ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা ও অপকারিতা

ভিটামিন এ হলো আমাদের শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী। শরীরে যদি পর্যাপ্ত ভিটামিন ই এর ঘাটতি থাকে তাহলে , সেই ঘাটতি পূরণে ভিটামিন ই ক্যাপসুলগুলো অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকলেও। অতিরিক্ত মাত্রায় ভিটামিন ই ক্যাপসুল গ্রহণের রয়েছে বিশেষ কিছু অপকারিতা।

যেহেতু ভিটামিন ই এর অভাবে শরীরে অনেক সমস্যা দেখা দেয় তাই , ভিটামিন ই এর ঘাটতি হলে কোন ধরনের অসুবিধা হতে পারে এ বিষয়ে জ্ঞান রাখা উচিত। বিষয়গুলো জানা থাকলে প্রয়োজন অনুযায়ী ভিটামিন ই এর ঘাটতি পূরণে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব হবে তবে ভিটামিন ই এর অভাবে কি হয় এবং এই ভিটামিনের উপকারিতা জানার পাশাপাশি অবশ্যই জানতে হবে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর অপকারিতা গুলো সম্পর্ক।

সূচিপত্রঃ ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা ও অপকারিতা 

ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা

ভিটামিন ই ক্যাপসুলের অনেক উপকারিতা থাকলেও , উপকারিতার পাশাপাশি এর কিছু অপকারিতাও রয়েছে তাই আমাদেরকে জানতে হবে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। যেহেতু ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা ও অপকারিতা দুটোই জানা প্রয়োজন এই কারণে আমরা একে একে পর্যায়ক্রমে প্রথমে উপকারিতা এবং তারপর অপকারিতা গুলো জেনে নিব। চলুন তাহলে প্রথমে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা গুলো জেনে নেওয়া যাক।

অনেক সময় খাবারের মাধ্যমে আমরা শরীরের সকল ধরনের ভিটামিন বা পুষ্টি চাহিদা গুলোকে করতে পারি না তখন প্রয়োজন পড়ে ভিটামিন ক্যাপসুলগুলোর । তাই যদি খাদ্যের মাধ্যমে আমাদের শরীরের চাহিদা অনুযায়ী ভিটামিন ই না থাকে তাহলে দেখা দিতে পারে শারীরিক নানান জটিলতা । এ ক্ষেত্রে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উপকারিতা হলো এটি আমাদের শরীরে ভিটামিন ই এর ঘাটতি থাকলে তা পূরণ করে । ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর মাধ্যমে শরীরে ঘাটতি পূরণের ফলে বিভিন্ন ধরনের অসুখ বিসুখ কম হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে করে। এছাড়াও ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর মাধ্যমে যদি শরীরের এই ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ হয় তখন বন্ধ্যাত্বের সমস্যা থেকেও মুক্ত থাকা যায়।

ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর মাধ্যমে আমরা আমাদের চুলের স্বার্থের পরিবর্তন ঘটাতে পারি। চুল পড়ার সমস্যা সবার মাঝে অত্যন্ত কমন একটি প্রবলেম। চুল পড়ার প্রধান কারণ হলো চুলের গোড়া মজবুত না থাকা, চুলের গোড়া মজবুত করতে ভিটামিন ই অত্যন্ত জরুরী। তাই বুঝতেই পারছেন আমাদের শরীরে যদি ভিটামিন ই এর ঘাটতি পড়ে তাহলে, চুল পড়া থেকে শুরু করে চুলের বিভিন্ন সমস্যা যেমন - চুলের রুক্ষতা বেড়ে যাওয়া , নতুন চুল গজানো বন্ধ হয়ে যাওয়া , চুলের আগা ফাটা ইত্যাদি দেখা দিবে। তাই শরীরের ভিটামিন ই এর চাহিদা পূরণ করার জন্য এবং চুলের এই সকল সমস্যা দূর করার জন্য ভিটামিন ই ক্যাপসুলগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ত্বকের যত্নেও বিশেষ উপকার হলো ভিটামিন ই ক্যাপসুল। রূপচর্চা বিভিন্ন কাজে আপনি ভিটামিন ই এর এই ক্যাপসুলগুলো ব্যবহার করতে পারেন। শরীরে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ই থাকে তাহলে এটি আপনার ত্বক গ্লো করতে সাহায্য কবে । তাই আপনি যদি ভিটামিন ই ক্যাপসুলগুলো সেবন করেন তাহলে ভেতর থেকে আপনার স্কিন গ্লোয়িং হবে আর রূপচর্চার কাজে এগুলো ব্যবহার করার ফলে আপনার ত্বকের বয়সের ছাপ দূর হবে , রোদে পোড়া কালো দাগ দূর হবে , ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।

আরো পড়ুনঃ শুষ্ক ত্বকের যত্ন নেয়ার উপায়।

শরীরের ভিটামিন ই এর ঘাটতি থাকলে এটি যৌন স্বাস্থ্যের উপরে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে, এবং শারীরিকভাবে অক্ষম করে তুলে। তাই ভিটামিন ই জাতীয় ক্যাপসুলগুলো সেবনের ফলে শারীরিক দুর্বলতা বা শারীরিক অক্ষমতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে এবং যেকোনো ধরনের যৌন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

এছাড়াও আমাদের শরীরের ই ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করার মাধ্যমে হাড় এবং দাঁত গঠন করতে , শরীরের গ্রোথ ঠিক রাখতে  , পেশির দুর্বলতা ও ভারসাম্যহীনতা দূর করতে , দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে , হাত পায়ের নখের ভঙ্গুরতা রোধ করতে , চুলের বৃদ্ধিতে , ত্বকের বলিরেখা দূর করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে ভিটামিন ই ক্যাপসুলগুলো।

