঁটাচলা করাঃ অনেকে দেখা যায় ঘাড় বাঁকা করে বা বলতে পারেন মেরুদন্ড বাঁকা করে হাঁটাচলা করার অভ্যাস থাকে, বাঁকা হয়ে হাটা আপনার লম্বা হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা প্রদান করে  এই কারণে আপনি যদি শরীরের স্বাভাবিক উচ্চতা চান বা লম্বা হতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে মেরুদন্ড এবং ঘাড় সোজা করে হাঁটাচলা করার অভ্যাস করতে হবে।

মানুষের চাপমুক্ত থাকাঃ মানসিক চাপমুক্ত থাকলে শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটে, আর এই কারণেই লম্বা হতে হলে অবশ্যই মানসিক চাপমুক্ত থাকা প্রয়োজন। আপনি যখন মানসিক চাপ মাপ থাকবেন তখন আপনার শরীরের অভ্যন্তরের বিভিন্ন অর্গান গুলোর স্বাভাবিক প্রক্রিয়া চলতে থাকবে এবং আপনি যার ফলে আপনার শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটবে এবং আপনি লম্বা হতে পারবেন।

শরীরে রোদ লাগানোঃ শরীরের বৃদ্ধি ঘটানোর জন্য বা বলতে পারেন লম্বা হওয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো ভিটামিন ডি। আমরা প্রায় সকলেই জানি, রোদে ভিটামিন ডি পাওয়া যায় এ কারণে আপনি যদি নিয়মিত কিছুটা সময় রোদে হাঁটাহাঁটি বা কাজকর্ম করেন তাহলে এর ফলে আপনার শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি পাবে যার ফলে আপনার শরীর লম্বা হবে।

লম্বা হওয়ার খাবার

এবার আমরা জেনে নেব লম্বা হওয়ার খাবার সম্পর্ক। কোন কোন খাবার গুলো লম্বা হতে সাহায্য করে সে খাবার গুলোর নাম যদি আপনার জানা না থাকে তাহলে, লম্বা হওয়ার খাবার গুলো সম্পর্কে জেনে নিন। জিনগত কারণে মানুষের শরীর লম্বা এবং খাটো হলেও, বেশ কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো খেলে আমরা আমাদের শারীরিক উচ্চতা বেশ খানিকটা বাড়াতে পারি। চলুন এবার আমরা তাহলে জেনে লম্বা হওয়ার খাবার গুলো সম্পর্ক। লম্বা হওয়ার জন্য যে খাবার গুলো সাহায্য করে সেগুলো হলো,

  • দুধ বা দুধ জাতীয় খাবার
  • ডিম
  • ডাল জাতীয় খাবার
  • বাদাম
  • আপেল
  • কলা
  • ডার্ক চকলেট
  • মুরগির মাংস
  • মিষ্টি কুমড়ার বিচি
  • সয়াবড়ি
  • গাজর
  • পালংশাক
  • বরবটি

দুধ বা দুধ জাতীয় খাবারঃ দুধের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন , বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন যেগুলো শরীর লম্বা করতে ভীষণ কার্যকরী। আপনি যদি আপনার উচ্চতা বৃদ্ধি করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই প্রতিদিন ১-২ গ্লাস খাঁটি দুধ পান করতে হবে।

ডিমঃ ডিমের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই , বি ১২ , প্রোটিন, সেলিনিয়াম ,  থায়ামিন,  ক্যালসিয়াম ,বায়োটিন, ফসফরা ইত্যাদি উপাদান ,আর এই উপাদান গুলো শরীরের বৃদ্ধি ঘটাতে ভীষণ কার্যকরী। আর এই কারণে দুধ বা দুধ জাতীয় খাবার খেলে শরীর লম্বা হতে সাহায্য করে।

ডাল জাতীয় খাবারঃ শরীর লম্বা হওয়ার আরেকটি অত্যাবশ্যকীয় খাবার হল ডাল জাতীয় খাবার। ডাল জাতীয় খাবার গুলো শরীরের বৃদ্ধি সাধন করে থাকে এগুলোর মধ্যে রয়েছে মটরশুটি, মসুর, ছোলা ইত্যাদি। ডাল জাতীয় খাবার গুলোর মধ্যে থেকে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট , ফাইবার , আইরন পাওয়া যায়। ডালের মধ্যে থাকা এই উপাদান গুলো শরীরের বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে।

