কম্পিউটারের জনক কে - আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে - কম্পিউটারের ইতিহাস

কম্পিউটার বিজ্ঞানের বিস্ময়কর একটি আবিষ্কার।এই কম্পিউটারকে কাজে লাগিয়ে আজ মানুষ অসম্ভব কে সম্ভব করে তলছে।আজ কম্পিউটারের সাথে পরিচিত ছোট বড় সবাই , কিন্তু কম্পিউটার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আমরা কয়েকজন জানি , কম্পিউটার ব্যবহার করলেও অনেকেই হয়তো জানেন না কম্পিউটারের জনক কে এবং কম্পিউটারের ইতিহাস সম্পর্ক। তাই বিভিন্ন ধরনের তথ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের এই পোস্টটি। এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন কম্পিউটার সম্পর্কে অজানা বিশেষ কিছু তথ্য। এই প্রশ্নের মাধ্যমে আপনি আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে ? মতবিরোধ থাকা এই প্রশ্নের উত্তরটি সঠিকভাবে জানতে পারবেন।

আজ আমরা যত সহজে কম্পিউটার ব্যবহার করি বা কম্পিউটার ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলার মতন কাজ সম্পন্ন করি ,একসময় এই কম্পিউটার ব্যবহারের ক্ষেত্রে এত সুবিধা ছিল না এবং এই বিস্ময়কর আবিষ্কারটি একদিনেও তৈরি হয়নি। কম্পিউটার নামক ইলেকট্রিক বিস্ময়কর ডিভাইসটি আবিষ্কার করতে বা আজকের দিনের মতন ডিজিটাল অথবা আধুনিক পর্যায়ে আনতে সময় লেগেছে কয়েক হাজার বছর। আজকের দিনে আমরা অধিকাংশ মানুষই কম্পিউটারের সুবিধা ভোগ করলেও কম্পিউটার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য অনেকেরই নেই , প্রায় কম্পিউটার সম্পর্কে জানার জন্য আজকে এই পোস্টে আমরা আলোচনা করব কম্পিউটারের ইতিহাস , আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে ? এই বিষয়ে সহ কম্পিউটার সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

সূচিপত্রঃ কম্পিউটারের জনক কে - আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে - কম্পিউটারের ইতিহাস

কম্পিউটার কি

কম্পিউটার হল বিজ্ঞানের একটি বিস্ময়কর সৃষ্টি এবং এটি একটি আধুনিক ইলেকট্রনিক্স গণনা যন্ত্র। কিন্তু কম্পিউটার শুধু গণনার কাজে ব্যবহৃত হয় না, ডাটা গ্রহণ , সংরক্ষণ , বিশ্লেষণ এর কাজও করে থাকে। এবং কম্পিউটার অল্প সময়ের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের জটিল কাজ করতেও সক্ষম। কম্পিউটার আবিষ্কারের কারণেই আজকের দিনের অসাধ্য সাধন করার মতন গবেষণার কাজে আমরা অভূতপূর্ব সাফল্য লাভ করতে সক্ষম হই। আরে কম্পিউটার নামক ইলেকট্রিক ডিভাইসটির ওপরে ভিত্তি করেই উন্নতির সকল ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। 

কম্পিউটার এমন একটি যন্ত্র যেই যন্ত্র কে কাজে লাগিয়ে বর্তমানে মানুষ প্রযুক্তিবিদ্যা , কৃষিবিজ্ঞান , চিকিৎসা বিজ্ঞান , পদার্থবিজ্ঞান , মহাকা বিজ্ঞান ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রে কাজে লাগিয়ে জানা-অজান তথ্য উদঘাটন করতে সক্ষম হচ্ছে। কম্পিউটারকে আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। কারণ এই যন্ত্র ব্যবহার করে যত সহজে আমরা দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কাজ থেকে শুরু করে সকল ক্ষেত্রে বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করছি , কম্পিউটার নামক এই যন্ত্রটি আবিষ্কার না হলে কোনভাবেই তা সম্ভব ছিল না।

