কিসমিস এর উপকারিতা - সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা - কিসমিসের অপকারিতা

কিসমিসের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের উপাদান থাকা এটি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ক্যান্সারের মতন প্রাণঘাতি রোগ প্রতিরোধ করা থেকে শুরু করে আরো বিভিন্ন ধরনের অসুখ সারাতে এবং সুস্থ জীবন যাপন করতে কিসমিস এর উপকারিতা অনেক বেশি। শুধু শরীর সুস্থ রাখতেই নয়,সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা রয়েছে অনেক। তবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কিসমিস বহু উপকারিতা  থাকলেও বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে কিসমিসের অপকারিতা ও লক্ষ্য করা যায়। কিসমিস সম্পর্কিত এই সকল তথ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের এ পোষ্টটি।

কিসমিস এর উপকারিতা, সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা এবং কিসমিসের অপকারিতা সহ কিসমিস সম্পর্কিত আরো বিভিন্ন তথ্য যদি আপনি বিস্তারিত ভাবে জানতে চান তাহলে, এই পোস্টটির শেষ অব্দি মনোযোগ সহকারে করতে থাকুন। কারণ আজকের এই সম্পূর্ণ পোস্টটির আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হলো কিসমিস। কারণ কিসমিসের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের উপাদান থাকাই খুব সহজে আমাদের শরীরের পুষ্টি ঘাটতি এর মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব। তবে অত্যন্ত উপকারী হলেও এর যেহেতু কিছু অপকারিতা রয়েছে সেই কারণে কিসমিসের অপকারিতা সম্পর্কে জানানোও আজকের এই পোস্টের আরেকটি উদ্দেশ্যে। তাই আর দেরি না করে কিসমিস সম্পর্কিত তথ্য গুলো ভালোভাবে জেনে নিন।

সূচিপত্রঃ কিসমিস এর উপকারিতা - সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা - কিসমিসের অপকারিতা

কিসমিস এর উপকারিতা

কিসমিস আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। কিসমিস ভিটামিন , খনিজ উপাদান , এন্টিঅক্সিডেন্ট কোন ফাইবারে সমৃদ্ধ একটি ড্রাই ফ্রুট। কিসমিসের ভেতরে থাকা উপাদানগুলো আমাদের শরীরে শক্তি যোগাতে এবং ম্যাজিক্যাল কিছু পরিবর্তন সাধন করতে কাজ করে। কিসমিস কে কি অনেকেই খুব একটা গুরুত্ব বা প্রাধান্য না দিলেও এর মধ্যে রয়েছে অসাধারণ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা যেগুলো সম্পর্কে আজকে আমরা জানবো এবং আলোচনা করব। চলুন কিসমিসের উপকারিতা গুলো সম্পর্কে একে একে জেনে নেওয়া যাক।

ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করেঃ কিসমিসে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যার নাম ক্যাটেচিন। আপনি যদি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কয়েকটি কিসমিস রাখেন তাহলে , এর মধ্যে থাকা ক্যাটেচিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টটি আমাদের শরীরে থাকা ক্যান্সারের সেলগুলো ড্যামেজ করে দেয় যার ফলে শরীর বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার গুলো থেকে মুক্ত থাকে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ কিসমিসের ভেতরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদান এবং এন্টিঅক্সিডেন্টসহ আরো কিছু পুষ্টিগুণ। কিসমিসের মাধ্যমে শরীরের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান গুলো আমরা পেয়ে যাই যার ফলে বিভিন্ন রোগের সাথে লড়াই করার ক্ষমতা আমাদের দেহে তৈরি হয়। কিসমিসের মধ্যে থাকা উপাদান গুলো আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তোলে এবং এর ফলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক অংশে বেড়ে যায়।

হাড় গঠনে এবং দাঁত মজবুতে সহায়তা করেঃ কিসমিসের মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম এবং মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট যা নাকি হাড় গঠনের জন্য এবং দাঁত মজবুত করার জন্য অত্যন্ত জরুরী।কিসমিসের মধ্যে থাকা উপাদান গুলো শরীরকে ক্যালসিয়াম চুষে নিতে সাহায্য করে এছাড়াও কিসমিসের মধ্যে থাকা মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট উপাদানটি মেনপোজ হয়ে যাওয়া মেয়েদের আর গঠনে অত্যন্ত সাহায্যকারী।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ কিসমিস উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে কারণ এর মধ্যে রয়েছে পটাশিয়াম যার রক্তের চাপ কমাতে অত্যন্ত কার্যকর।

