সূরা মূলক বাংলা উচ্চারণ - সূরা মূলক এর ফজিলত

আজকে আমরা কুরআনের একটি মর্যাদা পূর্ণ সূরা সম্পর্কে জানব , আর এই সূরাটির নাম হল সূরা মূলক তবে এর অন্য নাম তাবারাকাল্লাযী (যাতে কল্যাণ নিহিত)। এ সূরা তিলাওয়াত করলে বিশেষ সওয়াব পাওয়া যায়। নবী করিম (সঃ) ইরশাদ করেছেন, "আমার উম্মতগণের মধ্যে যে ব্যক্তি এ সূরা তিলাওয়াত করে থাকে আমি তার সাথে বন্ধুত্ব রাখি।" তিনি আরও বলেছেন যে "কুরআন মাজীদে ৩০টি আয়াত বিশিষ্ট একটু সূরা আছে; যা মানুষের দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ ও মুক্তি সাধন করে। " তাই সকলে যাতে এই ফজিলত পূর্ণ সূরাটি আমল করতে পারে সেই জন্য আজকে আমরা সূরা মূলক বাংলা উচ্চারণ এবং সূরা মূলক এর ফজিলত জানার পাশাপাশি আরো জানবো সূরা মূলক আরবি এবং এর অর্থ।

নবীজি (সা) রাতে ঘুমাবার আগে এ সূরা তিলাওয়াত করতেন। এ সূরার অর্থ ও ভাবের দিকে খেয়াল করলে দুনিয়া আখিরাতের অনেক সমস্যা সমাধান পাওয়া যায়। এটাই এ সূরার বিশেষত্ব।এসব ভাবাধারার কথা উল্লেখ থাকায় এ সূরার বিশেষ মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব রয়েছে। এছাড়াও বিস্তারিতভাবে সূরা মূলক সম্পর্কে জানানোর জন্য আজকে এই পোস্টের মাধ্যমে তুলে ধরছি আপনাদের কাছে তুলে ধরছি সূরা মূলক বাংলা উচ্চারণ এবং সূরা মূলক এর ফজিলত। তাহলে চলুন আর দেরি না করে সূরা মূলক বাংলা উচ্চারণ এবং সূরা মূলক এর ফজিলত ও এর পাশাপাশি সূরা মূলক আরবি , সূরা মূলক বাংলা অর্থ এবং সুরা মূলক কখন পড়তে হয় বিষয়গুলো ভালোভাবে জেনে নেওয়া যাক।

সূরা মূলক এর ফজিলত

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে- "যে ব্যক্তি প্রতিদিন এ সূরা তিলাওয়াত করবে সে কবরের আযাব ও কিয়ামতের বিপদ হতে মুক্তি লাভ করবে। (তিরমিযী)। যে ব্যক্তি নিয়মিতভাবে এ সূরা তিলাওয়াত করবে, কিয়ামতের দিন এটা তার মুক্তির জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে সুপারিশ করবে এবং গুনাহ মাফ করিয়ে জান্নাতে নিয়ে যাবে।  এ বর্ণনায় রয়েছে যে, এ সূরা ৪১ বার তিলাওয়াত করলে বিপদ হতে উদ্ধার লাভ হয় ও ঋণ পরিশোধ হয়।  একদিন নবী করীম (সাঃ)এর এক সাহাবী কোন এক স্থানে তাবু স্থাপন করে ছিলেন। ওই স্থানে কোন কবর আছে বলে তার জানা ছিল না রাতে ওই জায়গায় এই সূরার শব্দ আসতে লাগলো। 
তিনি নবী করীম (সাঃ) এর কাছে এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি উত্তর দিলেন যে, এখানে একজন আবেদের কবর আছে, তিনি দুনিয়াতে প্রতিদিন সূরা মুলক তিলাওয়াত করতেন, এখনও তার এই অভ্যাস রয়েছে, তাই কবর হতে এই সূরার শব্দ শোনা যায়।  কবরের আযাব হতে মুক্তি লাভের উদ্দেশ্যে এই সূরার আমল বিশেষভাবে ফলদায়ক। এর বরকতে কবরের আযাব হতে মুক্তি লাভের জন্য নিম্নলিখিত পাঁচটি কাজ পালন করতে হবে। ১. নিয়মিত সময়মতো নামাজ পড়তে হবে। ২. সর্বদা "সুবহানাল্লাহ" তাসবিহ পড়তে হবে। ৩. গরীব-দুঃখীদের কে দান-খয়রাত করতে হবে। ৪. শুদ্ধরূপে কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করতে হবে। ৫. প্রস্রাবের পর ভালোভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। আর নিয়মিত এ তিনটি অভ্যাস পরিহার করতে হবেঃ ১. মিথ্যা বলা। ২. পরনিন্দা করা। ৩. কূটনীতি করা।

