ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল - ডয়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা

ডায়াবেটিস হলো দীর্ঘমেয়েদ এবং জটিল রোগ। এ রোগ হলে রোগীকে খাবার খাওয়ার ব্যাপারে খুবই সচেতন থাকতে হয়ে, কেননা ডায়াবেটিস বেড়ে গেলে শারীরিক জটিলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি এই রোগ ডেকে আনতে পারে মৃত্যুও।তাই এখন আপনাদের সাথে আলোচলা করবো ডায়াবেটিসের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে এবং বিস্তারিত জানাবো ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল ও ডয়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা করার নিয়ম।

ডায়াবেটিস কে আমরা যতটা সহজ রোগ মনে করি ,আসলে ডায়াবেটিস মোটেও এতটা সহজ রোগ নয়। প্রতি বছরই এই রোগের কারণে সারাবিশ্ব প্রায় ১০ লক্ষাধীক মানুষ মারা যার। ডায়াবেটিসের কারণে এত রোগী মৃত্যুর পেছনে রয়েছে অসচেতনতা এবং ডায়াবেটিস সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকা। তাই ডায়বেটিস সম্পর্কে আপনাদেরকে জানানোর জন্য আজকে এই পোস্টের মাধ্যমে শেয়ার করব ডায়াবেটিস সম্পর্কে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং যার মধ্যে থাকবে ডায়াবেটিস কেন হয় ,ডায়াবেটিস এর লক্ষণ ,কি খেলে ডায়বেটিস হবে না ,ডয়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা ,ডায়াবেটিস কত হলে মানুষ মারা যায়। ডায়াবেটিস সম্পর্কে এইসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো জানার জন্য চলুন সম্পন্ন পোস্টটি পড়ে ফেলা যায়।

সূচিপত্র ঃ ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল - ডয়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা 

ডায়াবেটিস কেন হয়

আমাদের সকলেরই খুব ভালোভাবে জানা আছে যে ডায়াবেটিস হলো এক ধরনের রোগ এই রোগকে  মেটাবলিক ডিজঅডারও বলা যেতে পারে। এই ডায়াবেটিস নামক রোগে আক্রান্ত হতে পারে যেকোনো  বয়সের মানুষ। ডায়াবেটিস নামটির সাথে পরিচিত হলেও , ডায়াবেটিস কেন হয় তা সম্পর্কে সঠিক ধারণা কি আপনার আছে ? এমন অনেক মানুষ আছে যারা হয়তো এখনো জানে না ডায়াবেটিস কেন হয়। তাই আজকে আপনাদের অল্প কথায় এবং সহজভাবে জানানোর চেষ্টা করব ডায়াবেটিস কেন হয়।

ডায়াবেটিস হলে মূলত শরীরের ইনসুলিন নামক হরমোনের উৎপাদন ক্ষমতা কমে যায় এবং অনেক ক্ষেত্রে ইনসুলিন হরমোন উৎপাদনের ক্ষমতা একেবারে নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও ইনসুলিন হরমোন শরীরে উৎপাদিত হওয়ার পরেও যখন সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না তখনই দেখা দেয় ডায়াবেটিস নামক এই রোগের। সুস্থ শরীরে আমরা যখন খাবার গ্রহণ করি তখন সেই খাবারের মধ্যে থাকা শর্করাকে চিনি বা গ্লুকোজে পরিণত করার কাজটি করে থাকে অগ্নাশয় থেকে নিঃসরিত হওয়া ইনসুলিন হরমোন। ইনসুলিন হরমোন শর্করাকে চিনি বা গ্লুকোজ এ পরিণত করে তা শক্তি আকারে দেহের প্রতিটি কোষে পৌঁছে দেওয়ার কাজটি সম্পন্ন করে থাকে।

