ওযুর ফরজ কয়টি - অযু ভঙ্গের কারণ - অযু করার নিয়ম

ইবাদত করার উদ্দেশ্যে শরীয়তের বিধানমত পাক পানি দ্বারা কতিপয় বিশেষ অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ধৌত করা কে ওজু বলে।যেকোন ইবাদতের পূর্বে পাক পবিত্র হওয়ার জন্য অজুর গুরুত্ব অপরিসীম এবং অজু করার ফজিলত অনেক বেশি। ইবাদত কবুলের জন্য গোপন শর্ত হলো পবিত্রতা, আর পবিত্রতা রক্ষার জন্য আমাদের অজু করতে হয় তাই আমাদেরকে সঠিকভাবে অযু করার নিয়ম ,অযু ভঙ্গের কারণ ,ওযুর ফরজ কয়টি ইত্যাদি বিষয়সহ সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়গুলো ভালোভাবে জেনে রাখতে হবে।

আপনি যদি সঠিক নিয়মে বা সঠিকভাবে অজু করতেন না পারেন তাহলে , নামাজ থেকে শুরু করে কোন ইবাদতই শুদ্ধ ভাবে হবে না। তাই ইবাদতের পূর্বে অবশ্যই অজু সম্পর্কিত বিভিন্ন  জ্ঞান রাখতে হবে যেমন - অযু করার নিয়ম ,অযু ভঙ্গের কারণ ,ওযুর ফরজ কয়টি ,অযুর সুন্নত কয়টি ,অযুর দোয়া, তাই আজকে আমরা এই অজুর  ফরজ , সুন্নত , মুস্তাহাব গুলো জানার পাশাপাশি ওজুর ফজিলত , ওযুর দোয়া ও নিয়ত সম্পর্কেও সঠিকভাবে জেনে নেবে। আপনি যদি ওযু সম্পর্কিত এইসব বিষয় গুলো সঠিকভাবে জানতে চান তাহলে অবশ্যই প্রতিটি মনোযোগের সাথে পড়ে নিন।

সূচিপত্রঃ ওযুর ফরজ কয়টি - অযু ভঙ্গের কারণ - অযু করার নিয়ম 

ওযুর ফজিলত

আজকে আমরা আলোচনা করব এবং জানবো ওযুর ফজিলত। নামাজ পড়ার জন্য ,পবিত্রতা রক্ষার জন্য এবং পাক পবিত্র থাকার জন্য অত্যন্ত জরুরী হলো অজু ও গোসল। ওযুর ফজিলত এবং মর্যাদা অনেক বেশি কুরআনেও সম্পর্কেও বলা রয়েছে। ওযু সম্পর্কে কোরআনে আল্লাহ পাক বলেন -হে মুমিনগণ তোমরা যখন সালাতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করবে তখন , মুখমণ্ডল ও দুই হাতের পর্যন্ত ধৌত করো , মাথা মাসেও করো, দুই পা এখনো পর্যন্ত টাখনু পর্যন্ত ধৌত করো (সূরা মায়েদা ,আয়াতঃ৬)।

হযরত ইবনে আব্বাস (রা) হতে বর্ণিত , একদিন তিনি রাসূলুল্লাহকে জিজ্ঞেস করেন ওযুর ফজিলত সম্পর্কে , এর উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন-অযু করার সময় যখন তুমি দুই হাতের কব্জি ধৌত করো , তখন হাতের ভুনা সমূহ আঙ্গুলের অগ্রভাগ ও নখ দিয়ে বের হয়ে যায়। এইভাবে , যখন নাকের ছিদ্র পরিষ্কার করো এবং মুখ ও মাথা মাসেহ করো এবং উভয় পায়ের টাখনু পর্যন্ত ধৌত কর তখন যেন তুমি তোমার গুনাহ গুলোকে ধুয়ে পরিষ্কার করে ফেললে। তারপর তুমি যখন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তোমার চেহারা জমিনে রাখো , তখন তুমি সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়ার নবজাতকের মতন নিষ্পাপ হয়ে যাও।(নাসায়ীঃ ১৪৭)।

