হলুদের ২০টি উপকারিতা - কাঁচা হলুদের অপকারিতা

ঔষধি গুণ সম্পন্ন হলুদের উপকারিতা সম্পর্কে সকলকে জানানোর জন্য আজকের এই পোস্টটি। কারণ আমাদের হাতের কাছে থাকা এই মসলা জাতীয় দ্রব্যটি দিয়ে আমরা অনায়াসে শরীরের বিভিন্ন অসুখ দূর করে ফেলতে পারি এবং সুস্থ থাকতে। মেয়ে মানুষের রূপচর্চা নিয়েও চিন্তার শেষ নেই, তাই তাদের জন্য আজকে রূপচর্চা বিষয়ক সমাধান হিসেবে মুখে কাঁচা হলুদের উপকারিতার কথা বর্ণনা করবো।এই পোস্টে আপনাদের জানাবো হলুদের ২০টি উপকারিতা।

আপনি যদি কাঁচা হলুদের আশ্চর্যজনক উপকারিতা এবং কাঁচা হলুদ খাওয়ার নিয়ম গুলো সম্পর্কে না জেনে থাকেন এবং জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। কারণেই পোস্টের মধ্যে আপনি হলুদের ২০টি উপকারিতা পাশাপাশি আরো জানতে পারবেন কাঁচা হলুদের অপকারিতা সম্পর্কে। তাই অবশ্যই পোস্টটি অবহেলা না করে মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন এবং জেনে নিন হলুদের ২০টি উপকারিতা ও কাঁচা হলুদের অপকারিতা।

সূচিপত্রঃ হলুদের ২০টি উপকারিতা - কাঁচা হলুদের অপকারিতা

হলুদের উপকারিতা

হলুদ আমাদের রান্নার কাজে ব্যবহৃত নিত্য প্রয়োজনীয় একটি মসলা জাতীয় দ্রব্য। এই হলুদের মধ্যে যে ঔষধই কিছু গুণ রয়েছে তা আমাদের কারোরই অজানা নয়। ঔষুধি গুন থাকার কারণে হলুদ খেলে অথবা বাহ্যিকভাবে ব্যবহার করলে অনেক রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায় এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সারাতে সাহায্য করে। আজকে আমরা হলুদের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানার চেষ্টা করি। আপনার যদি হলুদের উপকারিতা সম্পর্কে জানা না থাকে তাহলে অবশ্যই আপনিও এই বিষয়টি জেনে নিতে পারেন ।

প্রসাবের ইনফেকশন দূর করেঃ প্রস্রাবের ইনফেকশন সারাতে হলুদ অত্যন্ত উপকারী। মধু মিশিয়ে যদি কাঁচা হলুদের রস কিছুদিন নিয়মিত খাওয়া যায় তাহলে এটি প্রস্রাবের ইনফেকশন এবং প্রসাবের জ্বালাপোড়া সারাতে সাহায্য করে।

আরো পড়ুনঃ ইউরিন ইনফেকশনের লক্ষণ

লিভার ভালো রাখেঃ লিভার ভালো রাখতে বা লিভার পরিষ্কার করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে হলুদ। লিভার ভালো রাখার জন্য হলুদের রসের সাথে মধু মিশিয়ে নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করুন। এবং লিভারকে হেপারটাইটিস ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

হাঁপানি রোগ ভালো করেঃ হাঁপানি রোগ সারাতে ও অবদান রাখতে পারে হলুদ । হলুদের গুঁড়া , কুশলের গুড় এবং খাঁটি সরিষার তেল ভালোভাবে মিশিয়ে খেলে দ্রুত হাঁপানি রোগের থেকে উপশম পাওয়া যায়। হলুদ শ্বাসনালী কে পরিষ্কার রাখে যার ফলে হাঁপানি বা অ্যাজমা জাতীয় সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়।

ওজন কমায়ঃ যারা স্থূলতা অথবা শরীরের অতিরিক্ত ওজন নিয়ে আশঙ্কায় আছেন তারা নিয়মিত দুই এক টুকরা হলুদ খাওয়ার চেষ্টা করুন । কারণ হলুদ শরীরের মেটাবলিজমের মাত্রা বাড়িয়ে অতিরিক্ত মেদ কমাতে সাহায্য করে।

