ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি - কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খুলব

আপনারা জানেন অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করে বেকারত্ব দূর করার পাশাপাশি অর্থ উপার্জন করে স্বাবলম্বী হওয়াটা দিন দিন কতটা জনপ্রিয় হয়ে পড়ছে। সামান্য কিছু দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি অনলাইন এর এই ফ্রিল্যান্সিং কাজগুলো যে কারোর পক্ষে করা সম্ভব। তবে ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য করার জন্য প্রাথমিকভাবে বেশ কিছু বিষয় জেনে রাখা ভালো।
যুব সমাজের বেকারত্বের সমস্যা দূর করার জন্য এবং এ ব্যাপারে অন্যকে আগ্রহী , উৎসাহী করে তোলার জন্য আজকে পোস্টে । তাহলে চলুন আর দেরি না করে পোস্টটি পড়ে ফেলা যাক এবং ফ্রিল্যান্সিং করার বিষয় সম্পর্কে প্রাথমিক বা মৌলিক ধারণা নেয়া যাক।

সূচিপত্রঃ ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি - কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খুলব

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ

ফ্রিল্যান্সিং কাজের সাথে যুক্ত বা ফ্রিল্যান্সিং কাজ করে স্বাবলম্বী হওয়ার গল্প আমরা অনেকের মুখেই অনেক শুনেছি। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি শুধুমাত্র একটি কাজ বোঝায়? না ফ্রিল্যান্সিং এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের কাজ। আপনার কি ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ গুলো সম্পর্কে ধারণা আছে , এ  কাজগুলো সম্পর্কে যদি জানা না থাকে তাহলে অবশ্যই এ বিষয়ে জ্ঞান রাখুন কেননা ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে আপনিও ক্যারিয়ার গড়ার চেষ্টা করতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিং এর মধ্যে বিভিন্ন কাজ রয়েছে যেমন,
  • ডেটা এন্ট্রি
  • মার্কেটিং
  • ডিজাইনিং
  • এডিটিং
  • প্রেজেন্টেশন তৈরি
  • ডেভেলপমেন্ট
  • প্রোগ্রামিং
  • কন্টেন্ট রাইটিং
  • লোগো ডিজাইন
  • থ্রিডি আর্টিস্ট
  • বুক ডিজাইন
  • আইটি কনসালটেন্ট
  • মিডিয়া বায়ার
  • অ্যাপ ডেভলপার
  • কপি পেস্টিং
  • সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন
  • গ্রাফিক্স ডিজাইন
  • ট্রান্সক্রাইবিং
  • ট্রান্সলেটিং
  • ডাটা এনালাইসিস
  • কপিরাইটিং
  • সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট
  • ইত্যাদি সহ আরো বিভিন্ন ধরনের কাজ

ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন

আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং কাজের মধ্যে দিয়ে আপনার ক্যারিয়ার গড়তে চান বা পার্টটাইম কাজ হিসেবে অর্থ উপার্জন করতে চান তাহলে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে করতে হয় সে বিষয়ে জ্ঞান থাকার পাশাপাশি আপনাকে জানতে হবে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন। কারণ আপনার কাছে ফ্রিল্যান্সিং করার মত প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি না থাকলে এই কাজটি করা কোনোভাবেই সম্ভব না তাই ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন সেই বিষয়ে জ্ঞান নিয়ে এর প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিগুলো এরেঞ্জ করতে হবে।। ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করার জন্য আপনার প্রয়োজন হবে,
  • অনলাইন কাজের সম্পর্কে ন্যূনতম দক্ষতা
  • ভালো মানের কম্পিউটার বা ল্যাপটপ
  • ইন্টারনেট সংযোগ
  • ইংরেজি ভাষার উপরে মোটামু দক্ষতা থাকতে হবে
  • অনলাইনে কাজ করার বিভিন্ন কৌশল জানতে হবে
  • এবং সবশেষে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি জরুরী সাহা হলো পর্যাপ্ত টাইম দিতে হবে এবং ধৈর্য ধরে কাজ করে যেতে হবে।

ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি

গ্রাফিক্স ডিজাইন -Graphics Design : গ্রাফিক্স ডিজাইন বর্তমানে অনলাইন বেইজ সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজ।রেটিং এ এটি সেকেন্ড টপে রয়েছে। কিন্তু এই সেক্টরে যে কেউ সফল হতে পারে না।এই সেক্টরে কাজের জন্য ক্রিয়েটিভিটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ডিজাইন সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা মাস্ট এবং ডিজাইনিং বিষয়ে অবশ্যই পারদর্শী হতে হবে।গ্রাফিক্স ডিজাইনের ক্ষেত্রে রয়েছে বিভিন্ন ক্যাটাগরি এবং একেক ক্যাটাগরিতে রয়েছে আলাদা আলাদা ডিম্যান্ড। কাজ অনুযায়ী এসব সেক্টরে আয়ের পরিমাণও আলাদা হয়ে থাকে। গ্রাফিক্স ডিজাইনের কয়েকটি ক্যাটাগরি হলো:
  • Logo Design
  • Art and illustration for graphic design
  • UX design
  • Marketing and advertising graphic design.
  • Motion graphic design ইত্যাদি
ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট -Web design and development :এখন অনেকে ফ্রিল্যান্সিং হিসেবে ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট সেক্টরটি বেছে নিচ্ছেন। কেনন আধুনিক সময়ে পৃথিবী জুড়ে অসংখ্য ওয়েব সাইট তৈরি হচ্ছে।আর তাই অন্যান্য সেক্টর থেকে এ সেক্টরে কাজের চাহিদাও বেশি।অর্থাৎ ফ্রিল্যান্সিং জগতের একটা বিশাল স্থান অধিকার করে আছে ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট সাইটটি। তাই অনলাইনে পেশা হিসেবে ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট সেক্টরটি নিঃসন্দেহে বেছে নেওয়া যায়।
কন্টেন্ট রাইটিং -Content Writing : যারা শখের বসে লেখালিখি করেন তাদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং দিচ্ছে লেখালেখি করে আয় করার সুযোগ। যারা লেখালেখিতে বেশ দক্ষ তারা লেখালেখি সেক্টরটিকে বেছে নিতে পারেন এবং একজন ফ্রিল্যান্স কন্টেন্ট রাইটার হিসেবে বিভিন্ন মার্কেট প্লেসে কাজ করতে পারবেন। কন্টেন্ট রাইটিং সেক্টর বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে কাজ করে হ্যান্ডসাম এমাউন্ট আয় করা সম্ভব।

কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খুলব

আপনারা অনেকেই জানতে চান কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং অ্যাকাউন্ট খুলব এই প্রশ্নের উত্তর। তাই আজকে আপনাদেরকে কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খুলব এই বিষয়ে জানানোর চেষ্টা করছি। ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে ফ্রিল্যান্সার ডটকম এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে হবে এবং এখানে আর্ন মানি ফ্রিল্যান্সিং নামের একটি লিংক দেখতে পাবেন এই লিংকে ক্লিক করার মধ্যে দিয়ে এখানে একাউন্টের জন্য রেজিস্ট্রেশন ফরম পূরণ করতে হবে। আপনার সামনে সাইন আপ অপশন আসলে এখান থেকে আপনি দুইভাবে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন যথা, একটি হলো ফেসবুক একাউন্ট দিয়ে এবং অপরটি হল জিমেইল আইডি দিয়ে। তবে জিমেইল আইডি দিয়ে একাউন্ট খোলায় সবচেয়ে ভালো
একাউন্ট খোলার জন্য প্রথমে আপনাকে নিজের জিমেইল আইডি লিখতে হবে এবং পাসওয়ার্ড দিতে হবে এরপর 'আই এগ্রি টু ফ্রিল্যান্সার ইউজার এগ্রিমেন্ট এন্ড প্রায়ভেসি পলিসি' এই অপশনটিতে ক্লিক করার পর জয়েন ফ্রিল্যান্সার অপশন সিলেক্ট করতে হবে। এরপর একটা ইউজার নেম বসাতে হবে এবং নেক্সট বাটনে ক্লিক করতে হবে। এরপর আপনাকে সিলেক্ট করতে হবে আপনি টাকা ইনকাম করার জন্য নাকি টাকার বিনিময়ে কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্য অ্যাকাউন্ট করছেন যদি আপনি কাজ করতে চান তাহলে ' আই ওয়ান্ট টু ওয়ার্ক ' ওয়ার্ড এবং যদি কাজ করাতে চান তাহলে ' আই ওয়ান্ট টু হেয়ার' এই অপশনটি সিলেক্ট করতে হবে।
একাউন্ট করার প্রত্যেকটি ধাপ সফলভাবে হয়ে গেলে আপনাকে একটি পেজে নিয়ে যাওয়া হবে এবং সেখান থেকে আপনি আপনার দক্ষতা অনুযায়ী কাজ সিলেক্ট করতে পারবেন। এরপর আপনার দক্ষতা অনুযায়ী কাজ সিলেক্ট করা হয়ে গেলে নেক্সট স্টেপ বাটনে ক্লিক করতে হবে এবং সেখান থেকে আপনাকে নিয়ে যাবে প্রোফাইল ডিটেলস অপশন এবং এই অপশনে আসার পরে আপনাকে প্রোফাইল পিকচার আপলোড , আপনার নাম , ভাষা , কাজের ধরন ইত্যাদি বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো দিয়ে নেক্সট বাটন ক্লিক করলে পেমেন্ট মেথড যুক্ত করার জন্য ও ভেরিফাই করার জন্য বলা হবে এবং আপনি ক্রেডিট অথবা ডেবিট কার্ড কিংবা কে কল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারবেন , আর এই কাজগুলো যদি আপনি পরবর্তীতে যুক্ত করতে চান তাহলে স্কিপ ফর নাও বাটনে ক্লিক করুন। একাউন্ট করা হয়ে গেলে ফ্রিল্যান্সার ড্যাশবোডে আপনি বিভিন্ন কাজ দেখতে পাবেন এবং সেখান থেকে কাজ সিলেক্ট করে ইনকাম করতে পারবেন।
মন্তব্য ,  অনলাইনের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং এর এই কার্যক্রমগুলোর মধ্য দিয়ে যেহেতু একটি ভালো আঙ্কের আর্নিং করা যায় তাই বেকারত্বের সমস্যার না ভূগে ফ্রিল্যান্সিং কাজের সাথে যুক্ত হয়ে নিজের বেকারত্ব দূর করুন এবং নিজেকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলুন। তবে হ্যাঁ যারা ইতিমধ্যে বিভিন্ন জবের সাথে জড়িত তারাও ফ্রিল্যান্সিংয়ের এই কাজটি পার্ট টাইম হিসেবে করতে পারেন এতে আপনি আর্থিকভাবে আরও কিছুটা ভালো থাকতে পারবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url