হাই প্রেসার কমানোর খাবার - হাই প্রেসার এর ৮টি লক্ষণ

উচ্চ রক্তচাপ শুধু নিজেদের দেশেই নয় সারা বিশ্বের মানুষের মধ্যে কমন একটি সমস্যা।, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রতিবছর প্রায় ৯৪ লাখ মানুষ মারা যায় এই হাই প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপের কারণে। প্রধানত ৩৫-৪০ বছর পার হলেই উচ্চচাপ রক্তচাপ এর সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই হাই প্রেসার সম্পর্কে মৌলিক জ্ঞানগুলো রাখা সবার জন্য খুবই প্রয়োজন , যার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো হাই প্রেসার কমানোর খাবার এবং হাই প্রেসার এর লক্ষণ সম্পর্কে।

যদি হাই প্রেসারের লক্ষণ গুলো আমাদের জানা থাকে তাহলে সেই লক্ষণ অনুযায়ী শরীরের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার সাথে সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করতে পারব। এছাড়াও কোন কোন খাবারগুলো হাই প্রেসার কমাতে সাহায্য করে সেই বিষয়ে যদি জ্ঞান থাকে তাহলে ,যারা হাই প্রেসার এর রোগী রয়েছে তারা খাদ্য তালিকায় সেসব খাবারগুলো যুক্ত করার মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে।

সূচিপত্রঃ হাই প্রেসার কমানোর খাবার - হাই প্রেসার এর ৮টি লক্ষণ

হাই প্রেসার এর লক্ষণ

বর্তমানে হাই প্রেসার এমন একটি রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে , যে রোগের রোগী প্রায় প্রতিটি ঘরেই আছে। হাই প্রেসারের লক্ষণ গুলো আমরা মোটামুটি জানলেও আজকে এর লক্ষণ গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। কোন পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই বেশ কিছুক্ষণ দেখে আপনি হাই প্রেসার কিনা সেটি বুঝে নিতে পারেন। হাই প্রেসারের লক্ষণগুলো আপনার যদি জানা না থাকে তাহলে এখনই হাই প্রেসার এর লক্ষণগুলো জেনে নিন। হাই প্রেসারের লক্ষণগুলো হলো,

দৃষ্টিশক্তির সমস্যা হওয়াঃ হাই ব্লাড প্রেসারের একটি প্রধান উল্লেখযোগ্য লক্ষণ হল দৃষ্টি শক্তির সমস্যা হওয়া, বা বলতে পারেন চোখের ঝাপসা দেখা। হাই ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিলে চোখের ভেতরে থাকা রক্ত নালীগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় যার ফলে, দৃষ্টিশক্তির সমস্যা হয়।

মাথাব্যথা হওয়াঃ হাই ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপের আরেকটি লক্ষণ হল মাথাব্যথা হওয়া। উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিলে রোগীর ভীষণ মাথাব্যথা হতে পারে এবং এর থেকে ছোট ও বড় ধরনের স্টোক হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। এ কারণেই রক্তচাপের কারণে মাথা ব্যথা হলে অতি দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়াঃ উচ্চ রক্তচাপের জন্য নিঃশ্বাস নিতেও অনেক সময় অসুবিধা বোধ হয়। তাই আপনি যদি কোন সময় হঠাৎ করে নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা বোধ করেন, তবে সর্বপ্রথমে আপনার প্রেশারটি অবশ্যই চেক করে নিন।

অবসাদ এবং ক্লান্তি আশাঃ উচ্চ রক্তচাপ এর রোগীদের যেকোন কাজ করতে গেলে একটুতেই অবসাদ এবং ক্লান্তি লাগা খুব কমন ব্যাপার। সামান্য একটু পরিশ্রম করলেই হাই ব্লাড প্রেসার এর রোগীরা ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং সাথে সাথে বুকের মধ্যে অস্থিরতা বোধ করে। 

বুকে চাপ অনুভব হওয়াঃ উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেসার দেখা দিলে বুকের মধ্যে ভারী ভাব অনুভব হয় এটিকে বুকে চাপ অনুভব হওয়া বলতে পারেন। উচ্চ রক্তচাপের সময় হার্টের রক্ত চলাচল কম হওয়ায় এই রোগ বুকে চাপ অথবা বুক ভারি হওয়ার মতন অনুভূতি হয়ে থাকে।

হাত পা ফোলা ও বমি ভাবঃ হাই ব্লাড প্রেসার দেখা দিলে অনেক সময় হাত পা ফোলা এবং সাথে বমি ভাব দেখা যায়। হাত পা ফোলা এবং সাথে বমি ভাব থাকলে অবশ্যই আপনার প্রেসার মাখিয়ে নিন, কারণ হাই প্রেসার এর সময় রোগীর বমি হলে এটি মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

