ইউরিন ইনফেকশনের ১১টি লক্ষণ - ইউরিন ইনফেকশনের ঔষধ

বিভিন্ন সময় আমাদেরকে ইউরিন ইনফেকশনের যন্ত্রণাদায়ক এবং অস্বস্তিকর এই রোগটির দ্বারা আক্রান্ত হতে হয়। ইউরিন ইনফেকশন থেকে মুক্ত থাকতে এবং সচেতন থাকতে, আজকে আমরা জানবো ইউরিন ইনফেকশন দূর করার উপায় , ইউরিন ইনফেকশন হলে কি সমস্যা হয় এবং ইউরিন ইনফেকশনের ঔষধ সম্পর্কে। শুরু থেকে যদি আপনি ইউরিন ইনফেকশনের ব্যাপারে সচেতন না হন তাহলে এটি এফেক্ট করতে পারে কিডনির উপরে। আর এ কারণে ইউরিন ইনফেকশন সংক্রান্ত বিষয়গুলো জানুন এবং সচেতন হন।


ইউরিন ইনফেকশনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমাদেরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে অত্যন্ত সচেতন হতে হবে এবং পাশাপাশি আরো বেশ কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। আর তাই আজকে প্রসাবে ইনফেকশন সম্পর্কে সচেতন করার জন্য এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদেরকে জানানো হবে প্রসাবে ইনফেকশন কেন হয় , ইউরিন ইনফেকশনের লক্ষণ,ইউরিন ইনফেকশন হলে কি সমস্যা হয়,ইউরিন ইনফেকশনের ঔষধ এবং ইউরিন ইনফেকশন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ আরো বিভিন্ন তথ্য। 

সূচিপত্রঃ ইউরিন ইনফেকশন হলে কি সমস্যা হয় - ইউরিন ইনফেকশনের ঔষধ

প্রস্রাবে ইনফেকশন কেন হয়

প্রসাবের ইনফেকশনে আক্রান্ত হতে পারে নারী-পুরুষ উভয়ই তবে পুরুষদের তুলনায় নারীদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বেশি থাকে বিশেষ করে গর্ভাবস্থায়। কিন্তু আপনি জানেন কি প্রস্রাবে ইনফেকশন কেন হয়। আপনি যদি না জেনে থাকেন প্রসাবের ইনফেকশন কেন হয় তাহলে এই বিষয়টি এখনই আপনার জেনে নেওয়া উচিত। কেন না প্রসাবে ইনফেকশন কেন হয় এই বিষয়ে জানা থাকলে তবেই আমরা এর বিপরীতে ব্যবস্থা নিতে পারব এবং ইউরিন ইনফেকশন থেকে সচেতন এবং সাবধান থাকতে পারবো। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক ইউরিন ইনফেকশন কেন হয়।

ইউরিন ইনফেকশন হলো মূত্রতন্ত্রে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ গঠিত একটি অসুখ। অর্থাৎ মুত্রতন্ত্রের যে কয়টি অংশ রয়েছে তার মধ্যে কোথাও, কোন অংশেই যদি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে তাহলে তাকে ইউরিন ইনফেকশন বলা হয়। সাধারণভাবে মূত্র তন্ত্রের এই সংক্রমণকে ইনফেকশন বলা হলেও মেডিকেল সাইন্স থেকে বলা হয় ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন। এই ইউরিন ইনফেকশন হওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, যেমন - দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখা, শরীরে পুষ্টির অভাব। কারণ শরীরের পুষ্টি ঘাটতি দেখা দিলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং সেই সুযোগে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের সুযোগ পাই এবং এখান থেকে হতে পারে ইউরিন ইনফেকশন।

আরো পড়ুনঃ জরায়ু ইনফেকশন এর লক্ষণ

ইউরিন ইনফেকশনের আরেকটি উল্লেখযোগ্য কারণ হলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব। ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবে প্রস্রাবের ইনফেকশন হয়ে থাকে। বিশেষ করে মাসিকের সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাবে বেশিরভাগ সময় ইউরিন ইনফেকশনে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। ডায়াবেটিস রোগীদের এবং মেনোপজ হওয়া নারীদের ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকার কারণে সহজেই ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ঘটাতে পারে আর এখান থেকেই বেড়ে যেতে পারে ইউরিন ইনফেকশনের ঝুঁকি। এছাড়াও যৌন সম্পর্কে মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটের কারণে ইউরিন ইনফেকশন হয়ে থাকে। আশা করছি উনি ইনফেকশনের কারণগুলো সম্পর্কে ধারণা পেয়েছে। মেয়েদের ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা কমে গেলে ইউরিন ইনফেকশনের আশঙ্কা বেড়ে যায় কারণ এই সময় খুব সহজে ব্যাকটেরিয়া মূত্রতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটাতে পারে।

