গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি হয়

মেয়েদের গর্ভাবস্থার সময়টি অত্যন্ত সেনসিটিভ , এই সময় খাওয়া দাওয়া , চলাফেরা এমনকি ঘুমানোর সময়ও অনেক কেয়ারফুল থাকতে হয়। গর্ভাবস্থায়ী সচেতন থাকার জন্য প্রত্যেক গর্ভবতী নারী বিশেষ করে যারা প্রথমবার মা হতে চলেছে তাদেরকে গর্ভাবস্থার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে হবে। আজকের এই পোস্টে বিস্তারিত ভাবে আপনাদের জানবো গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি হয়  এ বিষয়টি ছাড়াও গর্ভাবস্থায় সচেতন হওয়ার মতো আরও বেশ কয়েকটি বিষয়।

যারা প্রথমবার মা হতে যাচ্ছেন এবং প্রথমবার মা হওয়ার কথা চিন্তাভাবনা করছেন তাদের হয়তো গর্ভাবস্থার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো জানা নাও থাকতে পারে। তাই মা ও শিশু দুজনেরই সুস্বাস্থ্যের জন্য এবং মৃত্যুর ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আজকের এই পোস্টে আলোচনা করব গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি হয় এবং আরো কয়েকটি সেনসিটি বিষয় সম্পর্কে ,যেমন -গর্ভাবস্থায় পানি কম খেলে কি হয় ,গর্ভাবস্থায় খেজুর খেলে কি হয় ,গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয় ,গর্ভাবস্থায় টক খেলে কি হয়।গর্ভাবস্থার অত্যন্ত সেনসিটিভ এই বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে জানার জন্য অবশ্যই মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি হয় - গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি হয়

গর্ভাবস্থা মেয়েদের খুবি সেন্সেটিভ একটি বিষয়।গর্ভাবস্থার প্রত্যেকটি মুহুর্ত এমন কি ঘুমানোর সময়ও খুব সচেতন থাকতে হয়।আপনাদের মধ্যে অনেকেই বিশেষ করে যারা প্রথমবার মা হতে চলেছেন তারা হয়ত জানেন না গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি হয়।তাই আজ আপনাদের সাথে আলোচনা করবো গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি হয় এই বিষয়টি। আপনারা যারা জানেন না গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি হয় বিষয়টি এখুনি ভালোভাবে জেনে নিন।

গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমানোর চেয়ে বাম পাশে ঘুমানো বেশি ভালো , এ কথা জানাচ্ছেন  চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞরা কারণ এতে করে মা এবং শিশু দুজনেরই স্বাস্থ্য ভালো থাকে।গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে অনেক সময় শিশুর মৃত্যু ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। আমাদের শরীর থেকে হৃদপিন্ডে রক্ত এবং অক্সিজেন সরবরাহের জন্য ইনফেরিওর ভেনেক্যাভা নামক যে শিরাটি রয়েছে তা থাকে শরীরের ডানপাশে, তা গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমানো হয় এই শিড়ার উপরে চাপ করতে পারে যার ফলে শরীরে রক্ত এবং অক্সিজেন সরবরাহের ক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটতে পারে এতে ক্ষতি হতে পারে মা ও শিশু দুজনের।ইনফেরিওর ভেনেক্যাভা শিরায় চাপ পড়ার কারণ নেই এই শিরাটি প্রশস্ত হতে পারে না যার ফলে হার্টবিট বেড়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে ।গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে ইনফেরিওর ভেনেক্যাভা শিরার ওপরে চাপ পড়ার প্রধান কারণ হলো , এই সময় প্রাকৃতিকভাবেই গর্ভের সন্তান বড় হওয়ার সাথে সাথে পেটের আকৃতি ও বড় হওয়া পাশাপাশি শারীরিক ওজন বৃদ্ধি পাওয়া।