নামাজ পড়তে হলে প্রথমে পাক-পবিত্র হতে হয় , আর পাক পবিত্র হওয়ার জন্য প্রয়োজন উত্তমরূপে অজু বা গোসল করে হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে যে-নামাজ হল বেহেস্তের চাবি ,আর অজু হলো নামাজের চাবি। নবীজি (সা) মিরাজ থেকে ফিরে আসার পরে একদিন হযরত বেলাল(রা) কে জিজ্ঞেস করলেন - হে বেলাল , তুমি এমন কি আমল করেছ যার কারণে বেহেস্তে আমি তোমার পায়ের আওয়াজ শুনতে পেয়েছি ? এর উত্তরে বেলাল(রা) বলেন - ইয়া রাসুলুল্লাহ , আমিতো তেমন কোন আমল করিনি শুধু সর্বদা অজু অবস্থায় থাকি এবং ওযু করার পরে মাখরুহ ওয়াক্ত না হলে দুই রাকাত তাহিয়্যাতুল ওযুর নামায পড়ি।(বুখারী শরীফ ,১০৮৩)

কিয়ামতের দিন শেষ নবী হযরত মহাম্মদ (সা) অর্থাৎ আমাদের শেষ নবী অযুর জীবনের মাধ্যমে তার উম্মতদের চিনবেন। আবু হুরায়রাহ (রা) নবীজিকে প্রশ্ন করেন - ইয়া রাসুলুল্লাহ , এরপর মানুষের ভিড়ে কেয়ামতের দিন অর্থাৎ হাশরের মাঠে আপনি আপনার উম্মতদের কিভাবে চিনবেন , এর উত্তরে রাসূলুল্লাহ বলেন - কিয়ামতের দিনে আমার মধ্যে এমন অবস্থায় উঠানো হবে যে অধীর প্রভাবে তাদের হাত পা , মুখমণ্ডল এক কথায় অজুর স্থানগুলো উজ্জ্বল , থাকলে (বোখারী শরীফ, ১৩৮)।

আরো পড়ুনঃ তায়াম্মুমের ফরয এবং তায়াম্মুমের নিয়ম

নবীজি বলেছেন-যে ব্যক্তি উত্তম রূপে অজু করে এবং অযু শেষে কালেমা শাহাদত পাঠ করে , তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেওয়া হবে এবং সে যে দরজা দিয়ে খুশি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। যে ব্যক্তি ওযু অবস্থায় নিদ্রায় যাই তার সাথে একদিন ফেরেশতা নিয়োজিত থাকে এবং সেই ব্যাক্তি ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার সাথে সাথে ফেরেশতা আল্লাহর কাছে দোয়া করে বলেন , হে আল্লাহ তোমার এই বান্দাকে ক্ষমা করে দাও কারণ সে পবিত্র অবস্থায় ঘুমিয়েছি।

ওযুর ফরজ কয়টি

অজু করার সময় যে কাজগুলো করা অত্যাবশ্যকীয় এবং আল্লাহর বিধান সেগুলোকে ওযুর ফরজ বলা হয়। আপনার কি জানা আছে ওযুর ফরজ কয়টি এবং কি কি ? যদি সঠিকভাবে জানা না থাকে তাহলে অবশ্যই ওযুর ফরজ কয়টি ও ও কি কি অবশ্যই জেনে নিন। কারণ পাক-পবিত্রতা থাকার জন্য এবং নামাজ ও কুরআন পড়ার জন্য ওযু কতটা গুরুত্বপূর্ণ তো আমরা সকলেই জানি। তাই অবশ্যই ভালোভাবে জেনে নিম অজুর ফরজ কয়টি ও কি কি । অজুর ফরজ হলো ৪ টি যথা,

  1. কপালের ওপর মাথার চুলের গোড়া থেকে থুতনির নিচ পর্যন্ত এবং এক কানের লতি হইতে আরের কানের লতি পর্যন্ত সম্পূর্ণ ধৌত করা। 
  2. কনুইসহ দু'হাত অন্তত: একবার ধৌত করা। 
  3. মাথার এক চতুর্থাংশ একবার মাসেহ করা। 
  4. উভয় পা টাখনুসহ একবার ধৌত করা। হাত-পা এবং মুখমন্ডল একবার ধৌত করা ফরজ আর তিনবার ধৌত করা সুন্নত। আর একবারে যদি ভালোভাবে পানি না পৌছায় তাহলে যতবার দরকার ঠিক ততবার ধৌত করা ফরজ

