পেয়ারা পাতার উপকারিতা - পেয়ারা পাতার উপকারিতা চুলের জন্য - পেয়ারা পাতা খাওয়ার নিয়ম

শুধু পেয়ারা নয় পেয়ারা পাতার মধ্যেও রয়েছে বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা। পেয়ারার পাতার মধ্যেও যে এত উপকারীতা লুকিয়ে আছে এটি হয়তো সহজে বিশ্বাস করতে চাইবেন না। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে , সুস্থ থাকতে পেয়ারা পাতার উপকারিতা আমরা পেতে পারি বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে। শুধু রোগের ক্ষেত্রেই নয় ত্বক ও চুল সুন্দর করতেও অবদান রাখতে পারে পেয়ারা পাতা । পেয়ারা পাতা উপকারিতা , পেয়ারা পাতা খাওয়ার নিয়ম এবং পেয়ারা পাতার উপকারিতা চুলের জন্য কতটুকু এই বিষয়গুলো।

আমাদের আশেপাশে থাকা পেয়ারা পাতার ভেতরে যে কত উপকারিতা রয়েছে তা আপনি এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে না পড়লে হয়তো বুঝতে পারবেন না ।ত্বক , চুল ,এলার্জি ইত্যাদি সমস্যার সমাধান দিতে পারে পেয়ারা পাতার রস বা পেয়ারা পাতার চা। এমনকি পেয়ারা পাতা দাঁত ব্যথায় ব্যথা-নাশক হিসেবে কাজ করতে পারি। আপনি যদি পেয়ারা পাতার চা বানানোর নিয়ম সহকারে পেয়ারা পাতার এইসব উপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানতে চান তাহলে অবশ্যই এই পোস্টটি পড়তে থাকুন।

সূচিপত্রঃপেয়ারা পাতার উপকারিতা - পেয়ারা পাতার উপকারিতা চুলের জন্য - পেয়ারা পাতা খাওয়ার নিয়ম।

পেয়ারা পাতার উপকারিতা

শুনতে অবাক লাগলেও , এই কথাটি সত্য দিয়ে পেয়ারা পাতার উপকারিতা রয়েছে শরীরের বিভিন্ন জটিল রোগ সারানোর ক্ষেত্রে। আমাদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষেরই জানা নেই পেয়ারা পাতার উপকারিতা সম্পর্কে। পেয়ারা গাছ আমাদের আশেপাশে এবং কমবেশি প্রায় সবার বাসাতেই থাকে তাই, খুব সহযেই আমরা পেয়ারা পাতার উপকারিতা গুলো পেতে পারি। চলুন আমরা জেনে নিই পেয়ারা পাতার উপকারিতা গুলো।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ পেয়ারা পাতার ভেতরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর পাশাপাখি আন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকায় এটি আমাদের শরীরকে বিভিন্ন ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া সাথে লড়াই করতে সাহায্য করে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বহুনে বাড়িয়ে তোলে ।

শক্তির উন্নতি ঘটায়ঃ পেয়ারার পাতার ভেতরে থাকা ঔষধি উপাদান গুলো আমাদের শরীরে এবং মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল প্রক্রিয়া বাড়াই আর মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল প্রক্রিয়া বাড়ার ফলে স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটে এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বেড়ে যায় ।

রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করেঃ পেয়ারার পাতার মধ্যে ফিনোলিক যৌগ রয়েছে আর এই যৌগটি থাকায় , বিভিন্ন কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে থাকলে , শর্করার মাত্রা কমাতে পেয়ারার পাতা অত্যন্ত উপকারী।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ পেয়ারার পাতার মধ্যে থাকা ফিনোলিক যৌগ থাকায় এটি যেহেতু আমাদের শরীরের সর্পরান মাত্রা বাড়তে দেয় না এই কারণে ডায়াবেটিস রোগীরা যদি পেয়ারা পাতা খায় তাহলে, শরীরে চিনির মাত্রা কম থাকায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।