সূরা মূলক আরবি

এতক্ষণ আপনারা সূরা মূলক এর ফজিলত  সম্পর্কে জেনেছেন এবং নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন এই সূরাটির মর্যাদা কত বেশি , আর এই কথাটি উপলব্ধি করে  এখন আপনাদের সূরা মূলক আরবি জানাবে, যাতে করে আপনারা যারা শুদ্ধ রূপে আরবি পড়তে পারেন তারা , এই ফজিলতপূর্ণ সূরাটি নিয়মিত আমল করতে পারেন। তাই আপনাদের জন্য সূরা মূলক আরবি সম্পূর্ণ নিচে তুলে ধরা হচ্ছে।

  • بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
  • تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
  • الَّذِي خَلَقَ الْمَوْتَ وَالْحَيَاةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا وَهُوَ الْعَزِيزُ الْغَفُورُ
  • الَّذِي خَلَقَ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ طِبَاقًا مَا تَرَى فِي خَلْقِ الرَّحْمَنِ مِنْ تَفَاوُتٍ فَارْجِعِ الْبَصَرَ هَلْ تَرَى مِنْ فُطُورٍ
  • ثُمَّ ارْجِعِ الْبَصَرَ كَرَّتَيْنِ يَنْقَلِبْ إِلَيْكَ الْبَصَرُ خَاسِئًا وَهُوَ حَسِيرٌ
  • وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَجَعَلْنَاهَا رُجُومًا لِلشَّيَاطِينِ وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ السَّعِيرِ
  • وَلِلَّذِينَ كَفَرُوا بِرَبِّهِمْ عَذَابُ جَهَنَّمَ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ
  • إِذَا أُلْقُوا فِيهَا سَمِعُوا لَهَا شَهِيقًا وَهِيَ تَفُورُ
  • تَكَادُ تَمَيَّزُ مِنَ الْغَيْظِ كُلَّمَا أُلْقِيَ فِيهَا فَوْجٌ سَأَلَهُمْ خَزَنَتُهَا أَلَمْ يَأْتِكُمْ نَذِيرٌ
  • قَالُوا بَلَى قَدْ جَاءَنَا نَذِيرٌ فَكَذَّبْنَا وَقُلْنَا مَا نَزَّلَ اللَّهُ مِنْ شَيْءٍ إِنْ أَنْتُمْ إِلَّا فِي ضَلَالٍ كَبِيرٍ
  • وَقَالُوا لَوْ كُنَّا نَسْمَعُ أَوْ نَعْقِلُ مَا كُنَّا فِي أَصْحَابِ السَّعِيرِ
  • فَاعْتَرَفُوا بِذَنْبِهِمْ فَسُحْقًا لِأَصْحَابِ السَّعِيرِ
  • إِنَّ الَّذِينَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُمْ بِالْغَيْبِ لَهُمْ مَغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ كَبِيرٌ
  • وَرُّوا قَوْلَكُمْ أَوِ اجْهَرُوا بِهِ إِنَّهُ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ
  • أَلَا يَعْلَمُ مَنْ خَلَقَ وَهُوَ اللَّطِيفُ الْخَبِيرُ
  • هُوَ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ ذَلُولًا فَامْشُوا فِي مَنَاكِبِهَا وَكُلُوا مِنْ رِزْقِهِ وَإِلَيْهِ النُّشُورُ
  • أَأَمِنْتُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ أَنْ يَخْسِفَ بِكُمُ الْأَرْضَ فَإِذَا هِيَ تَمُورُ
