৩ রাকাত বিতর নামাজ পড়ার নিয়ত

প্রাপ্তবয়স্ক প্রত্যেকটি মুসলমান নর-নারীর ওপরে বিতরের নামাজ ওযাজিব। আর ওয়াজিবের মর্যাদা হলো ফরজের কাছাকাছি। সুতরাং বুঝতেই পারছেন ভেতরের নামাজকে কোনভাবেই ছেড়ে দেওয়া যাবে না আর যদি আমরা বিতরের নামাজ ছেড়ে দেই তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কঠিন গুনাগার হতে হবে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন তিন রাকাত বিতের নামাজ কিভাবে পড়তে হয় সেই নিয়ম ভালোভাবে জেনে রাখা কতটা জরুরী। আর বিতের নামাজ পড়ার জন্য অবশ্যই এই নামাজের দোয়া সম্পর্কেও জানতে হবে।

যেহেতু নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়াদা পুর্ণ করার জন্য এ নামায পড়েছিলেন, সেহেতু আমরা তার উম্মত বলে আমাদের ওপর এ নামায পড়া "ওয়াজিব" হয়েছে। আর নবীজি এ নামায পৃথক পৃথক পড়েছিলেন বলে এ নামাযের নাম হয়েছে বেতরের নামায(নোফেউল মোমেনীন)। তাহলে চলুন আর মূল্যবান সময় নষ্ট না করে তিন রাকাত বিতের নামাজ পড়ার নিয়ম এবং রিতার নামাজের দোয়া সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক ।

সূচিপত্রঃ ৩ রাকাত বিতর নামাজ পড়ার নিয়ত

৩ রাকাত বিতর নামাজ পড়ার নিয়ত

বিতর নামাজ পড়ার পূর্বে আমাদের অবশ্যই বিতর নামাজের নিয়ত জেনে নেওয়া উচিত। অনেকে বিতর নামাজের নিয়ত জানা নাও থাকতে পারে। তাই আপনাদেরকে আজকে বিতর নামাজের নিয়ত বাংলায় এবং এর অর্থ জানাবো। আপনারা যারা বিতর নামাজের নিয়ত জানেন না তারা অবশ্যই বিতর নামাজের নিয়ত জেনে নিন। আপনাদের সুবিধার জন্য নীচে ৩ রাকাত বিতর নামাজের নিয়ত বাংলায় এবং এর অর্থ দেয়া হলো।

নিয়তঃ নাওয়াইতুয়ান উসালি্লয়া লিল্লাহি তা’আলা সালাছা রাকায়াতি ছালাতিল বিতরে ওয়াজিবুল্লাহি তা’য়ালা মোতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ্ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
অর্থঃ আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে তিন রাকাত বেতের ওয়াজিব নামাজ আদায় করছি।আল্লাহু আকবার।

বিতর নামাজ কি ওয়াজিব

অধিকাংশ মানুষই সঠিকভাবে জানে না যে বিতরের নামাজ ফরজ , সুন্নত , নফল নাকি ওয়াজিব। তাই আজকে আপনাদেরকে এই বিষয়টি সঠিক ভাবে জানাবো। অনেকেই বিতরের নামাজকে সুন্নত কিংবা নকল ভেবে ভুল করলেও , বিতরের নামাজ আদায় করা হলো ওয়াজিব।

বিতর নামাজ কখন পড়তে হয়

রাত্রিবেলা এশার নামাজ আদায় করার পর থেকে ফজরের নামাজের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত বিতর নামাজ আদায় করা যায়। যারা , গভীর রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন তাদের ক্ষেত্রে, এশার নামাজের পরে বিতর নামাজ আদায় না করে একেবারে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের পরে এশার নামাজ আদায় করা উত্তম তবে - এক্ষেত্রে যদি কোন কারনে বিতর নামাজ কাযা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে তাহলে এশার নামাজের পরপরই এ নামাজ আদায় করে নিতে হবে।

বিতরের নামাজ কাজা হলে করনীয়

বিতরের নামাজ কাজা হলে অবশ্যয় পরের ওয়াক্তের নামার শুরু করার আগেই বিতরের নামাজ কাজা আদায় করে নিতে হবে, অর্থাৎ ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত যে কারণেই হোক না কেন ভিতরের নামাজ যদি ছুটে যায় তাহলে যখনই মনে পড়বে তখনই এই নামাজের কাজে আদায় করে নিতে হবে। ইচ্ছাকৃতভাবে বিতরের নামাজ এর কাজে আদায় না করে পরের ওয়াক্তের নামাজ আদায় করা যাবে না।

মহানবী (সা) এর কাছে একদিন একজন ব্যক্তি এসে বললেন - হে আল্লাহর রাসূল ফজরের সময় হয়ে গেছে কিন্তু এখন পর্যন্ত আমি বিতর নামাজ পড়তে পারিনি , এর উত্তরে নবীজি তাকে জবাব দেন বিতর নামাজ তো রাত্রেই পড়তে হয়। আবার জিজ্ঞেস করলেন - হে আল্লাহর রাসূল ফজর হয়ে গেছে কিন্তু আমি এখন পর্যন্ত বিতর নামাজ পড়তে পারিনি , নবীজি এবার তাকে জবাব দিলেন - এখন পড়ে ফেলো (মুজাম , তাবারানী , আলবানী)।

বেতরের নামাজ আদায় করা যেহেতু ওয়াজিব তাই কোনভাবেই এই নামাজ বাদ দেওয়া যাবে , ভেতরের নামাজ হলো সর্বশেষ নামাজ এই কারণে এশার নামাজের পরে এই নামাজ পড়া হয়। তবে যদি কেউ রেগুলার তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করে থাকেন তাহলে এশার নামাজের পরে বিতর নামাজ না পড়ে তাহাজ্জুদের পরে ভিতরের নামাজ পড়া উত্তম। আর যদি কারো এশার নামাজের পরে তাহাজ্জুদ পড়তে ওঠা নিয়ে আশঙ্কা থাকে , বা তাহাজ্জুদের সময় না ওঠার সম্ভাবনা থাকে তাহলে এশার পরেই ভিতরের নামাজ পড়ে নেওয়া উচিত যাতে কোনভাবেই বিতরের নামাজ ছুটে না যায়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url