মিষ্টি কুমড়ার ২০টি উপকারিতা - মিষ্টি কুমড়ার অপকারিতা

আমাদের দেশের সহজলভ্য সবজি গুলোর মধ্যে মিষ্টি কুমড়া একটি। এই মিষ্টি কুমড়া সহজলভ্য হওয়ার আরেকটি কারণ হলো এর জন্য বিশেষ কোনো পরিচর্যা প্রয়োজন হয় না। মিষ্টি কুমড়া আমাদের দেশের প্রায় সর্বত্রই হয়ে থাকে কিন্তু সহজলভ্য এই সবজিটি যে স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী ভূমিকা পালন করতে পারে তা হয়তো অনেকেই জানা নেই।

মিষ্টি কুমড়া যাকে ইংরেজিতে Pumpkin বলা হয় এই সবজিটির দেশীয় ভাষায় আরও একটি নামে পরিচিত। গ্রামবাংলায় মিষ্টি কুমড়া কে মিষ্টি লাউ বলেও ডাকা হয়। অনেকের কাছেই এই খাদ্যটি এলার্জিটিক মনে হলেও এর মধ্যে রয়েছে বিশেষ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা তবে নানাবিধ স্বাস্থ্য উপকারিতা আর পাশাপাশি এর কিছু অপকারিতাও রয়েছে। উপকারি বলে যদি এই সবজিটি খাদ্য তালিকায় অতিরিক্ত মাত্রায় ব্যবহার করা হয় তাহলে সেক্ষেত্রে এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। তাই মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই এল উপকারী এবং অপকারীর দিকগুলো ভালোভাবে জেনে নিন।

সূচিপত্রঃ মিষ্টি কুমড়ার ২০টি উপকারিতা - মিষ্টি কুমড়ার অপকারিতা

মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা

মিষ্টি কুমড়া  অত্যন্ত পরিচিত সবজিগুলোর মধ্যে একটি। ভেতরে কমলা রঙ্গের এই সবজিটি স্বাদে অতুলনীয় হওয়ার পাশাপাশি  সবজিটির মধ্যে রয়েছে নানান ধরনের পুষ্টি উপাদান। আর বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান এই সবজির ভেতরে থাকায় মিষ্টি কুমড়া খেলে পাওয়া যায় বেশ কিছু উপকারিতা। মিষ্টি কুমড়া খেলে যেসব উপকারিতা পাওয়া যায় তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো, এই মিষ্টি কুমড়া

ফাইবারের বড় উৎসঃ শরীরের ফাইবারের দৈনিক চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে মিষ্টি কুমড়া। মিষ্টি কুমড়ায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার মজুদ থাকায় এই সবজিটি হজমে সহায়তা করে। গবেষণায় দেখা গেছে প্রতি এক কাপ মিষ্টি কুমড়ায় ফাইবার থাকে দুই গ্রাম। ফাইবার থাকায় মিষ্টি কুমড়া হজমে সহায়তা করার পাশাপাশি রক্তে শর্করার মাত্রার নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে। মিষ্টি কুমড়ার ভেতরে যেই ফাইবারটি রয়েছে সেটি হলো প্রোবায়টিক। আর প্রোবায়োটিক জাতীয় খাবার গুলো আন্ত্রের সুরক্ষা দিয়ে থাকে

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ মিষ্টি কুমড়া অত্যন্ত সাধারণ একটি সবজি হলেও এর মধ্যে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের কারণে , এই সবজিটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। মিষ্টি কুমড়ার ভেতরে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দুটোই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে শরীরকে বিশেষভাবে সাহায্য করে , আর এই দুটো উপাদানে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় মিষ্টি কুমড়া থেকে। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যদি নির্দিষ্ট পরিমাণে মিষ্টি কুমড়া রাখা হয় তাহলে এর  থাকা ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান গুলো আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলবে।