আরো পড়ুনঃ হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার ১৫ টি কারণ

কিন্তু শরীর যখন ইনসুলিন হরমোন উৎপাদনে ব্যর্থ হয় তখন রক্তে শর্করা বা গ্লুকোজের মাত্রা বাড়তে থাকে আবার অনেক সময় দেখা যায় শরীর ইনসুলিন হরমোন উৎপাদন করতে পারলেও সেই হরমোনে কাজ করতে পারে না অর্থাৎ শরীরে ইনসুলিন হরমোন উৎপাদন না হলে অথবা ইনসুলিন হরমোন শরীরে সঠিকভাবে কাজ করতে না পারলে রক্তের শর্করা বা গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায় আর এটি হলো ডায়াবেটিসের প্রধান কারণ। ডায়াবেটিস হলে শরীর সাময়িক অসুবিধার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি সমস্যারও সম্মুখীন হয়।

ডায়াবেটিস এর কারণ হলো শরীরে ইনসুলিন হরমোন উৎপাদিত না হওয়া আর ডায়াবেটিস বা শরীরের সঠিকভাবে ইনসুলিন হরমোন উৎপাদন না হওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হয়। ডায়াবেটিস হওয়ার পেছনে মূলত যে কারণ গুলো খুঁজে পাওয়া যায় তার মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হলো,

  • শরীরচর্চা বা পর্যাপ্ত হাঁটাহাঁটি অভাব
  • ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবন
  • অনিদ্রা বা রাতে জেগে থাকা
  • ফাইবার যুক্ত খাবার কম খাওয়া
  • অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা স্ট্রেস
  • অতিরিক্ত শারীরিক ওজন
  • জিনগত কারণ

ডায়াবেটিস এর লক্ষণ

শরীরে ইনসুলিন নিঃসরণ না হওয়ার কারনে অথবা ইনসুলিন হরমোন সঠিকভাবে কাজ করতে না পারার কারণে রক্তে শর্করা বা গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে গিয়ে যখন ডায়াবেটিস নামক রোগ তৈরি হয় তখন ডায়াবেটিসের কারণে এর কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। অনেকেই আছেন যারা ডায়াবেটিস এর লক্ষণ সম্পর্কে জানতে চান। তাদের উদ্দেশ্যে আপনাদের আজকে জানাবো ডায়াবেটিস এর লক্ষণ গুলো। ডায়াবেটিস যেহেতু অত্যন্ত একটি রোগ এবং যেকোনো সময় , যে কোন বয়সের মানুষই এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে তাই সকলের জেনে রাখা উচিত এই রোগটি হলে কি কি লক্ষণ প্রকাশ পায়। ডায়াবেটিস নামক রোগটি যেসব লক্ষণের মাধ্যমে প্রকাশ পায় সেগুলো হলো,

  • বমি বমি ভাব
  • ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ আসা
  • হাত পা ঝিমঝিম করা
  • অতিরিক্ত পিপাসা পাওয়া
  • মাঝে মাঝেই প্রচন্ড ক্ষুধা লাগা
  • একটুতেই শরীর ক্লান্ত এবং দুর্বল লাগা
  • মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া
  • চোখে ঝাপসা দেখা
  • হঠাৎ করে দ্রুত শারীরিক ওজন কমে যাওয়া
  • হজম প্রক্রিয়ায় সমস্যা দেখা দেওয়া
  • ত্বক সুষ্ক হওয়া 
  • ত্বকে চুলকানি বা এলার্জির প্রবণতা বেড়ে যাওয়া
  • মিষ্টি জাতীয় খাবারের প্রতি প্রবল আকর্ষণ অনুভব করা
  • কাটা বা ক্ষতস্থান শুকাতে অনেক দেরি হওয়া

ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল

ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল এই বিষয়টি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এবং যারা ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে রয়েছেন তাদের জন্য জেনে রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন। কেননা ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল এ বিষয়টি যদি আপনার জানা থাকে তাহলে আপনি খুব সহজেই বুঝতে পারবেন আপনার শরীরের জন্য ডায়াবেটিসের মাত্রা কত রাখা উচিত।আপনাদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষেরই হয়তো জানা নেই ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল। তাই আজকে আপনাদেরকে জানাবো ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল এই বিষয়টি।

