আপেল এর ২০টি উপকারিতা - আপেলে কোন এসিড থাকে
শরীরের জন্য আপেল এর উপকারিতা অনেক বেশি এবং আপেল পুষ্টিগুণে ভরা একটি ফল। অত্যন্ত সুস্বাদু হওয়ার কারণে এই ফলটি অনেকেরই পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকে। আপেল শুধু স্বাদেই অতুলনীয় নয় ,শরীর সুস্থ রাখার জন্য এই ফলটি রাখতে পারে অনেক অবদান তাই আজকে আমরা আপেল এর ২০টি উপকারিতা এবং আপেলে কোন এসিড থাকে তা নিয়ে আলোচনা করব।
ক্যান্সার নামক রোগটি আমাদের কাছে আতঙ্কের একটি নাম , কিন্তু আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন না আমাদের শরীরে থাকা এই মরণঘাতি রোগ ক্যান্সারের সেল ডেমেজ করতেও বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে আপেল। আপনি যদি সম্পূর্ণ আপেল এর উপকারিতা সম্পর্কে আরও বিভিন্ন তথ্য জানতে চান , তাহলে অবশ্যই এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুণ। কারণ এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন আপেল এর ২০টি উপকারিতা এবং আপেলে কোন এসিড থাকে এই বিষয় দুটি ছাড়াও আপেল সম্পর্কে থেকে আরও বিভিন্ন ধরনের তথ্য। তাহলে চলুন আপেল এর উপকারিতা গুলো জেনে নেয়া যাক।
সূচিপত্রঃ আপেল এর ২০টি উপকারিতা - আপেলে কোন এসিড থাকে
- আপেলের পুষ্টগুন
- আপেল কোন দেশে বেশি হয়
- আপেল এর উপকারিতা
- আপেলে কোন এসিড থাকে
- আপেল খাওয়ার নিয়ম
- আপেলের অপকারিতা
আপেলের পুষ্টগুন
আপেল কোন দেশে বেশি হয়
আপেল এর উপকারিতা
- দাঁত ভালো রাখেঃ আপেল আমাদের সাদা ঝকঝকে দাঁতের জন্য প্রচুর উপকারি, কারন আমরা যখন আপেলে কামড় দিয়ে চিবই তখন আমাদের মুখে লালার সৃষ্টি হয়। আর এই পদ্ধতিতে আমাদের দাঁতের কোণা থেকে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বেরিয়ে আসে।
- ক্যান্সারের সেল ড্যামেজ করেঃ আমেরিকার অ্যাসোসিয়েশন ফর ক্যান্সার রিসার্চ-এর পক্ষ থেকে জানা যায়, এই আপেল খেলে ক্যন্সার, ২২/২৩% ঝুকি কমে। এর কারন আপেলের মধ্যে প্রচুর ফ্ল্যাভোনল থাকে। এছাড়াও কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা আর কিছু উপাদান পেয়েছেন যা ট্রেটারপেনয়েডস নামে পরিচিত। এই উপাদান লিভার, স্তন ও কোলনের মধ্যের ক্যান্সারের কোনো কোষ বেড়ে উঠতে বাধা দেয়।
- ডায়বেটিসের সমস্যা কমায়ঃ যেসব মেয়েরা প্রতিদিন আপেল খান, তাদের ডায়বেটিসের ঝুকি ২৮% কম থেকে। তার কারন, আপেলের মধ্যে যে ফাইবার থাকে তা রক্তের শর্করার পরিমাণ সঠিক রাখে।
- কোলেস্টেরল কমাতেঃ আপেলে যে ফাইবার থাকে তা আমাদের অন্ত্রের ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে যার ফলে কোলেস্টেরলের মাত্রা সঠিক থাকে। আর একবার শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমান কমে গেলে হার্টেরও কোনো ক্ষতি হয় না।
- হার্ট ভালো রাখতেঃ আগেই বলা হয়েছে যে, আপেল খারাপ কোলেস্টেরলের কমায় আর হার্টকে ভালো রাখে। এছাড়া আপেলের খোসার মধ্যে যে ফেনলিক নামক উপাদান থাকে, তা রক্ত নালি থেকে কোলেস্টেরল দূর করতে সাহায্য করে। যার ফলে হার্টে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে।