পটাশিয়ামের ঘাটতি দূর করেঃ ফাইবারের পাশাপাশি মিষ্টি কুমড়া থেকে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম পাওয়া যায়। গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রায় ৫০০ মাইক্রগ্রাম পটাশিয়াম পাওয়া যায় এক কাপ মিষ্টি কুমড়া থেকে। তাই খাদ্য তালিকায় মিষ্টি কুমড়া রাখলে এর থেকে আমাদের শরীরের দৈনিক পটাশিয়াম এর চাহিদার বড় অংশ পূরণ করা সম্ভব হয় এবং শরীরে পটাশিয়ামের ঘাটতি থাকে না বিধায় এর ঘাটতি জনিত বিভিন্ন রোগ যেমন - কিডনির পাথর , উচ্চ রক্তচাপ , হৃদ রোগের সমস্যা ইত্যাদি রোগ গুলো থেকে মুক্ত থাকা যায়।

আরো পড়ুনঃ অলিভ অয়েল এর উপকারিতা

শরীরে শক্তি যোগায়ঃ মিষ্টি কুমড়া থেকে একাধিক পুষ্টি উপাদান এবং বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন পাওয়া যায় বিধায় শরীরে পুষ্টি ঘাটতি এবং ভিটামিনের স্বল্পতা দূর হয়। মিষ্টি কুমড়ার ভেতরে ম্যাগনেসিয়াম , পটাশিয়াম , কার্বোহাইড্রেট  জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান গুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকার কারণে মিষ্টি কুমড়া খেলে আমাদের শরীরের শক্তি যোগায় এবং শরীরে পর্যাপ্ত শক্তি থাকার কারণে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ মিষ্টি কুমড়া আমাদের শরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধে হিসেবে ও কাজ করতে পারে। মিষ্টি কুমড়ার ভেতরে থাকা অ্যান্টিবক্সিডেন্ট ক্যান্সারের সেল ড্যামেজ করতে অত্যন্ত উপযোগী। যেসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায় সেই খাবারগুলো শরীরে ক্যান্সার উপাদনকারী কোষগুলো কমাতে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি দুটো উপাদানই ক্যান্সারের সেল ডেমেজ করতে ভীষণভাবে কার্যক্রম আর এই দুটো উপাদানই একত্রে পাওয়া যাবে মিষ্টি কুমড়ার ভেতরে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ উচ্চমাত্রার ফাইবার মিষ্টি কুমড়ার ভেতরে মজুদ থাকায় নিয়মিত খাদ্য তালিকায় মিষ্টি কুমড়া রাখলে এটি ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করতে পারি। কারণ উচ্চ ফাইবার থাকাই মিষ্টি কুমড়া রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে এবং নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ আপনারা আগেই জেনেছেন মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম , আর পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই উচ্চ রক্তচাপ কমাতে মিষ্টি কুমড়া খুবই কার্যকরী। যারা হাই প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপের রোগী রয়েছেন তারা রক্তচাপ কমাতে খেতে পারেন মিষ্টি কুমড়া। মিষ্টি কুমড়া উচ্চ রক্তচাপ এবং কার্ডিওভাসকুলার ডিজিস থেকে শরীরকে রক্ষা করে।

লিভার ভালো রাখেঃ লিভার ভালো রাখার ক্ষেত্রেও রয়েছে মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা মিষ্টি কুমড়ায় থাকা বিটা ক্যারোটিন , ফাইবার হজমে এবং ভিটামিন সি লিভারের ফ্যাট জমা প্রবণতা দূর করে , শরীরের টক্সিক পদার্থ গুলো বের করে দিতে সাহায্য করে যার কারণে লিভার সুস্থ থাকে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ মিষ্টি কুমড়ায় ফাইবার থাকায় এটি আমাদের হজমের সহায়তা করে , আর হজম প্রক্রিয়া ভালো থাকার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে তারা যদি নিয়মিত কিছুদিন মিষ্টি কুমড়া খাদ্য তালিকায় রাখেন তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সমাধানে বেশ ভালো ফল পাবেন।