বাদামঃ বাদামের বিভিন্ন উপকারিতার মধ্যে শরীরের বৃদ্ধি ঘটানো একটি উল্লেখযোগ্য উপকারিতা। নিয়মিত কিছু বাদাম খাওয়ার অভ্যাস করতে পারলে এটি শারীরিক বৃদ্ধি ঘটাতে বেশ ভালো কাজ করে। এই কারণে শরীর লম্বা করতে হলে আপনার খাদ্য তালিকায় বাদাম এবং বাদাম জাতীয় খাবার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

আরো পড়ুনঃবাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - কাঁচা বাদামের উপকারিতা

আপেলঃ মানুষের শরীর স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায় প্রায় 18 বছর পর্যন্ত। এই সময়টার মধ্যে কেউ যদি নিয়মিত আপেল খাওয়ার অভ্যাস করতে পারে তাহলে তার শরীরের উচ্চতা বাড়ানো সম্ভব। আপেলের বিভিন্ন ধরনের পাশাপাশি উপকারিতার পাশাপাশি, দৈহিক বা শারীরিক উচ্চতা বাড়ানো গুরুত্বপূর্ণ একটি উপকারিতা। কারণে প্রতিদিন একটি করে আপেল খাওয়ার অভ্যাস করুন এতে আপনার দৈহিক উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে।

কলাঃ কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়াম শরীরের হাড় গঠনে সাহায্য করে এবং শরীরের বৃদ্ধি সাধন করে। প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকায় কলা খেলে একদিকে যেমন হাড় মজবুত হয় অন্যদিকে তেমন শারীরিক উচ্চতা বৃদ্ধি পায়।

আরো পড়ুনঃ কলা খাওয়ার উপকারিতা

ডার্ক চকলেটঃ আমরা অনেকেই চকলেট কে শরীরের জন্য ক্ষতিকর মনে করলেও ডার্ক চকলেটে থাকা ক্যালোরি শরীরের বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে। এ কারণে সপ্তাহে অন্ততপক্ষে.৩-৪ কিছু পরিমাণ ডার্ক চকলেট শিশুদেরকে খাওয়ানো গেলে এদের শারীরিক বৃদ্ধি ঘটে এবং ডাস্ট চকলেট লম্বা হওয়ার ক্ষেত্রেও বেশ ভালো কাজ করে।

মুরগির মাংসঃ শরীরের কিছু এবং বেশি গঠনের সাহায্য করে মুরগির মাংস কারণ মুরগির মাংসের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। মুরগির মাংসে শুধু প্রোটিনই নয় এতে প্রচুর পরিমাণে আমিষ আমি রয়েছে , এই কারণে শরীর লম্বা করার একটি আদর্শ খাবার হল মুরগির মাংস।

সয়াবড়িঃ উদ্ভিদ প্রোটিনের একটি অন্যতম উৎস হলো সয়াবড়ি ।সয়াবড়ি রয়েছে  ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং ভিটামিন যার ফলে সয়াবড়ি ফেলে শরীরের বৃদ্ধি ঘটে।

গাজরঃ গাজরে থাকা ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ , ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং দৃষ্টিশক্তি বাড়ানোর  পাশাপাশি শরীরের বৃদ্ধি ঘটাতেও সাহায্য করে, কারণ গাজরে ভিটামিন এ ও সি এর পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে যা হার মজবুত করে শারীরিক উচ্চতা বাড়াতে সাহায্য করে।

মিষ্টি কুমড়ার বিচিঃ আমরা অনেকেই রান্না করার সময় মিষ্টি কুমড়ার বিচি ফেলে দিই, মিষ্টি কুমড়ার বিচির উপকারিতা জানিনা বলেই হয়তো আমরা এ কাজটি করে থাকি। আমাদের মধ্যে অনেকেই জানিনা যে মিষ্টি কুমড়ার বিচি খেলে শরীরের ড্যামেজ কোষগুলো প্রাণ ফিরে পায় এবং নতুন কোষ গঠনেও মিষ্টি কুমড়ার বিচি ভীষণ সাহায্য করে, এগুলোর পাশাপাশি মিষ্টি শরীরের উচ্চতা বাড়াতেও কাজ করে।

পালং শাকঃ লম্বা হওয়ার জন্য আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় পালং শাক যুক্ত করতে পারেন। কারণ শরীর লম্বা করার জন্য পালং শাক অত্যান্ত আদর্শ একটি খাবার। পালং শাকে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং বিভিন্ন ধরনের শরীর বর্ধক পুষ্টি , যার ফলে পালং শাক খেলে প্রাকৃতিকভাবে লম্বা হওয়ার সুযোগ থাকে।

