শবে কদরের নামাজের নিয়ম - শবে কদরের নামাজ কত রাকাত

এক হাজার মাস নফল ইবাদত করলে যে সাওয়াব পাওয়া যায় শুধুমাত্র ক্বদরের রাত ইবাদত করলে তার চেয়ে বেশী সওয়াবের অধিকারী হওয়া যায়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ ঘোষণা করেন :উচ্চারণ : ইন্না- আনঝাল্'না-হু ফী -লাইলাতিল ক্বাদরি, ওয়ামা -আদ্'রা -কা মা লাইলাতুল্ ক্বাদরি, লাইলাতুল্ ক্বাদ্'রি খাইরুম মিন্ আল্'ফি শাহ্'রিন্। অর্থ : নিশ্চয় আমি ক্বদরের রাতে এটা ( কুরআন ) অবতীর্ণ করেছি ; ক্বদরের রাত কি ( ফযীলত ) আপনি কি তা জানেন? ক্বদরের রাত হলো এক হাজার মাসের চেয়েও উত্তম
শবে কদরের রাত্রি টি হল হাজার মাসের চেয়েও উত্তম রাত 
এই রাতকে আরবিতে লাইলাতুল কদর বলা হয়। কুরআনুল কারীমে এই পবিত্র রাত্রিকে বরকতময় রাত্রি বলা হয়েছে। আর এই ফজিলত পূর্ণ  রাত্রিটি ইবাদত বন্দেগী এবং নামাজ কালামের মধ্যে কাটানোর তাগিদ রয়েছে। আরে রাত্রিতে যদি আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় ইবাদত নামাজের মাধ্যমে কাটাতে হয় তাহলে পূর্বেই শবে কদরের নামাজের নিয়ম এবং এই নামাজের রাকাত সংখ্যা সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিতে হবে। 

সূচিপত্রঃ শবে কদরের নামাজের নিয়ম - শবে কদরের নামাজ কত রাকাত

শবে কদরের নামাজ কত রাকাত

শবে কদর উদযাপনের রাত্রিগুলোতে অনেকেই দ্বিধা দ্বন্ধে ভোগেন এই পবিত্র এবং ফজিলতপূর্ণ রাতের নামাজের রাকাত সংখ্যা নিয়ে। শবে কদরের রাত্রিটিকে বলা হয় ভাগ্য রজনী এবং এই রাতে ইবাদত বন্দেগী এবং নামাজ , কালামের মাধ্যমে কাটালে হাজার বছরের চেয়েও বেশি সময় ইবাদত করার সমতুল্য সওয়াব পাওয়া যায়। শবে কদরের রাত্রে নামাজ আদায়ের জন্য এর কোন নির্দিষ্ট রাকাত নেই অর্থাৎ শবে কদরের রাত্রিতে যে যত অধিক সংখ্যক নফল নামাজ আদায় করতে পারবে সে তত লাভবান বা তার সব তত বেশি হবে। শবে কদরের রাত্রিতে এশা এবং তারাবির নামাজ পড়ার পর দুই রাকাত শবে কদরের নফল নামাজের নিয়তে যে যত ইচ্ছা নামাজ আদায় করতে পারেন।

শবে কদরের নামাজের নিয়ম

শবে ক্বদরের রাতে মাগরিবের পর গোসল করে ই'শা ও তারাবির নামাযের পরে বিতরের নামাযের পূর্বে দু'দু'রাকআ'ত করে কমপক্ষে বার রাকআ'ত নামায পড়তে হয়। এই নামায সুন্নাত। এই নামাযে প্রথম রাকআ'ত একবার সূরা ক্বদর ও দ্বিতীয় রাকআ'ত ৩ বার সূরা ইখলাস পড়তে হয়। এছাড়া ইচ্ছা অনুযায়ী অন্য নিয়মেও পরে যায়। সমস্ত রাত নামায, তেলাওয়াত তাসবীহ, দোয়া দরূদ পড়বে। শেষ রাতে গুনাহ মাফের জন্য এবং আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য আল্লাহর দরবারে মুনাজাত করবে।

আমরা যেভাবে অন্যান্য নামাজ পড়ি প্রথমে, প্রথমে জায়নামাজে দাঁড়িয়ে নিয়াত করার পরে , তাকবীরে তাহরিমা বলে হাত বাঁধতে হয় এরপর ছানা এবং তারপর সূরা ফাতিহা তার সাথে অন্য একটি সূরা অথবা কুরআনের অন্তত তিন আয়াত পাঠ করে রুকু ও সেজদা করা তারপর আবার দাঁড়িয়ে সুরা ফাতিহার সাথে অন্য একটি সূরা বা কুরআনের অন্তত তিন আয়াত তেলাওয়াত করে আবার রুকু সিজদা করা সিজদা থেকে উঠে আত্তাহিয়াতু , দরুদ এবং দোয়া মাসুরা পড়ার পর সালামের মাধ্যমে নামাজ শেষ করা। এইভাবে শবে কদরের নকল নামাজ পড়া যাবে।
কিন্তু ধর্মীয় বিভিন্ন বই পুস্তক গুলো থেকে শবে কদরের রাত্রির নামাজের কিছু নিয়ম পাওয়া যায় তবে যে শুধু এই নিয়মগুলো অনুসরণ করলে শবে কদরের নামাজ হবে এমনটি ভাবার কোন কারণ নেই । এই ধরনের কয়েকটি শবে কদরের নামাজের নিয়ম নিচে দেওয়া হলো,
শবে কদরের দুই রাকাত রাকাত নফল নামাজের নিয়তে এই নামাজের জন্য নিয়ত করতে হবে। এরপর অন্যান্য নামাজের মতন পর্যায়ক্রমে তাকবীরে তাহরীমা , সানা এরপর প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহা তেলাওয়াতের পর সূরা কদর একবার এবং দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহার পর সূরা ইখলাস তিনবার তেলাওয়াত করতে হবে ।
আরেকটি নিয়ম অনুযায়ী প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহার পর সূরা আল কদর ৫ বার ও দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ইখলাস সাতবার পড়তে হবে।
প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহার পর সূরা আল কদর ৫ বার এবং দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ইখলাস এগারো বার পড়তে হবে।

বিভিন্ন ধর্মীয় বই-পুস্তকগুলোতে শবে কদরের নামাজের বিশেষ কিছু নিয়ম পাওয়া গেলেও বুযুর্গাম দের মতে এই নামাজের বিশেষ কোনো নিয়ম নেই , দুই রাকাত শবে কদরের দফল নামাজের নিয়তে এই পবিত্র রাতে যে যত বেশি নামাজ আদায় করতে পারে সে তত সওয়াবের অধিকারি হবে।

মন্তব্য , রমজান মাস কি হলো রহমত , মাগফিরাত এবং নাজাতের মাস আর এই মর্যাদাপূর্ণ মাসের মধ্যে এমন একটি রাত রয়েছে যেই রাতে ইবাদত করার মাধ্যমে হাজার বছর ধরে ইবাদত করার সমতুল্য সব লাভ করা যায় আর এই রাত্রিটি হল লাইলাতুল কদরের রাত। নবীজি আমাদেরকে এই রাতটি তালাশ করতে বলেছেন রমজানের শেষ দশ দিনের মধ্যে বেজোর রাত্রি গুলোতে। আল্লাহপাক আমাদের সকলকে যথাযথভাবে লাইলাতুল কদরের এই রাত্রি উদযাপনের তৌফিক দান করুন এবং এই বরকতময় রাতের ওসিলায় আমাদের সকলকে জাহান্নাম থেকে নাজাত দান করুন( আমীন)।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url