  • أَمْ أَمِنْتُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ أَنْ يُرْسِلَ عَلَيْكُمْ حَاصِبًا فَسَتَعْلَمُونَ كَيْفَ نَذِيرِ
  • وَلَقَدْ كَذَّبَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ فَكَيْفَ كَانَ نَكِيرِ
  • أَوَلَمْ يَرَوْا إِلَى الطَّيْرِ فَوْقَهُمْ صَافَّاتٍ وَيَقْبِضْنَ مَا يُمْسِكُهُنَّ إِلَّا الرَّحْمَنُ إِنَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ بَصِيرٌ
  • أَمَّنْ هَذَا الَّذِي هُوَ جُنْدٌ لَكُمْ يَنْصُرُكُمْ مِنْ دُونِ الرَّحْمَنِ إِنِ الْكَافِرُونَ إِلَّا فِي غُرُورٍ
  • أَمَّنْ هَذَا الَّذِي يَرْزُقُكُمْ إِنْ أَمْسَكَ رِزْقَهُ بَلْ لَجُّوا فِي عُتُوٍّ وَنُفُورٍ
  • أَفَمَنْ يَمْشِي مُكِبًّا عَلَى وَجْهِهِ أَهْدَى أَمَّنْ يَمْشِي سَوِيًّا عَلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ
  • قُلْ هُوَ الَّذِي أَنْشَأَكُمْ وَجَعَلَ لَكُمُ السَّمْعَ وَالْأَبْصَارَ وَالْأَفْئِدَةَ قَلِيلًا مَا تَشْكُرُونَ
  • قُلْ هُوَ الَّذِي ذَرَأَكُمْ فِي الْأَرْضِ وَإِلَيْهِ تُحْشَرُونَ
  • وَيَقُولُونَ مَتَى هَذَا الْوَعْدُ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ
  • قُلْ إِنَّمَا الْعِلْمُ عِنْدَ اللَّهِ وَإِنَّمَا أَنَا نَذِيرٌ مُبِينٌ
  • فَلَمَّا رَأَوْهُ زُلْفَةً سِيئَتْ وُجُوهُ الَّذِينَ كَفَرُوا وَقِيلَ هَذَا الَّذِي كُنْتُمْ بِهِ تَدَّعُونَ
  • قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَهْلَكَنِيَ اللَّهُ وَمَنْ مَعِيَ أَوْ رَحِمَنَا فَمَنْ يُجِيرُ الْكَافِرِينَ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ
  • قُلْ هُوَ الرَّحْمَنُ آمَنَّا بِهِ وَعَلَيْهِ تَوَكَّلْنَا فَسَتَعْلَمُونَ مَنْ هُوَ فِي ضَلَالٍ مُبِينٍ
  • قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَصْبَحَ مَاؤُكُمْ غَوْرًا فَمَنْ يَأْتِيكُمْ بِمَاءٍ مَعِينٍ

সূরা মূলক বাংলা উচ্চারণ

আমাদের মধ্যে এমন মানুষ রয়েছে যারা শুদ্ধ রূপে কোরআন তেলাওয়াত আরবি পড়তে পারেন না, যারা শুদ্ধ রূপে আরবি পড়তে পারেনা তারাও যাতে এই সূরাটি নিয়মিতভাবে আমল করার মাধ্যমে দুনিয়া ও আখেরাতে ফাইদা পেতে পারে এজন্য এখন আপনাদের জানাবো সূরা মূলক বাংলা উচ্চারণ।সূরা মূলক বাংলা উচ্চারণ জানা থাকলে আপনি খুব সহজেই আরবি না জেনেও নিয়মিত এই মর্যাদাপূর্ণ সুরাটি আমল করতে পারবেন এবং মুখস্ত করার মাধ্যমে হৃদয়ে ধারণ করতে পারবেন। তাই চলুন আর দেরি না করে সূরা মূলক বাংলা উচ্চারণ জেনে নেওয়া যাক। নিচে সূরা মূলক বাংলা উচ্চারণ শেয়ার করা হলো,