কম্পিউটারের জনক কে

প্রযুক্তির এ যুগে কম্পিউটার এর সাথে পরিচিত না এমন মানুষ পাওয়া অসম্ভব।বর্তমানে অফিসিয়ালে কাজের অধিকাংশ কাজ এবং দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে থাকি কম্পিউটারের। কম্পিউটার আমাদের জীবন ব্যবস্থা কে করেছে অনেক সহজ এবং গবেষনা, শিক্ষা, চিকিৎসা , ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ ইত্যাদি ক্ষেত্রে এনেছে অভূতপুর্ব উন্নতি। কিন্তু যেই যন্ত্রটির আবিষ্কারের মাধ্যমে বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এতটা উন্নতি সম্ভব হচ্ছে সেই কম্পিউটার নামক যন্ত্রটি কে আবিষ্কার করেছেন তা কি আপনার জানা আছে? যদি জানা না তাহলে , চলুন জেনে নেওয়া যাক কম্পিউটারের জনক কে।

অনেকের মতে কম্পিউটারের জনক চার্লস ব্যাবেজ হলেও , কম্পিউটারের জনক মূলত- হাওয়ার্ড অ্যাইকন। কারণ তিনি সর্বপ্রথম কম্পিউটার বা গণনা যন্ত্র আবিষ্কারের সূত্রপাত ঘটান। হাওয়ার্ড অ্যাইকন এর সম্পর্কে কোথাও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া সম্ভব হয়নি , তবে ধারণা করা হয় তিনি ছিলেন চিনা নাগরিক। কম্পিউটার বা গণনা যন্ত্র আবিষ্কার করার প্রাথমিক পর্যায়ে হাওয়ার্ড অ্যাইকন -Abacus নামের একটি গণনা যন্ত্র আবিষ্কার করেছিলেন পরবর্তীতে এটির উপরে গবেষণার একপর্যায়ে আবিষ্কার করা হয় আধুনিক কম্পিউটারের। যেহেতু , Abacus নামক এই গণনা যন্ত্রটির ওপরে ভিত্তি করে আবিষ্কার করা হয় আধুনিক কম্পিউটারের এই কারণে Abacus এর আবিষ্কারক হিসেবে কম্পিউটারের জনক বলা যেতে পারে হাওয়ার্ড অ্যাইকন কে।

আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে

আপনার কি জানা আছে ,আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে ? আপনার যদি জানা না থাকে আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে ,তাহলে অবশ্যয় জেনে রাখা উচিত।চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে এই প্রশ্নের উত্তরটি। ১৮১০ সালে সংখ্যা এবং সারণি গণনার জন্য সর্বপ্রথম চার্লস ব্যাবেজ একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেছিলেন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে গণনার কাজটি সম্পন্ন করার এই যন্ত্রটি পরবর্তীতে ধাপে ধাপে আধুনিক কম্পিউটারে রূপ নাই তাই আধুনিক কম্পিউটারের জনক চার্লস ব্যাবেজ কে বলা হয়। চার্লস ব্যাবেজ ছিলেন একজন ব্রিটিশ নাগরিক , তিনি দুইটি যান্ত্রিক কম্পিউটার আবিষ্কার করেছিলেন , যার নাম গুলো হল

  • ডিফারেন্স ইঞ্জিন এবং
  • এনালিটিক্যাল ইঞ্জিন

আধুনিক কম্পিউটারের ভিত্তি প্রস্তর আবিষ্কার করলেও , এই কম্পিউটারকে তিনি পরিপূর্ণ রূপ দিয়ে পারেননি নি অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে। চার্লস ব্যাবেজ ৪০ বছরের বেশি সময় গবেষণার কাজে নিয়োজিত ছিলেন এরপর ১৮৭১ সালে 79 বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

সুপার কম্পিউটারের কি  

আপনাদের কি জানা আছে সুপার কম্পিউটার কাকে বলে বা সুপার কম্পিউটার কি ? সুপার কম্পিউটার বিষয়ে যদি আপনার জানা না থাকে তাহলে উদ্বেগের কোন কারণ নেই , এই বিষয়টি আমরা এখনই ক্লিয়ার ভাবে জেনে নিব । তাহলে চলুন আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক সুপার কম্পিউটার কি বা কাকে বলে ? অত্যন্ত দ্রুততম সময়ের মধ্যে ডাটা প্রসেস করার ক্ষমতা সম্পন্ন কম্পিউটার গুলোকে বলা হয় সুপার কম্পিউটার। বিশেষ কিছু গবেষণা সম্পন্ন করার জন্য বিশেষত এই সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