অযুর সুন্নত কয়টি

অযুর ভেতরে বিশেষ কিছু কাজ রয়েছে যেগুলো করা সুন্নত , এই কাজগুলোকে বলা হয় ওযুর সুন্নত। সঠিকভাবে সুন্নত মেনে ওযু করতে হলে অবশ্যই জানতে হবে অযুর সুন্নত কয়টি এবং কি কি। আজকে আপনাদের সঠিকভাবে জানাবো ওদের সুন্নত কয়টি এবং কি কি। অযুর সুন্নত হলো ১৮ টি, যথা ঃ

  1. বিসমিল্লাহ বলিয়া ওযু শুরু করা। 
  2. নিয়ত করা
  3. মেসওয়াক করা, মেসওয়াকের ব্যবস্থা না থাকলে হাত দিয়ে দাঁত ঘষে নেন।
  4. ডান দিক থেকে অতি শুরু করা
  5. অজুর নির্দিষ্ট অঙ্গ গুলো তিনবার ধৌত করা
  6. অজুর অঙ্গ গুলোতে পানি পৌঁছানোর জন্য ভালোভাবে নাড়াচাড়া করা
  7. তিনবার গড়গড়া সহ কুলি করা। 
  8. তিনবার নাকে পানি দেওয়া ও পরিষ্কার করা। 
  9. বাম হাত দিয়ে নাক পরিষ্কার করা
  10. দুই হাতের কব্জি পর্যন্ত তিনবার ধৌত করা
  11. দাড়ি ঘন হইলে তাহাতে পানি নিয়ে নিচের দিক হইতে দাড়ি খিলাল করা। 
  12. হাত ও পায়ের আঙুল খিলাল করা। 
  13. সমস্ত মাথা মাসেহ করা। 
  14. দুই কান মাসেহ করা। 
  15. গর্দান বা ঘাড় মাসেহ করা
  16. তরতীরের সহিত ওযু করা 
  17. এক জায়গা শুকানোর আগেই অন্য জায়গা ধৌত করা আরম্ভ করা।
  18. অজু শেষ করে কালেমা শাহাদত পাঠ করা

অযুর মুস্তাহাব


অযুর মুস্তাহাব হলো ১২ টি। এবার আমরা অযুর  মুস্তাহাব গুলো জেনে নেব। নিচে অজুর বারোটি মুস্তাহাব একে একে তুলে ধরা হলো। আপনারা যারা অযুর মুস্তাহাব গুলো জানেন না তারা অবশ্যই জেনে নিন।
  1. এমন উচু স্থানে বসে ওযু করা, যাতে ওযুর অয়ানি গড়িয়ে অন্য স্থানে যেতে পারে এবং ছিটা গায়ে না লাগে। 
  2. কিবলামুখী হয়ে বসে ওযু করা 
  3. ডান হাতে পানি নিয়ে কুলি করা এবং নাকে পানি দেওয়া। 
  4. বাম হাত দিয়ে নাক সাফ করা। 
  5. নামা্যের ওয়াক্ত হওয়ার পূর্বেই ওযু করা। 
  6. ওযুর সময় কারো সাহায্য না নেয়া। 
  7. ওযুর সময় দুনিয়াদারীর কথা না বলা। 
  8. উভয় কানের ছিদ্রে কনিষ্ট আঙুল প্রবেশ করে মাসেহ করা 
  9. ওযু শেষে "আশহাদু আল্লাহ ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুল্লাহ " পাঠ করা।
  10. শুধুমাত্র বাম হাতের সাহায্যে দুই পা পরিষ্কার করা
  11. নামাজের সময় হওয়ার আগেই ওযু করা
  12. অজু শেষে অযুর পানি কিছুটা পান করা

অযুর দোয়া

ওযুর দোয়া বাংলা উচ্চারণ: বিসমিল্লাহিল আ'লিয়্যিল আ'যীম ওয়ালহামদু লিল্লাহ আ'লা দীনিল ইসলাম আল ইসলামু হাককুন ওয়াল কুফরু বাতিলুন।
অর্থ: মহান শ্রেষ্ঠ আল্লাহ পাকের নামে শুরু করতেছি এবং ইসলাম ধর্মের জন্য সকল প্রশংসাই আল্লাহর উপযুক্ত। কেননা, ইসলাম সত্য ও কুফর(অবিশ্বাস) মিথ্যা এবং ইসলাম আলো ও কুফর অন্ধকার।