  • বিসমিল্লাহির রহমা-নির রহি-ম
  • তাবারাকাল্লাযী বিইয়াদিহিল মুলকু ওহু হুওয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়িং কাদীর। 
  • আল্লাযী খলাকাল্ মাওতা ওয়াল্ হাইয়া-তা লিইয়াব্লুয়াকুম্ আইয়্যুকুম্ আহছানু ‘আমালা-; অহুওয়াল্ ‘আযীযুল্ গাফূর। 
  • আল্লাযী খলাকা ছাব্‘আ সামাওয়াতিন ত্বিবা-ক্বান-; মা তার ফী খালক্বির রহমানি মিন তাফাউত। ফারজিয়িল বাছারা হাল তার মিন ফুতূর। 
  • ছুম্মার জিয়িল বাছারা কাররাতাইনি ইয়ান কালিব ইলাইকাল বাছারু খাছিয়াওঁ ওহুয়া হাছীর। 
  • ওয়া লাক্বাদ যাইয়ান্নাস্ সামাআদ দুনইয়া-বিমাছা-বীহা ও জাআ’লনাহা রুজুমাল লিশ শাইয়া ত্বীনি ওয়া আ‘তাদনা লাহুম ‘আযাবাস সায়ীর। 
  • ওয়ালিল্লাযীনা কাফারূ বিরব্বিহিম ‘আযাবু জাহান্নাম, ওয়া বিসাল মাছীর।ইযা য় উলকূ ফীহা- সামিউ লাহা শাহীকাওঁ ওয়া হিয়া তাফূর।
  • তাকাদু তামাইয়্যাযু মিনাল গাইযি, কুল্লামা উলকিয়া ফীহা ফাওজুন সাআলাহুম খাযানাতুহা আলাম ইয়া তিকুম নাযীর।
  • ক্বালু বালা ক্বাদ জা-আনা নাযীর; ফাকাযযাবনা ওয়া কুলনা মা নাযযালাল্লাহু মিন শাইয়্যিন ইন আনতুম ইল্লা ফী দ্বালালিন কাবীর। 
  • ওয়া ক্বালু লাও কুন্না নাসমাউ আও না’ক্বিলু মাকুন্না ফী আছহাবির সাইর।
  • ফা’তারাফূ বিযাম্বিহিম ফাসুহক্বাল লি আছহাবিছ ছায়ীর। 
  • ইন্নাল্লাযীনা ইয়াখশাওনা রব্বাহুম বিল গাইবি লাহুম মাগফিরাতুওঁ ওয়া আযরুন কাবীর।
  • ওয়া আছীররু ক্বাওলাকুম আবিজহারু বিহী; ইন্নাহূ আলীমুম বিযাতিছ ছুদূর। 
  • আলা ইয়া’লামু মান খলাক্বা; ওয়া হুয়াল লাতীফুল খাবীর।
  • হুওয়াল্লাযী জাআ’লা লাকুমুল্ আরদ্বা যালুলান ফামশু ফী মানাকিবিহা ওয়া কুলূ মির রিযক্বিহী ওয়া ইলাইহিন নুশুর। 
  • আ-আমিনতুম মান ফিস সামায়ি আইঁইয়াখসিফা বিকুমুল আরদ্বা ফাইযা হিয়া তামূর।
  • আম আমিনতুম মান ফিসছামায়ি আইঁইউরছিলা ‘আলাইকুম হাছিবান ফাসাতা’লামূনা কাইফা নাযীর।
  • ওয়ালাক্বাদ কাযযাবাল্লাযীনা মিন কাবলিহিম ফা-কাইফা কানা নাকীর। 
  • আওয়ালাম ইয়ারাও ইলাত ত্বাইরি ফাওক্বাহুম ছাফফাতিওঁ ওয়া ইয়াক বিদন মা ইয়ুমসিকু হুন্না ইল্লার রাহমানু, ইন্নাহু বিকুল্লি শাইয়িম বাছীর। - ১৯ আম্মান হাযাল্লাযী হুয়া জুনদুল লাকুম ইয়ান্ছুরুকুম মিন দূনির রাহমানি ইনিল কাফিরূনা ইল্লা ফী গুরুর। 
  • আম্মান হাযাল্লাযী ইয়ার যুকুকুম ইন আমসাকা রিযকাহূ বাল লাজ্জু ফী উতুব্যিওঁ ওয়া নুফুর।
  • আফা মাইঁইয়ামশী মুকিব্বান আলা ওয়াজহিহী য় আহদা আম্মাইঁ ইয়ামশী ছাবিয়্যান আলাছিরাতিম মুস্তাক্বীম। 
  • কুলহুওয়াল্লাযী আনশায়াকুম ওয়া জাআলা লাকুমুস সামআ’ ওয়াল আবছারা ওয়াল আফয়িদাহ, ক্বালীলাম মাতাশকুরূন। 
  • কুল হুয়াল্লাযী যারআকুম ফিল আরদ্বি ওয়া ইলাইহি তুহশারূন।
  • ওয়া ইয়াকুলূনা মাতা হাযাল ওয়া’দু ইন কুনতুম ছাদিক্বীন।
  • কুল ইন্নামাল ইলমু ইন্দাল্লাহি, ওয়া ইন্নামা আনা নাযীরুম মুবীন। 
  • ফালাম্মা রাআওহু যুলফাতান্ সীয়াত ওজূহুল্লাযীনা কাফারু অয়াক্বীলা হাযাল্লাযী কুন্তুম বিহী তাদ্দাউন । 
  • কুল্ আরাআইতুম্ ইন আহলাকানিয়াল্লাহু ওয়ামান মামিয়া আও রহিমানা ফামাইঁ ইউজীরুল কাফিরীনা মিন ‘আযাবিন আলীম। 
  • কুল হুওয়ার রহমানু আমান্না বিহী ওয়া আলাইহি তাওয়াক্কালনা ফাসাতা’লামূনা মানহুয়া ফি দ্বালালিম মুবীন। 
  • কুল আরাআইতুম ইন আছবাহা মা-উকুম গাওরান ফামাইঁ ইয়াতীকুম বিমা ইম মাঈন। 

