শবে কদরের নামাজের নিয়ত - শবে কদরের ফজিলত

পবিত্র কুরআন শরীফে উল্লেখ আছে যে, শবে কদর বা লাইলাতুল কদরের রাত্রি হাজার বছরের রাত্রির চাইতে উত্তম। শবে কদরের রাতের ফজিলত সবে কদরের রাতের আমল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব এই পোস্টটির মাধ্যমে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক শবে কদরের রাতের ফজিলত শবে কদরের রাতের আমল গুলো কি কি।
মুসলমান প্রত্যেকটি নর-নারীর উচিত এই রাত্রিকে অবহেলা না করে বিভিন্ন আমল এবং ইবাদত বন্দেগির মধ্যে কাটানো । আর এই কারণেই প্রথমে আমাদেরকে জানতে হবে শবে কদরের রাতের ফজিলত এবং শবে কদরের রাতের আমল, ইবাদত সম্পর্কে। আজকে এই লিখনীর মাধ্যমে শবে কদরের রাতের ফজিলত এবং শবে কদরের রাতের আমল সম্পর্কে আপনাদের সাথে কিছু আলোচনা করা হবে শবে কদরের রাতের ফজিলত সম্পর্কিত বিভিন্ন অজানা তথ্য জানতে এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ে নিন।

সূচিপত্রঃ শবে কদরের নামাজের নিয়ত  - শবে কদরের ফজিলত

শবে কদর কি

সবে কদর মানে হলো মর্যাদাপূর্ণ রাত্রি। এই শবে কদরের রাত্রিকে লাইলাতুল কদরও বলা হয়। এই রাত্রে ইবাদতের মাধ্যমে অসংখ্য সওয়াব অর্জন করা যায়। লাইলাতুল কদরের আরো একটি অর্থ রয়েছে, লাইলাতুল শব্দটির অর্থ হল ভাগ্য এবং কদর শব্দটির অর্থটি নির্ধারণ কথাটির ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়। সুতরাং লাইলাতুল কদর শব্দটি অর্থ দাঁড়ায় ভাগ্য নির্ধারণের রাত। শবে কদরের রাতে আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ধ্যানমগ্ন অবস্থায় ছিলেন তখন জিব্রাইল(আ) মাধ্যমে আল্লাহ পাক তার উপর আমাদের পবিত্র গ্রন্থ আল কুরআন নাযিল করেন। সাধারণত শবে কদরের রাত্রিতে নাজিল হলেও ২৩ বছর ধরে বিভিন্ন প্রয়োজন বা বিভিন্ন অবস্থায় প্রেক্ষিতে বিভিন্ন আয়াত ওহী আকারে মুহাম্মদ(সা) কাছে আসতে থাকে ।

শবে কদরের রাত কত তারিখে

শবে কদরের রাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ফজিলত পূর্ণ একটি রাত। এই রাতে এবাদত বন্দেগী করলে অসংখ্য সওয়াব হাসিল করা যায়। এই একটি রাত্রে ইবাদত করলে হাজার বছর ধরে এবাদত করলে যেসব পাওয়া যায় তার চেয়েও অধিক সওয়াব পাওয়া যায় এ রাতে। কিন্তু কেউ নির্দিষ্টভাবে বলতে পারেনা যে এই মহিমান্বিত মর্যাদাপূর্ণ রাত্রি কবে। তবে মহানবী (স) এই শবে কদরের রাত্রির খোঁজ করতে বলেছেন রমজানের শেষ দশ দিনে।
বিভিন্ন হাদিস থেকে পাওয়া যায় যে নবীজি বলেছেন-রমজানের শেষ ১০ দিনের মধ্যে যেকোনো একটি বিজোড় রাত্রিতে শবে কদর হয়। সুতরাং রমজানের শেষ ১০ দিনের মধ্যে ২১ , ২৩ ,২৫,২৭, ২৯ এই রাত্রিগুলোতে আমাদের শবে কদর খোঁজ করতে হবে। কেউ বলতে পারেনা এ রাত্রিগুলোর গুলোর মধ্যে কদরের রাত্রি কোনটি। এই কারণে রমজানের শেষ ১০ দিনের বেজোড় রাত্রিগুলো প্রত্যেকটিকে শবে কদর রাত্রি ধরে আমাদের এবাদত করা উচিত । বিভিন্ন ধর্মীয় বিদদের মতে ২৭ রমজানের রাতে শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে বলে জানা যায় কিন্তু তাই বলে এটি নিশ্চিত নয়।