রক্তশূন্যতা ও রক্তস্বল্পতা দূর করেঃ মেয়েদের মধ্যে রক্তশূন্যতা বা রক্তস্বল্পতা সমস্যাটি তাই দেখা যায়। হলুদের ভেতরে থাকা উপাদানগুলো রক্তস্বল্পতা ও রক্তশূন্যতা দূর করতে ভীষণ কার্যকরী। রক্তস্বল্পতা দূর করার পাশাপাশি হল লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতেও সাহায্য করে।

প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য অসাধারণ কাজ করে হলুদ। কারণ হলুদের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের উপাদান , যেই উপাদান গুলো শরীরের পুষ্টি ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলো।

ঠান্ডা লাগা জনিত সমস্যা দূর করেঃ ঠান্ডা লাগা জনিত যে কোন সমস্যা ছাড়াতে ভীষণ উপকারী হল, ঠান্ডা লাগার ফলে জ্বর সর্দি কাশি হলে হলুদের মধ্যে দুধ মিশিয়ে খেলে দ্রুত উপশম পাওয়া যায়। আর হলুদের মধ্যে এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান থাকায় বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস জনিত জ্বর গুলোর হাত থেকে রক্ষা করে । 

হযমে সহায়তা করেঃ হলুদ আমাদের পরিপাকতন্ত্রের কাজ করার ক্ষমতা বাড়ানো মাধ্যমে হযম প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটায়। তাই যাদের হজম প্রক্রিয়া দুর্বল তারা হলুদ খেতে পারেন , এতে করে আপনাদের হযমের সমস্যা দূর হবে।

এলার্জি দূর করেঃ হলুদের রস এবং দুধ একসাথে মিশিয়ে খেলে দ্রুত এলার্জির সমস্যা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ হলুদের মধ্যে এন্টি ডায়াবেটিস উপাদান থাকায় এটি শরীরের শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং যার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ কারকামিন নামক উপাদান হলুদের মধ্যে থাকায় এটি শরীরে ক্যান্সার বিরোধী ক্ষমতা গড়ে তুলতে সাহায্য করে। এবং শরীরে থাকা টিউমারের সেলগুলো নষ্ট করতে ভূমিকা পালন করে।

কাটা বা ক্ষতস্থান সারাতেঃ হলুদের মধ্যে রয়েছে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যার কারণে কোন স্থান কেটে গেলে সেখানে যদি হলুদের পেস্ট লাগানো যায় তাহলে সেই কাটা বা কত স্থানে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করতে পারে না যার ফলে এই ক্ষতস্থানগুলো দ্রুত সেরে ওঠে।

ত্বক উজ্জ্বল ও ফর্সা করতেঃ ত্বকের যেকোনো ধরনের সমস্যা দূর করে ত্বক উজ্জ্বল ও ফর্সা করতে হলুদের উপকারিতার কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। নিয়মিত কাঁচা হলুদ মুখে অথবা শরীরে মাখলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, পিত্তরস বের হতেসাহায্য করে।

ব্রণ দূর করতে সাহায্য করেঃ ব্রণের সমস্যা আমাদের অনেকেরই থাকে ,ব্রণের এই ঝামেলা থেকে মুক্তি দিতে অসাধারণ ভূমিকা পালন করতে পারে হলুদ।কাঁচা হলুদ বেটে কয়েকদিন নিয়মিত লাগালেই দূর হয় ব্রণের সমস্যা।

ভাঙ্গা হাড় জোড়া লাগাতেঃ প্রাচীনকালে ভাঙ্গা হাড় জোড়া লাগাতে মহা ঔষধ হিসেবে মানুষ কাজে লাগাতে হলুদকে। কাঁচা দুধ ও হলুদ একসাথে মিশিয়ে খেলে ভাঙ্গা হাড় দ্রুত জোড়া লাগাতে এটি সাহায্য করে। এবং হাড়ের ব্যথা বা হাড় মচকে যাওয়ার ব্যথায় হলুদ গুঁড়া বেটে ব্যথায় স্থানে প্রলেপের মতন করে লাগালে, দ্রুত ব্যথা সারাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

ঘাড়ের ক্ষয় রোধ করতেঃ সাধারণত মেয়েদের ক্ষেত্রে মেনোপজ হওয়ার পরে হাড়ের ক্ষয় অনেক বেড়ে যায়। হারে রে ক্ষয় রোধ করার জন্য কাঁচা হলুদ অত্যন্ত উপকারী কারণ কাঁচা হলুদের মধ্যে রয়েছে আর কেউ নিন নামক উপাদান যা হারে ক্ষয়রোধ করতে সাহায্য করে।