ঘাড় ব্যথা বা ঘাড়ের রগ টেনে ধরাঃ কোন মানুষের যখন উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয় তখন অধিকাংশের ক্ষেত্রেই ঘাড়ের ব্যথা বা ঘাড়ের রগ টেনে ধরার মতন অসুবিধা সৃষ্টি হয়। তাই আপনি যদি ঘাড়ের ব্যথা অনুভব বা ঘাড়ের রগ টেনে ধরার মতন অনুভব করেন তাহলে অবশ্যই আপনার ব্লাড প্রেসার চেক করে নিন। 

নাক দিয়ে রক্ত পড়াঃ অনেক ক্ষেত্রে হাই ব্লাড প্রেসারের রোগীদের নাক দিয়ে রক্ত পড়ার মতন সমস্যাও দেখা দেয়। তবে এই অবস্থা সৃষ্টি হয় যখন উচ্চ রক্তচাপ মারাত্মক পর্যায়ে চলে যায় সেই সময়।

হাই প্রেসার কমানোর খাবার

হাই প্রেসার কমানোর জন্য ঔষধের পাশাপাশি আপনি যদি এই খাবারগুলো আপনার খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে পারেন, তাহলে উচ্চ রক্তচাপ অনেকটাই আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আজকে আমরা জেনে নেব হাই প্রেসার কমানোর খাবার গুলো সম্পর্কে। আপনি যদি হাই প্রেসার কমানোর খাবার গুলো সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে, এখনই হাই প্রেসার কমানোর খাবার গুলো নামের তালিকা বা হাই প্রেসার কমানোর খাবার গুলো সম্পর্কে জেনে নিন। কারণ অনেক সময় শুধুমাত্র ওষুধের উপর নির্ভর করে প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় না, তাই ঔষধের পাশাপাশি যদি হাই প্রেসার কমানোর খাবার গুলো খাদ্য তালিকায় থাকে তাহলে খুব সহজেই হাই প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। এবার তাহলে চলুন আমরা জেনে নিই হাই প্রেসার কমানোর খাবারগুলো সম্পর্কে।

ভিটামিন সি জাতীয় ফলঃ উচ্চ রক্তচাপ কমানোর জন্য খাদ্য তালিকায় অবশ্যই টক জাতীয় ফলগুলো রাখতে হবে, কারণ এই টক জাতীয় ফল গুলোর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। টক জাতীয় ফলের মধ্যে রয়েছে-লেবু, নাশপাত,আমলকি, কমলালেবু , মালটা ইত্যাদি। এগুলো ছাড়াও আপনি ফল হিসেবে পেঁপে, পেয়ারা, আপেল, কলা ফলগুলো আপনার খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে পারেন।

শাকসবজিঃ হাই প্রেসারের রোগীদের প্রেসার কমানোর জন্য খাদ্য তালিকায় যে সকল শাকসবজি যুক্ত করতে হবে সেগুলো হলো-কলমি শাক, পালং শাক, টমেটো , মটরশুটি, লাউ , শসা , বেগুন , মিষ্টি কুমড়া ,ঢ্যাঁড়স ইত্যাদি।

বাদামঃ হাই প্রেসার কমাতে বাদাম খুব ভালো কাজ করে, এই কারণে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় কিছু পরিমাণ যে কোন ধরনের বাদাম যুক্ত করতে পারেন যেমন-চীনা বাদাম , কাজুবাদাম , কাঠবাদাম , আখরোট ইত্যাদি।

ধনেপাতাঃ আমাদের অনেকেরই হয়তো জানা নেই যে ধনেপাতা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে ভীষণ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এ কারণে হাই প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ কমানোর জন্য আপনি নির্দ্বিধায় ধনেপাতা বিভিন্ন ধরনের খাবার রেসিপিতে ব্যবহার করতে পারেন।

ব্রকলিঃ ব্রক নিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট , আর এই আন্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে ব্রকলি খেলে হাই প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে।

গাজরঃ হাই প্রেসার নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অনেক ভালো কাজ করে কারণ গাজরের মধ্যে রয়েছে ক্লোরজেনিক ও ক্যাফেইক এসিড। গাজরের এই উপাদান গুলো উচ্চ রক্তচাপ কমাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

বীজ ও ডাল জাতীয় খাবারঃ বীজ বা ডাল জাতীয় খাবার গুলো দ্রুত হাই প্রেসার নিয়ন্ত্রণ নেই বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। বীজ ও ডাল জাতীয় খাবার গুলোর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং ফাইবার।

মন্তব্য , আপনাদের সনাতর্কতার জন্য জানিয়ে রাখতে চাই যে হাই প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ এবং লো প্রেসার এর বেশ কিছু সিমটম হুবহু মিলে যায় তাই যদি কোন সময় আপনার প্রেশারের সমস্যা মনে হয় তাহলে অবশ্যই নিকটস্থ কোনো ফার্মেসি বা বাসাতে যদি প্রেসার মাপর যন্ত্র থাকে তাহলে , রক্তচাপ চেক করার পরেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url