যেসব ক্ষেত্রে সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করা হয় সেগুলো হল -আবহাওয়ার পূর্বাভাস, পদার্থবিদ্যা , নিউক্লিয়ার ফিউশন ইত্যাদি বিষয়ে কাজ বা গবেষণা করার জন্য এই সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়েছে। আর এখন পর্যন্ত বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ক্ষমতা সম্পন্ন সুপার কম্পিউটারের নাম হলো 'ফুকাগুর কম্পিউটার' এবং এটি তৈরি করেছে জাপান। যেকোনো সাধারণ কম্পিউটারের চাইতে সুপার কম্পিউটারের ক্ষমতা অনেক বেশি। এবং সুপার কম্পিউটার একসাথে বিভিন্ন ধরনের কাজ সম্পন্ন করতে পারে। অর্থাৎ একসাথে বিভিন্ন ধরনের কাজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে করতে পারা কম্পিউটার গুলোকেই বলা হয় সুপার কম্পিউটার।

সুপার কম্পিউটারের জনক কে

এতক্ষণ আমরা জানলাম সুপার কম্পিউটার সম্পর্কে , এবার আমরা জানবো  দ্রুততম সময়ের মধ্যে অসংখ্য কাজ করা এই কম্পিউটারটির আবিষ্কারক বা জনক এর সম্পর্ক। অনেকেই সুপার কম্পিউটারের নাম শুনে থাকলে হয়তো সুপার কম্পিউটারের জনক কে এ বিষয়ে জানেন না। তাই চলুন আজকে জেনে নেওয়া যাক , সুপার কম্পিউটারের জনক কে ? এই প্রশ্নের উত্তরটি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ডাটা প্রসেস এবং অল্প সময়ে একাধিক কাজ করার ক্ষমতা সম্পন্ন  সুপার কম্পিউটারের জনক হলেন Seymour Cray, তিনি সর্বপ্রথম সুপার কম্পিউটারের সূচনা শুরু করেন ১৯৬০ সালে । শুরুর দিকে সুপার কম্পিউটারের প্রসেসরের সংখ্যা কম থাকলেও বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে এই কম্পিউটারের প্রসেসরের সংখ্যা ১ লক্ষ্য পার হয়ে যায় 

ডিজিটাল কম্পিউটার কি

ডিজিটাল কম্পিউটারের নাম অনেকেই শুনে থাকবেন , তবে আপনারা কি জানেন ডিজিটাল কম্পিউটার কি বা ডিজিটাল কম্পিউটার কাকে বলে? যদি আপনাদের ডিজিটাল কম্পিউটার এই বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা না থাকে তাহলে অবশ্যই ডিজিটাল কম্পিউটার সম্পর্কে জেনে রাখতে পারেন , কারণ এই ধরনের সাধারণ জ্ঞান টাইপের প্রশ্নের উত্তরগুলো বিভিন্ন সময় আপনার কাজে লাগতে পারে। তাই চলুন আর দেরি না করে ডিজিটাল কম্পিউটার সম্পর্কে মৌলিক ধারণা নেয়া যাক।

কাজের ধরন অনুযায়ী কম্পিউটারকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে , যার মধ্যে একটি ভাগের নাম হল ডিজিটাল কম্পিউটার। বাইনারি বা ডিজিটাল পদ্ধতিতে যে কম্পিউটার গুলো কাজ করে থাকে সেগুলোকে বলা হয় ডিজিটাল কম্পিউটার। ডিজিটাল কম্পিউটারের ডাটা গুলো 0 এবং 1 এর ভেতরে ইনপুট করা হয়ে থাকে এবং এই ডিজিটাল কম্পিউটারের প্রধান অংশ থাকে তিনটি - ইনপুট , আউটপুট, প্রসেসিং। প্রচুর পরিমাণে ডাটা স্টোরেজ এর সুবিধা ছাড়াও ডিজিটাল কম্পিউটার খুব অল্প সময়ে মধ্যে নির্ভুল তথ্য প্রদান করে থাকে। আর ডিজিটাল কম্পিউটারের আওতায় রয়েছে -মাইক্রো কম্পিউটার , মেইনফ্রেম কম্পিউটার , সুপার কম্পিউটার এবং মিনি কম্পিউটার।

ডিজিটাল কম্পিউটারের জনক কে

ডিজিটাল কম্পিউটার সম্পর্কে মৌলিক ধারণা আমরা পেয়েছি তাই এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক এই ডিজিটাল কম্পিউটারের জনক কে ,।অনেকেই হয়তো ডিজিটাল কম্পিউটার ব্যবহার করলেও , ডিজিটাল কম্পিউটারের জনক কে জানেন না তাই চলুন না যে বিষয়টি জেনে নেওয়া যাক। ডিজিটাল কম্পিউটারের জনক হল হাঙ্গেরি বংশোদ্ভূত একজন মার্কিন গণিতবিদ যার নাম ' জন ভন নিউম্যান'।

