হাই প্রেসার হলে করণীয় - দ্রুত হাই প্রেসার কমানোর উপায়

বর্তমানে হাই প্রেসার এর রোগী প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। বয়স ৩৫-৪০ পের হতে না হতেই হাই ব্লাড প্রেসারে আক্রান্ত হয় নারী -পুরুষ উভয়েই। আজকে আমরা জেনে নেব  প্রেসার হাই  হলে করণীয় , দ্রুত হাই প্রেসার কমানোর উপায় এবং হাই প্রেসার কমানোর খাবার ও হাই প্রেসার সম্পর্কিত আরো বিভিন্ন ধরনের তথ্য।

শুরু থেকেই আপনি যদি হাই প্রেসার সম্পর্কে সচেতন না হয় তাহলে এটি আপনার মারাত্মক বিপর্যয় দেখে আনতে পারে, আর এ কারণে হাই প্রেসার কে অনেক সময় সাইলেন্ট কিলার হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। হাই ব্লাড প্রেসার এর কারণে আপনার শারীরিক ক্ষতি হওয়ার আগেই জেনে নিন প্রেসার হাই  হলে করণীয় , দ্রুত হাই প্রেসার কমানোর উপায়,  এবং হাই প্রেসার হলে কি কি খাবার খাওয়া উচিত না এই বিষয়গুলি। আর হাই প্রেসার সম্পর্কিত এই সকল বিষয়গুলো জানতে হলে আপনাকে এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে আশা করছি এ বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।

পেজ সূচিপত্রঃ প্রেসার হাই হলে করণীয় - দ্রুত হাই প্রেসার কমানোর উপায়

হাই প্রেসার হলে কি  কি সমস্যা হয়

এতক্ষণ আমরা হাই প্রেসার এর লক্ষণ গুলো সম্পর্কে জানলাম, এবার আমরা হাই প্রেসার হলে কি কি সমস্যা হয় সেগুলো জেনে নেবে। হাই প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ হবে শরীর বেশ কিছু সমস্যা বা ক্ষতির সম্মুখীন হয়। হাই প্রেসার এর কারণে শারীরিক কিছু ক্ষতি সারা জীবন বয়ে বেড়াতেও হয়। আপনার যদি হাই প্রেসার হলে কি কি সমস্যা হয় সে বিষয়গুলো জানা না থাকে তাহলে, পোস্টের এই পড়ার মাধ্যমে জেনে নিতে পারেন। হাই প্রেসার হলে কি কি সমস্যা হয় সেই ব্যাপার গুলো জেনে নেওয়া যাক। উচ্চ রক্তচাপ হলে শারীরিক যে ক্ষতিগুলো হতে পারে সেগুলো হল,

আরো পড়ুনঃ এপেন্ডিসাইটিস ফেটে গেলে কি ক্ষতি হয়

হার্ট অ্যাটাকঃ হাই ব্লাড প্রেসার এর সময় হৃৎপিণ্ড রক্তের ঘাটতি দেখা দেয় যার ফলে, উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেসার এর সময় হার্ট অ্যাটাক এর ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি থাকে।

মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণঃ উচ্চ রক্তচাপের কারণে মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ দেখা দেয়। আমাদের মস্তিষ্কের ভিতরে অনেক চিকন রক্তশিরা রয়েছে, হাই ব্লাড প্রেসারের সময় এই শিরা গুলো ফেটে মস্তিষ্কের ভেতরে রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে, আর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।

স্ট্রোকঃ স্ট্রোক হওয়ার ফলে হওয়া  ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ অবশ হয়ে যেতে পারে অথবা  মুখের  আকৃতি দেখে যেতে পারে। তবে সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার হলো এই স্ট্রোকের প্রভাব মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ব্লাড প্রেসারের রোগীকে বয়ে বেড়াতে হয়। স্ট্রোক থেকে প্যারালাইসিস হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।

স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়াঃ মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ বা স্ট্রোকের কারণে বেশিরভাগ সময় উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার সমস্যাটি দেখা দেয়, এবং দিনে দিনে এই স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার ব্যাপার কি জটিল আকার ধারণ করতে থাকে।

কিডনির কার্যকারিতা কমে যাওয়াঃ উচ্চ রক্তচাপের প্রভাবে কিডনির শিরা গুলোতে রক্ত চলাচলে বাধা পাই, যার ফলে কিডনির কার্যকারিতা অনেকাংশেই কমে যায়।

প্রেসার হাই হলে করণীয়

আমাদের প্রত্যেকের জেনে রাখা দরকার, যে প্রেসার হাই হলে করণীয় কি। প্রেসার হাই হলে করণীয় বিষয়গুলো যদি আপনার জানা থাকে তাহলে আপনি জরুরী মুহূর্তে এই পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করে অনাকাঙ্ক্ষিত ক্ষতির হাত থেকে নিজেকে এবং অপরকে বাঁচতে পারবেন। প্রেসার হাই হয়েছে কিনা সেটি আপনি বিভিন্ন লক্ষণ দেখে বুঝতে পারবেন, আর হাই প্রেসার এর লক্ষণগুলো আমরা এই পোষ্টের উপরের অংশে আগে আলোচনা করে নিয়েছি।