আরো পড়ুনঃ খালি পেটে রসুন খাওয়ার উপকারিতা

অস্টিওপোরোসিস রোগ রোধ করেঃ হাড়ের এক ধরনের রোগ রয়েছে যেই রোগ হলে , হাড় দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। হাড়ের দুর্বলতা ও ভঙ্গুরতা বেড়ে যাওয়ার এই রোগটিকে বলা হয় অস্টিওপোরোসিস রোগ। এই রোগটি হয়ে থাকে ঘাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়ার জন্য।অস্টিওপোরোসিস নামক এই রোগটি থেকে শরীরকে মুক্ত রাখার জন্য সহায়তা করতে পারে মিষ্টি কুমড়া কারণ মিষ্টি কুমড়ায় থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো হাড়ের অস্টিওপোরোসিস রোগ হতে বাধা দেয়। অস্টিওপোরোসিস রোগ হওয়ার  আরেকটি অন্যতম কারণ হলো শরীরে পুষ্টি ঘাটতি , মিষ্টি কুমড়ায় যেহেতু একাধিক পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন একত্রে পাওয়া যায় তাই শরীরে পুষ্টি ঘাটতি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে এবং অস্টিওপোরোসিস রোগের ঝুঁকিমুক্ত থাকা যায়

রক্তস্বল্পতা দূর করেঃ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান থাকায় মিষ্টি কুমড়া শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি রক্তস্বল্পতা দূর করতেও সহায়তা করে। শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করার জন্য প্রয়োজন হয় আইরনের কারণ আয়রনের ঘাটতির কারণে আমাদের শরীরের রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। যেহেতু শরীরে আইরনের ঘাটতি পড়লে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় তাই যদি খাদ্য তালিকায় মিষ্টি কুমড়া রাখা যায় তাহলে সে ক্ষেত্রে আমাদের শরীরে রক্তশূন্যতা হওয়ার প্রশ্ন প্রবণতা কম থাকবে কারণ মিষ্টি কুমড়া থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে আইরন পাওয়া যায় আর এই আইরন আমাদের রক্তস্বল্পতা দূর করে। গর্ভবতী মায়েদের প্রায় রক্তস্বল্পতার থাকে , গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতা দূর করার জন্য খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন মিষ্টি কুমড়া।

হার্ট ভালো রাখেঃ মিষ্টি কুমড়ার ভেতরে থাকা ভিটামিন সি , ফাইবার , অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আমাদের হার্ট ভালো রাখতেও বিশেষভাবে সাহায্য করে। মিষ্টি কুমড়া রক্তে কোলেস্টেরল মাত্রা কমানোর মাধ্যমে হার্টের সুরক্ষা দেয়। এছাড়াও মিষ্টি কুমড়ায় পটাশিয়ামে থাকায় এটি আমাদের  আমাদের রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে , আর রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকার কারণে আমাদের হার্ট সংক্রান্ত সমস্যার ঝুঁকি অনেক কম থাকে।

চোখের ভালো রাখেঃ মিষ্টি কুমড়া আমাদের চোখ ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং বার্ধক্যজনিত কারণে দৃষ্টি শক্তি কমার সমস্যা দূর করে। আর দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখার এই কাজটি করে থাকে মিষ্টি কুমড়ায় থাকা বিটা ক্যারোটিন এবং আন্টি অক্সিডেন্ট। বিটা কেরোটিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর কারনে মিষ্টি কুমড়া খেলে আমাদের চোখ ভালো থাকে।

ফ্রি রেডিকেল ড্যামেজ রোধ করেঃ মিষ্টি কুমড়ার ভেতরে থাকা বিটা ক্যারোটিন আমাদের ফ্রি রেডিকেল ড্যামেজবোধ করতেও সাহায্য করেন। খাবারে ব্যবহার করা কেমিক্যাল গুলো আমাদের শরীরে প্রবেশ করার মাধ্যমে ফ্রি রেডিকেল ড্যামেজ শুরু হয় , এই ফ্রি রেডিকেলের কারণে আমাদের শরীরে উপকারী সেলগুলো নষ্ট হয়ে যায় আর এই রেডিক্যাল থেকে শরীরের উপকারী কোষগুলোকে রক্ষা করে মিষ্টি কুমড়ার ভেতরে থাকা বিভিন্ন খনিজ উপাদান এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

ডিপ্রেশন কমাইঃ যারা একটুতেই ডিপ্রেশনে ভোগেন , তারা এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন মিষ্টি কুমড়া। মিষ্টি কুমড়ায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম নামক খনিজ উপাদান থাকায় এই সবজিটি ডিপ্রেশন ,স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।

