রক্তশূন্যতা দূর করার ১৫টি ঘরোয়া উপায় - রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ

রক্তশূন্যতা খুবই কমন একটি রোগ , বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ এই রক্তশূন্যতা নামক রোগে আক্রান্ত এবং প্রতি বছর বছর প্রায় হাজার হাজার মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়। শুরু থেকে যদি রক্তশূন্যতার ব্যাপারে সচেতন হওয়া না যায় তাহলে এই রক্তশূন্যতা মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। তাই আজকে আপনাদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য রক্তশূন্যতা দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব এবং এই পোস্টে আপনাদের জানাবো রক্তশূন্যতা দূর করার ১৫টি ঘরোয়া উপায় ও রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ সম্পর্কেও।

রক্তস্বল্পতা খুব কমন এবং জটিল রোগ হলেও এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া খুব একটা কঠিন নয়। আপনি যদি রক্তশূন্যতা দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান রাখেন এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তাহলে এবং খাদ্য তালিকা প্রস্তুতে শরীরে রক্ত হয় এই জাতীয় খাদ্যগুলো খাদ্য তালিকায় যুক্ত করার মাধ্যমে খুব সহজেই আপনি রক্তশূন্যতা রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। রক্তশূন্যতা থেকে মুক্ত থাকার জন্য আজকে আপনাদেরকে জানাবো রক্তশূন্যতা দূর করার ১৫টি ঘরোয়া উপায় ও রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ এর পাশাপাশি আরো বেশ কিছু বিষয় যেমন-কোন মাছ , ফল এবং সবজি খেলে রক্ত বাড়ে , রক্তশূন্যতা হলে কি হয় , রক্তশূন্যতা কেন হয় , অ্যানিমিয়া কিসের অভাবে হয়। তাহলে চলুন আর দেরি না করে রক্তশূন্যতা গুরুত্বপূর্ণ এই সম্পর্কে বিষয়গুলো জেনে নেওয়া যাক।

সূচিপত্রঃ রক্তশূন্যতা দূর করার ১৫টি ঘরোয়া উপায় - রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ

রক্তশূন্যতা কেন হয়

রক্তশূন্যতার সমস্যায় অনেকেই বুঝে থাকেন , রক্তশূন্যতার সমস্যা অনেকের থাকলেও অনেকেই হয়তো রক্তশূন্যতা কেন হয় সঠিকভাবে তা জানেন না। তাই এখন আপনাদেরকে রক্তশূন্যতা কেন হয় এই বিষয়ে জানাবো। আপনারা হয়তো জেনে থাকবেন যে আমাদের রক্তের ভেতরে এক ধরনের রঞ্জক পদার্থ থাকে , যেই রঞ্জক পদার্থটির নাম হলো হিমোগ্লোবিন। বিভিন্ন বয়সী মানুষের রক্তে একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় হিমোগ্লোবিন থাকা অত্যান্ত জরুরী কিন্তু যখন বয়স অনুযায়ী মানুষের শরীরে হিমোগ্লোবিন সঠিক মাত্রায় থাকে না তখনই দেখা দেয় রক্তশূন্যতা।

আরো পড়ুনঃ হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে

অন্যভাবে বলা যায় , শরীরের রক্ত বেশ কয়েকটি উপাদান নিয়ে গঠিত হয়। আর রক্তের উপাদান গুলোর মধ্যে থাকা লোহিত রক্তকণিকা এবং রঞ্জক পদার্থ হিমোগ্লোবিন যখন স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে কম থাকে তখন শরীরের  বিভিন্ন  কোষগুলোতে সঠিকভাবে রক্ত সরবরাহ হয় না তখনই রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। এছাড়াও শরীরে আইরনের অভাব থাকলে অথবা লোহিত রক্তকণিকা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ভেঙ্গে যেতে থাকলে এই কারণগুলোর জন্য রক্তশূন্যতা দেখাতে। তবে অধিকাংশ মানুষের ক্ষেত্রে আয়রনের ঘাটতির কারণে রক্তশূন্যতা হতে দেখা যায়। তাছাড়াও ফলিক এসিড এবং ভিটামিন বি টুয়েলভ এর কারণে ও রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারি

রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ

রক্তশূন্যতা এক ধরনের রোগ এবং এই রোগটি অত্যন্ত কমন। এই রোগটি হওয়ার কোন বয়স নেই  যেকোনো বয়সী মানুষের এই রোগ হতে পারে। প্রতি বছরই বিশ্বের প্রায় হাজার হাজার মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয় যেহেতু এই রোগের কোন বয়স নেই এবং যেকোনো সময়ই এই রোগটি দেখা দিতে পারে তাই, রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান রাখা প্রয়োজন । কিন্তু অধিকাংশ মানুষই এই রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ সম্পর্কে জানে না। যারা রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ জানেন না তাদের উদ্দেশ্যে আজকে আপনাদের জানাবো অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ। শরীরের রক্তশূন্যতা দেখা দিলে যে সকল লক্ষণ প্রকাশ পায় সেগুলো হল ,

  • ক্লান্তি
  • শ্বাসকষ্ট
  • দুর্বলতা
  • মাথাব্যথা
  • মাথা ঘোরা
  • হাত-পা শির শির করা 
  • খিঁচুনি
  • জ্ঞান হারানো
  • পিপাসা বেড়ে যাওয়া
  • ত্বক ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া
  • চোখে ঝাপসা দেখা
  • বুক ধরফর করা 

রক্তশূন্যতা হলে কি হয়

আপনারা কি জানেন রক্তশূন্যতা হলে কি হয় এবং রক্তশূন্যতার কারণে শরীরের কি কি ক্ষতি হতে পারে? যদি রক্তশূন্যতা হলে কি হয় এই বিষয়টি আপনি না জেনে থাকেন তাহলে এখনি জেনে নেওয়া উচিত এবং রক্তশূন্যতার ব্যাপারে সচেতন হওয়া উচিত। তাই চলুন এবার রক্তশূন্য তাহলে কি হয় তা জেনে নেওয়া যাক, রক্তশূন্যতার কারণে হয়ে থাকে

  • ঠোঁটের কোনায় ক্ষত বা ঘা 
  • জিহ্বায় ঘা
  • চুল রুক্ষ হয়ে যাওয়া
  • চুল ও নখের ভঙ্গুরতা বৃদ্ধি পায়
  • হার্টবিট বেড়ে যায়
  • শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়
  • পায়ে পানি চলতে পারে
  • শরীরের কোষগুলোতে অক্সিজেন সরবরাহ ঠিক মতন হয় না
  • লোহিত রক্ত কণিকার অস্বাভাবিক ভাঙ্গনের ফলে দেখা দিতে পারে জন্ডিস
  • স্নায়বিক দুর্বলতা সৃষ্টি হয়

রক্তশূন্যতা দূর করার ঘরোয়া উপায়

বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ এই রক্তশূন্যতা বা  অ্যানিমিয়া রোগে আক্রান্ত। ছোট থেকে বড় যেকোনো বয়সী মানুষেরই এই রক্তশূন্যতা রোগ হতে পারে তাই আপনার বাসায় যদি রক্তশূন্যতার রুগী থাকে অথবা আপনি নিজেও যদি রক্তশূন্যতার রুগী হন তাহলে রক্তশূন্যতা দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো অবশ্যই আপনার জেনে রাখা উচিত। যদিও বেশ কিছু মেডিসিন রয়েছে এগুলোর মাধ্যমে শরীরের রক্তশূন্যতা দূর করা যায় তারপরেও মেডিসিনের মাধ্যমে রক্তশূন্যতা দূর করার চেয়ে রক্তশূন্যতা দূর করার ঘরোয়া উপায় ফলো করার মাধ্যমে সুস্থ থাকা উত্তম কারণ যে কোন ঔষধেরই কিছু না কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তাই এখন আপনাদের রক্তশূন্যতা দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো জানাবো।আজকে আপনাদের জানাবো রক্তশূন্যতা দূর করার ১৫টি ঘরোয়া উপায়। রক্তশূন্যতা দূর করার ১৫টি ঘরোয়া উপায় নীচে দেয়া হলো, 

আয়রন জাতীয় খাবার গ্রহণঃ আপনাদেরকে আগেও জানিয়েছি যেশরীরে আয়রন জাতীয় খাবারের ঘাটতির কারণ হতে পারে রক্তস্বল্পতার অন্যতম কারণ। তাই রক্তস্বল্পতা দূর করার জন্য আইরন জাতীয় খাবার বেশি বেশি খেতে হবে। আয়রন জাতীয় খাবারের মধ্যে রাখতে পারেন -কচুর শাক , বাদাম , কাঁচা কলা , ছোলা , পালং শাক , ডাল , কুমড় বীজ কলিজা ইত্যাদি খাবার।

ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে হবেঃ ভিটামিন সি জাতীয় খাবার গুলো রক্তস্বল্পতা দূর করতে বিশের সাহায্য করে। এ কারণে রক্তস্বল্পতা দূর করতে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার যেমন-লেবু , টমেটো , পেয়ারা, ব্রকলি , পেঁপে ইত্যাদি খাবার গুলো নিয়মিত খেতে হবে।

ভিটামিন বি ১২ জাতীয় খাবার গ্রহণঃ শরীরে ভিটামিন বি ১২ জাতীয় খাবার গুলোর ঘাটতি থাকার কারণেও অনেক সময়  রক্তশূন্যতা দেখা দেয় তাই  রক্তশূন্যতা দূর করতে হলে আপনার খাদ্য তালিকায় অবশ্যই ভিটামিন বি টুয়েল জাতীয় খাবারগুলো যুক্ত করতে হবে। আপনার খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন মটরশুটি , ডিম , দুধ , কলা ইত্যাদি খাবার গুলো কারন এই খাবার গুলোর মধ্যে থেকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি১২ পাওয়া সম্ভব।

মধুঃ শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করার জন্য খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে পারেন মধু , কারণ মধুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন , ম্যাঙ্গানিজ , কপার এবং রক্তশূন্যতা দূর করতে পারে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সমূহ। রক্তস্বল্পতা দূর করতে পাকা কলার সাথে মধু যুক্ত করে খেতে পারেন এতে অনেক ভালো উপকার পাওয়া যায় রক্তশূন্যতা দূর করার ক্ষেত্রে

প্রচুর পরিমাণে ফলমূল খেতে হবেঃ রক্তশূন্যতা বা রক্তস্বল্পতা দূর করার জন্য খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন রাখতে হবে টাটকা ফলমূল। খাদ্য তালিকায় প্রচুর পরিমাণে ফলমূল রাখলে অথবা টাটকা ফলের জুস রাখলে এটি আমাদের রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করবে। রক্তস্বল্পতার রোগীদের খাদ্য তালিকা আয়রন যুক্ত ফল যেমন -আপেল , বেদানা , কলা , আঙ্গুর , কমলা ইত্যাদি ফলগুলো রাখা উচিত।

সবজি জাতীয় খাবারঃ রক্তশূন্যতা দূর করতে খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে সবজি জাতীয় খাবারও। কারণ সবজি জাতীয় খাবার গুলো থেকেও আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন বি টুয়েলভ , ফলিক এসিড , আইরন পেতে পারি। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় টাটকা শাকসবজি হিসেবে রাখুন -কচুর লতি , কচু শাক , পালং শাক , লেটুসপাতা , ধনিয়া পাতা, পুদিনা , ব্লকলি , বিট ইত্যাদি। আর এই সবজিগুলো তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে। আর কি থাকতে পারে

কলিজাঃ আপনারা জানেন কলিজার রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে কারণ কলিজায় পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি এবং আইরন। তাই রক্তশূন্যতার রোগীরা খাদ্য তালিকায় সপ্তাহে  ৩-৪ দিন  গরু , খাসি অথবা মুরগির কলিজা রাখার চেষ্টা করুন। তবে কলিজা খাওয়ার ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপ এবং হার্টের রোগীরা সতর্ক থাকবেন। কারণ উচ্চ রক্তচাপ এবং হার্টের রোগীদের জন্য কলিজা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

আরো পড়ুনঃ ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণ এবং ব্লাড ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়

দুধঃ রক্তশূন্যতা রোগীদের নিয়মিত এক গ্লাস দুধ খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে কারণ দুধ আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় আয়রন, ভিটামিন , প্রোটিন , ক্যালসিয়ামের যোগান দিতে পারে। নিয়মিত এক গ্লাস দুধ খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ে এবং রক্তশূন্যতা দূর হয়।

সয়াবিন বা সয়াবড়িঃ রক্তস্বল্পতা দূর করার জন্য খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন সয়াবিন অথবা সয়াবড়ি।সয়াবড়ি প্রোটিনের একটি বড় উৎস তাই এর মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া যায় এবং পাওয়া যায় সাইট্রিক এসিড যা শরীরের রক্তের পরিমাণ বাড়াতে এবং অ্যানিমিয়া রোগ দূর করতে দেশের সাহায্য করে থাকে।

খাদ্য তালিকায় রাখুন ডুমুরঃ আয়রনের আরেকটি বড় উৎস হল ডুমুর , ডুমুর থেকেও প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়। রক্তশূন্যতার রোগীদের ক্ষেত্রে রান্না এবং কাঁচা দুই ধরনের ডুমুরই বিশেষ উপকারী। তাই রক্তশূন্যতা রোগীদের খাদ্য তালিকায় রান্না করা ডুমুর রাখার চেষ্টা করুন এবং এই ধরনের রোগীদের প্রতিদিন ২-৩টি করে কাঁচা ডুমুর খাওয়া উচিত।