আরো পড়ুনঃ আম খেলে কোন কোন রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়

কখনো যদি আপনার মনে হয় আপনার হাই প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ হচ্ছে তাহলে আপনি, প্রেসার কমানোর ঔষধ সেবন করে নিতে পারেন। আপনার প্রেসার যদি স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকে তাহলে, কাজকর্ম বা হাঁটাচলা না করে আপনার উচিত হবে শুয়ে বিশ্রাম নেয়া। কারণ প্রেসার বেশি থাকা অবস্থায় কোনভাবে যদি আপনি পড়ে যান তাহলে এখান থেকে আপনার  স্ট্রোক, প্যারালাইসিস, হার্ট অ্যাটাক সহ মারাত্মক ক্ষতি এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।

দ্রুত হাই প্রেসার কমানোর উপায়

অনেক সময় রক্তচাপ অনেক বেড়ে গিয়ে রোগীর অবস্থা আশঙ্কা জনক হয়ে যায়, সেই সময় যদি আমাদের দ্রুত হাই প্রেসার কমানোর উপায় গুলো জানা থাকে তাহলে, রোগীকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে অনেক সহজ হবে। প্রতিটি ঘরে ঘরে যেহেতু উচ্চ রক্তচাপের রোগী দিন দিন বেড়েই চলেছে এ কারণে আমাদের দ্রুত হাই প্রেসার কমানোর উপায় গুলো জেনে রাখা অত্যাবশ্য। চলুন এবার আমরা তাহলে জেনে দ্রুত হাই প্রেসার কমানোর উপায় গুলো। প্রেসার কমানোর ঔষধ খাওয়ার পাশাপাশি এই কাজগুলো করলে দ্রুত হাই প্রেসার কমাতে আপনি অনেক ভালো ফল পাবেন।

মাথায় ঠান্ডা পানি দেওয়াঃ আপনি যদি মনে করেন প্রেসার বেড়ে গেছে তাহলে আপনি বেশিক্ষণ ধরে মাথায় ঠান্ডা পানি ঢালতে পারেন। শুধু মাথায় ঠান্ডা পানি নয় ঘাড়ে আলতো করে বরফ ঘসলে অথবা ঠান্ডা পানিতে টাওয়েল ভিজিয়ে ঘাড়ের ওপরে দিয়ে রাখলে এটি  হাই প্রেসার দ্রুত কমাতে সাহায্য করে।

ঘুম এবং বিশ্রামঃ উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিলে কাজকর্ম এবং হাঁটাচলা না করে ঘুমানোর চেষ্টা করুন অথবা শুয়ে বিশ্রাম নিয়ে নিন।

তেতুলঃ উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিলে, খানিকটা তেঁতুল পানিতে ভিজিয়ে রেখে কিছুক্ষণ পরে তেতুলগুলো ভালোভাবে পানির সাথে মিশিয়ে সেই পানিটি খেয়ে নিন।

হাই প্রেসার হলে কি কি খাবার খাওয়া উচিত না

বেশ কিছু খাবার রয়েছে যে খাবারগুলো হাই প্রেসার এর রোগীদের সব সময় এড়িয়ে চলায় ভালো। কারণ এ খাবার গুলো হাই ব্লাড প্রেসার জন্য দায়ী। এ ধরনের খাবারগুলো ব্লাড প্রেসারের রোগীদের যত কম পারা যায় তত কম খেতে হবে আর যদি একেবারে বাদ দেওয়া যায় তাহলে খুবই ভালো হয়। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যা খায় প্রেসার হলে কি কি খাবার খাওয়া উচিত না। আপনি যদি না জেনে থাকেন হাই প্রেসার হলে কি কি খাবার খাওয়া উচিত না, তাহলে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোন কারণ নেই কারণ এখন জানবো হাই প্রেসার হলে কি কি খাবার খাওয়া উচিত নয়।

  • লবণ
  • ফ্যাট যুক্ত খাবার
  • মিষ্টি জাতীয় খাবার
  • ফাস্টফুট জাতীয় খাবার
  • প্রক্রিয়াজাত খাবার
  • রেডমিট
  • ডিমের কুসুম
  • অ্যালকোহল
  • কোল্ডড্রিংস
  • ফুল ক্রিম দুধ

আরো পড়ুনঃ পাইলসের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়।

উপরের আলোচনার মাধ্যমে আমরা জেনে নিয়েছি, দ্রুত হাই প্রেসার কমানোর উপায় , হাই প্রেসার হলে করণীয় এবং কোন খাবার গুলো খাওয়া যাবে না সেই বিষয়গুলো। হাই প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপকে অবহেলা না করে শুরু থেকে এর ব্যাপারে সচেতন হন ডাক্তারি পরামর্শ গ্রহণ করুন এবং সুস্থ জীবন যাপন করুন, কারণ উচ্চ রক্তচাপ কে অবহেলার কারণে হঠাৎ করে আপনি মৃত্যুর মুখেও ঢলে পড়তে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url