পাসপোর্ট তৈরি করার নিয়ম - পাসপোর্ট সংশোধন করার নিয়ম

অনেক সময় বিভিন্ন কারণে আমাদেরকে দেশের বাইরে অথবা বিদেশে ভ্রমণ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। আর দেশের বাইরে যেতে গেলে সর্বপ্রথমে যে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হয় সেটি হল পাসপোর্ট।বিদেশ ভ্রমণের এই গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টটি তৈরি করার জন্য বিভিন্ন সময় আমাদেরকে পড়তে হয় দালাল চক্রের হাতে। এই দালাল চক্র থেকে মুক্ত থাকার জন্য আজকে আমরা জানবো পাসপোর্ট তৈরি করার নিয়ম এবং পাসপোর্ট সংশোধন করার নিয়ম।

আমরা নিজেরাই যদি পাসপোর্ট সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান রাখে তাহলে অনেক সময় প্রতারক চক্রের হাত থেকে রক্ষা পেতে এটি আমাদেরকে যথেষ্ট সাহায্য করবে। এবং পাসপোর্ট তৈরির জন্য কোন তৃতীয় পক্ষ বা দালালের সাহায্য না নিয়ে আমরা নিজেরাই পাসপোর্ট তৈরি সকল প্রসেসিং সম্পন্ন করতে পারব। তাই এই পোস্টের মাধ্যমে আজকে আমরা জানবো পাসপোর্ট তৈরি করার নিয়ম , পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে , পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে , পাসপোর্ট বের হতে কতদিন লাগে ইত্যাদি তথ্য সহ পাসপোর্ট সংশোধন করার নিয়ম সম্পর্কে। আর সকল প্রসেস সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

সূচিপত্রঃ পাসপোর্ট তৈরি করার নিয়ম - পাসপোর্ট সংশোধন করার নিয়ম

পাসপোর্ট তৈরি করার নিয়ম

বিভিন্ন কারণে বিদেশ ভ্রমণের জন্য আমাদের প্রয়োজন হয় পাসপোর্ট এর। পাসপোর্ট নিয়ম না জানার কারণে আমাদেরকে তৃতীয় পক্ষের অর্থাৎ দালালের সাহায্য নিতে হয় , আর যার ফলে অনেক সময় হতে হয় প্রতারণার শিকার এবং খরচ করতে হয় প্রচুর টাকা। এ দালাল চক্রের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমরা যদি পাসপোর্ট তৈরি করার নিয়মগুলো জেনে রাখি তাহলে , খুব সহজেই নিজেরাই এর কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারব এবং আমাদেরকে দালালের প্রতারণার ফাঁদে পড়তে হবে না। পাসপোর্ট তৈরি করার নিয়ম খুব একটা কঠিন নয় , তবে পাসপোর্ট তৈরি করার আগে আমাদেরকে জানতে হবে পাসপোর্ট তৈরি করার নিয়ম সম্পর্কে। তাই চলুন আজকে আমরা জেনে নিই পাসপোর্ট তৈরি করার নিয়ম গুলি সম্পর্কে।পাসপোর্ট তৈরি করার জন্য প্রথমে আপনাকে একটি আবেদন ফ্রম সংগ্রহ করতে হবে এবং পাসপোর্ট তৈরির জন্য এর নির্ধারিত ফি পরিশোধ করতে হবে। পাসপোর্ট তৈরির আবেদন অনলাইনেও করা যায় আবার অফলাইনও করা যায়।