খালি পেটে যদি আপনার রক্তে সুগারের মাত্রা ৮০ - ১০০ এবং খাবার খাওয়ার দুই ঘন্টা পরে রক্তের শর্করা বা সুগারের মাত্রা যদি ১৩০ - ১৪০ বা এর চেয়ে কিছুটা কম বেশি হয়ে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে  চিন্তা করার কোন কা কারণ নেই কেননা রক্তের সুগারের এই মাত্রাটি স্বাভাবিক বা নরমাল। কিন্তু যদি , মনে করেন খালি পেটে আপনার রক্তের সুগারের মাত্রা ৭০ অথবা ৮০ এবং ভরা পেটে  ডায়াবেটিস এর মাত্রা ১৭০ বা ১৮০ তাহলে সে ক্ষেত্রে ডায়াবেটিসের এই মাত্রাকে স্বাভাবিক ধরা হয় না কারণ খালি পেটে এবং ভরা পেটে ডায়াবেটিসের মাত্রার মধ্যে বিরাট একটা ব্যবধান থেকে যায়। 

আরো পড়ুণঃ ক্যালসিয়ামের অভাবে কী হয়

যদি আরেকটু সহজ ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করা যায় তাহলে বলতে হবে , হবে খালি পেটে এবং ভরা পেটে ডায়াবেটিসের মাত্রার যদি অনেক বেশি ব্যবধান না থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে চিন্তার কোন কারণ নেই আর যদি খাবার আগে এবং পরে ডায়াবেটিসের মাত্রার মধ্যে ব্যবধান বেশি হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই এটি নরমাল নয় এবং সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।ডায়াবেটিস বিভিন্ন বয়সী মানুষের মধ্যেই দেখা দিতে পারে। তাই বয়স ভেদে ডায়াবেটিসের নরমাল রেঞ্জের কিছুটা তারতম্য হয়ে থাকে।এবার আপনাদের জানাবো বয়স ভেদে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল ধরা হয়

  • রক্তে ১১০ - ১২০ mg/dl সুগারের মাত্রা যদি ০-৫ বছরের শিশুদের হয় তাহলে তা নরমাল ।
  • ১০০ - ১৮০ mg/dl সুগারের মাত্র হলো ৬ -১২ বছর বয়সীদের জন্য স্বাভাবিক।
  • ১৩ - ১৭ বছরের ছেলে মেয়েদের রক্তে সুগারের স্বভাবিক  মাত্রা হলো ৯০ - ১৫০ mg/dl ।
  • ১৮ থেকে এর উর্ধ্বে শরীরে রক্তের  সুগার মাত্রার স্বাভাবিক রেঞ্জ হলো - খালি পেটে ৯৯ mg/dl এবং ভরা পেটে ১৪০ mg/dl।
  • ৪০ এবং এর উর্ধ্ব বয়স্কদের খাবার খাওয়ার পর রক্তে সুগারের স্বাভাবিক মাত্রা ১৩০ mg/dl এবং খালি পেটে রক্তে সুগারের স্বাভাবিক মাত্রা ৯০ mg/dl

কি খেলে ডায়বেটিস হবে না

আপনারা জানেন ডায়াবেটিস অত্যন্ত জটিল একটি রোগ এই রোগে আক্রান্ত হলে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। তাই আমাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা যেন অতিরিক্ত হয়ে না যায়। ডায়াবেটিস থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই কিছু নিয়মকানুন মানতে হবে এবং খাবার কিছু খাবার যেগুলো ডায়াবেটিস দূরে রাখতে বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে সেই খাবারগুলো খাদ্য তালিকা যুক্ত করতে হবে।চলুন এবার জেনে নেয়া যাক কি খেলে ডায়বেটিস হবে না। আপনি যদি না জেনে থাকেন কি খেলে ডায়বেটিস হবে না তা হলে এখুনি জেনে নিন।রক্ত শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখার খাবার গুলো হলো