কম্পিউটারের ইতিহাস

এখন আমরা কম্পিউটারে একটা ক্লিকের মাধ্যমে যত সহজে বিভিন্ন কষ্ট সাপেক্ষে এবং সময় সাপেক্ষ কাজগুলো করে ফেলতে পারি , সভ্যতার শুরুতে এবং কম্পিউটার আবিষ্কারের প্রাথমিক পর্যায়ে পরিস্থিতি কিন্তু এরকম ছিল না। কম্পিউটার নামক এ বিস্ময়কর যন্ত্রটি আবিষ্কার করতে সময় লেগেছে হাজার হাজার এবং বিভিন্ন বিজ্ঞানীর অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রাথমিক কম্পিউটার ধাপে ধাপে পরিবর্তিত হয়ে  আজ আমরা হাতে পেয়েছি বিজ্ঞানের এই বিস্ময়কর যন্ত্র ডিজিটাল কম্পিউটার। দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কাজে আমরা কম্পিউটারের ব্যবহার করে থাকলেও কম্পিউটারের ইতিহাস সম্পর্কে কয়েকজন জানি? তাই চলুন আজ আমরা কম্পিউটারের ইতিহাস সম্পর্কে জেনে নিন।

আজ থেকে প্রায় তিন সাড়ে , তিন হাজার বছর পূর্বে সূচনা শুরু হয়েছিল আজকের এই ডিজিটাল কম্পিউটারের। সেই সময় হাওয়ার্ড অ্যাইকন নামের একজন ব্যক্তি গণনার কাজে সুবিধার কারণে এবাক্যাস (abacus) নামক এক ধরনের যন্ত্র আবিষ্কার করেন। কিছু গোল চাকরি এই অ্যাবাকাস যন্ত্রের মূল উপকরণ ছিল এবং এগুলোর মাধ্যমে গণনার কাজ করা হতো। পরবর্তীতে এই অ্যাবাকাস নামক যন্ত্রটি নিয়ে পর্যালোচনা , পর্যবেক্ষণ , গবেষণা ইত্যাদির মাধ্যমে সূত্রপাত করা হয় কম্পিউটার নামক যন্ত্রের।

অ্যাবাকাস তৈরির পরে , এটি নিয়ে গবেষণা চলতে থাকে বহু বছর। অ্যাবাকাস নামক যন্ত্রটি নিয়ে গবেষণায় সময়ের সাথে সাথে মানুষের চিন্তা চেতনা , জানার আগ্রহ , নতুন কিছু তৈরির আগ্রহ এই অ্যাবাকাস নামক যন্ত্রটিকে কম্পিউটারের রূপ নিতে সাহায্য করে। গবেষণার একপর্যায়ে ১৬৪৫ খ্রিস্টাব্দেফরাসী বিজ্ঞানী ব্লায়াস প্যাস্কেলাইন অ্যাবাকাসের মতোই আরেকটি যন্ত্র আবিষ্কার করেন তবে এই যন্ত্রের পার্থক্য ছিল চাক্তির বদলে দাঁত যুক্ত চাকা এবং এই যন্ত্রটির নাম ছিল প্যাসকেলাইন। এরপর ১৬ ৯৪ খ্রিস্টাব্দের দিকে পেসকেলাইন নামক এই যন্ত্রটি কিছুটা উন্নত করেন গটফ্রেড উইলহেম ভন লেইবনিজ তার গবেষণাকৃতির লাইন নামক যন্ত্রটির পরিবর্তিত রুটির নাম দেন 'স্টেপড রেকনার'। স্টেপড রেকনার নামক যন্ত্রটি নিয়ে চিন্তাভাবনা এবং গবেষণার মাধ্যমে আবার কিছুটা পরিবর্তিত রূপ দেয় টমাস দা কোমার ।