অফলাইন পাসপোর্ট আবেদনের নিয়মঃ আপনি সরাসরি পাসপোর্ট অফিসে আবেদন জমা দিতে চান তাহলে আপনাকে , পাসপোর্ট পরিশোধ করি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এর কি পরিশোধ করতে হবে। সোনালী ব্যাংক , ঢাকা ব্যাংক , ট্রাস্ট ওয়ান ব্যাংক , প্রিমিয়াম ব্যাংক , ওয়েন ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া এই ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে পাসপোর্ট এর ফি পরিশোধ করতে হবে।ব্যাংকে গিয়ে পাসপোর্ট এর ফি পরিশোধ করলে , ব্যাংক থেকে আপনাকে দুই কপির একটা রসিক দেবে। এক কপি নিজের কাছে রাখার জন্য এবং অপর কপি পাসপোর্ট অফিসে আবেদন ফরমের সাথে জমা দেয়ার জন্য। ব্যাংকে পাসপোর্ট এর কি জমা দেওয়ার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন , যে এলাকায় পাসপোর্ট অফিস রয়েছে সেখানকার নিকটস্থ নির্ধারিত ব্যাংক থেকে পাসপোর্ট এর কি পরিশোধ করার।

এবার পাসপোর্ট এর কি পরিশোধ করা হয়ে গেলে , পাসপোর্ট অফিস থেকে পাসপোর্ট এর আবেদন ফরম সংগ্রহ করুন । পাসপোর্ট অফিসে বিনামূল্যে আপনি পাসপোর্ট এর ফরম পেয়ে যাবেন। এইবার পাসপোর্ট এর ফরমটি সতর্কতার সাথে আপনার এন আইডি কার্ড , বার্থ সার্টিফিকেট অথবা প্রাতিষ্ঠানিক সার্টিফিকেটের সাথে মিল রেখে সঠিক তথ্য দিয়ে আবেদনের ফরমটি পূরণ করুন। এবং খেয়াল রাখবেন সব জায়গাতে আপনার নাম ঠিকানা এবং আনুষঙ্গিক তথ্য গুলোর যেন মিল থাকে। পাসপোর্ট ফরমে ব্যক্তিগত তথ্যগুলো পূরণ করা হয়ে গেলে । শেষের দিকে আপনি পাসপোর্ট এর ফর্মে পাসপোর্ট কি পরিষদ সংক্রান্ত তথ্য দিতে হবে। আপনি যেহেতু সরাসরি ব্যাংকের মাধ্যমে কি পরিশোধ করেছেন তাই এখানকার অফলাইন অপশনটি আপনাকে সিলেট করতে হবে এবং ব্যাংকের যে শাখায় পাসপোর্ট কি পরিশোধ করেছেন সেই শাখার নাম , ব্যাংক পরিশোধকারী  রিসিটের নম্বর ইত্যাদি বিষয় গুলো সংযুক্ত করতে হবে।

আবেদন ফরমটি সঠিকভাবে পূরণ করা হয়ে গেলে , ফ্রমের সাথে সংযুক্ত করতে হবে , জন্ম নিবন্ধন , জাতীয় পরিচয় পত্র , নাগরিক সনদ , পাসপোর্ট আবেদনকারী ছবি। আবেদন ফরম সহ এই সকল কাগজপত্র গুলো অবশ্যই সত্যায়িত করা হতে হবে। আবেদন ফ্রম সহ প্রয়োজনীয় সকল কাগজ পাতি গুলোর দুই কপি আপনাকে তৈরি করতে হবে । যার মধ্যে এক কপি পাসপোর্ট অফিসে থাকবে এবং অপর কপি পুলিশ ভেরিফিকেশন এর জন্য পাঠানো হবে। তাই আপনি যখন পাসপোর্ট এর আবেদন ফরম জমা দিবেন তখন অবশ্যই দুই কপি তৈরি করতে হবে। সব কাগজপত্র ঠিকঠাক মতন তৈরি করা হয়ে গেলে এবার আপনি পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে জমা দেবন।

