কাঠ বাদাম এর ৩২টি অসাধারণ উপকারিতা

অসাধারণ গুন সম্পন্ন এক ধরনের বীজ হলো কাঠবাদাম। এই কাঠবাদামের ভেতরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন এবং এই গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান ও ভিটামিন গুলো আমাদের শরীফ সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে , ত্বক এবং চুলের যত্নে বিশেষ অবদান রাখতে উপযোগী। কাঠ বাদামের উপকারিতা আমাদের শরীরের উপরে এতই বেশি যে , এই বীজকে যদি সুপার ফুড বলা হয় তাহলেও ভুল কিছু বলা হবে না।
কাঠ বাদাম কে , ছোট বড় প্রায় সবাই আমরা চিনি । কিন্তু এই কাঠবাদামের উপকারিতা সম্পর্কে হয়তো আমরা বড়রাই জানিনা। আমাদের শরীর সুস্থ রাখার প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই কাঠবাদাম রাখতে পারে অবদান আর আজকে এই সম্পূর্ণ পোস্ট জুড়ে থাকছে কাঠ বাদামের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা।

কাঠ বাদাম এর উপকারিতা

বিভিন্ন খাবারে এবং রেসিপিকে সুস্বাদু করে তোলায় এর জুড়ি নেই , তবে শুধু রান্না কে সুস্বাদু নয় কাঠবাদামের রয়েছে বিশেষ কিছু উপকারিতা। কাঠবাদামে রয়েছে মাইক্রো নিউট্রিয়েন্টস যা আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। নিয়মিত কাঠবাদাম খেলে যেসব উপকারিতা পাওয়া যায় তার একটি তালিকা সংক্ষেপে নীচে আপনাদের সামনে প্রকাশ করা হলো। কাঠবাদাম -

  1. শরীরের পুষ্টি ঘাটতি পূরণ করেঃ কাঠবাদামের ভেতর থেকে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান গুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়। কাঠবাদামে যেসব পুষ্টি উপাদান রয়েছে তার মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হলো - ক্যালসিয়াম , পটাশিয়াম , ম্যাগনেসিয়াম , জিংক , আইরন , ফাইবার , ফসফরাস, সেলেনিয়াম , কপার , থায়ামিন , ফোলেট , ভিটামিন ই , ভিটামিন বি , রিবোক্লাবিন, ভিটামিন ডি , প্রোটিন , গুড ফ্যাট ইত্যাদি। আর এই পুষ্টিকর উপাদান গুলো থাকার কারণে কাঠ বাদাম খেলে শরীরে পুষ্টি ঘাটতি হয় না। যেহেতু কাঠ বাদামে  ভেতরে নানান ধরনের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান থাকে তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কাঠবাদাম রাখলে খুব সহজেই শরীরের পুষ্টি ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হয়।
  2. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলেঃ আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তখনই কমে যায় যখন নাকি শারীরিক চাহিদা অনুযায়ী শরীর পুষ্টি পায় না , যেহেতু কাঠবাদাম খেলে আমাদের শারীরিক চাহিদা অনুযায়ী পুষ্টি উপাদানের একটি বড় অংশ পূরণ করা সম্ভব হয় যার কারণে শরীরে পুষ্টি ঘাটতি থাকে না , এজন্য কাঠ বাদাম খেলে এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতেও সাহায্য করে। এছাড়াও কাঠবাদামের ভেতরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় কাঠবাদাম খেলে , শরীরের অভ্যন্তরে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা তৈরি হয়।
  3. শক্তি বৃদ্ধি করেঃ শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পুষ্টি এবং প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া যায় বলে কাঠবাদাম আমাদের শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। কাঠ বাদাম খেলে যেহেতু শরীর পর্যাপ্ত শক্তি পায় তাই যেকোনো ধরনের কাজের কর্মক্ষমতা বেড়ে যায় এই বাদাম খেলে।