সূরা মূলক বাংলা অর্থ

মুসলমান ধর্মের মানুষ হিসেবে আপনারা হয়তো জানেন কুরআন ভালোভাবে বুঝে পড়ার তাগিদ হয়েছে। তাই এখন আপনাদের সূরা মূলক বাংলা অর্থ জানাবো , কারণ সূরা মূলক বাংলা অর্থ জানা থাকলে আপনারা বুঝতে পারবেন এই সূরাটির মাধ্যমে আল্লাহ পাক কি বলেছেন। তাই চলুন এবার সূরা মূলক বাংলা অর্থ ভালোভাবে জেনে নেওয়া যাক,
সূরা মূলক বাংলা অর্থঃ
  • পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
  • বরকতময় তিনি যার হাতে সর্বময় কর্তৃত। আর তিনি সব কিছুর ওপর সর্বশক্তিমান।
  • যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন যাতে তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন যে, কে তোমাদের মধ্যে আমলের দিক থেকে উত্তম। আর তিনি মহাপরাক্রমশালী, অতিশয় ক্ষমাশীল।
  • যিনি সাত আসমান স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। পরম করুণাময়ের সৃষ্টিতে তুমি কোনো অসামঞ্জস্য দেখতে পাবে না। তুমি আবার দৃষ্টি ফিরাও, কোনো ত্রুটি দেখতে পাও কি?
  • অতঃপর তুমি দৃষ্টি ফিরাও একের পর এক, সেই দৃষ্টি অবনমিত ও ক্লান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে।
  • আমি নিকটবর্তী আসমানকে প্রদীপপঞ্জু দ্বারা সুশোভিত করেছি এবং সেগুলোকে শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপের বস্তু বানিয়েছি। আর তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছি জ্বলন্ত আগুনের আজাব।
  • আর যারা তাদের রবকে অস্বীকার করে, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আজাব। আর কতইনা নিকৃষ্ট সেই প্রত্যাবর্তনস্থল!
  • যখন তাদেরকে তাতে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তারা তার বিকট শব্দ শুনতে পাবে। আর তা উথলিয়ে উঠবে।
  • ক্রোধে তা ছিন্ন ভিন্ন হবার উপক্রম হবে। যখনই তাতে কোনো দলকে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তার প্রহরীরা তাদেরকে জিজ্ঞাসা করবে, ‘তোমাদের নিকট কি কোনো সতর্ককারী আসেনি’?
  • তারা বলবে, ‘হ্যা, আমাদের নিকট সতর্ককারী এসেছিল। তখন আমরা (তাদেরকে) মিথ্যাবাদী আখ্যায়িত করেছিলাম এবং বলেছিলাম, ‘আল্লাহ কিছুই নাজিল করেননি। তোমরা তো ঘোর বিভ্রান্তিতে রয়েছ’।
  • আর তারা বলবে, ‘যদি আমরা শুনতাম অথবা বুঝতাম, তাহলে আমরা জ্বলন্ত আগুনের অধিবাসীদের মধ্যে থাকতাম না’।
  • অতঃপর তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করবে। অতএব, ধ্বংস জ্বলন্ত আগুনের অধিবাসীদের জন্য।
  • নিশ্চয় যারা তাদের রবকে না দেখেই ভয় করে তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও বড় প্রতিদান।
  • আর তোমরা তোমাদের কথা গোপন কর অথবা তা প্রকাশ কর, নিশ্চয় তিনি অন্তরসমূহে যা আছে সে বিষয়ে সম্যক অবগত।
  • যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি জানেন না? অথচ তিনি অতি সূক্ষদর্শী, পূর্ণ অবহিত।
  • তিনিই তো তোমাদের জন্য জামিনকে সুগম করে দিয়েছেন, কাজেই তোমরা এর পথে-প্রান্তরে বিচরণ কর এবং তাঁর রিজিক থেকে তোমরা আহার কর। আর তাঁর নিকটই পুনরুত্থান।
  • যিনি আসমানে আছেন, তিনি তোমাদের সহ জমিন ধসিয়ে দেয়া থেকে কি তোমরা নিরাপদ হয়ে গেছ, অতঃপর আকস্মিকভাবে তা থর থর করে কাঁপতে থাকবে।
  • যিনি আসমানে আছেন, তিনি তোমাদের ওপর পাথর নিক্ষেপকারী ঝড়ো হাওয়া পাঠানো থেকে তোমরা কি নিরাপদ হয়ে গেছ, তখন তোমরা জানতে পারবে কেমন ছিল আমার সতর্কবাণী?
  • আর অবশ্যই তাদের পূর্ববর্তীরাও অস্বীকার করেছিল। ফলে কেমন ছিল আমার প্রত্যাখ্যান (এর শাস্তি)?
  • তারা কি লক্ষ্য করেনি তাদের উপরস্থ পাখিদের প্রতি, যারা ডানা বিস্তার করে ও গুটিয়ে নেয়? পরম করুণাময় ছাড়া অন্য কেউ এদেরকে স্থির রাখে না। নিশ্চয় তিনি সব কিছুর সম্যক দ্রষ্টা।
  • পরম করুণাময় ছাড়া তোমাদের কি আর কোনো সৈন্য আছে, যারা তোমাদেরকে সাহায্য করবে? কাফিররা শুধু তো ধোঁকায় নিপতিত।
  • অথবা এমন কে আছে, যে তোমাদেরকে রিজিক দান করবে যদি আল্লাহ তাঁর রিজিক বন্ধ করে দেন? বরং তারা অহমিকা ও অনীহায় নিমজ্জিত হয়ে আছে।
  • যে ব্যক্তি উপুড় হয়ে মুখের ওপর ভর দিয়ে চলে সে কি অধিক হেদায়াতপ্রাপ্ত নাকি সেই ব্যক্তি যে সোজা হয়ে সরল পথে চলে?
  • বল, ‘তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের জন্য শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি এবং অন্তকরণসমূহ দিয়েছেন। তোমরা খুব অল্পই শোকর কর’।
  • বল, ‘তিনিই তোমাদেরকে জমিনে সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর কাছেই তোমাদেরকে সমবেত করা হবে’।
  • আর তারা বলে, ‘সে ওয়াদা কখন বাস্তবায়িত হবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও’।
  • বল, ‘এ বিষয়ের জ্ঞান আল্লাহরই নিকট। আর আমি তো স্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র’।
  • অতঃপর তারা যখন তা আসন্ন দেখতে পাবে, তখন কাফিরদের চেহারা মলিন হয়ে যাবে এবং বলা হবে, ‘এটাই হলো তা, যা তোমরা দাবী করছিলে’।
  • বল, ‘তোমরা ভেবে দেখেছ কি’? যদি আল্লাহ আমাকে এবং আমার সঙ্গে যারা আছে, তাদেরকে ধ্বংস করে দেন অথবা আমাদের প্রতি দয়া করেন, তাহলে কাফিরদেরকে যন্ত্রণাদায়ক আজাব থেকে কে রক্ষা করবে’?
  • বল, ‘তিনিই পরম করুণাময়। আমরা তাঁর প্রতি ঈমান এনেছি এবং তাঁর ওপর তাওয়াক্কুল করেছি। কাজেই তোমরা অচিরেই জানতে পারবে কে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছে’?
  • বল, ‘তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি তোমাদের পানি ভূগর্ভে চলে যায়, তাহলে কে তোমাদেরকে বহমান পানি এনে দিবে’?