ভিটামিন ই এর অভাবে কি হয়

ভিটামিন ই এর অভাবে শরীরে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দেয় তাই আমাদের প্রত্যেকেরই জানা উচিত ভিটামিন ই এর অভাবে কি হয়। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আপনি যদি ভিটামিন এ জাতীয় খাবার গুলো না রাখেন তাহলে দিনে দিনে শরীরে এই গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিনটির ঘাটতি পড়বে এবং যার ফলে দেখা দিবে শারীরিক নানান জটিলতা। তাই চলুন আজকে জেনে নেওয়া যাক ভিটামিন ই এর অভাবে কি হয়।

পেশির দুর্বলতাঃ শরীরে ভিটামিন ই এর ঘাটতি দেখা দিলে পেশি দুর্বল হয়ে পড়ে, আর বেশি দুর্বল হওয়ার এই সমস্যাটিকে বলা হয় মায়োপ্যাথি।

ভারসাম্যহীনতাঃ শরীরে ভিটামিন ই এর ঘাটতি স্নায়ুর স্ট্রেস বাড়াতে সাহায্য করে। আর এই কারণে শরীরে ভিটামিন ই এর ঘাট থাকলে হাঁটাচলা উঠাবসায় ভারসাম্যহীনতা লক্ষ্য করা যায়।

দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়াঃ ভিটামিন ই এর ঘাটতি আমাদের দৃষ্টি শক্তি কমিয়ে দেয়। শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ই থাকলে এটি আমাদের চোখের রেটিনা ভালো রাখতে সাহায্য করে।

চুল দুর্বল হওয়াঃ আমাদের চুলের গোড়া মজবুত করতে এবং চুলের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে ভিটামিন ই অত্যন্ত কার্যকরী। তাই শরীরে ভিটামিন ই এর ঘাটতি থাকলে চুলের গোড়া দুর্বল হয় এবং চুল পড়ার সমস্যা বৃদ্ধি পায়।

ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেওয়াঃ ভিটামিন ই আমাদের ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে। বিশেষ করে ভিটামিন ই ত্বকের বয়সের ছাপ করতে দেয় না, তাই শরীরে যদি ভিটামিন ই এর ঘাটতি ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার পাশাপাশি চেহারার লাবণ্য চলে যাই।

আরো পড়ুনঃ ভিটামিন বি এর অভাবে কোন রোগ হয়

স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্থ হয়ঃ শরীরে ভিটামিন ই এর অভাব ঘটলে এটি আমাদের শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করে ।

হাড় ও দাঁত গঠনে সহায়তা করেঃ ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি ভিটামিন ই ও আমাদের শরীরের হাড় এবং দাঁত মজবুত করতে সাহায্য করে। এই কারণে যদি শরীরে ভিটামিন ই এর ঘাটতি থাকে তাহলে আমাদের দাঁত এবং হাড় গঠনে সমস্যা দেখা দেয় বা দিতে পারে।এ ছাড়াও ভিটামিন ই এর অভাবে বন্ধ্যাত্ব দেখা দিতে পারে।

ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর অপকারিতা

আপনাদের আগেই বলেছিলাম যে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা ও অপকারিতা দুটো সম্পর্কেই আমাদের জানতে হবে।  ভিটামিন ই ক্যাপসুল আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী হলেও এর কিছু পার্থক্য প্রতিক্রিয়া বা অপকারিতা রয়েছে । তাই এবার আমরা জানবো ভিটামিন ই ক্যাপসুলের উপকারিতা গুলো সম্পর্কে । আপনি যদি ভুলবশত বেশি পরিমাণে ভিটামিন ই ক্যাপসুলগুলো সেবন করে ফেলেন তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনার যে সকল শারীরিক জটিলতা দেখা দিবে সেগুলো হল ,

আপনি যখ ভিটামিন ই ক্যাপসুলগুলো সেবন চলবেন তখন অবশ্যই এর পূর্বে ক্লিনিক্যালি টেস্ট করে অথবা ডাক্তারি পরামর্শ নিয়ে তারপরে খাবেন , এর কারণ হলো আপনি যদি এই বিষয়গুলো না জেনেই ভিটামিন ই ক্যাপসুল গ্রহণ করা শুরু করেন আর আপনার শরীরে যদি ভিটামিন ই ঘাটতি না থাকে তাহলে শরীরের ভিটামিন বি এর  মাত্রাতিরিক্ততা আপনার শরীরের ওজন বাড়তে সাহায্য করবে।এছাড়াও শরীরে ভিটামিন ই এর ঘাটতি না থাকার ফলে আপনি যদি ভিটামিন এ জাতীয় ক্যাপসুলগুলো গ্রহণ করেন তাহলে অতিরিক্ত ভিটামিন ই এর কারণে ত্বকে এলার্জি এবং আমাশয় এর সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেই সাথে শরীরে অতিরিক্ত মাত্রায় ভিটামিন ই মজুদ হতে থাকলে রক্তস্বল্পতা , নিউরোলোজিক্যাল প্রবলেম , রেটিনার সমস্যা দেখা দিতে পারে।

মন্তব্য , শরীরের ভিটামিন ই এর মাত্রা বেশি হয়ে গেলে বেশ কিছু জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে বিধায়। ভিটামিন ই ক্যাপসুল গ্রহণের পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারি পরামর্শ মোতাবেক গ্রহণ করবেন এবং দৈনিক কি পরিমান ভিটামিন এ গ্রহণ করতে হবে সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে নেবেন

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url