গর্ভাবস্থায় যে ১২টি খাবার খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়

আপনারা সবাই জানেন যে , গর্ভাবস্থায় মায়ের খাবারের সাথে শিশুর শারীরিক পুষ্টি চাহিদা পূরণ এবং শারীরিক গ্রোথ পুরোপুরি ভাবে নির্ভর করে , শুধু এটাই নয় গর্ভাবস্থায় মায়ের খাদ্য তালিকার উপরে ও অনেকাংশে বাচ্চার গায়ের স্কিন ফর্সা বা কালোর বিষয়টিও ডিপেন্ড করে। সুস্থ ,ফর্সা জন্ম দেওয়ার জন্য গর্ভাবস্থায় মা ও শিশু পুষ্টি চাহিদার পূরণ করে এমন খাবার খাওয়ার পাশাপাশি যেসব খাবারগুলো গর্ভাবস্থায় খেলে বাচ্চা ফর্সা হওয়ার সম্ভাবনা আছে এই খাবারগুলোর তালিকা সম্পর্কে জানতে হবে।

ফুটফুটে ফর্সা , সুন্দর এবং সুস্থ বাচ্চা প্রসব করা প্রত্যেকটি মায়ের যেন একটি স্বপ্ন। তবে শুধু ফুটফুটে ফর্সা সন্তানের স্বপ্ন দেখলেই হবে না এর জন্য ,গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই খাদ্য তালিকার উপরে বিশেষ নজর প্রদান করতে হবে। গর্ভাবস্থায় আপনি কি খাবার নির্বাচন করছেন তার উপরে গর্ভের সন্তানের গায়ের রং অনেকটাই নির্ভর করে বলে মনে করা হয়। অভিজ্ঞতা সাপেক্ষে দেখা যায় বেশ কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো গর্ভের বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা করতে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় যেসব খাবার খেলে বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হয় তার মধ্যে রয়েছে এই যে সব খাবার সেগুলো সম্পর্কে আজকে আপনাদের

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়

গর্ভাবস্থায় মাঠে অবশ্যই পুষ্টিকর খাবারগুলো খেতে হবে , কারণ এই সময় শিশুর শারীরিক গ্রোথ , মেধাবিকাশ , স্কিনের কালার সবকিছুই ডিপেন্ড করে মায়ের খাবারের পুষ্টিগুণের উপরে। যেসব মায়েরা সুস্থ সন্তানের পাশাপাশি সন্তানের গায়ের রং ফর্সা চান তাদের অবশ্যই ভালোভাবে জেনে নেয়া উচিত গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হবে এই বিষয়।

নিয়মিত দুধ পানঃ গর্ভবতী মহিলার খাদ্য তালিকায় দুটি উপাদান রাখা খুবই জরুরী তার মধ্যে একটি হল দুধ এবং অপরটি ডিম। বাচ্চার শরীরের হাড় গঠন , ব্রেন ডেভেলপমেন্ট , স্কিনের স্বাস্থ্য ও কালার ভালো রাখার জন্য দুধ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দুধের ভেতর রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন , আয়রন , ভিটামিন ডি সহ আরো বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান যেগুলো গর্ভবতী মায়ের পুষ্টি চাহিদা পূরণের জন্য এবং গর্ভের বাচ্চার সুস্থ বেড়ে ওঠা ও শরীর গঠনের জন্য খুবই জরুরী শুধু তাই নয় গর্ভাবস্থায় যদি বেশি বেশি দুধ পান করা হয় তাহলে সেক্ষেত্রে ফর্সা সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় বহু গুনে।