চিনা বাদাম , ডিম ও মাছঃ  রক্তশূন্যতা থেকে মুক্ত থাকতে হলে এবং রক্তশূন্যতা দূর করতে হলে প্রতিদিন খেতে পারেন চীনা বাদাম। এছাড়াও ডিম এবং সামুদ্রিক মাছ আইরনের অন্যতম বড় উৎস তাই খাদ্য তালিকায় ডিম এবং সামুদ্রিক মাছগুলো যুক্ত করতে পারেন। সামুদ্রিক মাছ এবং ডিমের কুসুমে থাকা আইরন শরীরের লোহিত রক্তকণিকা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে ।

বডি মাসাজঃ রেগুলার হাত-পা সহ আপনার সম্পূর্ণ বডি মাসাজ করুন। বডি মাসাজের ফলে সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে এবং লোহিত রক্তকণিকা সময়ের আগে ভেঙ্গে যাওয়া রোধ করবে আর এভাবেই বডি মাসাজ আপনার  রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করবে।

চা কফি জাতীয় খাবার এভয়েড করুনঃ চা বা কফি জাতীয় খাবার গুলো রক্তশূন্যতার রোগীদের এভোয়েড করে চলায় বেটার কেননা চা বা কফি জাতীয় খাবার গুলো শরীর থেকে আয়রন শুষে নেই এবং যার ফলে রক্তস্বল্পতার সমস্যা সৃষ্টি হয়। তাই যাদের রক্তস্বল্পতার সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে চা বা কফি, জাতীয় খাবার গুলো বেশি না খাওয়াই ভালো।

আরো পড়ুনঃ শরীরে হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার কারণ

ঠান্ডা পানিতে গোসল করতে হবেঃ  গরম আবহাওয়ায় প্রতিদিন অন্ততপক্ষে দুইবার ঠান্ডা পানিতে গোসল করতে হবে । শুনতে অবাক লাগলেও ঠান্ডা পানিতে গোসল রক্তশূন্যতা দূর করতে অনেক সাহায্য করতে পারে ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে শরীরের লোহিত রক্ত কণিকার পরিমাণ ঠিক থাকে এবং অসময়ে লোহিত রক্ত কণিকা ভেঙ্গে যাওয়া রোধ হয়।

গোসলে ব্যবহার করুন ইপসাম সল্টঃরক্তশূন্যতা দূর করার ঘরোয়া উপায়  এর আরেকটি হলো গোসলের পানিতে ইপসাম সল্ট ব্যবহার। পরিমাণ অনুযায়ী গোসলের পানিতে ইপসাম সল্ট ব্যবহার করলেও রক্তশূন্যতা দূর করতে এটি সাহায্য করে।  রক্তস্বল্পতা দূর করতে আপনি ইপসাম সল্ট পানিতে গোসলে পরিবর্তে এই পানিতে পা ভিজিয়ে কিছুক্ষণ বসে থাকলেও অনেক উপকার পাওয়া যায়।

অ্যানিমিয়া কিসের অভাবে হয়

আপনারা অনেকেই জানতে চান অ্যানিমিয়া কিসের অভাবে হয় , তাই আজকে আপনাদেরকে সংক্ষেপে এবং অল্পকথায় জানানোর চেষ্টা করব অ্যানিমিয়া কিসের অভাবে হয়। এই প্রশ্নের উপরের অংশে আপনাদেরকে বিস্তারিত ভাবে জানিয়েছি অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা রোগ কেন হয় , অ্যানিমিয়া রোগের কারণ বিশ্লেষণ এবং পর্যবেক্ষণ করলে জানতে পারা যায় অ্যানিমিয়া রোগ হয়ে থাকে শরীরে হিমোগ্লোবিন , ভিটামিন বি টুয়েলভ , ফলিক এসিড এবং আয়রনের ঘাটতি করে। এছাড়াও অ্যানিমিয়া রোগের প্রধান কারণ হলো সঠিক সময়ে এর আগেই লোহিত রক্তকণিকা ভেঙ্গে যাওয়া অথবা লোহিত কণিকা শরীরের পর্যাপ্ত পরিমাণে না থাকা। আশা করছি অ্যানিমিয়া কিসের অভাবে হয় বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।