বরবটিঃ লম্বা হওয়ার আরেকটি খাবারের নাম হলো বরবটি। খাদ্য তালিকায় বরবটি যুক্ত করার ফলে আপনি প্রাকৃতিক ভাবে লম্বা হতে পারবেন। বরবটি খেলে শরীরের রক্ত চলাচল প্রক্রিয়া স্বাভাবিক থাকে এবং শরীর স্বাভাবিক নিয়মে বৃদ্ধি পায়।

লম্বা হওয়ার বৈজ্ঞানিক উপায়

এখন আমরা আলোচনা করব লম্বা হওয়ার বৈজ্ঞানিক উপায় লম্বা হওয়ার বৈজ্ঞানিক উপায় সম্পর্কে। চলুন তাহলে দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক লম্বা হওয়ার বৈজ্ঞানিক উপায় সম্পর্কে। বংশগত কারণে অনেক ক্ষেত্রেই পিতা-মাতার দৈহিক উচ্চতা সন্তানদের ওপর প্রভাব বিস্তার করে কিন্তু পিতা-মাতার শারীরিক বা দৈহিক উচ্চতা সন্তানের উপর প্রভাব বিস্তার করলেও কিছু বৈজ্ঞানিক টিপস ফলো করে আমরা আমাদের উচ্চতা অনেকটাই বাড়াতে পারি। যে সকল নিয়ম কানুন মেনে চলে বৈজ্ঞানিকভাবে লম্বা হওয়া যায় সেই উপায় গুলো জেনে নেয়া যাক।

Acupressure: Acupressure হল এক ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি, এই পদ্ধতিতে শরীরের নির্দিষ্ট স্থান গুলোতে চাপ প্রয়োগ করে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। লম্বা হওয়ার বৈজ্ঞানিক উপায় হিসেবে Acupressure পদ্ধতি ভীষণ কার্যকরী একটি উপায়। Hight বাড়ানোর জন্য আমাদের শরীরে এমন দুটি প্রেসার পয়েন্ট রয়েছে যেখানে চাপ প্রয়োগ করলে Human growth hormone বেড়ে যায় এবং শরীর লম্বা হয়। শরীর লম্বা হওয়ার এই প্রেসার পয়েন্ট দুটি হল হাতের আঙ্গুলে সামনের অংশ এবং পায়ের আঙ্গুলের সামনে অংশ, এই দুই অংশ এক জায়গাতে করে চাপ প্রয়োগ করলে Human growth hormone বেড়ে যায়।

ঘুমঃ ঘুমের উপকারিতা সম্পর্কে আমরা কম-বেশি সকলেই জানি, কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেরই হয়তো জানা নেই পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানোর মাধ্যমে শরীরকে লম্বা করা যায় আর এটি বৈজ্ঞানিকভাবেও প্রমাণিত। আপনি যদি আপনার শারীরিক উচ্চতাকে বর্তমানের চাইতে বেশি বাড়াতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা নিরবিচ্ছিন্ন বা সাউন্ড স্লিপ এর ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি তখন আমাদের শরীরের Human growth hormone এর নিঃসরণ অনেক অংশে বেড়ে যায় যার ফলে শরীর লম্বা হয়।

পুষ্টিকর খাবারঃ লম্বা হওয়ার বৈজ্ঞানিক উপায়ের তৃতীয় শর্ত হলো পুষ্টিকর খাবার খাওয়া। শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য বা শরীর লম্বা হওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই পুষ্টিকর এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবারগুলো খেতে হবে। আপনি যদি অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করেন তাহলে সেই খাবারগুলো থেকে আপনার শরীর কখনোই প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুলো পাবে না এবং যার ফলে আপনার শরীরের বৃদ্ধি ও ঘটবে না। এ কারণে লম্বা হতে হলে আপনাকে অবশ্যই অস্বাস্থ্যকর খাবার গুলো বাদ দিয়ে সমৃদ্ধ এবং পুষ্টিকর খাবার গুলো গ্রহণ করতে হবে এর কোন বিকল্প নেই।