আরো পড়ুনঃ রসুনের উপকারিতা ও অপকারিতা

স্ট্রোক কমায়ঃ হিট স্ট্রোক সহ যেকোনো ধরনের স্ট্রোকের সম্ভাবনা কম করতে সাহায্য করে হলুদ। গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত দুই এক টুকরা কাঁচা হলুদ খাওয়ার অভ্যাস করেছেন তাদের ক্ষেত্রে স্ট্রোকের মাত্রা অনেকটাই কম হয়েছে।

পেটের ব্যথা কমায়ঃ যেকোনো কারণে পেটের ব্যথা কমাতে বিশেষ করে মাসিকের সময় তলপেটের ব্যথা কমাতে এন্টি ইনফ্লামেটরি গুণসম্পন্ন হওয়ায় বিশেষ সাহায্য করে হলুদ।

বাতের ব্যথা দূর করেঃ আপনারা জানেন হলুদের মধ্যে রয়েছি অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান। হলুদের ভেতরে থাকা এই এন্টি ইনফ্লামেটরি শরীরের যেকোনো ব্যথা দূর করার পাশাপাশি বিশেষ কার্যকরীভাবে বাতের ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে।

উচ্চ রক্তচাপ কমাতেঃ যারা উচ্চ রক্তচাপের রুগী আছেন তাদের রক্তচাপ কমানোর ক্ষেত্রে , নিয়মিত কাঁচা হলুদ খাওয়ার অভ্যাস করলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারবেন কারণ হলুদ উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

উপরে দেওয়া হলুদের ২০টি উপকারিতা গুলো ছাড়াও শরীরের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বা বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে হলুদ যেসব উপকার করে থাকে সেগুলো হলো-ব্রণের সমস্যা দূর করে , চোখ উঠা সারাতে সাহায্য করে , মশাবাহিত বিভিন্ন অসুখ সারাতে সাহায্য করে, 

মুখে কাঁচা হলুদের উপকারিতা

ত্বকের যত্নে হলুদের উপকারিতার কথা শোনেন নিয়ে এমন মানুষ যে পাওয়া মুশকিল। কারণ রূপচর্চা বা ত্বকের যত্নে হলুদের ব্যবহার আজ নতুন নয় বহুকাল আগে থেকেই বিভিন্নভাবে এর ব্যবহার হয়ে আসছে। মুখে কাঁচা হলুদের উপকারিতা অনেক বেশি। মুখ আমাদের অত্যন্ত সেনসিটিভ একটি জায়গা, আর এই কারণে মুখের ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয় অনেক সময়। এইসব সমস্যা দূর করতে মুখে কাঁচা হলুদের উপকারিতা পাওয়া যেতে পারে হলুদ ব্যবহারের ফলে। তাই চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক মুখে কাঁচা হলুদের উপকারিতা। মুখে কাঁচা হলুদ ব্যবহারের ফলে যে সকল উপকারিতা পাওয়া যায় সেগুলো হলো,

  • চেহারা উজ্জ্বল করে
  • ত্বক থেকে বয়সের ছাপ দূর করে
  • ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে
  • রোদে পোড়া বা যেকোনো ধরনের কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে
  • মুখের ত্বক থেকে অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দূর করতে সাহায্য করে
  • মুখের ত্বকের প্রাকৃতিক স্ক্রাব হিসেবে কাজ করে
  • ত্বকের জ্বালাপোড়া রোধ করতে সাহায্য করে
  • এলার্জির সমস্যা দূর করে

কাঁচা হলুদ মুখে দেওয়ার নিয়ম 

এতক্ষণে নিশ্চয়ই জেনে গেছেন মুখে কাঁচা হলুদের উপকারিতা সম্পর্কে। তাহলে এবার জানার পালা হলো হলুদ মুখে দেওয়ার নিয়ম জানার। কারণ রূপচর্চায় হলুদ ব্যবহার করতে হলে সর্ব প্রথমে আপনাকে জানতে হবে হলুদ মুখে দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। রূপচর্চা করতে অথবা মুখের ত্বকে হলুদ ব্যবহার করার জন্য আপনি বেশ কয়েকটি নিয়ম বা পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। হলুদ মুখে দেওয়া সেই নিয়ম বা পদ্ধতি গুলো নিচে দেওয়া হলো