আরো পড়ুনঃ বিকাশে টাকা পাঠানোর নিয়ম

অনলাইন পাসপোর্ট আবেদনের নিয়মঃ অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদনকারীদের জন্য , অনলাইনের মাধ্যমেই পাসপোর্ট কি পরিশোধের ব্যবস্থা রয়েছে।অনলাইন পাসপোর্ট আবেদনের জন্য, আপনাকে সর্ব প্রথমে পাসপোর্ট অফিসের অফিসিয়াল  passport,gov.bd এই ওয়েবসাইটে যেতে হবে। এরপর এখান থেকে আপনি দেখতে পাবেন 'কন্টিনিউ টু অনলাইন এনরোলমেন্ট' লেখা এই বাটনে ক্লিক করার সাথে সাথে আপনার সামনে পাসপোর্ট এর আবেদন ফরম পূরণের পেজটি শো করবে। এখান থেকে যে সকল তথ্য চাওয়া হয়েছে সেই সকল সঠিক তথ্য গুলোর মাধ্যমে আবেদন ফরমটি পূরণ করতে হবে। আবেদন ফরমের সকল তথ্য অবশ্যই আপনার এনআইডি কার্ড , বার্থ সার্টিফিকেট ও প্রাতিষ্ঠানিক সার্টিফিকেট অনুযায়ী হতে হবে।

অনলাইনে পাসপোর্ট এর আবেদন পূরণ করা হয়ে গেলে এরপর , পাসপোর্ট ফি পরিশোধের জন্য ব্যাংক কার্ড , বিকাশ , রকেট সহ ব্যাংকিং সেবা গুলোর নাম আপনার সামনে শো করবে আপনি সেখান থেকে আপনার সুবিধা মতন যে কোনো মাধ্যমে পাসপোর্ট এর ফি পরিশোধ করতে পারবেন। টাকা পরিশোধ হলে এখানে আপনাকে একটা ফরম পূরণ করতে হবে। যেই ফর্মটি পরবর্তীতে আবেদন ফরম এর সাথে প্রিন্ট আউট করে ব্যাংক রশিদের মতন এক কপিজ পাসপোর্ট অফিসে আবেদন ফরম এর সাথে জমা দিতে হবে এবং অপর কপি নিজের কাছে রাখতে হবে। পাসপোর্ট এর আবেদন কি পরিশোধের বিভিন্ন ব্যাংক গুলোর নাম তালিকা আকারে আপনার সামনে আসবে এবং আপনি যেই ব্যাংকের মাধ্যমে পাসপোর্ট এর কি পরিশোধ করতে চান সেই ব্যাংকের নাম কি সিলেক্ট করলেই হয়ে যাবে। সব তথ্য পূরণ এবং ব্যাংকে পাসপোর্ট আবেদন ফি পরিশোধ হয়ে গেলে, অনলাইন থেকে আবেদন ফরমটির প্রিন্ট আউট করতে হবে। এবং এর সাথে প্রয়োজনীয় সকল কাগজ পাতি ও পরিশোধের ডকুমেন্ট যুক্ত করে পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে।

অবশ্যই পাসপোর্ট এর আবেদন ফরম এবং সকল কাগজ পাতি দুই কপি তৈরি করা লাগবে এক কপি পাসপোর্ট অফিসে থাকবে এবং অপর কপি পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য পাঠানো হবে। বর্তমানে সকল কিছুই অনলাইন ভিত্তিক হওয়ায় অফ লাইনের চাইতে অনলাইনে পাসপোর্ট এর সকল কাজকর্ম করার প্রসেসটি বেশিরভাগ জায়গায় চালু করা হয়েছে। তাই কোন কোন পাসপোর্ট অফিসে অফলাইনের ব্যবস্থা নাও থাকতে পারে। সকল কার্যাবলী শেষ করে ফরম জমা দেওয়ার পরে , আপনাকে একটি ডেলিভারি টোকেন দেওয়া হবে।, এই টোকেনের তথ্য অনুযায়ী পাসপোর্টে আপনার তথ্য থাকবে সেই জন্য অবশ্যই টোকেনটি ভালোভাবে চেক করে নেবেন যদি কোথাও কোন ভুল চোখে পড়ে তাহলে সাথে সাথে এর এটি সংশোধন করার চেষ্টা করবেন। কি সাবধানে সংরক্ষণ করবেন কারণ পরবর্তীতে আপনি যখন পাসপোর্ট উঠাতে আসবেন তখন এই টোকেনটি কাজে লাগবে।আশা করি পাসপোর্ট তৈরি করার নিয়ম সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।

পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে

এবার আমরা জানবো পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে এই বিষয়ে। আসলে পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে এই বিষয়টি নির্ভর করবে আপনার পাসপোর্ট এর ধরনের উপরে ভিত্তি করে। আপনি যদি রেগুলার পাসপোর্ট বানাতে চান তাহলে সে ক্ষেত্রে একরকম চার্ট প্রযোজ্য হবে আর আপনি যদি এমার্জেন্সি ভিত্তিতে পাসপোর্ট বানাতে চান তাহলে সে ক্ষেত্রে পাসপোর্ট এর চার্জ একটু বেশি হবে। পাসপোর্ট তৈরি করার আগে পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে এ বিষয়ে জেনে রাখা উচিত। চলুন তাহলে এবার জেনে নিন কোন ধরনের পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে।

সাধারণ পাসপোর্ট তৈরি খরচঃ৬৪ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদী সাধারণ অর্থাৎ সাত দিনের ভেতরেই  পাসপোর্ট তৈরি করতে হলে সেক্ষেত্রে পাসপোর্ট কি হিসেবে পরিশোধ করতে হবে ৫৫০০ টাকা, যদি জরুরী ভিত্তিতে সাত দিনের ভেতরে সাধারণ পাসপোর্ট পেতে চান তাহলে এর জন্য পরিশোধ করতে হবে ৭৫০০ টাকা। আর যদি দুই দিনের ভেতরে সাধারণ পাসপোর্ট তৈরি করতে চান তাহলে এর জন্য ১০৫০০ টাকা পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করতে হবে। আর ৬৪ পৃষ্ঠার দশ বছর মেয়াদী সাধারণ পাসপোর্ট ১৫ দিনের মধ্যে পেতে হলে লাগবে ৭০০০ টাকা , ইমারজেন্সি ভিত্তিতে ৭ দিনে পাসপোর্ট পেতে হলে লাগবে ৯০০০ টাকা। আর যদি দুই দিনের ভেতরে পেতে চান তাহলে সেক্ষেত্রে পরিশোধ করতে হবে ১২০০০ টাকা।

আরো পড়ুনঃ উপায় অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম

ই-পাসপোর্ট তৈরির খরচঃ ৪৮ পৃষ্ঠার আপনি যদি পাঁচ বছর মেয়াদী ই-পাসপোর্ট তৈরি করাতে চান তাহলে সে ক্ষেত্রে রেগুলার ই-পাসপোর্ট হলে আপনার খরচ করতে হবে প্রায় ৪০২৫ টাকা এবং যদি আপনি ইমার্জেন্সি ভিত্তিতে ই-পাসপোর্ট তৈরি করতে চানতাহলে সে ক্ষেত্রে আপনার খরচ হবে ৬৩২৫ টাকা। আর আপনি যদি ৬৪ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদী ই-পাসপোর্ট  রেগুলার তৈরি করতে চান তাহলে সেক্ষেত্রে খরচ হবে প্রায় ৬৩৫০ টাকা আর যদি ইমারজেন্সি ভিত্তিতে তৈরি করতে চান তাহলে সেক্ষেত্রে খরচ হবে ৮৬৫০ টাকা।৪৮ পৃষ্ঠার দশ বছর মেয়াদী ই-পাসপোর্ট রেগুলার তৈরি করতে খরচ হয় ৮০৫০ টাকা আর ইমার্জেন্সি ভিত্তিতে তৈরি করতে খরচ হবে ১০৩৫০ টাকা।৪৮ 

পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে

এবার আমাদেরকে জানতে হবে পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে। পাসপোর্ট তৈরি করার পূর্বে পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে এই বিষয়ে জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি, তাহলে পাসপোর্ট তৈরি করার সময় কাগজপাতি সংক্রান্ত বিভিন্ন ঝামেলায় পড়তে হবে। তাই যারা পাসপোর্ট তৈরি করতে চাচ্ছেন তারা অবশ্যই এর পূর্বে পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে সেই বিষয়ে জেনে রাখুন। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য পাসপোর্ট তৈরি করতে লাগবে,