অযুর নিয়ত

যেকোনো ভালো কাজের পূর্বে নিয়ত করা অত্যন্ত জরুরি। তাই আজকে আমরা অজুর নিয়ত সম্পর্কে জেনে নেব। আপনি যদি ওজন নিয়ত না জানেন তাহলে অবশ্যই জেনে নিন। ওজন নিয়তের বাংলা উচ্চারণ এবং এর অর্থ নিচে দেওয়া হল।

আরো পড়ুনঃ বিতর নামাজের নিয়ম এবং নিয়ত

উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন আতাওয়াযযাআ লিরাফইল হাদাসি ওয়াসতিবাহাতাল্লিস সালাতি ওয়া তাকাররুবান ইল্লাল্লাহি তায়া'লা। 
অর্থ: নাপাকী দূর করার উদ্দেশ্যে ও নামায শুদ্ধভাবে পড়বার জন্য এবং আল্লাহ তায়া'লা দীদার লাভ করিবার জন্য অযু করতেছি।

অযু ভঙ্গের কারণ

অযু ভঙ্গের কারণ গুলো জেনে রাখা খুবই জরুরি। অজু ভঙ্গের কারণ গুলো যদি আমাদের জানা না থাকে তাহলে ,ওযু নষ্ট হয়ে গেলে আমরা বুঝতে পারব না যার ফলে আমাদের কোন ইবাদতই হবে না।তাই যারা সঠিকভাবে অযু ভঙ্গের কারণ গুলো জানে জানেন না তারা তারা অবশ্যই জেনে নিন।
  •  প্রসাব-পায়খানার রাস্তা দিয়ে মল-মূত্র, কৃমি বের হলে। 
  • রক্ত বা পুঁজ বের হয়ে গড়িয়ে পড়লে।
  • মুখ ভরে বমি করলে 
  • বায়ু নির্গত হলে। 
  • কোন বস্তুর সাথে ঠেস দিয়ে বা চিত-কাত হয়ে ঘুমালে। 
  • বেহুশ হলে। 
  •  কোন কারনে বীর্জপাত হলে
  • সহবাস করলে
  • পাগল বা মাতাল হলে। 
  • নামাযের মধ্যে উচ্চস্বরে করে হাসলে

অযুর মাকরুহ

এবার আমরা জানবো অযুর মাখরুহ সম্পর্কে। অজুর ভেতরে আটটি কাজ করা মাখরুহ।অযুর মাখরুহ কাজগুলো হলো ,
  1. প্রয়োজনের বেশি পানি ব্যয় করা। 
  2. ওযুর সময় দুনিয়াদারীর অপ্রয়োজনীয় কথা বলা। 
  3. ওযুর ভেতরে মুখ ধোয়ার হওয়ার সময় , মুখে জোরে পানি নিক্ষেপ করে
  4. মুখে বাম হাত দিয়ে পানি দেয়া। 
  5. অপ্রয়োজনে কোন অঙ্গ তিনবারের অধিক ধোয়া। 
  6. একবারের বেশি মাথা মাসেহ করা
  7. নাপাক স্থানে বসে অযু করা
  8. ওযুর পরে হাতের পানি ছিটানো অন্যথায় গোসল শুদ্ধ হবে না। তাহাতে নামায হইবে না ,এমন ধারনা করা।

অযু করার নিয়ম

ইবাদত এবং পবিত্রতা রক্ষার জন্য অযু করার নিয়ম জানা অত্যন্ত জরুরী , কারণ সঠিকভাবে অযু করার নিয়ম না জানলে আপনার কোন ইবাদত শুদ্ধ হবে না এবং কবুল হবে না। তাই ইবাদত করার পূর্বে ভালোভাবে অবশ্যই অযু করার নিয়ম জেনে নিতে হবে। আপনারা যারা এখনো সঠিকভাবে অযু করার নিয়ম জানেন না তারা অবশ্যই অজু করার সঠিক নিয়ম জেনে নিন। নিচে অজুর ফরজ , সুন্নত ও মুস্তাহাব মেনে ওযুর নিয়ম বর্ণনা করা হলো।