সূরা মূলক কখন পড়তে হয় 

আপনারা আগেই সূরা মূলকের ফজিলত জেনেছেন এবং এর পাশাপাশি সূরা মূলক এর আরবি , বাংলা উচ্চারণ এবং অর্থ আপনাদেরকে জানিয়েছে এবার আপনাদের জানাবো কুরআনের এই ফজিলতপূর্ণ সূরাটি অর্থাৎ সূরা মূলক কখন পড়তে হয়। নিয়মিতভাবে সূরা মূল আমল করা আমাদের সকলেরই উচিত কেননা আপনারা আগেই জেনে এসেছেন কোরআনের এই সূরাটি তার আমল কারীর জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবেন। এছাড়াও নিয়মিত সূরা মূলক আমল করার মাধ্যমে একটি সুন্নত পালন করা হয় , কারণ তিরমিজি শরীফের ২৮৯২ নং হাদিস থেকে জানতে পারা যায় যে রাসূলুল্লাহ (সা) রাতের বেলা সূরা মূলক তেলাওয়াত না করে ঘুমাতেন না। তাই চলুন এবার সূরা মূলক কখন পড়তে হয় এই বিষয়টি জেনে নেওয়া যাক.

সূরা মূলক দিন বা রাতের যেকোনো সময়ই আমল বা তেলাওয়াত করা যায়। এমনকি আপনার যদি এই সূরাটি মুখস্ত থাকে তাহলে নামাজের ভেতরেও এই সূরাটি পড়তে পারেন। এই সূরাটি আমলের ক্ষেত্রে বা পড়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোন সময়ের ধারা বাধা নিয়ম নেই তবে বুজুর্গ গানদের মতে রাতে ঘুমানোর আগে অথবা এশার নামাজের পরে এই সূরা তেলাওয়াত করা বা আমল করা উত্তম।

সূরা মূলক কত পারায়

আপনারা জানেন আমাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কুরআনে মোট ১১৪ টি সূরা রয়েছে এবং তার মধ্যে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি সূরা হল সূরা মূলক। তাদের মধ্যে অনেকেই সূরা মূলক কত পারায় রয়েছে এটি জানেন না। তাই চলুন সূরা মূলক কত পারায় রয়েছে এ বিষয়টি যারা জানেন না তাদেরকে সঠিকভাবে বিষয়টি জানানো যাক।সুরা মূলক কুরআনের ৬৭ তম সূরা এই সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ এবং এই মর্যাদা পূর্ণ সূরাটি কোরআন শরীফের ২৯ নম্বর পারায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে আর এই সূরাটিতে রয়েছে মোট ৩০ টি আয়াত , দুইটি রুকু।

মন্তব্য , সূরা মূলক এর ফজিলত জানার পরে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন এই সূরাটির মর্যাদা কত বেশি। তাই সকলে মুখস্ত করার মাধ্যমে এই সূরাটির হৃদয়ে ধারণ করার চেষ্টা করুন এবং নিয়মিতভাবে কুরআনের এই ফজিলত পূর্ণ সূরাটি আমল করার চেষ্টা করুন। আল্লাহপাক আমাদের সকলকে সু্রা মূলক নিয়মিত আমল করার তৌফিক দান করুন (আমিন)।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url