  • বার্লি
  • লাল চাল
  • ফ্ল্যাক সীড
  • চিয়া সীড
  • কুমড় বীজ
  • তিসিবীজ
  • তুলসি পাতা
  • লেটুস পাতা
  • মটরশুটি
  • শিম 
  • আখরোট
  • বাদাম
  • খেজুর
  • আপেল
  • বেরি জাতীয় ফল
  • টকদই
  • গ্রীন টি
  • লো ফ্যাট দুধ
  • লেবু
  • ডিমের সাদা অংশ
  • টাটকা এবং সবুজ শাক সবজি
  • ফাইবার যুক্ত খাবার

ডয়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা

একবারে বেশি খাবার খাওয়া বা পেট ভরে খাবার খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সমস্যার কারণ হতে পারে আর এই কারণে ডায়াবেটিস রোগীদেরকে তিন বেলার খাবার অল্প অল্প করে ৬ বেলায় ভাগ করে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন ডাক্তাররা। ডায়াবেটিস রোগীদেরকে খাবার খাওয়ার ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন থাকতে হয় আর এই কারণেই ডয়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা প্রস্তুতের সময় বেশ কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। তাই আজকে আপনাদেরকে ডয়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা প্রস্তুত করার জন্য কোন বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে তা জানাবো।ডয়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় নির্দিষ্ট পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য রাখতে হবে যাতে করে শরীরে কোন ভিটামিন বা খনিজের ঘাটতি না পড়ে। ডয়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা প্রস্তুতের সময় অবশ্যই বয়সের দিকটাও বিবেচনায় রাখতে হবে কেননা বয়স ভেদে ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় কিছুটা পরিবর্তন আনতে হয়। যেমন-

  • ডায়াবেটিস রোগীর বয়স যদি কম হয় তাহলে খেয়াল রাখতে হবে খাদ্য তালিকায় ২০০০-৩০০০ কিলোক্যালোরি রাখার।
  • ডায়াবেটিস রোগী যদি মাঝ বয়সী হয় তাহলে এ ধরনের রোগীদের খাদ্য তালিকায় ১০০০- ১৬০০ কিলোক্যালরি রাখা উচিত।
  • রোগী যদি বৃদ্ধ বা বয়স্ক হয় তাহলে সেক্ষেত্রে কিলোক্যালরির পরিমাণ হবে ১০০০-১৬০০।

ডায়াবেটিস রোগীদের খাবার খেতে হবে নির্দিষ্ট পরিমাণে এবং সময়মতো , এর সাথে আরেকটি বিষয়ও খেয়াল রাখতে হবে দীর্ঘক্ষণ অথবা কোন বেলা খাবার যেন বাদ না পড়ে যায়।ডয়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা প্রস্তুত এর পূর্বে অবশ্যই একজন ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। কেননা বয়স ভেজে ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য তালিকা যদি পর্যাপ্ত ভিটামিন বা খনিজের ঘাটতি থাকে তাহলে সেক্ষেত্র করিনা বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বা রোগ দেখা দিতে পারে। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য তালিকা কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাট বা চর্বি জাতীয় খাদ্যের পরিমাণ যথাসম্ভব কম রাখার চেষ্টা করা উচিত। এর পরিবর্তে খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে হবে নির্দিষ্ট পরিমাণে প্রোটিন বা আমিষ এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি।

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে হবে বিভিন্ন ধরনের এবং বিভিন্ন রঙের শাকসবজি ও ফলমূল এবং চিনি ও মিষ্টি জাতীয় খাবার গুলো একেবারে কম খেতে হবে। মিষ্টি জাতীয় খাবারগুলো  গ্রহণের পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারি পরামর্শ অনুসরণ করতে হবে , নির্দেশনা মোতাবেক যতটুকু মিষ্টি না খেলেই নয় ঠিক ততটুকু পরিমাণই মিষ্টি খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। এছাড়াও ডায়াবেটিস রোগীদেরকে খেতে হবে লাল চাল , লাল আটা , মাল্টিগ্রেইন পাউরুটি , মিষ্টি আলু কেননা এই খাবারগুলোতে রয়েছে শ্বেতসার যা পরিপাকতন্ত্রকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে এবং রক্তের শর্করার মাত্রা কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তবে ডায়াবেটিস রোগীদেরকে সব খাবারই খেলেতে হবে পরিমাণ বুঝে , পরিমাণের বেশি বা অতিরিক্ত হওয়া কিছুই খাওয়া চলবে। আশা করছি ,ডয়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা প্রস্তুত করার বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন তারপরেও আপনাদের সুবিধার্থে Quora নামক ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করা ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্যের একটি তালিকা নীচে স্ক্রীনশট আকারে প্রকাশ করা হলো।