  • পাসপোর্ট এর আবেদন কপি
  •  ২ কপি পাসপোর্ট সাইজ রঙিন ছবি
  •  NID অর্থাৎ ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি
  • নাগরিকত্বের সনদ
  • পুরনো অথবা মেয়াদ উত্তীর্ণ পাসপোর্ট থাকলে এর মূল কপি ও ফটোকপি
  • আবেদনকারী সরকারি চাকরিজী হলে NOC
  • আবেদনকারী অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী অথবা কর্মকর্তা হলে পেনশন বইয়ের ফটোকপি
  • আবেদনকারীর ১৮ বছরের কম হলে -পিতা , মাতার এনআইডি কার্ডের ফটোকপি
  • বার্থ সার্টিফিকেট -  ইংরেজি (আবেদনকারীর বয়স ১৮ বছরের কম হলে)
  • আবেদনকারী পেশাজীবী হলে প্রতিষ্ঠানের প্রত্যয়ন পত্র
  • আবেদনকারী ছাত্র হলে স্টুডেন্ট আইডি কার্ড
  • আবেদনকারীর ব্যবসায়ী হলে ট্রেড লাইসেন্স

পাসপোর্ট বের হতে কতদিন লাগে

পাসপোর্ট তৈরি করার পূর্বে অনেকে জানতে চান পাসপোর্ট বের হতে কতদিন লাগে। বিভিন্ন কারণে আমরা বিদেশে ভ্রমণের জন্য পাসপোর্ট তৈরি করে থাকি। অনেকের ইমারজেন্সি ভিত্তিতে দেশের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন করতে পারে , আর এ কারণে জেনে রাখা ভালো পাসপোর্ট বের হতে কতদিন লাগে তাহলে আপনি আপনার প্রয়োজন অনুসারে পাসপোর্ট তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। পাসপোর্ট বের হতে কতদিন লাগে এই বিষয়টি নির্ভর করবে আপনি কোন ধরনের পাসপোর্ট তৈরি করবেন তার উপরে।আপনি যদি সাধারণ বা রেগুলার নিয়মে পাসপোর্ট তৈরি করান তাহলে, পাসপোর্ট হাতে পেতে আপনার কম করে ২১ দিন অথবা তার কিছু বেশি সময় লাগবে। আর আপনি যদি ইমারজেন্সি ভিত্তিতে পাসপোর্ট তৈরি করান তবে এই পাসপোর্ট হাতে পেতে আপনার ৭ দিন অথবা ১০ দিন সময় লাগবে।

পাসপোর্ট সংশোধন করার নিয়ম

অনেক সময় পাসপোর্ট এর তথ্যগুলোর গড়মিল অথবা নামের বানান সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের ভুল ধরা পড়ে এই সময়ে প্রয়োজন দেখা দেয় পাসপোর্ট সংশোধন করার। না হলে পরবর্তীতে পাসপোর্ট এর এই সকল ছোট বড় ভুলের কারণে করতে হয় নানান ধরনের বিড়ম্বনায়। কিন্তু অধিকাংশ মানুষই জানে না পাসপোর্ট নিয়ম সম্পর্কে। পাসপোর্ট তৈরির নিয়মের পাশাপাশি পাসপোর্ট সংশোধন করার নিয়ম সম্পর্কে ও জেনে রাখা ভালো। তাহলে পাসপোর্ট সংক্রান্ত কোনো সমস্যা হলে সেটি আমরা খুব সহজেই ঠিক করে নিতে পারব। আজকে আমরা আলোচনা করব পাসপোর্ট সংশোধনের নিয়ম সম্পর্কে।আপনাদর যদি পাসপোর্ট সংশোধনের নিয়ম জানা না থাকে তাহলে, আপনিও পাসপোর্ট সংশোধনের নিয়ম এখুনি জেনে নিন।