  4. ব্রেন ডেভলপ করেঃ কাঠবাদামের উপকারিতা গুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো -এই বাদাম আমাদের ব্রেন ডেভেলপমেন্টের কাজে সাহায্য করে থাকে। অর্থাৎ নিয়মিত কাঠবাদাম খেলে এটি আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে এবং মেমোরি ধরে রাখতে সাহায্য করে। আর যেহেতু কাঠবাদাম ব্রেন ডেভেলপমেন্টে সাহায্য করে তাই বিশেষজ্ঞরা ছাত্র-ছাত্রীদেরকে নিয়মিত নির্দিষ্ট পরিমাণে কাঠবাদাম খাদ্য তালিকায় রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
  5. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ আপনার আগে জেনেছেন যে , কাঠবাদামের ভেতরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে আর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে হলে অবশ্যই খাদ্য তালিকায় ফাইবার যুক্ত খাবার থাকা জরুরী। প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার কারণে কাঠবাদাম খেলে এটি আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে।
  6. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ কাঠবাদামের পুষ্টিগুণ গুলোর মধ্যে ম্যাগনেসিয়ামের কথা উল্লেখ রয়েছে , আর ম্যাগনেসিয়াম হল রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য জরুরি একটি উপাদান। তাই যাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে না তারা আপনাদের খাদ্য তালিকায় নির্দিষ্ট পরিমাণ কাঠবাদাম যুক্ত করুন , কারণ কাঠ বাদামের ভেতরে থাকা ম্যাগনেসিয়াম নামক পুষ্টি উপাদানটি আপনাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষভাবে সহায়তা করবে।
  7. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ কাঠবাদাম শুধু রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেই নয় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও সাহায্য করে। রক্তের খারাপ কোলেস্ট্রলের মাত্রা কমানোর মাধ্যমে রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে কাঠবাদাম। এছাড়াও কাঠ বাদামে থাকা ম্যাগনেসিয়াম ইনসুলিন এর কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে যার কারণে কাঠ বাদাম খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
  8. ডাইজেস্টিভ সিস্টেম উন্নত করেঃ আমাদের শরীরের অভ্যন্তরে এমন কিছু এনজাইম রয়েছে যেগুলো প্রভাবে ডাইজেস্টিভ সিস্টেম উন্নত হয় আর এই এনজাইমগুলোকে প্রভাবিত করতে কার্যকরীভাবে অবদান রাখে কাঠ বাদাম এর ভেতরে থাকা উপাদানগুলো। আর এই কারণে কাঠ বাদাম খেলে আমাদের ডাইজেস্টিভ সিস্টেম উন্নত হয়।
  9. ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ কাঠ বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার , আর ফাইবার আমাদের শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে। কারণ ফাইবার জাতীয় খাবারগুলো খেলে একদিকে যেমন ডাইজেস্টিভ সিস্টেম ভালো থাকে অপরদিকে পেট অনেকক্ষণ ভরে থাকে। আর যেহেতু অনেকক্ষণ পেট ভরে থাকে তাই বেশি খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায় এবং অল্প খাবার খাওয়ার কারণে আমাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন খুব সহজেই ঝরানো সম্ভব হয়। পর্যালোচনায় দেখা যায় ওজন কমানোর জন্য যখন ডায়েটিশিয়ানরা আমাদের ডায়েট চার্ট দেয় তখন সেই চার্টের ভেতরে ফাইবারযুক্ত খাবার গুলো বেশি পরিমাণে যুক্ত করতে -আর ফাইবার যুক্ত খাবার গুলোর মধ্যে কাঠ বাদাম অন্যতম।