ওজন বাড়াতে সাহায্য করেঃ যাদের শরীর অত্যন্ত পাতলা এবং রোগের ক্ষেত্রে ওজন বাড়াতে সাহায্য করে কিসমিস। কারণ কিসমিসের মধ্যে অন্যান্য উপাদানের সাথে রয়েছে প্রাকৃতিক চিনি।

যৌন স্বাস্থ্য ভালো রাখেঃ নারী এবং পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে যৌন স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য কিসমিস অত্যন্ত উপকারী। কিসমিসের মধ্যে থাকা উপাদানগুলো শারীরিক অক্ষমতা কাটিয়ে শরীরের জন্য উদ্দীপনা এবং যৌন ইচ্ছা জাগিয়ে তুলতে খুবই ভালো কাজ করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ শরীরের পরিপাকতন্ত্রের সাহায্য করার জন্য প্রয়োজন ফাইবার, যেটি নাকি কিসমিসের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। কিসমিসের ভেতরে ফাইবার থাকায় এটি আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে ঠিক রাখে যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতন সমস্যা দেখা দেয় না।

অনিদ্রা দূর করেঃ কিসমিস খেলে যাদের ঘুমের সমস্যা বা অনিদ্রা রয়েছে তারা অত্যন্ত ভালো ফল পাবেন। কারণ কিসমিসের ভিতরে আইরন থাকায় এটি আমাদের ঘুমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। ভালো ঘুমের পাশাপাশি কিসমিস ক্লান্তি এবং অবসাদ দূর করতেও সাহায্য করে।

আরো পড়ুনঃবাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - কাঁচা বাদামের উপকারিতা

অ্যানিমিয়া রোগ প্রতিরোধ করেঃ যাদের শরীরে রক্তশূন্যতা রয়েছে তারা যদি নিয়মিত কিসমিস খাদ্য তালিকায় যুক্ত করেন তাহলে এর মাধ্যমে শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়বে এবং কিসমিসের মধ্যে আয়রন থাকায় এটি অ্যানিমিয়া রোগ বা রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করবে।

এর এই উল্লেখযোগ্য উপকারিতা গুলো ছাড়াও কিসমিসের মধ্যে বোরন নামক উপাদান থাকায় এটি আমাদের মস্তিষ্কে স্মৃতি ধরে রাখতে এবং মনোযোগ বাড়ানোর জন্য অত্যন্ত ভালো। শুনতে একটু অবাক লাগলেও অল্প পরিমাণে যদি খাদ্য তালিকায় কিসমিস যুক্ত করা হয় তাহলে এটি ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতেও অনেকটা সাহায্য করে। কিসমিসের মধ্যে জীবাণুনাশক এবং আন্টি ব্যাকটেরিয়াল ও এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় যে কোন ভাইরাস জনিত জ্বর সারাতে এটি সাহায্য করতে পারে। কিসমিসের মধ্যে বিটা ক্যারোটিন ও ভিটামিন এ থাকায় আমাদের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতেও কিসমিস অত্যন্ত কার্যকরি।

খেজুর ও কিসমিস এর উপকারিতা

খেজুর ও কিসমিস দুটোই অত্যন্ত উপকারী আমাদের শরীরের জন্য। খেজুর ও কিসমিসের আলাদা আলাদা ভাবে উপকারিতা সম্পর্কে আমরা জানলেও, আপনি কি জানেন এই পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাদ্য দুটি যদি একসাথে খাওয়া হয় তাহলে শরীরে কি অসাধারণ উপকারিতা পাওয়া যাবে? খেজুর ও কিসমিস এর উপকারিতা সম্পর্কে আপনি যদি না জানেন তাহলে এই বিষয়টি আপনার এখনই জেনে নেওয়া উচিত। কারণ খেজুর ও কিসমিস একসাথে খেলে আমরা অনেক ধরনের রোগ থেকে মুক্ত থাকতে পারবো। তাই চলুন খেজুর ও কিসমিস এর উপকারিতা গুলো জেনে নেওয়া যাক,