আরো পড়ুনঃ অগ্রণী ব্যাংক একাউন্ট করার নিয়ম

যেকন ধরনের পাসপোর্ট সংশোধনের জন্য,পাসপোর্ট রিনিউ এর আবেদন করতে হবে। সকল তথ্য NID কার্ড, জন্ম নিবন্ধন অথবা সার্টিফিকেট অনুযায়ী সঠিকভাবে সকল তথ্য দিয়ে আবেদন ফরমটি অনলাইনে পূরণ করুন এবং এর প্রসেসিং চার্জ পরিশোধ করুন। অনলাইনের মাধ্যমে সংশোধনী আবেদন সংটি পূরণ করার সময় নির্দিষ্ট স্থানে , আপনার বর্তমান পাসপোর্ট এর যে অংশটুকু ভুল রয়েছে সে অংশটুকু লিখতে হবে সংশোধিত ঘরে এই অংশের সঠিক তথ্যটি বসাতে হবে। হবে আপনার পাসপোর্টে থাকা একের অধিক ভুল তথ্য গুলো নির্দিষ্ট ঘরে বসাতে হবে এবং এর পাশের ঘরে সঠিক তথ্য গুলো রাখতে হবে। পাসপোর্ট সংশোধনের জন্য একটি অঙ্গীকারনামা তৈরি করতে হবে এবং সঠিকভাবে এই অঙ্গীকারনামাটি পূরণ ও স্বাক্ষর প্রদান করে আবেদন ফ্রম এর সাথে জমা দিতে হবে। আবেদন ফরমের সকল তথ্য সঠিকভাবে পূরণের পরে প্রয়োজনীয় কাগজ পাতি সহকারে পাসপোর্ট অফিসে আবেদন ফরমটি জমা দিতে হবে।

পাসপোর্ট সংশোধন করতে কত টাকা 

আমরা এতক্ষণ পাসপোর্ট সংশোধন করার নিয়ম সম্পর্কে জেনেছি এবার আমাদেরকে জানতে হবে পাসপোর্ট সংশোধন করতে কত টাকা লাগে। পাসপোর্ট সংশোধনের ক্ষেত্রে এই বিষয়টিও জানা অত্যন্ত জরুরী। আপনি যদি সঠিকভাবে পাসপোর্ট সংশোধন করতে কত টাকা লাগে এ বিষয়ে না জানেন তাহলে , প্রতারক চক্রের হাতে পড়তে পারেন এবং আপনাকে এর জন্য খরচ করতে হতে পারে নির্ধারিত অর্থের চেয়ে বেশি পরিমাণ টাকা । তাই এবার জেনে নিন পাসপোর্ট সংশোধন করতে কত টাকা লাগবে। পাসপোর্ট ফি এর নতুন নিয়ম অনুযায়ী পাসপোর্ট সংশোধন করতে সর্বনিম্ন ৪০২৫ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১৩৮০০ টাকা লাগবে। আপনাকে মনে রাখতে হবে পাসপোর্ট সংশোধনের জন্য পাসপোর্ট ফি ছাড়া অন্য কোন কারণের জন্য টাকা বা ফ্রি পরিশোধ করতে হয় না।

মন্তব্য, উপরিউক্ত আলোচনার মাধ্যমে এতক্ষণে নিশ্চয়ই ভালোভাবে জেনে নিয়েছেন পাসপোর্ট তৈরি করার নিয়ম এবং পাসপোর্ট সংশোধন করার নিয়ম সম্পর্কে। আশা করছি এ বিষয়গুলো জানা থাকলে ভবিষ্যতে আপনাকে কোন দালাল চক্র বা প্রতারক চক্রের হাতে পড়তে হবে না। এবং আপনি নিজেই খুব সহজে পাসপোর্ট তৈরির সকল প্রসেস সম্পন্ন করতে পারবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url