প্রোটিন জাতীয় খাবার গ্রহণঃ আমাদের শরীরের মাংসপেশী এবং কোষ গঠনের জন্য প্রোটিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু মাংসপেশী গঠনে জন্যই নয় শারীরিক উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য প্রোটিন অত্যান্ত Important . আপনি যদি আমিষ ভোজী হন তাহলে আপনি বিভিন্ন উৎস থেকেই প্রোটিন পেয়ে যাবেন এটি নতুন করে আর বলার অপেক্ষা রাখে না কিন্তু যদি আপনি ,নিরামিষ ভোজী হোন তাহলে আপনার জন্য প্রোটিনের সবচাইতে ভালো উৎস হল দুধ এবং সয়াবিন।

ব্যায়ামঃ শরীর লম্বা করার বা শারীরিক উচ্চতা বৃদ্ধি করার কিছু নির্দিষ্ট ব্যায়াম রয়েছে, আপনি যদি শরীর লম্বা করার এ নির্দিষ্ট ব্যায়ামগুলোর নিয়মিতভাবে পড়তে পারেন তাহলে আপনার শরীর লম্বা হবে এবং আপনি আপনার বর্তমান উচ্চতার চেয়ে দৈহিক উচ্চতা বাড়িয়ে নিতে পারবেন। এই পোস্টের নিচের অংশে লম্বা হওয়ার ব্যায়াম এর কিছু পদ্ধতি দেখানো রয়েছে আপনি সেখান থেকে লম্বা হওয়ার ব্যায়ামগুলো শিখে নিতে পারেন।

মেরুদন্ড সোজা করে রাখাঃ লম্বা হওয়ার বৈজ্ঞানিক উপায় গুলোর মধ্যে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হল মেরুদণ্ড সোজা করে রাখা বা চলাফেরা এবং বসার সময় মেরুদন্ড সোজা রাখা। আপনি আপনার মেরুদন্ডের হাড়কে যতো সোজা রাখতে পারবেন আপনার উচ্চতা বাড়ান সম্ভবনা তত বেশি থাকবে। সুতরাং চলাফেরা এবং বসে থাকার সময় বিশেষভাবে খেয়াল রাখবেন আপনার মেরুদন্ডের হাড় যেন সোজা থাকে।

লম্বা হওয়ার ভিটামিন

অনেকেরই জানার আগ্রহ থাকে লম্বা হওয়ার ভিটামিন গুলো সম্পর্কে , আজকে তাই এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের জানিয়ে দেবো কোন কোন ভিটামিন বা খাদ্যের কোন কোন পুষ্টিগুণগুলো গুলো লম্বা হওয়ার জন্য ভীষণভাবে দরকার। চলুন তাহলে এবার জেনে নেওয়া যাক লম্বা হওয়ার ভিটামিন এবং পুষ্টিগুণ গুলোর গুলোর নাম।

লম্বা হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন গুলো হল-ভিটামিন এ ,বি , বি ১২,ডি ,ই। এ সকল ভিটামিন গুলো ছাড়াও লম্বা হওয়ার জন্য খাদ্যের মধ্যে যে সকল পুষ্টিগুণ গুলো থাকা জরুরী সেগুলো হলো-ক্যালসিয়াম , সেলিনিয়াম, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ,ফাইবার, আইরন ইত্যাদি।

লম্বা হওয়ার দোয়া

এবার আপনাদেরকে জানিয়ে দেবো লম্বা হওয়ার দোয়া সম্পর্কে, কুরআনে এমন একটি আয়াত আছে যে আয়াতটি আমল করতে পারলে আপনার শারীরিক উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে। এ দোয়াটি প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যা আপনার ইচ্ছা মতন যতবার খুশি পাঠ করলে আপনি লম্বা হতে পারবেন। তবে চেষ্টা করবেন দোয়াটি সকাল সন্ধ্যা বেশি বেশি পাঠ করে। লম্বা হওয়ার দোয়াটির আরবি, এর উচ্চারণ  নিচে দেওয়া হলো।

লম্বা হওয়ার দোয়াঃاَلَمْ تَرَ كَيْفَ ضَرَبَ الله مَثَلا كَلِمَةً طَيٌِبَةً كَشَجَرَةٍ طَيٌِبَةٍ أصْلُهَا ثَابِتُ وَفَرْعُهَا فِي السٌَمَاءِ উচ্চারণ-আলামতারা কাইফা যারাবাল্লাহু মাছালান কালিমাতান ত্বাইয়্যিবাতান কাশাজারাতিন ত্বাইয়্যিবাতিন আছলুহা ছাবিতুন ওয়া ফারউহা ফিচ্ছামা-ই (সূরা ইব্রাহীম, আয়াত ২৪)।