  10. কোষ বৃদ্ধিতে সহায়তা করেঃ কাঠবাদাম আমাদের শরীরের কোষ বৃদ্ধিতে সহায়তা করতেও অবদান রাখে। কাঠ বাদামে থাকা ভিটামিন ই এবং ভিটামিন ডি ,যা আমাদের শরীরের থাকা কোষগুলোর কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে এবং দ্রুত ক্ষত সারাতে ভূমিকা পালন করে থাকে।
  11. দাঁত ও হাড় ভালো রাখেঃ ভিটামিন ডি , ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস থাকায় আমাদের হাড় গঠন এবং দাঁত মজবুত করার ক্ষেত্রেও বিশেষ সহায়তা করতে পারে কাঠবাদাম। আমরা সকলেই জানি যে আমাদের দাঁত এবং হাড় মজবুত করতে ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম কতটা জরুরী। কাঠ বাদামের ভেতরে ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়ার পাশাপাশি দাঁত ও হাড় গঠনে সহায়তা করতে পারে এমন আরো উপাদান যেমন -ফসফরাস , পটাশিয়াম , জিংক , কপার ইত্যাদি উপাদান গুলো পাওয়া যায় , তাই নিয়মিতভাবে কাঠবাদাম খাওয়ার মাধ্যমে খুব সহজেই আমরা আমাদের দাঁতও হাড় মজবুত রাখতে পারি।
  12. অস্টিওপোরোসিস রোগের ঝুঁকি কমায়ঃ প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি থাকার কারণে আমাদের শরীরের হাড় মজবুত করার পাশাপাশি কাঠবাদাম অস্টিওপোরোসিস নামক এক ধরনের হাড়ের রোগ এর ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে। অস্টিওপোরোসিস রোগটি সাধারণত হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়ার কারণে হয়ে থাকে। কাঠ বাদাম খেলে এর মধ্যে থাকা ফসফরাস হাড়ে ক্যালসিয়াম শোষণের মাত্রা ঠিক রাখে যার কারণে হাড়ের ঘনত্ব ঠিক থাকে এবং অস্ট্রিওপরিসিস রোগের সম্ভাবনা কম থাকে।
  13. কোলেস্টেরলের মাত্রা কম করেঃ স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ওজন কমানোর পাশাপাশি কাঠবাদাম আমাদের শরীর থেকে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কম করতে এবং ভালো কোলেস্ট্রল বাড়াতে সাহায্য করে।
  14. হার্ট ভালো রাখেঃ কাঠবাদামে ট্রান্স ফ্যাট থাকে না এবং কাঠবাদাম খেলে এর থেকে ওমেগা-৬, ফ্যাটি অ্যাসিড এবং প্রচুর পরিমাণে ম্যানুসেচুয়েটেড ফ্যাট পাওয়া যায় আর এই উপাদান গুলো আমাদের হার্ড ভালো রাখতে বিশেষভাবে কার্যকরী। শুধু তাই নয় কাঠবাদাম যেহেতু শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কম করতে সাহায্য করে তাই শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কম থাকায় হার্ট ভালো রাখে এবং হার্ট ব্লক, হার্ট অ্যাটাক সহ হৃদরোগ সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর সম্ভাবনা খুবই কম থাকে।
  15. স্ট্রোক এর সম্ভাবনা কম থাকেঃ বেশিরভাগ সময় স্ট্রোকের মূল কারণ হয়ে থাকে উচ্চ রক্তচাপ , আর যেহেতু কাঠবাদাম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে তাই স্ট্রোকের সম্ভাবনা কম থাকে। শুধু তাই নয় কাঠবাদাম আমাদের শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি খারাপ কোলেস্টেরল কমাতেও বিশেষ ভাবে সাহায্য করে , আর এই কারণে নিয়মিত কাঠবাদাম খেলে স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বা ঝুঁকি অনেক কম থাকে।