- গলব্লাডার স্টোন কমাতে সাহায্য করেঃ পিত্তথলির মধ্যে অতি পরিমানে কোলেস্টেরল জমে গেলে তখন গলস্টোন হয়। তাই ডাক্তাররা সবসময় ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে বলেন। আর এই ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারের শীর্ষেই আছে আপেল। তাই আপেল খেলে গলব্লাডার স্টোন হওয়ার সম্ভবনা অনেক কম থাকে।
- হজম প্রক্রিয়া ভালো রাখেঃ নিয়মিত আপেল খেলে এটি আমাদের খাবার হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটায়।তাই যদি প্রতিদিন ১ টি করে আপেল খাওয়া যায় তাহলে ডাইজেস্টিভ সিস্টেম ভালো রাখার ক্ষেত্রে উপকার পাওয়া যাবে।
- যেকোন স্থানের ফোলাভাব কমায়ঃ আপেলে অ্যান্টি- ইনফ্লামেটরি উপাদান থাকায় এই ফলটি শরীরের যেকোন স্থানের ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে।
- ডায়রিয়া দূর করেঃ ডায়রিয়া দূর করতে সাহায্য করে আপেল।ডায়্রিয়ার কারনে, যদি আপনাকে বার বার বাথরুমে যেতে হয়, কিছু খেলেই বাথরুমে যেতে হয় বা দীর্ঘক্ষন বাথরুমে গিয়েও পেট পরিষ্কার হচ্ছে না, তাহলে এগুলো সমস্যার একটি কার্যকর সমাধান হচ্ছে আপেল। আপেল প্রয়োজন অনুযায়ী বর্জ্য থেকে অতিরিক্ত পানি টেনে নেয়। এতে যেমন হজমে সহায়তা হয়, তেমনি বার বার বাথরুমে ছুটতেও হয় না।
- কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সমাধান করেঃ কোষ্ঠকাঠিন্যের পেছনে মূল কারণ হলো আঁশ বা ফাইবার যুক্ত খাবার গুলো কম খাওয়া , আপেলের ভেতরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় এটি আমাদের ডায়রিয়ার সমস্যা দূর করার পাশাপাশি ,কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। তাই যারা কষ্ঠকাঠিন্য এর সমস্যায় তারা দৈনিক আপেল খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- ওজন কমাতেঃ অনেক মানুষই অতিরিক্ত ওজনের জন্য জর্জরিত, আবার ওজন বাড়ার জন্য প্রচুর রোগ ব্যাধিও বাসা বাধঁছে। এসব ওজন বৃদ্ধি বা এর জন্য রোগ বালাই থেকে রেহাই পেতে, একটাই সমাধাম নিয়ম করে আপেল খান। আপেলে থাকা ফাইবার পেট ভরাতে সাহায্য করে কোনো রকম ক্যালরি ছাড়াই।
- লিভার সুস্থ রাখতেঃ বর্তমান যুগে যাই খাওয়া হোক না কেন, সবটাতেই ভেজাল থাকে, আর যার ফলে লিভারের অসুখ হওয়া অস্বাভাবিক কিছু না! এই ভেজালের মধ্যে নিজেদের লিভার ভালো রাখাটাই চিন্তার হয়ে দাঁড়ায়। তবে এর মধ্যেও লিভারকে ১০০% সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এই আপেল। এটি খুব সহজে লিভারে জমা খারাপ উপাদান বের করতে সাহায্য করে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ আপেলের মধ্যে এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে যা কুয়েরসেটিন নামে পরিচিত, যা অনেক সহজেই আমাদের রোগ-প্রতিরোধের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে আর আমাদের শরীর ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- মাইগ্রেনের সমস্যা কমায়ঃ যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা আছে তারাদে দিনে একটি করে হলেও আপেল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা , কারণ আপেল মাইগ্রেনের সমস্যা কমাতেও বিশেষভাবে সাহায্য করে।