কোন সবজি খেলে রক্ত হয়

শরীরের রক্তশূন্যতা দূর করার জন্য যেসব সবজি খেলে রক্ত হয় এ জাতীয় সবজিগুলো প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে। তাই রক্তস্বল্পতার রোগীদের প্রথমে ভালোভাবে জানতে হবে কোন সবজি খেলে রক্ত হয়। অনেকেই হয়তো জানেন না কোন সবজি খেলে রক্ত হয় এবং কোন সবজিগুলো আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ও আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে। তাই চলুন আর দেরি না করে কোন সবজি খেলে রক্ত হয় সেই সবজিগুলোর নাম জেনে নেওয়া যাক, শরীরে আয়রনের ঘাটতি মিটিয়ে রক্ত তৈরিতে বিশেষভাবে সাহায্য করে যেসব সবজি সেগুলো হলো ,

  • কচুর শাক
  • কচুর লতি
  • পালং শাক
  • লাল শাক
  • বিট
  • কাঁচা কলা
  • ব্রকোলি
  • টমেটো
  • ডুমুর
  • বাঁধাকপি
  • ধনিয়া পাতা
  • পুদিনা পাতা
  • লেটুস পাতা

কোন মাছ খেলে শরীরে রক্ত হয়

মাছের ভেতরেও বেশ কিছু মাছ রয়েছে যেগুলো খেলে দ্রুত শরীরে রক্ত বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে , বিশেষ করে  সামুদ্রিক মাছগুলো শরীরের রক্ত বৃদ্ধিতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। এবার আপনাদের জানাবো কোন মাছ খেলে শরীরে রক্ত হয়। যারা জানেন না কোন মাছ খেলে শরীরে রক্ত হয় তারা অবশ্যই এই মাছগুলোর নাম জেনে নিন এবং রক্তস্বল্পতার রোগীদের এই মাছ এবং মাছের ঝোল খাওয়ানোর চেষ্টা করুন। শরীরের দ্রুত রক্ত বৃদ্ধিকারী মাছগুলো হলো

  • চিংড়ি
  • টাকি মাছ
  • জিওল মাছ
  • শিং
  • বেলে
  • বাটা
  • কাঁকড়া এবং
  • বিভিন্ন ধরনের  সামুদ্রিক মাছ

কোন ফল খেলে রক্ত বাড়ে

শরীরে পর্যাপ্ত রক্ত তৈরির জন্য শাকসবজি এবং সামুদ্রিক মাছের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে ফল এবং ফলের জুস খেতে হবে। রক্তস্বল্পতায় রোগীরা শরীরে রক্ত বাড়ানোর জন্য যেসব ফলগুলো দৈনিক খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন সেই বিষয়ে আজকে আপনাদের জানাব, কারণ অনেক সময় অনেকেই জানতে চেয়ে থাকেন কোন ফল খেলে রক্ত বাড়ে। তাই সঠিকভাবে জেনে নিন কোন ফল খেলে রক্ত বাড়ে। শরীরে রক্ত বাড়াতে সাহায্য করে

  • আপেল
  • বেদানা
  • ডালিম
  • কলা
  • আমলকি
  • কমলা লেবু
  • ক্যাপসিকাম
  • পেঁপে
  • স্ট্রবেরি
  • পেয়ারা
  • আঙ্গুর
  • আম
  • পিচ
  • এপ্রিকট
  • বাদাম
  • কিসমিস
  • খেজুর
মন্তব্য, এতক্ষণে আপনারা নিশ্চয়ই রক্তশূন্যতা দূর করার ১৫টি ঘরোয়া উপায় - রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিয়েছেন। আমাদের আশেপাশে থাকা এবং সুলভ মূল্যে পাওয়া যায় এই জাতীয়  ফল ও সবজি খাদ্য তালিকায় যুক্ত করার মাধ্যমেও আমরা কিন্তু খুব সহজেই  রক্তশূন্যতা দূর করতে পারি। শুধু রক্তশূন্যতার রুগীরাই নয় সুস্থ শরীরেও আমাদের উচিত প্রচুর পরিমাণে সবজি এবং ফলমূল খাওয়ায় কারণ এই সবজি এবং ফলমূল গুলো আমাদের শরীরে পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে এবং রক্তশূন্যতা সহ বিভিন্ন রোগ থেকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায়  কীটনাশক মুক্ত টাটকা শাকসবজি এবং ফলমূল রাখার চেষ্টা করুন। আশা করছি রক্তশূন্যতা দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো জানতে পেরে আপনি উপকৃত হয়েছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url