  16. ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ কাঠবাদাম আমাদের শরীরে ক্যান্সারের সেল ডেমেজ করতে সক্ষম , কারণ কাঠ বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যান্সার প্রতিরোধে হিসেবে কাজ করতে পারে। এছাড়াও কাঠবাদাম কোলন ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে হিসেবে পরীক্ষিত। কাঠবাদামের ভেতরে থাকা ফাইবার আমাদের কোলন ভালো রাখতে এবং ট্যালেন্ট স্যারের হাত থেকে কোলনকে সুরক্ষা দিতে সাহায্য করে এবং নিয়মিতভাবে কাঠবাদাম খেলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই কম থাকে।
  17. দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ কাঠবাদাম থেকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ পাওয়া যায় আর ভিটামিন এ হলো আমাদের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ থাকার কারণে কাঠবাদাম আমাদের দৃষ্টি শক্তিকে উন্নত করতে সাহায্য করে এবং রাতকানা রোগ হওয়ার সম্ভাবনা দূর করে।
  18. শিশুর জন্মগত ত্রুটি দূর করেঃ শিশু যখন গর্ভে থাকে সেই সময় গর্ভবতী মায়ের এক্সট্রা পুষ্টির প্রয়োজন হয়। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত কাঠ বাদাম খেলে ভিটামিন , আইরন , ক্যালসিয়াম , ফসফরাস ইত্যাদি উপাদান গুলোর পাশাপাশি আরো যেসব উপাদান আমাদের শরীর ভালো রাখতে সাহায্য করে সেসব পুষ্টি উপাদান গুলোর ঘাটতি পড়ে না যার কারণে গর্ভবতী মা নিয়মিত কাঠ বাদাম খেলে গর্ভের শিশু ভালোভাবে পুষ্টি পায় এবং শিশুর জন্মগত ত্রুটি দূর থাকে না।
  19. মেনোপজ এর কারনে হওয়ার সমস্যা দূর করেঃ মেনোপজ হওয়ার আগে এবং মেয়েদের বেশ কিছু শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় যেমন - অনিদ্রার সমস্যা , মুড সুইং , অতিরিক্ত চুল ঝরে যাওয়া , গরম বেশি লাগা ,শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা , হাড়ের সমস্যা দেখা দেওয়া ইত্যাদি।মেনোপোজকালীন এই বিভিন্ন সমস্যাগুলো অনেকটাই কমিয়ে আনতে পারে কাঠবাদাম। ৪৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সী মহিলাদের মেনোপসকালিন এসব সমস্যাগুলো তুলনামূলক কম করতে চাইলে নিয়মিতভাবে কাঠবাদাম খাওয়া শুরু করতে পারেন।
  20. শুক্রাণুর গুণগত মান বৃদ্ধি করেঃ কাঠ বাদামের ভেতরে থাকা পুষ্টি উপাদান হলো শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করার পাশাপাশি পুরুষদের শুক্রানুর গুণগত মান বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে থাকে। শুধু শুক্রাণুর গুণগত মান বৃদ্ধি নয় পুরুষদের জন্য ক্ষমতা বৃদ্ধি করতেও কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে কাঠবাদামের ভেতরে থাকা পুষ্টিকর উপাদান গুলো।
  21. অ্যানিমিয়া দূর করেঃ অ্যানিমিয়া বলা হয় রক্তস্বল্পতা রোগকে ।এই রোগটি হয়ে থাকে সাধারণত শরীরে হিমোগ্লোবিন এর অভাবে , আর শরীরে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি দূর করার জন্য আয়রন নামক উপাদানটি খুবই জরুরী। আর আপনারা আগেই জেনেছেন বা জানেন কাঠ বাদামে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রনের উপস্থিতি। আর এই কারণে কাঠ বাদাম খেলে শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক থাকে যার কারণে এনিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা দূর হয়।