  • হাড় গঠনে সহায়তা করে
  • ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
  • প্রোটিন ,ভিটামিন , আইরন , ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে
  • রক্তশূন্যতা দূর করে
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
  • লিভার ভালো রাখে
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
  • শরীরের শক্তি যোগায়
  • স্নায়ুবিক বিভিন্ন সমস্যা দূর করে

দুধ কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা

দুধ কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষই হয়তো জানেন না। দুধের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান এবং প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন আর কিসমিস এর মধ্যেও রয়েছে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী সকল উপাদান এবং প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। তাই দুধ কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি। চলুন এবার আপনাদের জানিয়ে দেয়া যাক কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।দুধ এবং কিসমিস একসাথে খেলে উপাদান দুটি আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি ঘাটতির চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি।

ইমিউনিটি বাড়াইঃ দুধ এবং কিসমিস একসাথে খেলে এর মাধ্যমে আমরা প্রোটিন , ভিটামিন , আইরন , ক্যালসিয়াম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহ আরো বিভিন্ন ধরনের উপাদান পেয়ে যাই। যার ফলে শরীরে পুষ্টি চাহিদার একটি বড় অংশ আমরা দুধ এবং কিসমিস খাওয়ার মাধ্যমে পূরণ করে ফেলতে পারি। দুধ এবং কিসমিস একসাথে খেলে শরীরে পুষ্টি ঘাটতি থাকে না বিধায় এই উপাদান দুটি আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।

রক্তস্বল্পতা দূর করেঃ রক্তস্বল্পতা দূর করার ক্ষেত্রে দুধ এবং কিসমিস একসাথে খেলে এটি জাদুর মতন কাজ করে। কারণ দুধ এবং কিসমিস দুটো উপাদান থেকে আমরা প্রচুর পরিমাণে আইরন পেতে পারি, আর রক্তস্বল্পতা দূর করার জন্য একটি অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য উপাদান হলো আয়রন।

আরো পড়ুনঃ পেটে গ্যাস হলে কি সমস্যা হয় এবং পেটের গ্যাস কমানোর উপায়

হাড় গঠনে সহায়তা করেঃ আমাদের হার মজবুত করার জন্য এবং গর্ভাবস্থায় শিশুর হাড়ের গঠনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় হল ক্যালসিয়াম ।ক্যালসিয়াম শুধু হাড়ের গঠনের জন্য নয় হারের ভূমিকা রয়েছে বিভিন্ন ধরনের রোগ দূর করতেও ক্যালসিয়ামের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। যেহেতু দুধ এবং কিসমিস দুটোর মধ্যে থেকেই পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায় এই জন্য এই দুই উপাদান একসাথে মিলিয়ে খেলে এটি আমাদের হাড় গঠনের জন্য খুবই ফলদায়ক হয় , এবং অতি দ্রুত মাত্রায় আমাদের শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ দুধ এবং কিসমিস একসাথে খাওয়ার ফলে কিসমিসে থাকা ফাইবার আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে ঠিক করতে সাহায্য করে এবং দ্রুত খাদ্য হজমের সহায়তা করে যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্ত থাকা যায়।

যৌন অক্ষমতাকে দূর করেঃ কিসমিস এবং দুধ একসাথে খেলে এটি শরীরের যৌন উদ্দীপনা বাড়াতে সাহায্য করে এবং শারীরিক অক্ষমতা বা যৌন অক্ষমতাকে দূর বিশেষ সাহায্য করে।

সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা

সকলের সামনে খোলামেলা ভাবে বলতে না পারলেও সেক্স নিয়ে অনেকেরই বিভিন্ন সমস্যা থাকে।আপনি কি জানেন,আপনার সেক্স রিলেটেড বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দিতে পারে এই কিসমিস।আবাক করার মতন হলেও সত্য যে সেক্স স্বাস্থ্যা ভালো রাখতে বিশেষ এবং অত্যান্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে কিসকিম।কিন্তু সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা এর এ কথাটি আমাদের মধ্যে অনেকেরই অজানা, তাই আজ আপনাদের জানাব সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা সম্পর্কে।সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা জানতে হলে অবশ্যই নিচের অংশটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ যৌন শক্তি থাকতে হলে অবশ্যয় শরীরে শক্তি থাকাটা প্রয়োজন ।কারন একজন রোগা বা অসুস্থ ব্যাক্তি কখনই স্বাভাবিকভাবে যৌন ক্ষ্মতার অধিকারি হয়ে উঠতে পারে না।কিসকিস আমাদের শরীরে শক্তি যোগায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বড়িয়ে সুস্থ রাখে ,যার ফলে কিসমিস খেলে স্বাভাবিক ভাবেই যৌন শক্তি বৃদ্ধি করতে এটি সাহায্য করে।

সেক্স উদ্দিপনা বাড়ায় ঃ যৌন ক্ষমতা বাড়ানর পাসাপাশি কিসমিস যৌন উদ্দিপনা বা সেক্সের ইচ্ছা বৃদ্ধি করে। কিসমিস  খেলে শরীরের রক্ত চলাচল প্রক্রিয়া বৃদ্ধি পায় এবং কিসমিসের মধ্যে রয়েছে এমিনো এসিড যা নাকি সেক্স উদ্দিপনা বাড়াতে খুবই জরুরি। অনেক সময় শারীরিক অক্ষমতা না থাকলেও বিভিন্ন কাজের চাপে এবং দুশ্চিন্তার কারণে সেক্স উদ্দিপনা কমে যায়, এই সময় রেগুলার কিসমিস খেলে এটি যৌন উদ্দীপনা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

শুক্রাণু বৃদ্ধি করেঃ কিসমিসের ভেতরে ভিটামিন এ থাকায় একটি পুরুষদের যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি শুক্রাণু বৃদ্ধি করে যার ফলে পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা অনেক বেড়ে যায়। তাছাড়াও পুরুষদের শরীরে যদি ভিটামিন এর ঘাটতি করে তাহলে  সেক্স হরমোন উৎপাদনে বাধাগ্রস্ত হয় যার ফলে শুক্রানু এবং যৌন ক্ষমতা কমে যায় , সকল সমস্যা দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী।

সেক্স হরমোন বৃদ্ধি করেঃ পুরুষ এবং নারী উভয়ের ক্ষেত্রেই কিসমিস যৌন স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে। কারণ নিয়মিত কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস থাকলে এটি সেক্স রিলেটেড যে কোন সমস্যা দূর করে এবং পুরুষ  ও নারী উভয়ের সেক্স হরমোন বাড়াতে সাহায্য করে।

আরো পড়ুনঃ লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায়

বীর্যের গুণগতমান ঠিক রাখেঃ বীর্যের মধ্যে দিয়ে পুরুষদের শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে সেলেনিয়াম বের হয়ে যায়।কিসমিস পুরুষ শরীরে সেলেনিয়ামের মাত্রা ঠিক রাখে যার ফলে বীর্যের গুনগত মান বজায় থাকে। আর বীর্যের গুণগত মান ঠিক থাকলে দ্রুত গর্ভধারণের ক্ষেত্রে এটি প্রভাব বিস্তার করে।

এক কথায় বলা চলে সেক্স রিলেটেড যে কোন সমস্যা দূর করতে নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে কিসমিস। যৌন স্বাস্থ্য ঠিক রাখার মাধ্যমে প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং মেয়েদের দ্রুত গর্ভধারণের ক্ষেত্রে এটি সাহায্য করে। আশা করছি সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।

রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে কি হয়

রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে কি হয় আপনি কি জানেন। যেকোনো সময় কিসমিস খেলেই এর থেকে কিছু না কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা অবশ্যই পাওয়া যায় তবে কোন সময় কিসমিস খেলে কোন কোন বিশেষ উপকারিতা গুলো পাওয়া যায় সেগুলো আমাদের জেনে রাখা প্রয়োজন, আর এই কথা চিন্তা করে আপনাদের আজকে রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে কি হয় এই বিষয়টিও জানিয়ে দেবো। চলুন তাহলে আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে কি হয়। রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে,