দ্রুত ক্ষত শুকাতে সাহায্য করেঃ আমাদের শরীরের ক্ষত শুকানোর জন্য বিশেষভাবে কাজ করে থাকে ভিটামিন সি। মিষ্টি কুমড়ায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকায়, এই সহজলভ্য সবজিটি শরীরের যেকোনো ক্ষত শুকানোর কাজেও সহায়তা করতে পারে। এই সবজিটি  যেহেতু রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে তাই ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রেও যে কোন শারীরিক ক্ষত শুকানোর কাজে ভূমিকা রাখতে পারে মিষ্টি কুমড়া।

সর্দি কাশির সমস্যা দূর করেঃ পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায় মিষ্টি কুমড়া থেকে আর ভিটামিন সি ই আমাদের ভাইরাসজনিত সংক্রমণ রোদে এবং সর্দি কাশি সহ ঠান্ডা লাগা জনিত সমস্যাগুলো দূর করতে সহায়তা দিয়ে থাকে। তাই খাদ্য তালিকাতে মিষ্টি কুমড়া রাখলে এটি আমাদের শরীর-কাশির সমস্যা দূর করার পাশাপাশি ঠান্ডা লাগা জনিত সমস্যা দূর করতেও সহায়তা করবে।

ওজন কমায়ঃ মিষ্টি কুমড়ায় অন্যান্য উপাদান প্রচুর পরিমাণে থাকলেও এই সবজিটিতে ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম রয়েছে। মিষ্টি কুমড়া থেকে স্বল্পমাত্রায় ক্যালোরি এবং প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায়, আমাদের শারীরিক ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও সাহায্য করে থাকে মিষ্টি কুমড়া। যারা স্থূলতার সমস্যায় অতিরিক্ত শারীরিক ওজনের সমস্যায় চিন্তিত তারা ওজন কমানোর নির্দিষ্ট ডায়েট ফলো করার পাশাপাশি খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন মিষ্টি কুমড়া। মিষ্টি কুমড়াই পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি থাকায় আমাদের শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরিয়ে ফেলে খুব সহজে।

আরো পড়ুনঃ রাতে ঘুম না হলে করণীয়

ত্বক সুস্থ রাখেঃ আমাদের ত্বক সুস্থ এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করার পাশাপাশি শি আমাদের ত্বকের উপর থেকে বয়সের ছাপ দূর করতে চেয়ে উপাদানটি খুবই প্রয়োজন সেটি হলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। মিষ্টি কুমড়ায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পাশাপাশি রয়েছে জিঙ্ক , আলফা হাইড্রোক্সাইড। এই উপাদানগুলো আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখার পাশাপাশি ভালো রাখতেও সাহায্য করে এবং ত্বক থেকে বয়সের ছাপ দূর করে এবং বয়সের ছাপ পড়তে বাধা দেয়। এছাড়াও মিষ্টি কুমড়া ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতেও সাহায্য করে।

চুল স্বাস্থ্যজ্জ্বল ও মজবুত করেঃ শুধু ত্বক এবং স্বাস্থ্য ভালো রাখার ক্ষেত্রেই নয় চুল সুন্দর স্বাস্থ্য উজ্জ্বল এবং মজবুত করার ক্ষেত্রেও অবদান রাখতে পারে মিষ্টি কুমড়া। মিষ্টি কুমড়ায় থাকা ভিটামিন সি , এ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুল সিল্কি ও চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করে।

মিষ্টি কুমড়া খেলে কি এলার্জি হয়

অধিকাংশের মতেই মিষ্টি কুমড়ায় একটি এলার্জিক খাবার কারণ , অনেকেরই শোনা যায় মিষ্টি কুমড়ায় এলার্জি রয়েছে। তবে এলার্জির বিষয়টা এক একজনের শারীরিক বৈশিষ্ট্যের উপরে একেক ভাবে ডিপেন্ড করে । সবারই যে একই খাবারে এলার্জির প্রবণতা দেখা দিবে বিষয়টি এমন। শরীর ভেদে এক একজনের এক এক ধরনের সবজি বা অন্য কোন উপাদানে এলার্জি দেখা দিতে পারে।