ইউরিন ইনফেকশনের লক্ষণ

ইউরিন ইনফেকশন অথবা প্রসাবের ইনফেকশন এই সমস্যাটি আমাদের অনেকের কাছেই অতি পরিচিত বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় বেশিরভাগ মেয়ের ক্ষেত্রেই ইউরিন ইনফেকশন দেখা যায়। তবে গর্ভাবস্থায় ছাড়াও অন্যান্য যেকোনো সময় ইউরিন ইনফেকশন হতে পারে আর আমরা জানি ইউরিন ইনফেকশন বা প্রস্রাবের ইনফেকশন হলো , মূত্র তন্ত্রে জীবাণুর সংক্রামণ। মূত্র তন্ত্রে জীবাণুর সংক্রমণ বা ইনফেকশন দেখা দিলে এর কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। আজকে আমরা জানবো ইউরিন ইনফেকশনের লক্ষণ সমূহ সম্পর্কে। কারণ ইউরিন ইনফেকশনের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে ধারণা না থাকার কারণে অনেকেই ইউরিন ইনফেকশন হলে প্রাথমিক অবস্থায় বুঝতে পারে না এবং এর ফলে চিকিৎসা গ্রহণ করতে অনেক দেরি হয়ে যায় এবং এর থেকে সমস্যা বা জটিলতা বেড়ে যায়। তাই চলুন আজকে ইউরিন ইনফেকশনের লক্ষণ গুলো জেনে নেওয়া যাক। ইউরিন ইনফেকশনের কারণে যে সকল লক্ষণ প্রকাশ পায় সেগুলো হলো,

  • ঘন ঘন প্রস্রাব লাগা
  • ভালোভাবে প্রস্রাব না হওয়া
  • প্রস্রাবের রং লালচে হওয়া
  • প্রসাবে অতিরিক্ত দুর্গন্ধ হওয়া
  • প্রস্রাব করার সময় ভীষণ জ্বালাপোড়া হওয়া
  • গায়ে সব সময় হালকা জ্বর থাকা অথবা বেশি জ্বর আসা-যাওয়া করা
  • জ্বরের সাথে বমি বমি ভাব থাকা সাথে কাঁপুনি থাকতে পারে
  • পেটে (বিশেষ করে তলপেটে)এবং পিঠের দিকে ব্যথা অনুভব হওয়া
  • প্রস্রাব করার আগে , পরে এবং প্রসাবের সময় তলপেটে ব্যথা হওয়া
  • শরীর ক্লান্ত ও বমি ভাব অনুভব হওয়া
  • প্রস্রাবের বেগ ধরে রাখতে অসুবিধা হওয়া বা ধরে রাখতে না পারা।

ইউরিন ইনফেকশন হলে কি সমস্যা হয়

যদিও ইউরিন ইনফেকশনের সমস্যায় নারীদেরকে বেশি ভুগতে দেখা যায় , তবে ইউরিন ইনফেকশন পুরুষদেরও হয়ে থাকে। আমরা পশ্চিম উপরের অংশে এতক্ষণ আলোচনা করলাম ইউরিন ইনফেকশনের লক্ষণ সম্পর্কে আর ইউরিন ইনফেকশনের লক্ষণগুলো জানার মাধ্যমে এতক্ষণে নিশ্চয়ই ইউরিন ইনফেকশন হলে কি সমস্যা হয় সে বিষয়ে ধারণা পেয়ে গেছেন। তারপরেও আরো একবার সহজভাবে আপনাদেরকে ইউরিন ইনফেকশন হলে কি সমস্যা হয় এই বিষয়টি জানিয়ে দেবো।