ডায়াবেটিস কত হলে মানুষ মারা যায়

আপনাদের অবশ্যই জানা আছে যে ডায়াবেটিস যদি বেশি হয়ে যায় তবে বিপদ হতে পারে এবং ঘটতে পারে মৃত্যুও ।অনেকেই জানতে চান বা প্রশ্ন করে থাকেন ডায়াবেটিস কত হলে মানুষ মারা যায়। আসলে ডায়াবেটিস কত হলে মানুষ মারা যায় বা যাবে নিশ্চিত হয়ে বলা খুবই কঠিন, তবে এ ব্যাপারে আপনাদেরকে স্বচ্ছ একটি ধারণা দেওয়া যেতে পারে। ডায়াবেটিসের মাত্রা যদি ১৬.৭ মিলিমোল বা তার বেশি হয়ে যায় তাহলে সে ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস রোগীদের বিপদ ঘটতে পারে এবং এই পরিস্থিতিতেও কেউ যদি সচেতন না হয় বা প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ না করে তাহলে সেক্ষেত্রে ডায়াবেটিসের মাত্রা আরো বেশি হয়ে গিয়ে স্ট্রোক ,হার্ট এ্যটাক অথবা কিডনি ফেইলিওর এর কারণে মৃত্যু ঘটতে পারে।

আরো পড়ুনঃ হার্টের সমস্যার লক্ষণ

তবে পাশাপাশি এটাও মনে রাখতে হবে ডায়াবেটিসের মাত্রা বেশি হয়ে গেলে যেমন রোগের মৃত্যু ঘটতে পারে ঠিক তেমনি শরীরের সুগারের মাত্রা বা ডায়াবেটিস যদি একেবারে নিল বা জিরো হয়ে যায় তাহলে  সে ক্ষেত্রেও রোগীর মৃত্যু ঘটতে পারে। রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়ার যে সমস্যাটিকে বলা হয় হাইপোগ্লাইসেমিয়া। প্রতিবছর এই হাইপোগ্লাইসেমিয়া নামক রোগটির কারণেও বহু মানুষের মৃত্যু ঘটে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদেরকে নিয়মিত ব্লাড টেস্ট করার করার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। সুতরাং বুঝতেই পারছেন ডায়াবেটিস যদি ৬১.৭ এর চেয়ে অনেক বেশি হয়ে যায় অথবা রক্তে শর্করার মাত্রা নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে অনেক কম হয়ে যায় তাহলে উভয় ক্ষেত্রেই রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটতে পারে।

মন্তব্য ,পোস্টটি সম্পন্ন পড়ার পরে এখন নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন ডায়াবেটিস কতটা কঠিন এবং জটিল রোগ। তাই এই রোগের ব্যাপারে শুরু থেকে সচেতন হন কেননা অসচেতনতার কারণে ডায়াবেটিস নামক রোগটি আপনার মৃত্যুও দেখে আনতে পারে। আর যারা ডায়াবেটিসের রোগী আছেন তারা ডাক্তারি নির্দেশনা মোতাবেক চলার পাশাপাশি রেগুলার ডায়াবেটিসের মাত্রা চেক করার জন্য গ্লুকোমিটার নামক যন্ত্রটি বাসায় রাখার চেষ্টা করুন, যাতে আপনি প্রতিদিন অন্তত একবার হলেও আপনার ডায়াবেটিসের মাত্রা চেক করতে পারেন এবং এর পরিবর্তন লক্ষ্য করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url