  • শরীর থেকে টক্সিন পদার্থ বের হয়ে যেতে সাহায্য করে
  • হাড় মজবুত হয়
  • ওজন কমাতে সাহায্য করে
  • এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় Skin ভালো রাখে এবং চেহারায় বয়সের ছাপ করতে দেয় না
  • রাতে কিসমিস খেলে যদি বাড়াতে সাহায্য করে
  • রক্তস্বল্পতা দূর করে
  • অনিদ্রা দূর করে
  • সেক্স রিলেটেড যে কোন সমস্যা দূর করে
  • স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।

আরো পড়ুনঃ রাতে মধু খাওয়ার উপকারিতা

সবচেয়ে বড় কথা হলো কিসমিসের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, আইরন, খনিজ উপাদান গুলো থাকায় রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে এটি আমাদের শরীরের পুষ্টি ঘাটতি দূর করার মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলে এবং শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা

কিসমিসেরর ভিতরে অনেক ভাল ধরনের পুষ্টি উপাদান থাকায় আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। সকালে কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনি জানলে অবাক হয়ে যাবেন কারণ এর থেকে ম্যাজিক্যাল কিছু উপকারিতা পাওয়া যায়। কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা তো রয়েছে এর পাশাপাশি কিসমিস ভেজানো সেই পানিটির মধ্যেও পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি। ভেজানো কিসমিস খেলে এর ভেত্রে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো খুব সহজেই আমাদের শরীর শোষন করতে পারে। এছাড়াও জাদুর মতন ,আরও যেসব ক্ষেত্রে কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে চলুন এবার সেগুলো জেনে নেওয়া যাক।

রাতে সামান্য পরিমাণ পানির মধ্যে কিসমিস ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই ভেজানো কিসমিস এবং কিসমিস ভেজানো পানি পান করলে, এর মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায়, যার ফলে আমাদের শরীরের চাহিদা অনুযায়ী আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয় এবং রক্তস্বল্পতা দূর হয়। কিসমিস ভেজানো পানি খেলে এটি আইরনের ঘাটতি পূরণ , রক্তস্বল্পতা করার পাশাপাশি শরীরে Red blood cells তৈরি করতে সাহায্য করে। তাছাড়া ভেজানো কিসমিস খেলে পেট পরিষ্কারের পাশাপাশি রক্ত পরিষ্কার করতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

প্রতিদিন সকালে কি কিসমিস ভেজানো পানি খেলে এর মধ্যে থাকা ফাইবার আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য ও এসিডিটি এর প্রবণতা কমায়। কিসমিসের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় সকালে পানের ফলে , শরীরে  রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং শরীরের অভ্যন্তরে ক্যান্সার প্রতিরোধই সেল তৈরি হয়। এবং কিসমিসের ভেতরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এটি আমাদের ত্বকের জন্যও অত্যন্ত উপকারী।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে ভেজানো কিসমিস এবং কিসমিস ভেজানো পানি পানের ফলে , রক্তে থাকা টক্সিক পদার্থ গুলো বেরিয়ে যেতে পারে , এবং যার ফলে এভাবে কিসমিস খেলে লিভার এবং কিডনি দুটোই ভালো থাকে। শুধু তাই নয় কিসমিসের ভেতরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং ক্যালসিয়াম থাকায় ভেজানো কিসমিস খেলে এটি দাঁত ও হাড় মজবুত করতে সহায়তা করে এবং কিসমিস সারাদিনের এনার্জি ধরে রাখতে সাহায্য করে।

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম

ভেজানো কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা তো আপনারা জেনে নিয়েছেন । তবে কি শুধু উপকারিতা জানলে চলবে , এর পাশাপাশি জানতে হবে কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। পরিপূর্ণভাবে ভেজানো কিসমিসের উপকারিতা পাওয়ার জন্য চলুন আপনাদের এবার জানিয়ে কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।

বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতা দূর করার জন্য যে বেলা ১/২ কাপ পানির ভেতরে অথবা এক গ্লাস পানির মধ্যে বেশ কিছু কিসমিস ভিজিয়ে রাখুন। সকালবেলা এই কিসমিসের পানি গাঢ়  রং ধারণ করলে এবার কিসমিস এবং পানি গুলো আলাদা করে নিন।কিসমিস ভেজানো এই পানিগুলো কখনোই ফেলে দেবেন না কারণ সারারাত কিসমিস ভিজে থাকার ফলে এর ভেতর থেকে বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদানগুলো এই পানির সাথে মিশে থাকে , তাই কিসমিস ভেজানো এই পানীয় শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারিতা।

এবার কিসমিস গুলো চিবিয়ে খেতে পারেন। আর কিসমিস ভেজানো পানিটুকু হালকা কুসুম গরম করে খালি পেটে খেয়ে নিন।ভেজানো যদি প্রতিদিন খাওয়া হয় তাহলে সপ্তাহ নিয়ে অন্ততপক্ষে ৩-৪ দিন এইভাবে ভিজিয়ে কিসমিস খাওয়ার চেষ্টা করুন।

কিসমিসের অপকারিতা

স্বাস্থ্য উপকারিতার দিক থেকে অনেক গুন সম্পন্ন হওয়ার পরেও কিসমিসের অপকারিতা রয়েছে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে। অল্প পরিমাণে কিসমিস খেলে এটি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী তবে খেয়াল রাখতে হবে কিসমিস খাওয়া যেন অতিরিক্ত না হয়ে যায় , উপকারী বলেই যদি আপনি অতিরিক্ত কিসমিসের খেয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে ফেস করতে হবে বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা বা জটিলতা। আর এই কারণে কিসমিসের অপকারিতা সম্পর্কে জেনে রাখা দরকার, যাতে করে অনাকাঙ্ক্ষিত এই অসুবিধা বা জটিলতার সম্মুখীন হতে না হয় । অনাকাঙ্ক্ষিত জটিলতা গুলো এড়ানোর জন্য চলুন জেনে নেই কিসমিসের অপকারিতা।

কিসমিস আমাদের শরীরের জন্য মারাত্মক কোন ক্ষতি না করলেও যেসব ক্ষেত্রে বেশ কিছু সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে সেগুলো হলো -যদি আপনি অতিরিক্ত কিসমিস খেয়ে ফেলেন তাহলে এর ফলে আপনার শরীরে এলার্জির সমস্যা বেড়ে যেতে পারে, তাই যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে তারা বুজে শুনে কিসমিস খাবেন। এলার্জির রোগীরা যদি মনে করেন শেষমেশ অল্প পরিমাণে খাওয়ার ফলেও আপনার অ্যালার্জি সমস্যা হচ্ছে তাহলে এটি এড়িয়ে চলাই ভালো। তাছাড়া যারা ওজন কমাতে চান তাদের ক্ষেত্রে খুবই অল্প পরিমাণে কিসমিস খাওয়া উচিত কারণ কিসমিসের ভেতরে প্রাকৃতিক চিনি থাকায় এটি আমাদের ওজন বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।

শুধু যারা ওজন কমাতে চান তারা না , যারা ইতিমধ্যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের ক্ষেত্রেও বেশি কিসমিস খাওয়া উচিত নয়। কারণ অতিরিক্ত খেলে এর মধ্যে চিনি থাকায় সে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে এবং যার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে পড়তে পারে।অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস এবং ওজন বৃদ্ধির পাশাপাশি দেখা দিতে পারে , পেটে এসিডিটির সমস্যা, পেট ব্যথা এবং ডায়রিয়ার মতন সমস্যা ও পাশাপাশি সৃষ্টি হতে পারে ক্ষুধামন্দা।

মন্তব্য ,উপরিউক্ত আলোচনার মাধ্যমে কিসমিস এর উপকারিতা ও ক্রিসমাসের অপকারিতা গুলো জানার পরে এটি খুব ভালোভাবে বোঝা যায় যে কয়েকটি ক্ষেত্রে কিসমিসের অপকারিতা থাকলেও সেই তুলনায় এর উপকারিতা অনেক বেশি। তাই আপনি যদি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ৪-৫ টি কিসমিস রাখেন তাহলে খুব সহজে সেক্স এর সমস্যা দূর করা সহ শরীরের আরও বিভিন্ন ধরনের অসুবিধা এবং রোগ সারাতে পারেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url