ডায়রিয়া ও আমাশায় কমায়ঃ আমাশা রোগের ক্ষেত্রে পেয়ারার পাতা খুব উপকারে আসে। যারা ক্রনিক আমার রোগী রয়েছে তারা যদি সকালবেলা পেয়ারা কচি পাতা চিবিয়ে খায় তাহলে দ্রুত আমাশয় সরাতে একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে। এছাড়াও পেয়ারার পাতার ভেতরে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকায় ডায়রিয়া কমাতেও সাহায্য করে।

আরো পড়ুনঃ পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ পেয়ারা পাতার চা শরীরের চর্বি কমিয়ে অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে। পেয়ারার পাতার চা বানিয়ে খেলে এটি পেট ভারি রাখে যার ফলে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ করা থেকে মুক্ত থাকা যায় এবং যা কিনা ওজন কমানোর জন্য জরুরি।

দাঁতের ব্যথা ও দাঁত শিরশির দূর করেঃ দাঁত ব্যাথা  ও দাঁতের শিরশির অনুভূতি করতে পেয়ারার পাতা অত্যন্ত উপকারি। দাঁতে ব্যথা হলে অথবা শিথির অনুভব হলে কয়েকটা পেয়ারার পাতা নিয়ে যদি কিছুক্ষণ মুখে দিয়ে চিবানো যায় তাহলে ব্যথা এবং শিরশির অনুভূতি থেকে অনেকটাই মুক্তি পাওয়া যায়।

চুলের যত্নে ঃ চুলের যত্নে ও পেয়ারা পাতার রসের ভূমিকাও কম নয় ,কারণ পেয়ারা পাতার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ। ভিটামিন এ চুলের গোড়া মজবুত করতে এবং মাথায় নতুন চুল গজাতে ও খুশকি দূর করতে সাহায্য করে।

খারাপ কোলেস্টেরল দূর করেঃ পেয়ারা পাতার রস বা পেয়ারা পাতার চা শরীর থেকে খারাপ কোলেস্টেরল দূর করতে অত্যন্ত সাহায্যকারী । আর পেয়ারার রস বা পেয়ারার পাতার চা খেলে যেহেতু শরীরে খারাপ কোলেস্টর থাকে না তাই হার্টের বিভিন্ন সমস্যা সহ অন্যান্য জটিল রোগ থেকেও মুক্ত থাকা যায় ।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ পেয়ারা পাতার ভিতরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় এটি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

ঘরের পোকা মকড় দূর করতেঃ ঘরের পোকামাকড় দূর করার জন্য পেয়ারার পাতা ফুটিয়ে সেই পানিতে স্প্রে বোতলে করে , ঘরের যে স্থানগুলোতে পোকামাকড়ের উপদ্রব বেশি সেই জায়গা গুলোতে স্প্রে করলে দ্রুত পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

এছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে , হজমে সমস্যা দূর করতে , ত্বক ভালো রাখতে এবং ব্রণের সমস্যা দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে পেয়ারা পাতা। কারণ পেয়ারার পাতার মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকায় শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে পেয়ারা পাতা অত্যন্ত উপকারী।

পেয়ারা পাতা খাওয়ার নিয়ম

এতক্ষণ পেয়ারা পাতার উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা জানলেন। তবে শুধু পেয়ারা পাতার উপকারিতা জানলে হবে না এর ব্যবহারবিধি বা পেয়ারার পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কেও জানতে হবে । পেয়ারা পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনি যদি না জানেন তাহলে অসুবিধার কোন কারণ নেই এখনই আপনাদেরকে জানিয়ে দেওয়া হবে পেয়ারা পাতা খাওয়ার নিয়ম গুলো। বেশ কয়েক রকম ভাবেই আপনি পেয়ারার পাতা খেতে পারেন ।