জাফরান, হলুদ ও দুধঃ গর্ভাবস্থায় পুষ্টি চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে এবং গর্ভে থাকা বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা করতে দুধ  একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকরী উপাদান তা তো আপনারা আগেই জেনেছেন। দুধের সাথে যদি সামান্য জাফরান এবং হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে পান করা হয় তাহলে এক্ষেত্রে শিশু ফর্সা হওয়ার পসিবিলিটি বেড়ে যায় বহুগুণ-এমনটাই ধারণা করা হয়ে থাকে যুগ যুগ ধরে। তবে প্রথম ট্রায়মিস্টারে জফরান না খাওয়াই ভালো।

ডিমঃ প্রোটিন , ভিটামিন এবং আয়রনের খুব ভালো একটি উৎস হলো ডিম। গর্ভাবস্থায় একটা পুষ্ট ঘাটতি পূরণের ক্ষেত্রে ডিম যেমন সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে , বিশ্বাস করা হয় যে ঠিক তেমনভাবে গর্ভাবস্থায় ডিম বাচ্চার ত্বক ফর্সা করতেও বিশেষ অবদান রাখে। গর্ভাবস্থার ছয় মাস থেকে ডিম এবং ডিমের সাদা অংশ বেশি বেশি খেলে বাচ্চা ফর্সা হবে

বাদামঃ গর্ভের বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা করতে চাইলে গর্ব অবস্থায় খাদ্য তালিকায় রাখুন বাদাম। বাদামের পুষ্টিগুণ একদিকে যেমন গর্ভাবস্থার পুষ্টি চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে অপরদিকে  ভ্রূণের গায়ের রং উজ্জ্বল ফর্সা করতেও সাহায্য করে । গর্বঅবস্থায় বিভিন্ন ধরনের বাদামের ভূমিকা রয়েছে অনেক বেশি তবে অনেকে বলে থাকে আমন্ড অর্থাৎ কাঠবাদাম মেশানোর দুধ বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা করতে বেশি কার্যকরী।

ঘিঃ খাঁটি ঘি থেকে অনেক ধরনের গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায় , যে উপাদান গুলো শরীর সুস্থ রাখার পাশাপাশি ত্বক ভালো রাখতেও সাহায্য করে। বিভিন্ন গবেষণার ফল হিসেবে দেখা যায় গর্ভাবস্থায় যারা , তাদের খাদ্য তালিকায় নিয়মিতভাবে ঘি রাখেন তাদের প্রসব যন্ত্রণা অনেকটাই কম হয় শুধু তাই নয় পাশাপাশি এটাও লক্ষ্য করা যায় যে গর্ব অবস্থায় ঘি খেলে পেটের সন্তানের গায়ের রং ফর্সা এবং বাচ্চা মেধাবী হয়।

কালারফুল ভেজটেবল এবং ফ্রুটসঃ আপনি যদি বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা সহ , সবদিক থেকে সুস্থ , মেধাবী সন্তান চান তাহলে সেক্ষেত্রে গর্ভবস্থায় আপনাকে প্রচুর পরিমাণে কালারফুল ভেজিটেবল এবং কালারফুল ফ্রুটস খেতে হবে। কালারফুল সবজি এবং ফ্রুট খাদ্য তালিকায় যুক্ত করলে গর্ভে থাকা বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা , স্কিন সুন্দর হবে এবং এই ধরনের খাবার গুলো গর্ভবতী মায়ের শরীরে এক্সট্রা পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতেও সাহায্য করবে।

সিজিনাল ফ্রুটঃ কালারফুল ভেজিটেবল এবং ফ্রুটসগুলোর পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে সিজিনাল ফ্রুট গুলো খেতে হবে। গর্ভবতী থাকা অবস্থায় সে সময় সিজিনাল যেসব ফল পাওয়া যাবে সেগুলো প্রচুর পরিমাণে খেলে বাচ্চা ফর্সা এবং এবং সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। ফর্সা বাচ্চা হওয়ার জন্য ফলের মধ্যে ফুটন্ত কার্যকরী হল কলা। তাই শরীরের এক্সট্রা পুষ্টি ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি ফর্সা সুন্দর বাচ্চার জন্য গর্ভাবস্থায় কলা রাখতেই হবে। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় কলা খেলে শরীরে আয়রনের ঘাটতি থাকে না এবং বাচ্চা মেধাবী হয়।

