বিলিরুবিনের পরিমাণ কমানোর ১০টি উপায় - জন্ডিস হলে কি খেতে হয়

লিভারের রোগীদের কাছে বিলিরুবিন নামটি নতুন কিছু নয়। সঠিক মাত্রায় বিলিরুবিন আমাদের শরীরের বিশেষ কিছু কাজ করে থাকলেও এর মাত্রা যখন অতিরিক্ত হয়ে যায় তখন বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। তাই আপনাদের সাথে আজ বিলিরুবিন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব 

বিলিরুবিন কি

আপনাদের মধ্যে যারা জন্ডিস এবং লিভারের রোগে আক্রান্ত তারা অনেকে হয়তো বিলিরুবিন নামটি শুনেছেন। কিন্তু আপনারা কি জানেন এই বিলিরুবিন কি ? যদি না জেনে থাকেন তাহলে ,বিলিরুবিন কি  তা জেনে নিন। বিলিরুবিন হলুদ বর্ণের এক ধরনের তরল পদার্থ , এই তরল পদার্থ দিয়ে উৎপাদিত হয়ে থাকে RBC( Red Blood Cell) অর্থাৎ রোহিত রক্ত কণিকা ভাঙ্গনের মাধ্যমে । আমাদের রক্তের থাকা লোহিত রক্তকণিকা ১২০ দিনের চক্র পূরণ করলে , সেই রক্তকণিকাটি ভেঙ্গে এক ধরনের হলুদ বর্ণের তরল পদার্থের পরিণত হয়  , আর এটিই হলো বিলিরুবিন।

বিলিরুবিন এর কাজ কি

শরীরে বিলিরুবিন এর কাজ কি এই সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান।তাই আজকে আপনাদেরকে বলবো বিলিরুবিন এর কাজ কি এ বিষয়ে।যদিও রক্তে বিলিরুবিন এর মাত্রা বেড়ে গেলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি হয় , তবে রক্তে সঠিক মাত্রায় বিলিরুবিন থাকলে তা বিশেষ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজে সাহায্য করে থাকে যেমন-

  • খাদ্য হজমে সহায়তা করা
  • মল বা পায়খানা তৈরিতে সাহায্য করা
  • রক্তে থাকা অম্ল এবং ক্ষারের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করা
  • খাদ্যরসকে রক্তরসের সাথে দ্রবীভূত করে দেহের বিভিন্ন কলা ও অঙ্গে সরবরাহ করা

বিলিরুবিন কেন বাড়ে

আপনাদের হয়তো জানা আছে রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে জন্ডিসহ আরও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে থাকে , কিন্তু প্রশ্ন হল রক্তে বিলিরুবিন বাড়ে কেন? আপনাদের অনেকেরই হয়তো জানা নেই বিলিরুবিন কেন বাড়ে। তাই চলুন বিলিরুবিন কেন বাড়ে এই বিষয়টি জেনে নেওয়া যাক। আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অর্গান হলো লিভার আর এই লিভারের অন্যতম প্রধান কাজ হল শরীরের দূষিত পদার্থ গুলোকে বর্জ্য আকারে শরীর থেকে বের করে দেওয়া। কোন কারনে লিভার যখন এই কাজটি সঠিকভাবে করতে ব্যর্থ হয় তখনই রক্তের বিলিরুবিনের মাত্রা বাড়তে থাকে। 

আরো পড়ুনঃ বিলিরুবিনের মাত্রা কত হলে জন্ডিস হয়

রক্তে বিলিরুবিন বেড়ে যাওয়ার পেছনে একটি নয় একাধিক কারণ থাকতে পারে যেমন-স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি মাত্রায় লোহিত রক্তকণিকা ভাঙতে থাকা , লিভার থেকে পিত্ত রস ভালোভাবে বের না হওয়া, পিত্ত থলিতে পাথর অথবা পিত্তনালীতে সমস্যা থাকার কারণে পিত্তরস ক্ষুদ্রান্তে ঠিকমতন নিঃসৃত না হওয়া এবং প্যানক্রিয়াসে ক্যান্সারের কারণে বিলোরিদিন বেড়ে যেতে পারে। এছাড়াও শরীরের মাত্রা বাড়তে পারে আরো বেশ কিছু রোগের কারণে যেমন - হেমলাইটিক অ্যানিমিয়া , অটোইমিউন ডিজিজ , লিভার সিরোসিস , কনজেস্টিভ হার্ড ফেইলিয়র।

বিলিরুবিনের পরিমাণ কমানোর উপায়

আপনারা নিশ্চয় জেনে থাকবেন যে শরীরে বিলিরুবিনের পরিমাণ বেড়ে গেলে জন্ডিস দেখা দেয় এবং শরীরের বিলিরুবিন নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে বেশি হয়ে গেলে সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। তাই আপনাদের সকলের জেনে রাখা উচিত বিলিরুবিনের পরিমাণ কমানোর উপায় সম্পর্কে। অনেক সময় শরীরে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে সাধারণ কিছু নিয়ম কানুন ফলো করার মাধ্যমে কয়েক দিনের মধ্যে একটি আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে। বিলিরুবিনের মাত্রা কমানোর জন্য যে কাজগুলো করতে হবে সেগুলো হল