রান্না করেঃ বেশ কয়েকটি পেয়ারা পাতা ভালোভাবে ধুয়ে সবজি রান্নার সময় তরকারির ভেতরে দিয়ে খেতে পারেন। এতে করে সবজির স্বাদ এবং গুণগত মান দুটোই বৃদ্ধি পাবে।

সস হিসেবেঃ কচি পেয়ারা পাতা ভিনেগার , মধু গোলমরিচ ও লবণের সাথে পেস্ট তৈরি করে বিভিন্ন সালাদের মধ্যে এড করে  হিসেবে খেতে পারেন।

চা বানিয়েঃ পেয়ারা পাতার চা বানিয়ে খেলে এর মাধ্যমে শরীরের অনেক উপকার হয়। গরম পানিতে পেয়ারার পাতা ফুটিয়ে চা বানিয়ে নিতে পারেন , এবং এই চায়ের সাথে কিছু মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।

সরাসরিঃ এই পদ্ধতি গুলোতে পেয়ারার পাতা খাওয়া ছাড়াও, সরাসরি খালি মুখে চিবিয়েও পেয়ারার পাতা খাওয়া যায়।

পেয়ারা পাতার চা বানানোর নিয়ম

পেয়ারা পাতার চায়ের কথা আমরা অনেকেই শুনেছি , এবং পেয়ারা পাতার চায়ের উপকারিতা সম্পর্কেও আমাদের মোটামুটি জানা রয়েছে। তাই আমাদের শিখতে হবে পেয়ারা পাতার চা বানানো নিয়ম । আপনার যদি পেয়ারা পাতার চা বানানোর নিয়ম সম্পর্কে জানা না থাকে তা এখনই পেয়ারা পাতার চা বানানোর নিয়ম টি শিখে নিন।

পেয়ারা পাতার চা বানানোর জন্য বেশ কয়েকটি পেয়ারার পাতা ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। এবার চায়ের বানানো পাত্রে আপনি যতখানি চা পান করবেন তার চাইতে খানিকটা পানি বেশি দিন কারণ পেয়ারা পাতার চা বানানোর সময় পাতাটি বেশ কিছুক্ষণ ধরে পানির ফুটাতে হবে । চা বানানোর জন্য পানিতে পাত্রে বসিয়ে দিন পানি গরম হয়ে আসলে পেয়ারা পাতাগুলো পানিতে ছেড়ে দিন অথবা কি করে কেটে কিংবা টেস্ট তৈরি করে পানির ভেতরে দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ধরে ফুটাতে থাকুন। একসময় দেখবেন পেয়ারার পাতা রস বের হয়ে পানির রং চেঞ্জ হয়ে গেছে। এই অবস্থায় পেয়ারা পাতা ফুটানো পানি কি আপনার চায়ের কাপে ঢেলে নিলে তৈরি হয়ে গেল পেয়ারা পাতার চা।

আরো পড়ুনঃবাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - কাঁচা বাদামের উপকারিতা

পেয়ারা পাতার চায়ের গুনাগুন অনেক বেশি এবং শরীরে এটি ঔষধের মতন কাজ করে। পেয়ারা পাতার চা আপনি চাইলে এমনিও খেতে পারেন , আর যদি স্বাদে কম মনে হয় তাহলে এর সাথে মধু অথবা লেবুর রস অ্যাড করে খেতে পারেন। তবে পরিপূর্ণভাবে পেয়ারা পাতা চায়ের উপকারিতা পেতে হলে এর সাথে চিনি যুক্ত না করাই ভালো। আশা করছি পেয়ারা পাতার চা বানানোর রেসিপিটি বুঝতে পেরেছেন ।