- অনিদ্রার সমস্যা দূর করেঃ যাদের রাতে ঘুম হচ্ছে না, তারা প্রতিদিন আপেলের রস খান। এর মাধ্যমে খুব তাড়াতাড়ি এই ঘুম না হওয়ার সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। যারা অনিদ্রার সমস্যায় ভুগছেন তারা দৈনিক আপেল খাওয়ার অভ্যাস করলে দ্রুত অনিদ্রা সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন ।
- মুখের কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করেঃ আপেলের মধ্যে আছে ভিটামিন সি, যার ফলে ব্রণ, চুলকানি বা দীর্ঘদিনের মুখের কালো দাগ দূর হয়। এছাড়াও দৈনিক আপেল খেলে স্কিন ভেতর থেকে গ্লো করে , এবং চামড়া থেকে বয়সের ছাপ দূর হয়।
- দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখেঃ আপেলে থাকা ভিটামিন এ ও সি যা আমাদের রাতকানার মতো রোগ থেকে দূরে রাখে ও আমাদের চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে।
- চুল পড়া কমাতেঃ চুল পড়ে যাওয়া, চুলের গোড়া মজবুত করা আর চুল লম্বার জন্য সবচেয়ে এফেক্টিভ উপায় আপেল। এর কারন আপেলে আছে প্রোক্যান্ডিন-বি যা এই সব সমস্যা সমাধানের উপায়।
- স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ আপেলে থাকা আয়রন ও ফসফরাস আমাদের স্মৃতি শক্তিকেও ভালো রাখে।এ কারণে দৈনিক একটি করে আপেল খেলে আপেলের ভেতরে থাকা পুষ্টিগুণ স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- কিডনি ভালো রাখেঃ আমাদের কিডনি ভালো রাখতেও আপেলের অবদান অনেক। ডাক্তার আমাদের কিডনির সমস্যা বা কিডনিতে পথরের সমস্যা থেকে রেহাই পেতে আপেল খাওয়ার পরামর্শ দেন কারন আপেলে থাকা কারকুমিনে অ্যান্টি- ইনফ্লামেটারি আমাদের কিডনিকে জটিল ধরনের রোগ থেকে রক্ষা করে।
আপেলে কোন এসিড থাকে
বিভিন্ন সময় অনেক মানুষ সার্চ করে জানার চেষ্টা করেন আপেলে কোন এসিড থাকে।অনেক মানুষই জানে না আপেলে কোন এসিড থাকে।তাই চলুন এবার জেনে নেয়া যাক আপেলে কোন এসিড থাকে।আপেলের মধ্যে প্রচুর পরিমানে ম্যালিক এসিড ও অ্যাসকরবিক এসিড রয়েছে।
আপেল খাওয়ার নিয়ম
আপনারা কি সঠিকভাবে আপেল খাওয়ার নিয়ম জানেনে।যদি আপেল খাওয়ার নিয়ম না জেনে থাকেন তাহলে এখুনি জেনে নিন ,তা না হলে হয়ত আপেলের পরিপূর্ণ স্বাস্থ্য উপকারিতা আপনি পাবেন না।প্রতিদিন ১-২ টির বেশি আপেল খাওয়া ঠিক নয়। খাওয়ার সঠিক সময় হলো সকালে খালি পেটে এবং আপেল খাওয়ার সঠিক নিয়ম হলো খোসা সহ। দুপুরের পরে বা রাতে আপেল খাওয়া মোটেও ঠিক নয় কারণ , এতে পেটে এসিডিটির সমস্যা তৈরি হতে পারে।
আপেলের অপকারিতা
আপনাদের আগে আপেল এর ২০টি উপকারিতা সম্পর্কে জানিয়েছি ,তবে শুধু উপকারিতার কথা জানলে চলবে না উপকারিতার পাশাপাশি আপেলের অপকারিতা গুলোও জানতে হবে। তাই এবার আমরা আপেলের অপকারিতা গুলো জেনে নেব।কারণ উপকারি বলে যদি অতিরিক্ত পরিমানে আপেল খাওয়া হয় তাহলে সেক্ষেত্রে হতে পারে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা
নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url