সহযপাচ্য খাবার খাওয়াঃ শরীরে রুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে এই পরিস্থিতিতে সহজপাচ্য অর্থাৎ সহজে হজম হয় এই জাতীয় খাবার গুলো খাওয়া উচিত নয়। এই সময়ে রিচ ফুড গুলো বাদ দিয়ে সহজে হজম হয় এইরকম ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত যার মধ্যে আপনি রাখতে পারেন -পেঁপে , লাউ , কুমড়া, পটল এই জাতীয় সবজিগুলো।

চর্বিযুক্ত খাবার না খাওয়াঃ শরীরে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে হজমের সমস্যা দেখা দেয় তাই এই অবস্থাতে কোনভাবেই চর্বিযুক্ত খাবার যেমন মাখন , ঘি ,তেল এই জাতীয় খাবারগুলো গ্রহণ করা যাবে না। বিলিরুবিন বেড়ে গেলে বাইরের অস্বাস্থ্যকর ভাজাপোড়া এবং ফাস্টফুড ও ও মসলাযুক্ত খাবার  গুলোও পরিহার করতে হবে।

অ্যালকোহল পান না করাঃ অ্যালকোহল পান করা আমাদের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর বিশেষ করে লিভারের মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে এই অ্যালকোহল। তাই শরীরে বিলিরুবিনের মাত্রা দ্রুত স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই অ্যালকোহল পান করা পরিহার করতে হবে।

আখের রস খাওয়াঃ আপনারা প্রায় সবাই জানেন রক্তে বিবিরুবিনের মাত্রা কমাতে আখের রস বিশেষ কার্যকরী। বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে এই মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য নিয়মিত আপনি ১/২ গ্লাস আখের রস পান করতে পারেন। তবে আখের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে এটি যেন কোনভাবেই বাইরের না হয়। কারণ বাইরে রাস্তার পাশে বিক্রি করা আখের রসগুলোর ভেতরে অনেক ধুলো ময়লা এবং রোগ জীবাণু হতে পারে। তাই বাইরে থেকে কেনা আখের রস পরিহার করে আখ কিনে এনে খেতে পারেন।

কফি বা গ্রিন টি পান করাঃ একটি গবেষণায় দেখা গেছে কেউ যদি প্রতিদিন নিয়মিতভাবে দুই কাপ কফি বা গ্রিন টি পান করে তাহলে তাদের রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা কম থাকে এবং লিভার সুস্থ থাকে। তাই রক্ত বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে দিনে দুই কাপ কফি পান করতে পারেন তবে মনে রাখবেন অতিরিক্ত কফি পান করাও কিন্তু শরীরের জন্য ক্ষতিকর তাই অবশ্যই দিনে কয় কাপ কফি খাওয়া যাবে সেটি জেনে তারপরে কফি পান করবেন।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম গ্রহনঃ অল্প সময়ের মধ্যে বিলিরুবিনের মাত্রা কে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সহজপাচ্য পুষ্টিকর খাবার গুলো গ্রহণের পাশাপাশি পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। শারীরিক বিশেষ কোন জটিলতা না থাকলে পর্যাপ্ত রেস্ট করার মাধ্যমে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বিলিরুবিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। তাই শরীরে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম এর কাজ গুলো না করে পর্যাপ্ত বিশ্রাম গ্রহণ করুন।

পর্যাপ্ত পানি পান করাঃ পর্যাপ্ত পানি পান আমাদের শরীরে বেড়ে যাওয়া বিলিরুবিনের মাত্রা কমাতেও সাহায্য করতে পারে। আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে পানির অবদান অনেক বেশি। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করলে এই পানি আমাদের শরীর থেকে বিভিন্ন টক্সিক উপাদান গুলো বের করে দেয় যার কারণে আমাদের শরীর সুস্থ থাকে। তাই শরীরে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি গ্রহণ করা উচিত কারণ পানি বিলিরুবিনের মাত্রা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাহাটি করাঃ যদিও বিলুরুবিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য রেস্ট করার কথা বলা হয় তবে শরীরের রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখার জন্য আপনি নিয়মিত হালকা ব্যায়াম বা স্বাভাবিক গতিতে কিছুক্ষণ হাঁটার অভ্যাসটি ধরে রাখতে পারেন। হালকা ব্যায়াম এবং হাঁটাহাঁটি করলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং বিলিরুবিনের মাত্রা কমাতেও সাহায্য করে।

রক্তশূন্যতা দূর করুনঃ অনেক সময় রক্তশূন্যতার কারনে শরীরে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে যায়। আপনার যদি শরীরে বিলিরুবেনের মাত্রা বাড়ার পেছনে রক্তশূন্যতা দায়ী হয়ে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে ডাক্তারি পরামর্শ মোতাবেক আয়রনযুক্ত খাবার এবং প্রয়োজনীয় আয়রন ট্যাবলেট অথবা ইনজেকশন গ্রহণের মাধ্যমে যত দ্রুত সম্ভব রক্তশূন্যতা দূর করার চেষ্টা করুন।