পেয়ারা পাতার উপকারিতা চুলের জন্য

পেয়ারা পাতার উপকারিতা চুলের জন্য কম নয়। চুলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা কমাতে পেয়ারা পাতা জুড়ি নেই। পেয়ারা পাতার উপকারিতা চুলের জন্য যে কত তা যদি আপনার জানা না থাকে তাহলে , অবশ্যই এ বিষয়টি সম্পর্কে আপনার জেনে নেওয়া উচিত। কারণ আমাদের সকলেরই চুলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থাকে আর যেই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য আমাদেরকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের ঝামেলায় পড়তে হয় । তাই পেয়ারা পাতার উপকারিতা চুলের জন্য এই বিষয়টি যদি আপনার জানা থাকে , তাহলে হাতের কাছে থাকা পেয়ারা পাতা দিয়ে খুব সহজেই আপনি আপনার চুলের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে নিতে পারবেন । চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক পেয়ারা পাতার উপকারিতা চুলের জন্য কতটা।

খুশকি দূর করতেঃ মাথার খুশকি দূর করতে পেয়ারার পাতা অত্যন্ত উপকারী । পেয়ারা পাতার রস বা পানির মাধ্যমে পেয়ারার পাতা ফুটিয়ে সেই পানিতে মাথায় ব্যবহার করলে দ্রুত খুশকির সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যায় ।

চুলের গোড়া মজবুত করতেঃ চুলের গোড়া মজবুত করার জন্য চমৎকার একটি উপাদান হল পেয়ারা পাতা । নিয়মিত পেয়ারা পাতার রস অথবা পেয়ারার পাতা ফুটানো মাথায় ব্যবহার করা গেলে এটি চুল ঝরা রোধ করে এবং চুলের গোড়া মজবুত করে ।

নতুন চুল গজাতে সাহায্য করেঃ পেয়ারার পাতার ভেতরে ভিটামিন ই এবং এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকায়, চুলের গোড়া মজবুত করার পাশাপাশি নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।

চুল লম্বা করতে সাহায্য করেঃ পেয়ারা পাতা ভেতরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান থাকায় এটি খেলে বা মাথায় ব্যবহার করলে চুল তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায় যার ফলে চুল লম্বা হতে বা হেয়ার গ্রোথ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

চুল পড়া রোধ করেঃ পড়ার সমস্যা আমাদের প্রত্যেকেরই রয়েছে। আর এই চুল পড়া রোধ করতে আমরা কত কিছুই না করে থাকি। কিন্তু চুল পড়া নিয়ে উদ্বিগ্ন না হয়ে আমরা যদি হাতের কাছে থাকা পেয়ারার পাতা ব্যবহার করতে পারি তাহলে খুব সহজেই চুল পড়া রোধ করা সম্ভব।

হেয়ার টনিক হিসেবেঃ হেয়ার টনিক হিসেবে পেয়ারা পাতা অত্যন্ত উপকারী । পেয়ারার পাতা থেকে রস বের করে অথবা পানিতে পেয়ারার পাতা ফুটিয়ে সেই পানিটির ঠান্ডা করে প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে অথবা সপ্তাহে ৩-৪ দিন মাথায় মেখে মেসেজ করুন এবং সকালে শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে চুল ধুয়ে ফেলুন।

চুলের রুক্ষতা দূর করেঃ প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পেয়ারা পাতার ভেতরে থাকায় এটি আমাদের চুলকে সূর্যের ক্ষতিকর রোশনি থেকে বাঁচা এবং চুলের রুক্ষতা দূর করে , চুল স্বাস্থ্যজ্জল এবং সিল্কি করে তুলতে সাহায্য করে।

পেয়ারা পাতার অপকারিতা

পেয়ারার পাতার মধ্যে থেকে অনেক উপকারিতা পাওয়া গেলেও পেয়ারা পাতার অপকারিতা রয়েছে বেশ কিছু ক্ষেত্রে। পেয়ারার পাতা মধ্যে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে ঔষধি গুন রয়েছে এই কারণে যদি পরিমাণের চাইতে বেশি খাওয়া হয়ে যায় তাহলে পেয়ারা পাতার কিছু অপকারিতা লক্ষ্য করা যায়। আজকে আপনাদের জানাবো পেয়ারা পাতার সেই অপকারিতা গুলো সম্পর্কে। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এড়ানোর জন্য পেয়ারা পাতার অপকারিতা গুলো জেনে নিন।