গর্ভাবস্থায় ডান পাশে না ঘুমানোর আরেকটি কারণ হলো , আমাদের শরীরের সবচেয়ে বড় অর্গান গুলোর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্গান হলো লিভার যা রয়েছে শরীরের ডান পাশে। আর যেহেতু গর্ভাবস্থায় শারীরিক ওজন ও পেটের আকৃতি স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেড়ে যায় তাই ডান পাশে ঘুমালে লিভার নামক এই গুরুত্বপূর্ণ অর্গানটির ওপর চাপ পড়ে, আর লিভারের উপরে অতিরিক্ত চাপ পড়ার কারনে লিভার ভালোভাবে কাজ করতে পারেনা যার ফলে সৃষ্টি হতে পারে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা আর এই কারণেই গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমানোর পরিবর্তে বাম পাশে ঘুমানো উচিত। মনে রাখবেন গর্ভাবস্থায় কোনভাবেই চিৎ হয়ে অথবা উপুড় হয়ে ঘুমানো বা শোয়া মোটেই উচিত নয় কারণ এতে গর্ভে শিশুর মৃত্যুর হার বেড়ে যায় বহুগুণে ।আশা করছি , গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি হয় তা বুঝতে পেরেছেন

গর্ভাবস্থায় টক খেলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় প্রত্যরে নারীকেই দেখা যায় কোন না কোন বিশেষ খাবারের ওপর আকৃষ্ট হতে , অধিকাংশ ক্ষেত্রে আচার বা টক জাতীয় খাবার খাওয়ার প্রতি গর্ভাবস্থায় মেয়েদের আকর্ষণ বেশি দেখা যায়।কিন্তু আপনারা কি জানেন গর্ভাবস্থায় টক খেলে কি হয় অথবা গর্ভাবস্থায় টক খেতে কেন ইচ্ছা করে কেন।যারা জানেন না তাদের আজ জানাবো গর্ভাবস্থায় টক খেলে কি হয়।মূলত শরীরে সোদিয়ামের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার করণে গর্ভাবস্থায় টক খেতে ইচ্ছা হয় ,আর বুঝতেই পারছেন গর্ভাবস্থায় টক খেলে শরীরের সোডিয়ামের চাহিদা পূরণ হয়।

গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় অনেকেরই ঝাল খাবারের প্রতি আগ্রহ জন্মায় ,কিন্তু ঝাল খাবার খাওয়ার আগে আপনাদের জেনে নিতে হবে গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয় এই বিষয়টি।তাই চলুন জেনে নেয়া যাক গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয়। গর্ভাবস্থায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম থাকার কারণে খুব সহজেই বিভিন্ন অসুখ শরীরে হানা দিতে পারে , আর এই পরিস্থিতিতে যদি অতিরিক্ত ঝাল খাবার খাওয়া হয় তাহলে হতে পারে পেটে এসিডিটির সমস্যা এবং এসিডিটি থেকে পাতলা পায়খানা বা আমাশার মতন সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে তাই সবসময় গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলাই ভালো। তবে অল্প মাত্রায় কাঁচা মরিচ খেলে তা শরীরের জন্য উপকার।

 আরো পড়ুনঃ সিজারের পর ইনফেকশনের লক্ষণ

মন্তব্য, এই পোস্টের আলোচনার মাধ্যমে গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি হয় এবং গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয় এই বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে জানতে পেরে গর্ভবতী মায়েরা নিশ্চয়ই অনেক উপকৃত হয়েছেন বলে আশা করছি। গর্ভাবস্থায় মা ও শিশু দুজনই নিরাপদ থাকার জন্য অবশ্যই পর্যাপ্ত পানি পান করুন । পানি শুধু গর্ভাবস্থায় নয় স্বাভাবিক অবস্থাও আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরি। তবে গর্ভাবস্থায় শুধু যে পানি পান করতে হবে এমন কোন বিষয় নিয়ে নেই , শরীরে পানির ঘাটতি পূরণের জন্য অথবা শরীরকে দূর হাইড্রেট রাখার জন্য পানির পরিবর্তে তরল জাতীয় খাবার , জুস , স্যুপ বেশি বেশি খেতে পারেন। তবে মনে রাখবেন এই পরিস্থিতিতে কোল্ড্রিংস জাতীয় খাবার গুলো এড়িয়ে চলা উচিত ,কেন না এতে করে শরীরের রক্তশূন্যতা বেড়ে যায়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url