চেহারা উজ্জ্বল করতেঃ চেহারা উজ্জ্বল করতে হলুদ গুঁড়ার সাথে চন্দন গুড়া লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। চেহারা বা ত্বকে উজ্জ্বলতা আনতে কাঁচা হলুদ বেটে সরাসরি মুখে বা শরীরের লাগানো যায়। এছাড়াও অলিভ অয়েল গাজরের রস এবং হলুদের গুঁড়া একসাথে মিক্স করে ত্বকে লাগালে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।

ব্রণের সমস্যা দূর করতেঃ ব্রণের সমস্যা দূর করতে মধু , দই , এবং বেসনের সাথে হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ব্রণের স্থানে বা মুখে লাগাতে পারেন। ব্রণের সমস্যা দূর করার জন্য গোড়ার মধ্যে সামান্য একটু পানি দিয়ে পেস্ট তৈরি করে সরাসরি যেই স্থানগুলোতে ব্রণ রয়েছে সেখানে লাগাতে পারে।

ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করতেঃ ত্বকে থেকে অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দূর করার জন্য বেসন , হলুদ গুঁড়া , লেবুর রস মধু একসাথে মিশিয়ে ব্যবহার করুন। রূপচর্চার কাজে হলুদ ব্যবহারের পরে ত্বকে এটি দীর্ঘদিন রেখে দেওয়া উচিত নয়। হলুদের ত্যাগ মুখে লাগিয়ে মাত্র ১০-১৫ মিনিট রাখায় যথেষ্ট। মুখের ত্বকে হলুদ ব্যবহারের পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে মুখ ধোয়ার সময় ফেসওয়াস ব্যবহার করলে ত্বকে হলুদ ব্যবহারের উপকারিতা গুলো ভালোভাবে পাওয়া যাবে। আশা করছি মুখে হলুদ দেওয়ার নিয়ম গুলো বুঝতে পেরেছেন।

নিম পাতা ও কাঁচা হলুদের উপকারিতা

নিম পাতা ও কাঁচা হলুদের উপকারিতার কথা আপনার কি জানা আছে? নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ একসাথে ম্যাজিক্যাল কিছু পরিবর্তন ঘটাতে পারে। তাই আপনার যদি নিমপাতা ও কাঁচা হলুদের উপকারিতার কথা জানা না থাকে তাহলে, এই পোষ্টের মাধ্যমে বিষয়টি এখনই জেনে নিন। নিমপাতা অত্যন্ত ঔষধি গুন সম্পন্ন এটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না ,পাশাপাশি ঔষধি গুণের কথা বলতে গেলে হলুদ কিছু কম নয়। তাই এই দুই ঔষধি গুণ সম্পন্ন উপাদান যখন একসাথে ব্যবহার করা হয় তখন এর উপকারিতার মাত্রা দ্বিগুণ হারে বেড়ে যায়। তাহলে চলুন আর দেরি না করে নিমপাতা ও কাঁচা হলুদের উপকারিতার কথাগুলো জেনে নেওয়া যাক।

আরো পড়ুনঃ নিম পাতার উপকারিতা।

রাতারাতি ব্রণের সমস্যা দূর করতে নিমপাতা ও কাঁচা হলুদের উপকারিতার কথা বর্ণনা করে শেষ করার নয়। আপনি যদি মুখের ব্রণ খুব তাড়াতাড়ি দূর করতে চান তাহলে অবশ্যই নিমপাতা বাটা ও কাঁচা হলুদ বাটা একসাথে মিশিয়ে ব্রনের উপরে ব্যবহার করুন। দেখবেন অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে আপনার ব্রণ সেরে গেছে। এবার আসা যাক ওজন কমানোর কথাই , যারা ইতিমধ্যে অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছেন বা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য নিম ও কাঁচা হলুদ খাওয়ার মাধ্যমে আশ্চর্যজনকভাবে কমিয়ে ফেলতে পারেন শরীরের অতিরিক্ত মেদ। পরিপাকতন্ত্রের উন্নতি ঘটাতে বা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে অল্পমাত্রায় যদি নিম ও কাঁচা হলুদ খাওয়া যায় তাহলে বিপাকক্রিয়ার জটিলতা থেকে মুক্ত থাকা যায়। এছাড়াও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং চেহারায় বয়সের ছাপ দূর করতে অত্যন্ত ভালো কাজ করে নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ।