এরপর নতুন কিছু আবিষ্কারের আশায় এবং সহজে গণনার কাজ সম্পন্ন করার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে চার্লস ব্যাবেজ ডিফারেন্স ইঞ্জিন নামের একটি যন্ত্র , এবং পরবর্তীতে ধাপে ধাপে এই ডিফারেন্স ইঞ্জিন আরো উন্নত করার মাধ্যমে এর নাম দেওয়া হয় এনালিটিক্যাল ইঞ্জিন। চার্লস ব্যাবেজের তৈরি এই যন্ত্রটি গণনার পাশাপাশি আরও বিভিন্ন কাজ বা তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যেত । চার্লস ব্যাবেজের তৈরি এই যন্ত্রটি তিনটি অংশে বিভক্ত ছিল এগুলো হলো -নির্দেশনা প্রদান অংশ , তথ্য সংরক্ষণ অংশ , ফলাফল দেওয়ার। চার্লস ব্যাবেজের তৈরি করার যন্ত্রটির উপর ভিত্তি করেই , গড়ে ওঠে আজকের ডিজিটাল কম্পিউটার আর এ কারণেই চার্লস কে আধুনিক কম্পিউটারের জনক বলা হয়।

এর পর প্রায় ১৮৯০ সালের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের আদমশুমারি শুরু হয় এবং এর দায়িত্ব পান আমেরিকান সেন্সাস বুর‍্যো প্রতিষ্ঠান। এবং এই প্রতিষ্ঠানটি আগামী 10 বছরের আগে গণনা শেষ করতে পারবে না বলে , আশঙ্কা প্রকাশ করেন। কিন্তু এই সময় হারমেন হলোরিথ নামের এক ব্যক্তি এই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে , চার্লস ব্যাবেজের যন্ত্রের সাথে আরেকটি যন্ত্র একত্রিত করে।হারমেন হলোরিথ ছিলেন একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার , তিনি চার্লস ব্যাবেজ এর যন্ত্রের সাথে টেবুলেটর নামের একটি যন্ত্র মিলিয়ে তিনি আদমশুমারীর কাজ দশ বছরের জায়গায় মাত্র তিন বছরের মধ্যে শেষ করে ফেলেন। এই ঘটনাতে পুরো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করে। এই ঘটনাতে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি নিজেই একটি টেবুলেটিং মেশিন কোম্পানি চালু করেন। এবং এই টেবুলেটিং মেশিন কোম্পানিটি পরবর্তীতে পৃথিবীর বৃহত্তম মোবাইল কোম্পানি হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করে।

টেবুলেটিং মেশিন আবিষ্কারের পরে দীর্ঘদিন এই যন্ত্রের ব্যাপক কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি। এরপর প্রায় পঞ্চাশ বছর পর ১৯৪৩ সালের দিকে দুইজন ইঞ্জিনিয়ার যাদের নাম ছিল জন মশলি এবং প্রেসপার একার্ট, দুজন মিলে টেবুলেটিং মেশিন নিয়ে গবেষণা শুরু করেন এবং ১৯৪৬ থেকে ১৯৪৭ সালের মধ্যে তাদের প্রতিভা এবং অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে তৈরি করে ফেলেন তার প্রথম ইলেকট্রিক ডিজিটাল কম্পিউটার এবং এই কম্পিউটারটির নাম দেওয়া হয়েছিল 'এনিয়াক'। এখান থেকেই শুরু হয় ডিজিটাল কম্পিউটার তৈরি করার নতুন এক অধ্যায়। এই এনিয়াক নামক কম্পিউটারটি সেই সময় সেকেন্ডে ৫০০০ গণনার কাজ শেষ করতে সক্ষম ছিল।

পরবর্তীতে কম্পিউটার আবিষ্কারের নতুন বিপ্লব ডেকে আনেন আমেরিকান ৩ জন বিজ্ঞানী যাদের নাম যথাক্রমে - বারডিন , ব্রাটান ও শকলি। ইনারা এনিয়াক নামক কম্পিউটার নিয়ে গবেষণা এবং উন্নত করার প্রচেষ্টার মাধ্যমে তৈরি করে ফেলেন 'ট্রানজিস্টার'। নতুন এই ট্রানজিস্টার লাগানো কম্পিউটারটি এনিয়াক নামক কম্পিউটারের তুলনায় আকার আকৃতি এবং ওজনে অনেকটা ছোট হয়ে আসলো এবং বেড়ে গেল এর কার্য ক্ষমতা। এরপর প্রায় ১৯৫০ সালের দিকে জন ভন নিউম্যান তৈরি করে ফেলেন ডিজিটাল কম্পিউটার।