আরো পড়ুনঃ রক্তশূন্যতা দূর করার উপায়

পিত্তথলি বা পিত্তনালীর সমস্যা দূর করা ঃ অনেক সময় পিত্তথলিতে বা পিত্তনালীতে পাথর অথবা টিউমার এই জাতীয় সমস্যা থাকলে লিভার থেকে পিত্তরস ভালোভাবে বের হতে পারে না যার ফলে রক্তে বিবিরুবিনের মাত্রা বেড়ে যায়। শরীরে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার পেছনে যদি পিত্তথলি বা  পিত্তনালীর কোন সমস্যা থাকে , তাহলে ডাক্তারি পরামর্শ মোতাবেক সেগুলোর ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া উচিত। পিত্তথলি বা পিত্তনালির সমস্যা গুলো আপনি যত তাড়াতাড়ি দূর করতে পারবেন আপনার রক্তের বিলিরুবিনের মাত্রা তত তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে।

জন্ডিস হলে কি খেতে হয়

আপনাদের মধ্যে অনেকেরই জন্ডিস রোগীদের খাবার সম্পর্কে ভুল ধারণা রয়েছে। তাই আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করব জন্ডিস হলে কি খেতে হয় এই বিষয়ে।জন্ডিস হলে কি খেতে হয় এই বিষয়ে সঠিক জ্ঞান না থাকার কারণে জন্ডিসের রোগীদেরকে আমরা বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে দেই না যার ফলে দেখা যায় রোগী শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, আর এই কারণে অনেক সময় জন্ডিস রোগীদের রোগ থেকে সরে উঠতেও অনেক সময় লাগে। তাই জন্ডিস রোগীদের খাবার তালিকা প্রস্তুতের সময় অবশ্যই আপনাদের জানতে হবে জন্ডিস হলে কি খেতে হয় এই বিষয়। তাহলে চলুন আর দেরি না করে জন্ডিস হলে কি খেতে হয় এ বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

আরো পড়ুনঃ পিত্তথলি পাথরের লক্ষণ

জন্ডিস আক্রান্ত রোগীদের যদি হজমের খুব একটা সমস্যা না থাকে তাহলে প্রোটিন জাতীয় খাবার যেমন - ডাল , মাছ , মাংস জাতীয় খাবার গুলো খেতে দিতে হবে এতে রোগীর শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে না। এছাড়াও জন্ডিস রোগীদেরকে সবজি হিসেবে মিষ্টি আলু , ফুলকপি , পালং শাক , ব্রকলি , টমেটো , মিষ্টি কুমড়া , মুলা , গাজর , লাউ , পেঁপে , পটল এককথায় বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং এবং পুষ্টি সমৃদ্ধ শাকসবজি খেতে দিতে হবে। জন্ডিসের রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জাতীয় খাবার বা ফলগুলো অত্যন্ত জরুরি , এ জাতীয় রোগীদের খাদ্য তালিকা রাখতে পারেন বাতাবি লেবু , বিভিন্ন প্রকার বেরি জাতীয় ফল , আনারস , তরমুজ , পাকা পেঁপে , কমলা , কলা, জলপাই , আঙ্গুল , এভোকাডো ইত্যাদি জাতীয় ফলগুলো। এই খাবারগুলোর পাশাপাশি জন্ডিস রোগীদেরকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে ।আশা করি জন্ডিস হলে কি খেতে হয় বুঝতে পেরেছেন।

জন্ডিস হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবে না

আপনাদের জন্ডিস হলে কি খেতে হয় এই বিষয়ে ধারণা দিয়েছে এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক জন্ডিস হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবে না এই বিষয়ে।জন্ডিস হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবে না অনেকেই এই বিষয়টি সঠিকভাবে জানেন না তাই চলুন বিষয়টি জেনে নেওয়া যাক। জন্ডিস আক্রান্ত রোগীদের অতিরিক্ত মিষ্টি , চিনির তৈরি খাবার , লবণ , রেড মিট জাতীয় মাংস , তেল চর্বিযুক্ত খাবার , ফাস্টফুড , ভাজাপোড়া , মসলাযুক্ত খাবার , অ্যালকোহল , ফুল ক্রিম মিল্ক , পনির ইত্যাদি জাতীয় খাবার গুলো সম্পূর্ণরূপে পরিহার করতে হবে।

মন্তব্য, পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন শরীরে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়, এই কথাটি চিন্তা করেই আপনাদেরকে বিলিরুবিনের পরিমাণ কমানোর ১০টি উপায় জানানো হয়েছে। শরীরে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে অবশ্যই এ পরামর্শ গুলো মেনে চলুন , তবে এই নিয়ম কানুন গুলো ঠিক মতন ফলো করার পরেও যদি আপনার শরীরে বিলিরুবিনের মাত্রা  ২০-২৫ দিনের মধ্যে স্বাভাবিক পর্যায়ে না চলে আসে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারি পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url