আরো পড়ুনঃ কিসমিসের উপকারিতা এবং অপকারিতা

পেয়ারার পাতা অতিরিক্ত খেলে শরীর দুর্বল লাগতে পারে।অতিরিক্ত পেয়ারা পাতা খেলে লো প্রেসার এর সমস্যা হতে পারে এবং যারা আগে থেকেই লো প্রেসারের রোগী রয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে প্রেসার আরো কমে গিয়ে সমস্যায় করতে পারেন।পেয়ারার পাতা যেহেতু শরীরে চিনির মাত্রাকে কমাতে সাহায্য করে এই কারণে ডায়াবেটিস রোগীরা যদি পরিমাণ না জেনে পেয়ারা পাতা অথবা পেয়ারা পাতার রস সেবন করেন তাহলে সে ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস লেভেল একদম নিচে নেমে গিয়ে মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। গর্ভবতী নারীরা পেয়ারা পাতা খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারি পরামর্শ গ্রহণ করে তারপরে খাবেন

পেয়ারা পাতা এলার্জি

আপনি কি জানেন পেয়ারার পাতা এলার্জি ক্ষেত্রে কি ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে? পেয়ারার পাতা এলার্জি কমাতেও সাহায্য করে। আমাদের শরীর বিভিন্ন সময় কোন না কোন ভাবে এলার্জি দ্বারা আক্রান্ত হয়। কারো ধুলোবালিতে অ্যালার্জি হয় আবার কারো এলার্জি হয় বিভিন্ন খাবারে। যেকোনো ধরনের এলার্জি কমাতে পেয়ারা পাতা অত্যন্ত উপকারী। অ্যালার্জি মূল কারণ হলো রক্তে হিস্টামিন নিঃসরন। পেয়ারার পাতা সেই হিস্টামিন নিঃসরণ বন্ধ করে এলার্জিকে প্রতিহত করতে পারে।

পেয়ারা পাতা দাঁত ব্যথায়

পেয়ারা পাতা দাঁত ব্যথায় ব্যবহৃত ঘরোয়া উপাদান হিসেবে অত্যন্ত উপকারী। কিন্তু প্রশ্ন হল পেয়ারা পাতা দাঁত ব্যথায় কিভাবে ব্যবহার করবেন। আপনার দাঁতে যদি কোন কারণে ব্যথা হয় তাহলে পেয়ারা পাতার রস এই ব্যথা দূর করতে সাহায্য করতে পারে, আর এই জন্য আপনাকে কয়েকটি পেয়ারার পাতা মুখে নিয়ে চিবিয়ে রস বের করে খেতে হবে তাহলে দেখবেন পেয়ারা পাতার মধ্যে থাকা প্রদাহ নাশক বা এন্টিইনফ্লামেটরি উপাদানটি খুব অল্প সময়ের মধ্যে আপনার দাঁতের ব্যথা কমে গেছে। এছাড়াও আপনি পেয়ারার পাতা পানির মধ্যে দিয়ে ফুটিয়ে , হালকা কুসুম গরম থাকা অবস্থায় সেই পানিতে কিছুটা লবণ গুলিয়ে নিয়ে ভালোভাবে কুলি করতে পারেন এতে আপনার দাঁতের ব্যথা দূর হওয়ার পাশাপাশি পেয়ারার পাতায় থাকা এন্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান মুখের ভেতরের ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ সারাতে সাহায্য করবে।