শবে কদরের ফজিলত

শবে কদর মানে কদরের রাত্রি। কদর কথাটির অর্থ হল মর্যাদা বা সম্মান । এ রাতের মহাসম্মানিত হওয়ার অন্যতম কারণ হলো এই রাতে আল্লাহ পাক পবিত্র গ্রন্থ আল কুরআন অবতীর্ণ করেন। এবং পবিত্র আল-কুরআনের সম্মানে এই রাতকে সম্মানিত করা হয়েছে । শবে কদরের রাতের ফজিলত এবং তাৎপর্য অপরিসীম। এই একটি রাতে ইবাদত বন্দেগী করা মানে হাজার বছর ধরে এবাদত বন্দেগীর চাইতেও বেশি ইবাদত করা
এ প্রসঙ্গে স্বয়ং আল্লাহ বলেছেন- ليلة القدر خير من ألف ليلة যার অর্থ হলো, কদরের রাত হাজার রাতের চেয়ে উত্তম। এবং হযরত মুহাম্মদ (সা) বলেন- والذين يتعبدون ليلة القدر بالإيمان ورجاء الثواب تغفر ذنوبهم السابقة. এর অর্থ হলো যারা ঈমান এবং সওয়াবের আশায় কদরের রাত্রিতে এবাদত বন্দেগী করে তাদের পূর্ববর্তী গুনাহ সমূহ ক্ষমা করে দেয়া হয়।
শবে কদরের রাতে আল্লাহর নির্দেশে হযরত জিব্রাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে অসংখ্য ফেরেশতা পৃথিবীতে অবতরণ করেন এবং এবাদতকারী সকল মুসলমান নর নারীর সাথে মোসাফা করতে থাকেন। এই ফেরেশতাগণ সুবহে সাদিক পর্যন্ত এই সকল ইবাদতকারী নর-নারীর করা সমস্ত দোয়াই শরীক হন।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ(সা) এর পূর্বেও এ পৃথিবীতে আরো অনেক নবীর আগমন ঘটেছে। এবং সেই নবীদের উম্মতদের আয়ু ছিল অনেক বেশি। বেশি আয়ু হওয়ার কারণে তারা বেশি বেশি আল্লাহর ইবাদতের সুযোগ পেয়েছেন । কিন্তু হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর উম্মতদের আয়ু সব চাইতে কম। তারপরেও উম্মতে মোহাম্মদীরা কোন নবীর উম্মতের চাইতে ইবাদতে কোন অংশে পিছিয়ে নেই । কারণ উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য আল্লাহ পাক এমন একটি রাত্রি দিয়েছেন যেই রাত্রে ইবাদত করলে হাজার মাস ধরে ইবাদত করার চাইতেও বেশি সওয়াব লাভ করা যায়।

শবে কদরের নামাজের নিয়ত

শবে কদরের রাত্রি সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমান নর নারীরা বিভিন্ন ইবাদত বন্দেগির মধ্যে দিয়ে কাটান। এই শবে কদরের রাতে যে যত ইবাদত করতে পারে তার সওয়াব তত বেশি আর আমরা সবাই জানি ইবাদত এর মধ্যে নামাজের স্থান সর্বপ্রথমে। এবার তাহলে জেনে নিন শবে কদরের নামাজের নিয়ত
নিয়তঃ "নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা'য়ালা রাকায়াতাই ছালাতি লাইলাতুল ক্বাদরি মুতাওয়াজ্জিহান ইল্লা জিহাতিল কা 'বাতিস শারিফাতি আল্লাহু আকবার"।
অর্থঃ আমি কেবলামুখী হইয়া দুই রাকাত শবে কদরের নফল নামাজ আদায় করিবার নিয়ত করছি আল্লাহু আকবার।
মন্তব্য , উপরিউক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে শবে কদরের রাত হল এবাদত বন্দেগী এবং দোয়া মাহফিলের একটি শ্রেষ্ঠতম রাত। উপরের আলোচনায় আমরা শবে কদরের রাতের ফজিলত ও শবে কদরের রাতের আমল সম্পর্কে জেনেছি । আমাদের সকলের উচিত শবে কদরের রাতের ফজিলত ও শবে কদরের নামাজের নিয়ত সম্পর্কে নিজেরা ভালোভাবে জানা এবং অন্যকে ভালোভাবে জানানো। আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন আমাদের সকলকে এই রাতে এবাদত বন্দেগি করার তৌফিক দান করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url