আরো পড়ুন ঃ টনসিল ইনফেকশনের লক্ষণ

ইউরিন ইনফেকশন হলে , দেখা যায় ঘন ঘন প্রস্রাবের এর বেগ আসা সমস্যাটি। কিন্তু ইউরিন ইনফেকশন হলে প্রসাবের বেগ ঘনঘন আসলেও ভালোভাবে প্রস্রাব বের হয় না অল্প পরিমাণে প্রস্রাব হয় আর যার কারণেই মূলত একটু পরপর প্রস্রাবের বেগ আসার সমস্যাটি দেখা যাই। প্রস্রাবে ইনফেকশন থাকলে লালচে রংয়ের প্রস্রাব হয় এবং প্রসাবে অত্যন্ত দুর্গন্ধ অনুভব হয় এবং প্রস্রাবের ইনফেকশন এর কারণে প্রসব করার সময় প্রচন্ড জ্বালাপোড়া হয়।

ইউরিনে যদি ইনফেকশন থাকে তাহলে, আরো যেসব সমস্যা হয় সেগুলো হলো সব সময় বা বেশিরভাগ সময় গায়ে হালকা অথবা বেশি জ্বর আসা যাওয়া করে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জ্বরের সাথে কাঁপুনি থাকে , বমি বমি ভাব হয় এবং সাথে পেটে ও পিঠের দিকে ব্যথা হয়। আশা করছি ইউরিন ইনফেকশন হলে কি সমস্যা হয় বুঝতে পেরেছেন

প্রসাবে ইনফেকশন হলে কি খেতে হবে

ইউরিন ইনফেকশন হলো অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক এবং অস্বস্তিকর একটি পরিস্থিতি এই পরিস্থিতিতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নারী দেয় পড়ে থাকতে হবে, আর একবার যদি ইউরিন ইনফেকশন হয় তাহলে বারবার এই ইনফেকশনে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। ইউরিন ইনফেকশন থেকে মুক্ত থাকার জন্য অথবা ইউরিন ইনফেকশন প্রতিরোধ করার জন্য বেশ কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো আমরা খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে পারি এবং এর মাধ্যমে ইউরিন ইনফেকশনকে অনেকটাই প্রতিরোধ করতে পারি। আপনি কি জানেন প্রস্রাবে ইনফেকশন হলে কি খেতে হবে সেই খাবার গুলোর নাম, যদি না জেনে থাকেন তাহলে চলুন আজকে প্রসাবে ইনফেকশন হলে কি খেতে হবে সেই খাবার গুলোর নাম জেনে নিন,

  • ব্রকলি
  • শসা
  • দারুচিনি
  • রসুন
  • পেঁপে
  • ক্রেনবেরি
  • আনারস
  • কমলালেবু
  • কিউয়ি
  • আমলকি
  • স্ট্রবেরি
  • কলা
  • বাদাম
  • দই
  • আচার

ইউরিন ইনফেকশনের ঔষধ

আমরা জানবো ইউরিন ইনফেকশনের ঔষধের নাম , কারণ অনেক সময় ইউরিন ইনফেকশন এতটাই কষ্টদায়ক এবং যন্ত্রণাদায়ক হতে হয়ে ওঠে যে আমাদের জরুরী ভিত্তিতে ইউরিন ইনফেকশনের ঔষধ গুলো প্রয়োজন পড়ে। আরে এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য আমাদের জেনে রাখা উচিত ইউরিন ইনফেকশনের ঔষধ গুলোর নাম সম্পর্কে। আপনার যদি ইউরিন ইনফেকশনের ঔষধ গুলোর নাম জানা না থাকে তাহলে , ঔষধ গুলোর নাম অবশ্যই জেনে রাখুন কারণ বিভিন্ন সময় সময় এই ঔষধ গুলোর নাম আপনার প্রয়োজনে আসতে পারে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে আমরা জেনে নিয়ে ইউ ঔষধের নাম।

  • Tb. Neofloxin 500mg
  • Tb. Ciprocin 500mg
  • Tb. Floxin 500mg
  • Tb. Aprocin 500mg
  • Tb. Flontin 500mg
  • Syp. Urikal
  • Syp. Alkuli

মন্তব্য, আশা করছি এই পোষ্টের মাধ্যমে কালোভাবে জেনে নিয়েছেন কিউরিন ইনফেকশন হলে কি সমস্যা হয় ও ইউরিন ইনফেকশনের ঔষধ সহ ইউরিন ইনফেকশন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে। ইউরিন ইনফেকশন থেকে মুক্ত থাকতে যথাযথ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চলুন এবং এরপরেও যদি ইউরেন দেখা দেয় তাহলে অবহেলা না করে দ্রুত ডাক্তারি পরামর্শ গ্রহণ করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url