  22. ইনসমনিয়া দূর করেঃ ইনসমনিয়া হল রাতে ঘুম না আসা রোগ বা বলতে পারেন অনিদ্রা নামক রোগ। এই রোগটি হওয়ার পেছনে মূল কারণ হলো শরীরে ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন বি এর ঘাটতি। শরীরে যদি ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন বি পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে তাহলে এই রোগ থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব যা আমরা খুব সহজেই পেতে পারি কাঠ বাদামের ভেতর থেকে প্রচুর পরিমাণে  ডি এবং বি এই দুটো দুইটা পাওয়া যায়, তাই কাঠবাদাম খেলে খুব সহজেই ইনসমনিয়া রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
  23. প্রদাহ দূর করতে সাহায্য করেঃ কাঠবাদাম আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ দূর করতেও বিশেষভাবে সাহায্যকারী। শরীরের অভ্যন্তরে হওয়া মাসাল পেইন, জয়েন্টের ব্যথা সহ যেকোনো ব্যথা কমাতে পারে কাঠবাদাম ,কারণ কাঠ বাদামে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওমেগা ৩ ও ৬ , ফ্যাটি এসিড , পটাশিয়াম , জিংক , ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম যে উপাদান গুলো শরীরের অভ্যন্তরের কমাতে উপযোগী।
  24. চেহারা থেকে বয়সের ছাপ দূর করেঃ আমাদের চেহারার উপর থেকে বয়সে ছাপ দূর করতে অথবা চেহারাতে বয়সের ছাপ পড়তে বাধা দিয়ে থাকে এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন ই। আর কাঠবাদামের প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন ই থাকায় চেহারায় তারুণ্য ধরে রাখার খুবই কার্যকরী এবং ফলদায়ক উপাদান হলো কাঠবাদাম। চেহারার উপর থেকে বয়সের ছাপ দূর করার জন্য এবং বয়সের ছাত্র করার জন্য কাঠ বাদাম খাওয়া পাশাপাশি কাঠবাদামের তেল স্কিনে ব্যবহার করলে অনেক ভালো ফল পাওয়া যায়।
  25. ত্বক ভালো রাখেঃ কাঠ বাদাম খেলে এর ভেতরে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের স্কিন ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং ভেতর থেকে স্ক্রিনেকে গ্লোয়িং করতে সাহায্য করে। তাছাড়াও কাঠ বাদামের ভেতরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি এজিং বৈশিষ্ট্য থাকায় তোকে তারুণ্য ধরে রাখার পাশাপাশি স্কিনের ছোট বড় যেকোনো সমস্যা দূর করতেও বিশেষ অবদান রাখে।
  26. ডার্ক সার্কেল দূর করতে সাহায্য করেঃ আমাদের অনেকেরই চোখের নিচে কালো দাগ বা ডার্ক সার্কেল এর সমস্যা রয়েছে। চোখের নিচের এই কালো দাগ বা ডার্ক সার্কেল আমাদের সৌন্দর্যকে অনেকটাই ম্লান করে দেয়। ডার্ক সার্কেল দূর করার জন্য কাঠ বাদামের তেল অর্থাৎ আমন্ড অয়েল খুবই উপকারী। কাঠবাদামের তেল যে শুধু ডার্ক সার্কেল দূর করে তাই নয় ব্রণ এবং ব্ল্যাকহেড দূর করতেও আমন্ড অয়েল ব্যবহার করা যায়।
  27. ত্বকের মশ্চারাইজার ধরে রাখেঃ কাঠ বাদাম আমাদের ত্বককে শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। কাঠ বাদামের তেল আমাদের ত্বকের জন্য খুব ভালো একটি মশ্চারাইজার যা  পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। শুধু মশ্চারাইজার হিসেবেই নয় সান বার্ন দূর করতে এবং ত্বকের কালো দাগ ছোপ দূর করতেও কাঠ বাদামের তেল অসাধারণভাবে কাজ করে।