ভিটামিন সি জাতীয় ফলঃ গর্ভাবস্থায় ভিটামিন সি জাতীয় ফল বা খাবার গুলো বেশি বেশি খেতে হবে , কারণ ভিটামিন সি জাতীয় খাবারগুলো ত্বকের উপরে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করতে পারে এবং ত্বক ফর্সা ও সুন্দর করতে ভূমিকা পালন করে। গর্ভাবস্থায় বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা করার ক্ষেত্রে ভিটামিন সি যুক্ত ফল গুলোর মধ্যে কমলালেবু উল্লেখযোগ্য ।

চেরি ফলঃ চেরি জাতীয় ফলগুলো থেকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। আর এই দুটো উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং স্কিন ভালো রাখতে সাহায্য করে।

টমেটোঃ স্কিনের জন্য সূর্যের আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মি অত্যন্ত ক্ষতিকর , আর সূর্যের এই আলট্রা ভায়োলেট রশি থেকে টপ ত্বককে সুরক্ষা দিতে পারে টমেটো। গর্ভের শিশুকে সূর্যের আলট্রা ভায়োলেট রশ্মি থেকে বাঁচানোর জন্য মাকে খেতে হবে কেমিক্যাল এবং কীটনাশক মুক্ত ফ্রেশ টমেটো। ভিটামিন সি ,ভিটামিন এ সোডিয়াম ,ম্যাগনেসিয়াম ,ফসফরাস ,পটাশিয়াম ,ক্যালসিয়াম , লৌহ, লাইকোপেন , ফলিক অ্যাসিড , জিংক সহ বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। 

নারিকেলঃ বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা করার জন্য খেতে পারেন নারকেলের ভেতরে থাকা সাদা অংশ বা শাঁস। গবেষকরা বলেন নারকেলের ভেতরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকার কারণে এটি ন্যাচারালি ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং ভ্রুনের ত্বকের গঠনেও অবদান রাখতে পারে নারিকেল। নারিকেল খাওয়ার পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ডাবের পানি খাওয়ার চেষ্টা করুন।

মৌরিঃ গর্ভাবস্থায় মৌরি ভেজানো পানি খেলেও পেটে থাকা বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হয়। মৌরি ভিজিয়ে রাখা পানি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে খুবই কার্যকরী একটি উপাদান , এছাড়াও মৌরি ভেজানো পানি খেলে বমি বমি ভাব দূর হয়। তাই গর্ব অবস্থায় বমি ভাব দূর করতে এবং বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা পেতে নিয়মিত সকাল বেলা মৌরি ভেজানো পানি খেতে পারেন।

মন্তব্য , মনে রাখবেন উপরিউক্ত খাবারগুলো খেলেই যে , সবার ক্ষেত্রে সন্তান দুধে আলতা রং নিয়ে জন্মাবে এর কোন নিশ্চয়তা নেই। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে যারা এ ধরনের পুষ্টিকর খাবারগুলো গর্ভাবস্থায়ী বেশি বেশি খেয়ে থাকে তাদের তাদের বাচ্চা ফর্সা হয়। বাচ্চার গায়ের রং ডিপেন্ড করে পিতা-মাতার জিন , মেলোনিন হরমোন এবং পরিবেশ ও আবহাওয়ার উপরে। গর্ভাবস্থায় চেষ্টা করতে হবে সব ধরনের পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার গুলো পাওয়া যায় এমন খাদ্য তালিকা প্রস্তুতির। এবং বিশেষ করে ফোলেট জাতীয় খাবার গুলো গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই রাখতে হবে ,না হলে জন্মগত ত্রুটি নিয়ে বাচ্চা প্রসবের সম্ভাবনা থাকে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url