রূপচর্চায় পেয়ারা পাতার ব্যবহার

রূপচর্চায় পেয়ারা পাতার ব্যবহার ও কম নয়। রূপচর্চার বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে পেয়ারা পাতা। এবং পেয়ারা পাতা দিয়ে রূপচর্চা করা অত্যন্ত নিরাপদ । তাই বাজারের কেমিক্যাল যুক্ত প্রোডাক্টগুলো ব্যবহার বন্ধ করে রূপচর্চার কাজে ব্যবহার করুন পেয়ারার পাতা। রূপচর্চায় পেয়ারা পাতার ব্যবহার যদি আপনার জানা না থাকে , তাহলে এ বিষয়টি জেনে নিন।

ব্রণ দূর করতেঃ কম বেশি ব্রণের সমস্যা আমাদের সকলেরই থাকে বিশেষ করে টিন এজার বয়সের ছেলেমেয়ে , কারো কারো দুই একটা ব্রণের সমস্যা হলেও অনেকের ক্ষেত্রে মুখের ত্বকে প্রচুর পরিমাণে ব্রণ উঠার সমস্যা দেখা যায়। এই ব্রণের সমস্যা দূর করতে পেয়ারা পাতার পেস্ট বানিয়ে মুখের ত্বকে লাগাতে পারেন। পেয়ারা পাতার ভেতরে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়া উপাদান থাকায় এটি খুব সহজে ব্রণ দূর করতে সাহায্য করবে।

তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন নিতেঃ তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য পেয়ারা পাতা অত্যন্ত আদর্শ একটি উপাদান। চেহারা থেকে অতিরিক্ত তেল বের হওয়া বন্ধ করতে পেয়ারা পাতার পেস্টের এর সাথে এলোভেরা জেল মিশিয়ে লেবুর রস সাথে এক চামচ লেবুর রস দিয়ে ভালোভাবে মিক্স করুন। চেহারায় লাগিয়ে রেখে কিছুক্ষণ পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন । নিয়মিত কিছুদিন ব্যবহারের ফলে দেখবেন আপনার ত্বক থেকে তেল নিঃস্বরনের মাত্রা অনেকটাই কমে গেছে।

বয়সের ছাপ পড়তে দেয় নাঃ পেয়ারা পাতার ভেতরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় , এই পাতা দিয়ে পেস্ট বানিয়ে ত্বকে ব্যবহার করলে অথবা পেয়ারা পাতার চা খেলে ত্বকে বয়সে ছাপ পড়তে বাধা দেয়।

টোনার হিসেবে কাজ করেঃ পেয়ারা পাতা প্রাকৃতিক টোনার হিসেবে অত্যন্ত ভালো কাজ করে । পেয়ারার পাতা ফুটিয়ে এই পানিটি ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে বোতলের সাহায্যে প্রয়োজন অনুসারে স্কিন টনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।

এছাড়াও মুখের ত্বক থেকে ব্ল্যাকহেড দূর করতে এবং পোকামাকড়ের কামড়ের ফলে ত্বকের জ্বালা পোড়া হলে সেটি রোধ করতে ও গ্লোয়িং স্কিন পেতে পেয়ারা পাতার পেস্ট অত্যন্ত কার্যকরী। পেয়ারা পাতা ফুটানো পানি প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে নাইট ক্রিম বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন ।

মন্তব্য, এই পোস্টের মধ্যে দিয়ে এতক্ষণে হয়তো আপনারা জেনে গেছেন পেয়ারা পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। আমাদের হাতের কাছেই যেহেতু চুলের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের উপকরণ রয়েছে তাই, পেয়ারা পাতার উপকারিতা চুলের জন্য কোন কোন ক্ষেত্রে এ বিষয়টি জানার পরে , আশা করছি চুলের যে কোন সমস্যা নিজেরাই সমাধান করে ফেলতে পারবেন না। আর বিভিন্ন উপকারিতা ও অনেকগুলো রোগ সারানোর জন্য কেউ পেয়ারা পাতা খাওয়ার নিয়ম আপনাদের জানিয়ে দেওয়াই হয়েছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url