  28. মেকআপ রিমুভারঃ মেয়েদের মেকআপ ত্বক থেকে যদি ভালোভাবে রিমুভ করা না হয় তাহলে সেক্ষেত্রে ত্বকে ব্রণ সহ দেখা দিতে পারে বিভিন্ন সমস্যা কোন কোন ক্ষেত্রে এটি স্কিন ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিতে পারে , তাই মেকআপ করার পরে সেই মেকআপ ভালোভাবে রিমুভ করার জন্য যেনতেন প্রোডাক্ট ইউজ না করে ব্যবহার করতে পারেন আমন্ড অয়েল। আমন্ড অয়েল স্কিনে আলতো করে ভালোভাবে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করলে পারফেক্টভাবে মেকআপ রিমুভ করা সম্ভব।
  29. চুল ভালো রাখেঃ চুলের খুশকি দূর করা থেকে শুরু করে চুল স্বাস্থ্যজ্জ্বল করে তোলার ক্ষেত্রেও রয়েছে কাঠ বাদামের তেলের অবদান। নিয়মিত কাঠবাদাম খাওয়ার পাশাপাশি যদি এর তেল চুলে ব্যবহার করা যায় তাহলে চুল যেমন ভেতর থেকে মজবুত হয় তেমনি বাইরে থেকেও স্বাস্থ্য উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। এছাড়াও চুল স্ট্রেট করতে , ধুলোবালির কারণে মাথার ত্বকের সমস্যা দূর করতেও রয়েছে আমন্ড অয়েল এর বিশেষ কার্যকারিতা।
  30. চুল পড়া রোধ করেঃ শুধু রূপচর্চার কাজেই নয় চুলের যত্নেও ব্যবহার করতে পারেন আমল। অতিরিক্ত চুল পড়া রোধ করতে এবং চুলকে ভেতর থেকে মজবুত করে তুলতে আমন্ড অয়েল অর্থাৎ তেলের জুড়ি নেই। কাঠবাদাম তেলে রয়েছে ভিটামিন ই , ডি , বি এবং আন্টি অক্সিডেন্ট যা আমাদের চুল ভালো রাখতে এবং চুলের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে  খুবই উপকারী।
  31. নতুন চুল গজাতে সাহায্য করেঃ কাঠ বাদাম শুধু চুলের সমস্যা এবং চুল পড়া রোধ করে না এর পাশাপাশি মাথায় নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে। কাঠবাদামে থাকা উচ্চমাত্রার প্রোটিন এবং ফসফরাস নামক উপাদান দুটি চুল ধরা রোধ করা এবং চুলের গোড়া মজবুত করার সাথে সাথে মাথায় নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে , আর এ ব্যাপারে ভালো বলা ফলাফল পাওয়ার জন্য সপ্তাহে ৩-৪ চার দিন আমন্ড অয়েল মাথার স্কাল্পে মাসাজ করুন।
  32. রান্নার স্বাদ বৃদ্ধি করেঃ  স্বাস্থ্য উপকারিতা , রূপচর্চা এবং চুলের যত্নেই যে শুধু কাঠবাদামের উপকারিতা রয়েছে তাই নয় , বরঞ্চ এর পাশাপাশি রান্নাকে সুস্বাদু করার বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বিশেষ বিশেষ রান্নায় কাঠবাদাম ব্যবহার করলে , রান্নার স্বাদ বেড়ে যায় বেহুগুণ। মিষ্টি বা ঝাল বিভিন্ন ধরনের রেসিপিতেই স্বাদ বাড়াতে এবং পুষ্টি পেতে হতে পারেন কাঠ বাদাম।

মন্তব্য , আজকের এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে নিশ্চয়ই কাঠবাদামের উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা বুঝতে পেরেছেন। যদি নির্দিষ্ট নিয়মে এবং নির্দিষ্ট পরিমাণে নিয়মিতভাবে কাঠবাদাম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলেন তাহলে , এই ছোট্ট বীজ জাতীয় খাদ্যটি শরীর সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে রাখতে পারে অনেক বড় অবদান। তবে , যেহেতু প্রত্যেকটা জিনিসেরই ভালো এবং মন্দ দুটি দিক থাকে তাই অবশ্যই কাঠবাদাম খাওয়ার পূর্বে এর কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে কিনা তা ভালোভাবে জেনে নিবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url