এর কয়েক বছর পরে ১৯৫৮ সালে গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়ে ' সিলিকন চিপ' তৈরি করে ফেলেন মার্কিন এক বিজ্ঞানী জ্যাক কিলবি।বিজ্ঞানী জ্যাক কিলবি এর তৈরি সিলিকন চিপ এর উপরে বসানো হলো অনেকগুলো ট্রানজিস্টর এবং যার মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা করার জন্য তৈরি করা হলো অত্যান্ত সূক্ষ্ম পথ যা সার্কিট নামে পরিচিত । এই সার্কিট ব্যবহারের ফলে সিলিকন চিপের মধ্যে দিয়ে কম্পিউটারে উচ্চ বিদ্যুৎ প্রবাহের ব্যবস্থা সম্ভব হল। এবং এই প্রক্রিয়া ব্যবস্থাটির নাম দেয়া হলো ইন্টিগ্রেটে সার্কিট।এই ইন্টিগ্রেটে সার্কিট আবিষ্কারের পরে দ্রুত উন্নতি লাভ করতে লাগে বিজ্ঞানের বিস্ময় করা আবিষ্কার কম্পিউটার।

এরপর কম্পিউটারের আরো ব্যাপক উন্নতি সাধনের জন্য , সিলিকন চিপ নিয়ে ব্যাপকভাবে গবেষণা  চলতে থাকে মার্কিন ক্যালিফোর্নিয়া সান্তাক্লারা উপত্যকায় ,এবং এই জায়গার নাম দেওয়া হয় সিলিকন ভ্যালি করতে পারি। এক সময় ছোট সিলিকন চিপের ওপরে অসংখ্য ইন্ট্রিগ্রেট্র সার্কিট বসানোর গবেষণা সফল হয় , এবং সিলিকন চিপের ওপরে অসংখ্য ইন্ট্রিগ্রেট্র সার্কিট বসানোর মাধ্যমে তৈরি করা হয় মাইক্রোপ্রসেসর। পরবর্তীতে এই মাইক্রোপ্রসেসর এর ওপরে ভিত্তি করে গড়ে ওঠে আধুনিক কম্পিউটার। এরপর , আরো উন্নতি লাভ করতে থাকে ডিজিটাল এবং আধুনিক কম্পিউটার ওদিক থেকে অধিক ক্ষমতা সম্পন্ন হতে থাকে কম্পিউটার এবং আকার , আয়তন ও ওজনে কমতে থাকে। এভাবেই কি গড়ে ওঠে আজকের দিনের বিভিন্ন ধরনের জটিল গবেষণায় ব্যবহৃত এবং দ্রুত ফলাফল প্রদানকারী অত্যাধুনিক ডিজিটাল কম্পিউটার।

কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য

এবার আমরা জানবো কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে । কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে প্রায় মানুষেরই কম বেশি ধারণা থাকলেও আজকে আরো একবার আমরা সংক্ষিপ্তভাবে কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য গুলো জেনে নেব।তাহোলে আর দেরি না করে কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য গুলো জেনে নেওয়া যাক , কম্পিউটারের বিশেষ বৈশিষ্ট্য গুলো হল।

  • মেমোরির ধারণ ক্ষমতা অনেক বেশি
  • নির্ভুল তথ্য প্রদান করে
  • তথ্য যাচাইয়ের ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে
  • বিশ্বাসযোগ্য একটি যন্ত্র
  • অত্যন্ত দ্রুততম সময়ে কার্যসম্পন্ন করতে পারে
  • ক্লান্তিহীনভাবে কাজ করতে পারে
  • আনলিমিটেড তথ্য জমা রাখা যায়
  • এর মাধ্যমে মহাকাশ এবং সমুদ্রের তলদেশের গবেষণা করা সম্ভব হয়
  • অসাধ্য সাধন এবং ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করা যায়
  • একটি কম্পিউটার বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যায়
  • কম্পিউটার প্রোগ্রাম নষ্ট হয়না

মন্তব্য, পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে এতক্ষণে নিশ্চয়ই কম্পিউটারের ইতিহাস সম্পর্কে মৌলিক ধারণা এবং আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে এর সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। কম্পিউটারকে বিশ্ববাসীর কল্যাণের জন্য আবিষ্কার করা হলেও এক শ্রেণীর মানুষ এই যন্ত্রটিকে বিভিন্ন অপকর্ম এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপের কাজে ব্যবহার করে থাকে যা মোটেও উচিত নয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url