আলস্য এক ভয়ানক ব্যাধি ভাবসম্প্রসারণ

আলস্য এক ভয়ানক ব্যাধি - ভাবসম্প্রসারণ

কথায় আছে অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা। মূলত মানুষের কর্মের প্রধান অন্তরায় হলো আলস্য। তাই অলস ব্যক্তিরা কোন কালই উন্নতি করতে পারে না। অস্থি-চর্মের সমন্বয়ে তৈরি মানবদেহে বিভিন্ন ব্যাধি থাকলেও আলস্য মানুষের সবচেয়ে বড় ব্যাধি। যেসব মানুষ অলস ও কুঁড়ে স্বভাবের তারা কোন কাজই সমাপ্ত করতে পারে না। তাই অসম্পূর্ণ কোন কাজ পুরোটাই নষ্ট হয়ে যায়। অনেকে আজকের কাজ আগামী দিনের জন্য ফেলে রাখে দেয়। ফলে ওই কাজের প্রতি তার একনিষ্ঠতা বা স্পৃহা কমে যায়। হয়তো বা আগামী দিন উপস্থিত হলে আরো এক নতুন আগামী দিনের কথা চিন্তা করে। ফলে তার সে কাজ আর সম্পন্ন হয় না। তাই আগামীকাল বলে কোন কথা নেই। আলস্য ত্যাগ করে ধৈর্য ও একনিষ্ঠতার মাধ্যমে আজই কাজটা করে ফেলতে হবে, এটাই আসল কথা। তাছাড়া কাজের মধ্যে থাকতে পারে স্বাস্থ্য ও মন ভালো থাকে। অকাজ-কুকাজ ও খারাপ অভ্যাসগুলো মনের মধ্যে উঁকি দিতে সাহস পায় না। শুধু মানুষ নয় এমন কিছু কীটপতঙ্গ রয়েছে যাদের কর্মময় জীবন অনুসরণযোগ্য। পিঁপড়া ও মৌমাছিসহ আরো কতগুলো প্রাণী সারা দিনই কর্মে ব্যস্ত থাকে। তাই আলস্যকে পরিহার করে আমাদের যথাসময়ে যথা কাজ সম্পন্ন করা উচিত।

আলস্য এক ভয়ানক ব্যাধি - ভাবসম্প্রসারণ

অলসতা বা কর্মবিমুখতা মানুষের আত্মশক্তিকে বিনাশ করে দেয়। ফলে সেই ব্যক্তির সকল কাজে অনীহা দেখা দেয় এবং একসময় সে শারিরীক ও মানসিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়ে। 
পরিশ্রম ছাড়া কোনো জাতির উন্নয়ন ও অগ্রগতি সম্ভব নয়। তাই অলস্য ক্যান্সারের জীবণুর চেয়েও ধ্বংসাত্মক। এটি মানুষের অস্থিমজ্জায় মিশে মানুষকে চিরতরে পঙ্গু করে দেয়। ফলে অসলদের নিয়ে কোন সামজই প্রত্যাশিত স্থানে পৌঁছাতে পারেনা। অলসতা মানুষের মধ্যে তীব্রভাবে জন্ম দেয় হীনম্মন্যতার, কুসংস্কারাচ্ছন্নতার, আরো জন্ম দিতে পারে অত্যাধিক অবাস্তব কল্পনা-প্রিয়তা যার সঙ্গে বাস্তবের কোনো মিল থাকে না। কথায় আছে "অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা"। অলসতা দিন দিন সমস্ত সৃজনশীল শক্তি চুষে খেয়ে ফেলে ; মানুষের দেহ ও মনে জড়তার সৃষ্টি করে। ফলে অলস ব্যাক্তি চিন্তা-চেতনা, বিভিন্ন কুকর্ম ও কুচিন্তার উদয় ঘটে। অনেক সময় অলস ব্যক্তির সঙ্গ পেয়ে অনেক কর্মঠ মানুষও অলস হয়ে উঠে। ফলে যে মানুষ পৃথিবীতে এত সম্ভাবনাময় তাকেও বোঝায় পরিণত হতে হয়। একসময় হয়তো তাকে আবার হাত বাড়াতে হয় ভিক্ষার জন্য। অলস ব্যক্তি একটি পরিবার, সমাজ ও গোটা জাতির জন্য বোঝাস্বরূপ। সীমাহীন নেতিবাচকতায় পরিপূর্ণ এ অলসতা। কাজেই, এটা মানব জীবনের এক ভয়াবহ পীড়া। অত্যাধিক ভোগ বিলাস আর অলসতায় অনেক মানুষ তার অস্তিত্বকে বিপন্ন করছে, পৃথিবীতে এ নজিরও বিরল নয়। সুতরাং, এটা নিশ্চিত যে কোন দেশ-জাতির আর্থনৈতিক উন্নয়নে, সাংস্কৃতিক বিকাশে আলস্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়ায়, তাই আদর্শ পরিহার করে শ্রমের সাধনা সকলের করা উচিত।

আলস্য এক ভয়ানক ব্যাধি - ভাবসম্প্রসারণ

অলস ব্যক্তি জীবনে উন্নতি করতে পারে না। জীবনে উন্নতির সকল কিছুর মূলে রয়েছে পরিশ্রম। যে জাতি যত বেশি পরিশ্রমী, সে যদি তত বেশি উন্নত। হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখের ন্যায় রোগ-ব্যাধিও মানুষের জীবনের একটা অংশ। কিছু কিছু রোগব্যাধি মানুষকে সতর্ক থাকতে হয়। কারণ এসব ভয়ঙ্কর রোগ মানুষের কর্মক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। মানুষকে ফেলে দিচ্ছে দুশ্চিন্তায়। কখনো আবার মৃত্যুর দিকেও ঠেলে দেয়। অলসতা এমনি ভয়ংকর ব্যাধি। কারণ এটি নেই মানুষের জীবনকে অসার করে তোলে। সমাজে কিছু মানুষ আছে যারা অলস ও শ্রমবিমুখ। এই অলস মানুষগুলো সমাজ ও নিজের জন্য কোন ভূমিকা পালন করতে পারে না। মানুষের জীবনে বেঁচে থাকার জন্য বহু জিনিসের প্রয়োজন। পরিশ্রম ব্যতীত এগুলো অর্জন করা যায় না। অলস মানুষ জীবনে কোনদিন উন্নতি লাভ করে সুখের মুখ দেখতে পারে না। অনেক মানুষের জীবনে ব্যর্থতা নেমে আসে এবং পরিনামে সে দুঃখপূর্ণ জীবন যাপন করে। ব্যাধিগ্রস্ত মানুষের মতো দিন দিন সে পঙ্গু হয়ে পড়ে। ফলে সে অলস পঙ্গু মানুষ দেশজাতির কোন উন্নতি সাধন করতে পারে না বরং নিত্য আত্মীয়-স্বজন, পিতা-মাতার তিরস্কার ও গঞ্জনা তাকে সহ্য করতে হয়। কথায় আছে, ❝অলস মস্তিষ্ক শয়তানের লীলাভূমি❞। ব্যাধিগ্রস্ত ব্যক্তি যেমন সমাজে রোগ বিস্তার করে সমাজকে ব্যাধিগ্রস্ত করে, তেমনি অলস লোকও নানা কুচিন্তা কুকাজ দ্বারা অবক্ষয় অশান্তি ডেকে আনে। আমাদের নিজেদের স্বার্থে আলস্য পরিহার করে কর্মঠ ও পরিশ্রমই হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। তাহলে নিজের, নিজের দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণ সম্ভব।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url