দুধ হলুদের উপকারিতা

দুধ হলুদের উপকারিতা ও কিন্তু কম নয়। মানুষের জীবনে চলার পথে প্রতিদিনই কত না অসুখ-বিসুখ বা শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। দুধ হলুদের উপকারিতার মধ্যে দিয়ে আমরা আমাদের শারীরিক জটিলতা বা সমস্যার বেশ অনেকটাই সমাধান করে নিতে পারে। তাই চলুন আজকে দুধ হলুদের উপকারিতা সম্পর্কে কিছু কথা জেনে নেওয়া যাক। হলুদ খাওয়ার উপকারিতা হল।

  • রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে
  • রক্তনালী পরিষ্কার রাখে
  • হার্ট ভালো রাখুন
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে
  • সর্দি কাশি ও গলা ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
  • ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
  • মাসিকের ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে
  • বাসের ব্যথা ছাড়াই
  • অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে
  • মস্তিষ্ক ভালো রাখে এবং স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে
  • অনিদ্রা দূর করে

কাঁচা হলুদের অপকারিতা

এর আগে আমরা বিভিন্ন উপকারিতা মধ্যে থেকে হলুদের ২০টি উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি,তবে হলুদের শুধু উপকারিতা জানলেই হবেনা পাশাপাশি জানতে হবে এর অপুকারিতা গুলোও। কাঁচা হলুদ অনেক উপকারী একটি উপাদান হলেও এর কিছু অপকারিতা রয়েছে। হলুদের উপকারিতা জানার পাশাপাশি আমাদের কাঁচা হলুদের অপকারিতা গুলো সম্পর্কেও জেনে নিতে হবে।অনেকেই হয়ত কাঁচা হলুদের অপকারিতা সম্পর্কে জানেন না। আপনার যদি কাঁচা হলুদের অপকারিতা গুলো জানা না থাকে তাহলে অবশ্যই এই বিষয়টি যত দ্রুত সম্ভব জেনে নিন। যে সকল ক্ষেত্রে  কাঁচা হলুদের অপকারিতা রয়েছে সেগুলো হল,

কিডনির সমস্যাঃ হলুদ যেহেতু রস বাড়াতে সাহায্য করে তাই অতিরিক্ত মাত্রায় হলুদ খেলে , পিত্তরসের মাত্রা বেড়ে গিয়ে কিডনির বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

ডায়রিয়াঃ   কাঁচা হলুদ খেলে এটি হজম প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে এবং যার ফলে ডায়রিয়া বা বমি বমি ভাব হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।

আয়রনের ঘাটতি থাকলেঃ শরীরে যদি আইরনের ঘাটতি থাকে তবে কখনোই অতিরিক্ত কাঁচা হলুদ খাওয়া উচিত নয়। কারণ এতে করে সমস্যা আরও জটিলতার দিকে এগোতে পারে।

এলার্জি সমস্যাঃ অল্প পরিমাণে হলুদ খেলে এটি এলার্জির সমস্যা দূর করতে পারে কিন্তু যদি মাত্রাতিরিক্ত  কাঁচা হলুদ খাওয়া হয় তাহলে ঘটনা উল্টো করতে পারে অর্থাৎ এলার্জি সমস্যা কমার পরিবর্তে আরো বেড়ে যেতে পারে।

আরো পড়ুনঃ স্কিন এলার্জি দূর করার উপায়

মন্তব্য, এই পোষ্টের মাধ্যমে হলুদের ২০টি উপকারিতা ও কাঁচা হলুদের অপকারিতা জানতে পেরে আশা করছি আপনি অনেক উপকৃত হয়েছেন। সুস্থ থাকতে আপনার হাতের কাছে থাকা সহজলভ্য এই উপাদানটি সঠিকভাবে কাজে লাগান। এবং রূপচর্চার কাজে বাজারের কেমিক্যাল যুক্ত প্রোডাক্টগুলো ইউজ না করে হলুদ দিয়ে রূপচর্চা করার চেষ্টা করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url