ওযু করার করার সময় প্রস্রাব পায়খানা হতে ফিরে বিসমিল্লাহসহ ওযুর নিয়ত করার পর ওযু করবে এবং মনে মনে ওযুর দোয়া পাঠ করে ওযু আরম্ভ করিতে হবে। প্রথমে ডান হাত পরে তিনবার করে কব্জা পর্যন্ত ধৌত করতে হবে। নখের নিচে কোনো ময়লা থাকলে পরিষ্কার করে ফেলে পানি পৌঁছাতে হবে। আঙুলের আংটি সরাইয়া আংটির নিচে পানি পৌঁছাবে। ওযুর সময় দাত পরিষ্কার করা, গড়গড়ার সাথে তিনবার কুলি করবে। নাকের ভিতরে ডান হাতে তিনবার পানি পৌঁছাবে আর বাম হাতের বৃদ্ধা ও কনিষ্ঠা আঙুল দ্বারা পরিষ্কার করে পানি ঝেড়ে ফেলবে।  
কপালের উপরিভাগের চুলের গোড়া হতে থুতনির নিম্নভাগ পর্যন্ত এবং এক কানের লতি হতে অন্য কানের লতি পর্যন্ত সমস্ত মুখমন্ডল দুই হাত দ্বারা তিনবার ধৌত করবে। স্ত্রীলোকের নাসিকায় অলংকারদি থাকলে তা ঘুরিয়া তার নিচে পানি পৌঁছাতে হবে। ঘন দাড়িবিশিষ্ট্য লোকেরা দু'হাতের আঙুল দ্বারা ভালোভাবে দাড়ি মাসেহ (খেলাল) করবে।  ডান হাতের তালুতে পানি নিয়ে আঙুল হতে কনুই সমেত পানি দিয়ে ভিজাইয়া দিবে ও বাম হাত দ্বারা ভাল করে তিনবার ধুয়ে ফেলবে। তারপর তিনবার এই নিয়মে বাম হাত ডান হাত দ্বারা ধুয়ে ফেলবে।
স্ত্রীলোকের হাতে গহনা থাকলে তা সরাইয়া সব জায়গায় পানি দিতে হবে।  স্বীয় উভয় হাতে পানি নিয়ে বৃদ্ধাঙ্গলদ্বয় বাদ দিয়ে অন্য সবগুলি আঙুল এবং হাতের তালু দ্বারা সামনের দিক সম্পূর্ণ মাথা একবার মাসেহ করে পেছনের দিক থেকে নিয়ে আবার পিছনের দিক হতে সম্মুখের দিকে আনিবে। তারপর দুই হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলের পেট দ্বারা দুই কানের পিঠ এবং দুই হাতের শাহাদাত আঙুল দ্বারা দুই কানের ভিতর একবার মাসেহ করবে।তারপর প্রথমে তিনবার ডান পা ও পরে তিনবার বাম পা উত্তমরুপে গিরা পর্যন্ত ধুয়ে ফেলবে। এই সময় বাম হাতের কনিষ্ঠাঙ্গুল দ্বারা প্রথমে ডান পা ও পরে বাম পায়ের আঙ্গুলগুলি খেলাল করে পানি পৌঁছাবে।
মন্তব্য, উপরিউক্ত আলোচনাটির মাধ্যমে এতক্ষণে আপনারা ওজুর ফজিলত এবং ওযু ভঙ্গের কারণ গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছি এবং আশা করছি বুঝতে পেরেছেন অজুর মর্যাদা সম্পর্কে। তাই সকলে সঠিকভাবে অজু করার আমল করুন এবং সর্বদা অজুরত অবস্থায় থাকার চেষ্টা করুন , আর যদি  মাখরুহ সময় না হয় , তাহলে অজুর পরে দুই রাকাত তাহিয়াতুল নামাজ পড়ার চেষ্টা করুন। কারণ, তাহিয়াতুল ওযুর নামাজের মাধ্যমে অশেষ সাওয়াব লাভ করা যায়। আল্লাহ পাক সর্বদা আমাদের পবিত্র থাকার তৌফিক দান করুন (আমিন)।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url