এটি কোনটা অনেকের এলার্জির প্রবণতা বাড়িয়ে দিলেও কারো কারো ক্ষেত্রে এটি কোন কোন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় না। তবে মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার পরে যদি আপনি সমস্যা বা অসুবিধা বোধ করেন অথবা আপনার যদি মনে হয় মিষ্টি কুমড়া খেলে আপনার এলার্জির প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে তাহলে সে ক্ষেত্রে খাদ্য তালিকা থেকে মিষ্টি কুমড়া স্কিপ করতে পারেন।

মিষ্টি কুমড়ায় কোন ভিটামিন থাকে

মিষ্টি কুমড়ার ভিতরে একাধিক পুষ্টি উপাদান থাকার পাশাপাশি এতে রয়েছে ভিটামিন এ , ভিটামিন ই , ভিটামিন সি এবং বিটাক্যারোটিন।

মিষ্টি কুমড়ার অপকারিতা

মিষ্টি কুমড়া, নিঃসন্দেহে অত্যন্ত স্বাস্থ্য উপকারী একটি খাবার হলেও , এই খাবারের যে শুধু উপকারিতা রয়েছে বিষয়টি এমন নয়। উপকারিতার পাশাপাশি মিষ্টি কুমড়ার বেশ কিছু অপকারিতা অথবা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। উপকারী বলে যদি সব সময় অতিরিক্ত মিষ্টি কুমড়া খাদ্য তালিকাতে যুক্ত করা হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে শরীরের এলার্জির সমস্যা বেড়ে যেতে পারে এর থেকে হতে পারে হাঁচি , শরীর চাকা চাকা হয়ে ফুলে যাওয়া , চুলকানি , পেটব্যথা ইত্যাদি সমস্যা।

মিষ্টি কুমড়া হজমের সহায়তা করলেও অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে পেটে এসিডের সমস্যা দেখা দিতে পারে কারণ মিষ্টি কুমড়াতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন রয়েছে তাই হঠাৎ করে যদি অতিরিক্ত মিষ্টি কুমড়ার তরকারি খাওয়া হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে পেট ফাঁপা এবং পেটে এসিডিটির সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। মিষ্টি কুমড়াতে ভিটামিনের পরিমাণ বেশি থাকায় গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টি কুমড়া খেলে নবাগত সন্তানের জন্মগত ত্রুটি দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

মিষ্টি কুমড়া আমাদের শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা কম করার মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই অতিরিক্ত মাত্রায় মিষ্টি কুমড়া খাদ্য তালিকায় যুক্ত করলে লো প্রেসার এর রোগীদের সমস্যা হতে পারে এবং যাদের ডায়াবেটিসের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কম তাদের ক্ষেত্রেও মিষ্টি কুমড়া ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। যারা অতিরিক্ত ওজনের সমস্যার কারণে ডায়েট ফলো করেন তাদের জন্য পরামর্শ থাকবে প্রতিদিন ১০০ গ্রাম এর বেশি মিষ্টি কুমড়া খাদ্য তালিকায় যুক্ত না করার কারণ। নিয়মিত খাদ্য তালিকায় ১০০ গ্রাম মিষ্টি কুমড়া ওজন কমাতে সাহায্য করলেও এর চেয়ে বেশি হলে তা ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে।

মন্তব্য , মিষ্টি কুমড়াতে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী এতে কোন সন্দেহ নেই। তবে খাদ্য তালিকাতে যুক্ত করার সময় অবশ্যই এর মাত্রা বুঝে ব্যবহার করতে হবে। আপনি যদি দৈনিক খাদ্য তালিকায় মিষ্টি কুমড়া রাখতে চান তাহলে সে ক্ষেত্রে -দৈনিক খাদ্য তালিকায় ১০০ গ্রাম এই সবজিটি যুক্ত করতে পারেন। উপকারী হলেও মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার পরে যদি আপনার শরীরে কোন সমস্যা তৈরি হয় বা এলার্জির মাত্রা বেড়ে যায় তাহলে এই সবজিটি আপনার জন্য ব্যবহার না করাই ভালো। তবে যাদের মিষ্টি কুমড়া খেলে শরীরে কোন সমস্যা দেখা দেয় না তারা দৈনিক না হলেও সপ্তাহে নির্দিষ্ট ৩-৪ দিন এই সবজিটি খাদ্য তালিকায় যুক্ত রাখতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url