এছাড়াও লম্বা হওয়ার জন্য আল্লাহর ৯৯ টি নামের মধ্যে থেকে "ইয়া সামিউ" ইয়া নামটি বেশি বেশি আমল করলে লম্বা হওয়া যায়।

লম্বা হওয়ার ব্যায়াম

পোষ্টের উপরের অংশে আপনাদেরকে বলেছিলাম, এই পোস্টের নিচের অংশে লম্বা হওয়ার ব্যায়াম সম্পর্কে আলোচনা করা রয়েছে। এবার আপনাদেরকে জানিয়ে দেবো লম্বা হওয়ার কয়েকটি ব্যায়াম সম্ভব। আপনার শারীরিক উচ্চতা যদি স্বাভাবিকের তুলনায় কম হয়ে থাকে তাহলে আপনি এই ব্যায়াম গুলো করার মাধ্যমে আপনার দৈহিক উচ্চতা বাড়িয়ে নিতে পারেন। লম্বা হওয়ার ব্যায়ামগুলো হল,

আরো পড়ুনঃকফির উপকারিতা ও অপকারিতা - দিনে কয় কাপ কফি খাওয়া উচিত

Wall Stretch: এই এক্সারসাইজটি করার জন্য কোন যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয় না।Wall Stretch করার জন্য আপনাকে প্রথমে একটি দেয়াল বা দেয়াল জাতীয় কোন বস্তুর সামনে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে তারপর, একটি পায়ের হাটু সামনের দিকে করে এবং অপর পা পেছনে সোজাসুজি ভাবে রেখে দেয়ালের ওপরে দুই হাত দিয়ে বারবার চাপ দিতে হবে। এই পদ্ধতিতে ব্যায়াম করাকে বলা হয় Wall Stretch ,নিজের ছবির সাহায্যে বিষয়টি আরো ভালোভাবে বোঝানো হলো।


Cobra Stretch: Cobra Stretch ব্যায়ামটি করার জন্য নিচে ছবিতে দেখানো নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে দুই হাতের উপরে ভর দিয়ে আপনার শরীরকে উপরে টেনে তুলতে হবে, এরপর দুই হাতের উপরে এবং পায়ের সামনের অংশের উপর ভর দিয়ে পুরো শরীরকে উপরে উঠিয়ে রাখতে হবে।


Hanging bar: আমরা অনেকেই জানি Hanging bar না মুখে এক্সারসাইটি আমাদের উচ্চতাকে বাড়াতে ভীষণ কার্যকরী একটি পদ্ধতি।Hanging bar এক্সারসাইজ কি করার জন্য আপনাকে যে কাজটি করতে হবে সেটি হল কোন উঁচু স্থান হাত দিয়ে ধরে সম্পূর্ণ শরীরটি ঝুলিয়ে রাখতে হবে। প্রতিদিন আপনি যদি মাত্র ১০ মিনিট এই এক্সারসাইজটি করেন তাহলে আপনি আপনার উচ্চতার পরিবর্তন বুঝতে পারবেন।


Skipping rope: Skipping rope এই এক্সারসাইটি কি আমরা বাংলায় বলে থাকি বলদড়ি বা দড়িলাফ। দড়ি লাফ করার সময় আমাদের শরীর ফ্লেক্সিবল হয় এবং Human growth hormone অধিক মাত্রায় বের হতে থাকে  যার ফলে এটি শরীরের উচ্চতা বাড়ায়। দড়ি ছাড়াও আপনি jump করে এই এক্সারসাইটি করতে পারেন।


Touching toes: Touching toes এক্সারসাইজ কি করার জন্য প্রথমে আপনাকে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে তারপর আপনার দুই হাতের পাতা দিয়ে দুই পায়ের পাতা হাঁটু সোজা রেখে স্পর্শ করতে হবে। শুরুর দিকে Touching toes এই ব্যায়াম করতে একটু অসুবিধা হলেও কয়েকদিন করলে আর সমস্যা হবে না এবং আপনি খুব সহজেই Touching toes ব্যামটি করতে পারবেন।

মন্তব্য, আপনি যদি এই পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন লম্বা হওয়ার উপায়, লম্বা হওয়ার খাবার এবং লম্বা হওয়ার ব্যায়াম সম্পর্কে। পোষ্টের মধ্যে দেয়া দিকনির্দেশনা গুলো ঠিকঠাক মতন ফলো করুন এবং আপনি আপনার দৈহিক উচ্চতার বৃদ্ধি ঘটান।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url